আইওএস

অ্যাপলের মোবাইল ওএস

আইওএস (ইংরেজি: iOS) হলো একটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম, যার উন্নয়নে ও নিয়ন্ত্রণে আছে অ্যাপল ইনকর্পোরেটেড। এ কোম্পানির বেশিরভাগ যন্ত্রই(ম্যাকবুকআইম্যাক ছাড়া) এ অপারেটিং সিস্টেমে চলে। যেমন, আইপড টাচ ৬ষ্ঠ প্রজন্ম (জুলাই ২০১৫), আইপ্যাড ২০১৮, আইপ্যাড মিনি ৪ এবংআইফোন ১০অ্যান্ড্রয়েডের পর এটিই সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বেশি ব্যবহৃত মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম, যার মার্কেটে অংশ রয়েছে প্রায় ১৮.৯৪%[২]

আইওএস
ডেভলপারঅ্যাপল ইনকর্পোরেটেড
প্রোগ্রামিং ভাষাসি, সি++,অবজেক্টিভ সি, সুইফট
ওএস পরিবারইউনিক্স-সদৃশ, ডারউইন বিএসডি এর উপর ভিত্তিক, ম্যাকওএস
কাজের অবস্থাসক্রিয়
সোর্স মডেলক্লোজড সোর্স
প্রাথমিক মুক্তি২৯ জুন ২০০৭; ১৬ বছর আগে (2007-06-29)
সর্বশেষ মুক্তিআইওএস ১৪.৫ (18E199) / ২৬ এপ্রিল ২০২১; ২ বছর আগে (2021-04-26)
সর্বশেষ প্রাকদর্শনআইওএস ১৪.৬ বেটা (18F5046f) / ২২ এপ্রিল ২০২১; ২ বছর আগে (2021-04-22)
মার্কেটিং লক্ষ্যস্মার্টফোন, ট্যাবলেট, বহনযোগ্য মিডিয়া প্লেয়ার
ভাষাসমূহ৪০ টি ভাষা[১]
হালনাগাদের পদ্ধতিআইটিউন্স অথবা ওভার দ্য এয়ার (আইওএস ৫ এর পর থেকে)
প্ল্যাটফর্ম
  • এআরএম সংস্করণ ৮-এ (আইওএস ৭ এর পর থেকে
  • এআরএম সংস্করণ ৭-এ (আইওএস ৩-আইওএস ১০)
  • এআরএম সংস্করণ ৬ (আইওএস ১-আইওএস ৪.২.১)
কার্নেলের ধরনহাইব্রিড (এক্সএনইউ)
ব্যবহারকারী ইন্টারফেসকোকোয়া টাচ (মাল্টি টাচ, গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস)
লাইসেন্সকিছু ওপেন সোর্স উপাদান বাদে মালিকানাধীন
ওয়েবসাইটwww.apple.com/ios/
সহায়তার অবস্থা
সাপোর্ট করা হয়

২০০৭ সালে প্রথম আইফোনের জন্যে এ অপারেটিং সিস্টেম প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে অ্যাপলের অন্যান্য যন্ত্রেও এর ব্যবহার শুরু করে তারা। উদাহরনস্বরূপ, আইপ্যাড, আইপড টাচে আইওএস এর আলাদা আলাদা সংস্করণ ব্যবহৃত হয়। জানুয়ারি ২০১৭-এর হিসাব অনুযায়ী, অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে প্রায় ২২ লাখ অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে যার মধ্যে ১০ লাখই আইপ্যাডের জন্যে এবং এ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলো ১৩ কোটিবারেরও অধিক ডাউনলোড করা হয়েছে। আইওএসের ইউজার ইন্টারফেস সরাসরি পরিচালনা করা যায় স্পর্শের মাধ্যমে। ব্যবহারকারী প্রদত্ত ইনপুটের প্রতিক্রিয়া তৎক্ষণাৎ পাওয়া যায়। ব্যবহারকারীকে সহায়তার জন্য কম্পনের মাধ্যমে স্পর্শ বিষয়ে জানানো হয় যাকে হ্যাপটিিিক ফিডব্যাক বলে। অভ্যন্তরীন হার্ডওয়্যারের বিভিন্ন অংশ যেমন অ্যাকসেলেরোমিটার, জাইরোস্কোপ এবং প্রক্সিমিটি সেন্সর বিভিন্ন অ্যাপ আনুষঙ্গিক কাজে ব্যবহারকারীর জন্য এগুলো ব্যবহার করে থাকে। যেমন- ডিভাইসটি অনুভূমিক বা উলম্ব থাকলে প্রদর্শনী ঠিক করা, রেস গেম খেলার সময় গাড়ির নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি।

আইওএসের প্রধান হালনাগাদ সংস্করনগুলো আসে বাতসরিক ভিত্তিতে। আইওএস ১৩, আইওএসের সর্বশেষ সংস্করন ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়। এ সংস্করণ নতুন ব্যবহারকারী ইন্টারফেস টুইক, ডার্ক মোড, নতুন রিমাইণ্ডার অ্যাপ ডিজাইন, সুইপ কিবোর্ড ও আরও উন্নত ফটোজ অ্যাপল আনে। ২ জিবি কম র‌্যামের কোন যন্ত্রই এ হালনাগাদ পাবে না, এবং ২০১৯ সালের হিশেবে আইপড টাচ, আইফোন ৫এস সহ ১০% যন্ত্রই এ কারণে আইওএস ১৩ পাবে না।

পটভূমি

২০১৩ সাল পর্যন্ত আইওএস লোগো (বামে) এবং ২০১৩-১৭ সাল পর্যন্ত ব্যবহৃত লোগো (ডানে)

২০০৫ সালে যখন স্টিভ জবস আইফোন নির্মানের উদ্যোগ নেন৷ আইফোনের সাথে অপারেটিং সিস্টেমটি ২০০৭ সালের ৯ জানুয়ারি ম্যাকওয়ার্ল্ড কনফারেন্স এবং এক্সপোতে উপস্থাপন করা হয় এবং অপারেটিং সিস্টেমটি ঐ বছরই জুন মাসে বাজারে ছাড়া হয়৷ প্রথমদিকে অ্যাপল এ অপারেটিং সিস্টেমটির জন্য আলাদাভাবে কোনো নাম নির্ধারন করেনি। স্টিভ জবসের ভাষ্যমতে আইফোন ওএস এক্সের মোবাইল সংস্করণে চলে এবং ডেক্সটপ অ্যাপ্লিকেশন চালায়। প্রথমদিকে অপারেটিং সিস্টেমটিতে কোনও তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট করত না৷ স্টিভ জবস অবশ্য চেয়েছিলেন যে ডেভেলপাররা যেন আইফোন এর মূল অ্যাপগুলোর মতো অ্যাপস তৈরি করতে পারে।[৩][৪]

২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে অ্যাপল ঘোষণা করে যে, একটি নেটিভ সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিট(এসডিকে) উন্নয়নের অধীনে রয়েছে এবং ফেব্রুয়ারি নাগাদ ডেভেলপারদের হাতে সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিটটি তুলে দেয়ার পরিকল্পনা তাদের রয়েছে৷[৫]

২০০৮ সালের মার্চ মাসে অপারেটিং সিস্টেমটির নতুন একটি নাম “আইফোন ওএস” নামকরণের মাধ্যমে অ্যাপল তাদের প্রথম বেটা টেস্ট রিলিজ করে৷ জুলাই ১০, ২০০৮ সালে ৫০০ অ্যাপ্লিকেশনের সাথে আইওএস অ্যাপ স্টোরের যাত্রা শুরু হয়। সেপ্টেম্বর ২০০৮ এ ৩,০০০, জামুয়ারি ২০০৯ এ ১৫,০০০, জুন ২০০৯ এ ৫০,০০০, নভেম্বর ২০০৯ এ ১,০০,০০০, আগস্ট ২০১০ এ ২,৫০,০০০, জুলাই ২০১২ তে ৬,৫০,০০০ এবং জানুয়ারি ২০১৭ তে ২২,০০,০০০-এ এসে দাঁড়ায়। মার্চ ২০১৬ মোতাবেক, ১০,০০,০০০ অ্যাপ্লিকেশনই আইপ্যাড ট্যাবলেটের জন্য। অ্যাপ্লিকেশনগুলো ১৩ কোটিবার ডাউনলোড হয়েছে।

সেপ্টেম্বর ৫, ২০০৭ এ অ্যাপল আইপড টাচের ঘোষণা দেয়, আইফোনের মত দেখতে নতুন আইপড[৬]। জানুয়ারি ২৭, ২০১০ সালে অ্যাপল আইফোন ও আইপড থেকে বেশ বড় স্ক্রিনের আইপ্যাডের ঘোষণা দেয়[৭]

জুন ২০১০ সালে অ্যাপল আইফোন ওএসের নাম পরিবর্তন করে আইওএস রাখে। আইওএস নামে সিস্কোর একটি ট্রেডমার্ক থাকায়, অ্যাপল ঝামেলা এড়াতে তা কিনে নেয়।

হালনাগাদ

আইওএস সংস্করনের ব্যবহারকারী, ২০১৭ মোতাবেক[৮]

  আইওএস ১৩ (৮১%)
  আইওএস ১২ (১৩%)
  আইওএস ১১ অথবা পূর্বেকার সংস্করণ (৬%)

অ্যাপল তাদের প্রধান হালনাগাদগুলো আইটিউন বা ওটিএ-এর মাধ্যমে দিয়ে থাকে[৯]। আইওএসের সর্বশেষ সংস্করণ হলো আইওএস ১২, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭ সালে যেটি প্রকাশিত হয়েছে[১০]আইফোন ৫এস ও পরের আইফোনগুলোর জন্য এ সংস্করণ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও আইপ্যাডের সমস্ত প্রো সংস্করণ, ৬ষ্ঠ প্রজন্মের আইপড টাচ, আইপ্যাড এয়ার ২, আইপ্যাড মিনি ২ ও পরের সংস্করণগুলো আইওএস ১২ পাচ্ছে[১১]

অ্যাপল কোম্পানি বিভিন্ন সময়ে তাদের অপারেটিং সিস্টেম সফ্টওয়্যার আপডেট করে এসেছে৷ ২০১৮ সালের ৩১ মে অ্যাপ স্টোর অনুযায়ী ৮১% ব্যবহারকারী আইওএস ১১, ১৪% ব্যবহারকারী আইওএস ১০ এবং ৫% ব্যবহারকারী পূর্বের আইওএস অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করছে৷উল্লেখ্য যে অ্যাপলের এ অপারেটিং সিস্টেমটি এখন পর্যন্ত প্রায় চল্লিশটি ভাষা সাপোর্ট করে থাকে৷[১২][১৩][১৪]

ফিচারসমূহ

মূল পর্দা

মূল পর্দায় অ্যাপ্লিকেশন আইকন ও একদম নিচে একটি ডক দেখা যায়। ব্যবহারকারী তার সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশনগুলো ডকে রাখতে পারে। যন্ত্রটি আনলক করার সাথে সাথেই কিংবা অন্য কোন অ্যাপ্লিকেশনে থাকা অবস্থায় হোম বোতমে চাপ দিলে হোমস্ক্রিন বা মূল পর্দা এসে যায়[১৫]। আইওএস ৪ এ ওয়ালপেপার শুধুমাত্র জেলব্রেক করেই পরিবর্তন করা যেতো, কিন্তু এখন স্বাভাবিকভাবেই করা যায় তা। আর ডিসপ্লের একদম উপরে স্ট্যাটাস বার রয়েছে বিভিন তথ্য প্রদর্শনের জন্য- যেমন, সময়, ব্যাটারি লেভেল এবং সিগনেল ক্ষমতা ইত্যাদি। অই অংশ এবং আইফোন দশের নিচে নেভিগেশন বারের অল্প একটু অংশ ছাড়া স্ক্রিনের বাকী অংশটুকু বর্তমানে ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশনের জন্যেই উজার থাকে। আইফোন ওএস ৩-এ স্পটলাইট অ্যাপ্লিকেশনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, যার সাহায্যে মিডিয়া, অ্যাপ্লিকেশন, কন্টাক্ট, বার্তা, দিনলিপি ইত্যদি খুঁজতে পারা যায়। আইওএস ৭ এবং তার পরবর্তী সংস্করণে স্পটলাইট অ্যাপ্লিকেশনে স্ক্রিনের উপরে এবং নিচে ছাড়া যেকোন অংশ থেকে টেনে প্রবেশ করা যেতো[১৬]। আইওএস ৯ থেকে স্পটলাইটে দুভাবে প্রবেশ করা যেতো। এক আইওএস ৭ এর মত স্ক্রিন টেনে ধরে বা সিরির মাধ্যমে[১৭]। আইওএসে ১০ এ স্পটলাইট টুডে প্যানেলের শীর্ষে পাওয়া যায়[১৮]

সিস্টেম লিপি

আইওএস প্রথমদিকে সিস্টেম লিপি হিসাবে হেলভেটিকা ব্যবহার করতো। যেখান থেকে আইফোন ৪ ও তার রেটিনা পর্দার জন্যে অ্যাপল পরবর্তীতে হেলভেটিকা নিউয়িতে স্থানান্তরিত হয়। তবে হেলভেটিকাকে পুরোনো আইফোন যন্ত্র, আইওএস ৪-এর জন্যে সিস্টেম লিপি হিসাবে রেখে দিয়েছে।[১৯] আইওএস ৭ এ, অ্যাপল ঘোষণা করে, তারা সিস্টেম লিপি হিসাবে হেলভেটিকা নিউয়ি লাইট ব্যবহার করবে এখন থেকে, এবং লো-রেজ্যুলেশনের মোবাইল পর্দায় হালকা ও চিকন লিপি ব্যবহারে জন্যে অ্যাপল সমালোচিত হয়। অ্যাপল তাই হেলভেটিকা নিউয়িকেই নির্বাচন করে।[২০][২১] আইওএস ৭ মুক্তি টেক্সটের আয়তন পরিবর্তন ও অন্যান্য টেক্সট এক্সেসিবিলিটি সেটিংসের মাধ্যমে প্রয়োগের সুযোগ করে দেয়।[২২][২৩] আইওএস ৯ থেকে অ্যাপল নিজেদের স্যান ফ্রান্সিসকো লিপি ব্যবহার শুরু করে। [২৪][২৫]

ফোল্ডার

আইওএস ৪-এ প্রথম ফোল্ডারের সাথে ব্যবহারকারীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে একটি অ্যাপ্লিকেশনকে অন্য অ্যাপ্লিকেশনের উপর রাখলে একটি ফোল্ডার তৈরি হয়। ফোল্ডারের জন্যে একটি শিরোনাম স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নির্বাচিত হয়ে যায়, তবে ব্যবহারকারী চায়লে তা পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে। [২৬] ফোল্ডারের অভ্যন্তরের কোন অ্যাপে যখন নতুন বিজ্ঞপ্তি আসে, তখন অই ফোল্ডারের সমস্ত অ্যাপের বিজ্ঞপ্তির সমষ্টিগত সংখ্যা ফোল্ডারের উপর প্রদর্শিত হয়।[২৬] পূর্বে আইফোনে একটি ফোল্ডারে ১২টি ও আইপ্যাডে ২০টি অ্যাপ অন্তর্ভুক্ত করা যেতো। [২৭] নতুন আইফোনে পর্দার আয়তন বৃদ্ধির সাথে, আইওএস ৭-এ ফোল্ডার ব্যবস্থা হোমপেজের মত নতুন পৃষ্ঠা ব্যবস্থার মাধ্যমে হালনাগাদ করলো। ফোল্ডারের প্রতিটি পৃষ্ঠা ৯-এর অধিক অ্যাপ্লিকেশন এবং সর্বমোট ১৫টি পৃষ্ঠায় ১৩৫টি অ্যাপ্লিকেশন অন্তর্ভুক্ত করা যেতো।[২৮] আইওএস ৯-এ, অ্যাপল আইপ্যাডের জন্যে ফোল্ডারের আয়তন বাড়িয়ে প্রতি পৃষ্ঠায় ১৬টি অ্যাপ ও ১৫ পৃষ্ঠায় সর্বমোট ২৪০টি অ্যাপ অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ করে দিলো।[২৯]

বিজ্ঞপ্তি কেন্দ্র

আইওএস ৫-এর পূর্বে, বিজ্ঞপ্তি একটি মোডাল উইন্ডোতে প্রদান করা হতো, এবং বাতিল করার পর আর দেখা যেতো না। আইওএস ৫-এ, অ্যাপল প্রথম বিজ্ঞপ্তি কেন্দ্রের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো, যেখানে ব্যবহারকারীরা বিজ্ঞপির ইতিহাস দেখার সুযোগ পায়। বিজ্ঞপ্তি সংশ্লিষ্ট অ্যাপ্লিকেশন খুলতে ব্যবহারকারীকে শুধুমাত্র অই বিজ্ঞপ্ত স্পর্শ করলেই চলতো।[৩০] বিজ্ঞপ্তি এখন বিশদভাবে ব্যানার আকারে স্ক্রিনের উপরে আসে। ব্যবহারকারী প্রাপ্ত বিজ্ঞপ্তি স্পর্শ করলে সংশ্লিষ্ট অ্যাপ্লিকেশন ওপেন হয়। আইওএস ৮-থেকে তৃতীয় পক্ষের উইজেট বিজ্ঞপ্তি কেন্দ্র থেকে প্রবেশ করা যায়। বন্ধ থাকা অবস্থায় কোন অ্যাপ্লিকেশন নোটিফিকেশন পাঠালে, ওটার আইকনের উপর বিজ্ঞপ্তির সংখ্যা নিয়ে একটি লাল ব্যাজ আসে। তবে অ্যাপ্লিকেশন খুললে এ ব্যাজ চলে যায়।

মাল্টিটাস্কিং

জুন ২০১০ আইওএস ৪-এ প্রথম মাল্টিটাস্কিং-এর সাথে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।[৩১][৩২] শুধু নির্দিষ্ট কিছু যন্ত্রে—আইফোন ৩জিএস, আইফোন ৪, আইপড টাচ ৩য় প্রজন্মে এ সুবিধা দেওয়া হয়।[৩৩] আইওএস ৪.২.১-এর আগ পর্যন্ত আইপ্যাডে মাল্টিটাস্কিং সুবিধা দেওয়া হয়নি।[৩৪] বর্তমানে, আইফোন ৩জিএস+, আইপড টাচ ৩য় প্রজন্ম এবং সব আইপ্যাড মডেলেই মাল্টিটাস্ক সমর্থন করে।[৩৫]

কাজের ধরনের জন্যে আইওএসের মাল্টিটাস্কিং সমালোচিত হয়। ব্যাকগ্রাউন্ডে একটি অ্যাপ্লিকেশন কি কি কাজ করতে পারবে তা সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয় বলে এ সমালোচনার স্বীকার হয়। ল[৩৩][৩৬]

আইওএস ৪-এর পূর্বে, মাল্টিটাস্ক অ্যাপলের কিছু অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো। তবে ব্যবহারকারী "জেলব্রেক" করে সব অ্যাপেই মাল্টিটাস্ক করতে পারতো।[৩৭] আইওএস ৪ থেকে, তৃতীয় প্রজন্ম ও নতুন আইওএস যন্ত্রে, মাল্টিটাস্ক ৭টি ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপিআই-এর মাধ্যমে সমর্থন করতো:[৩৮]

১) ব্যাকগ্রাউন্ড অডিও — অডিও ও ভিডিও চলার সময় অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে[৩৯]
২) ভয়েস ওভার আইপি – ফোন কল যখন চলছে না তখন অ্যাপ্লিকেশন সাসপেন্ড হয়ে যায়[৩৯]
৩) ব্যাকগ্রাউন্ড লোকেশন – অ্যাপ্লিকেশন অবস্থান বা লোকেশনের পরিবর্তন সম্পর্কে অবহিত থাকে[৩৯]
৪) পুশ নোটিফিকেশন
৫) লোকাল বিজ্ঞপ্তি – লোকাল বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয় নির্দিষ্ট সময় পর পর[৩৯]
৬) টাস্ক কম্পলেশন – অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম থেকে কিছুটা বাড়তি সময় চেয়ে নেয় কোন নির্দিষ্ট কাজ শেষ করার জন্যে[৩৯]
৭) দ্রুত অ্যাপ পরিবর্তন – অ্যাপ্লিকেশন কোন কোড এক্সিকিউট না করতে পারে এবং যেকোন মুহূর্তে মেমরি থেকে মুছে যেতে পারে[৩৯]
আইওএস ৫-এ এ তালিকায় ৩টি নতুন ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপিআই যুক্ত করা হয়:৮) নিউজস্ট্যান্ড – অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকগ্রাউন্ডে ক্কন কিছু ডাউনলোড করতে পারে[৩৯]
৯) এক্সটারনাল এক্সেসরি – অ্যাপ্লিকেশন একটি এক্সটারনাল এক্সেসরির সাথে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ডেটা আদান প্রদান করতে পারে[৩৯]
৯) ব্লুটুথ এক্সেসরি – অ্যাপ্লিকেশন একটি ব্লুটুথ এক্সেসরির সাথে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ডেটা আদান প্রদান করতে পারে[৩৯]
আইওএস ৭-এ, অ্যাপল নতুন একটি মাল্টিটাস্কিং বৈশিষ্ট্য আনে, সবগুলো অ্যাপ্লিকেশনকে ব্যাকগ্রাউন্ডে হালনাগাদ করার সুবিধা প্রদান করে। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অ্যাপকে বারবার হালনাগাদ করা হয়, এবং ব্যাটারি যাতে কম ব্যবহৃত হয় সেজন্যে সেলুলার ডাটার চেয়ে ওয়াইফাই ব্যবহারকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

সিরি

সিরি হলো অ্যাপল এর ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট। বিভিন্ন ভয়েস কমান্ড এর মাধ্যমে সিরি কার্য সম্পাদনা করা যায়৷ যেমনঃ কোন ব্যক্তিকে কল করা যায়। ফোনের ম্যাসেজ পড়া যায়। টাইমার সেট করা যায়। আবহাওয়া সম্পর্কিত তথ্যা সিরি এর মাধ্যমে পাওয়া যায়। ইংরেজি থেকে কয়েকটি ভাষায় শব্দ এবং বাক্যাংশ অনুবাদ করা যায়। সিরি এর মাধ্যমে কিছু বিভিন্ন তথ্যমূলক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়।

জেলব্রেকিং

আইওএস, আইপ্যাডএস, টিভিএস এবং ওয়াচওএস অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে আরোপিত অনুপলব্ধ সফটওয়্যার ব্যাবহারের জন্য সাধারণত কার্নেল প্যাচের একটি সিরিজ ব্যবহার করে জেলব্রেক করা হয়। জেলব্রেক করা হয় আইওএসে থাকা কোন নিরাপত্তা ত্রুটি বা বাগকে ব্যবহার করে, যার মাধ্যমে ব্যক্তিবিশেষ বা হ্যাকার যন্ত্রটির উপর পূর্ণ দখল নিয়ে নেয়। এবং তা ব্যবহার করে সে অ্যাপলের অনুনমোদিত কিছু প্যাচ, থিম, আইকন প্যাক ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারে। সাধারণত এরকম উৎসাহী ব্যক্তিবর্গ এ হ্যাকগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন, এবং তাদের প্রদত্ত নথি অনুসরণ করে কেউ তার আইফোনকে জেলব্রেক করতে পারে [৪০]। জেলব্রেকিং অ্যাপলের মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমে রুট অ্যাক্সেসের অনুমতি দেয়, অফিসিয়াল অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে অনুপলব্ধ সফ্টওয়্যার স্থাপনের অনুমতি দেয়। জেলব্রেকিং অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম এর রুট এর অনুরুপ। জেলব্রেকিংয়ের অন্যতম কারণ হল অ্যাপল এবং এর অ্যাপ স্টোর দ্বারা সীমাবদ্ধ বৈশিষ্ট্য প্রসারিত করা।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ


🔥 Top keywords: শেখ মুজিবুর রহমানশিশু দিবসআনন্দবাজার পত্রিকাপ্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানদোয়া কুনুতবাংলাদেশবাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের তালিকাসোমালিয়াএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)আবহাওয়ারবীন্দ্রনাথ ঠাকুরযুধিষ্ঠিরবাংলা ভাষাসাতই মার্চের ভাষণবাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসমিয়া খলিফাবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহফিলিস্তিনকুরআনের সূরাসমূহের তালিকামুহাম্মাদবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলইউটিউবদৈনিক প্রথম আলোকাজী নজরুল ইসলামছয় দফা আন্দোলনযোহরের নামাজইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনআসসালামু আলাইকুমকুরআনআল্লাহর ৯৯টি নামআয়াতুল কুরসিসাদি মহম্মদম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধসেজদার আয়াতমৌলিক পদার্থের তালিকাবিকাশ