এটক
এটক সিটি (পাঞ্জাবী, উর্দু: اٹک), পূর্বে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ক্যাম্পবেলপুর নামে পরিচিত,[১] পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের নিকটে পাঞ্জাব প্রদেশের উত্তর অংশে অবস্থিত একটি শহর। এটি এটক জেলা এবং এটক তহশীলেরফ সদর দপ্তর। প্রাচীন শহর এটক খুরদের কয়েক মাইল দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ১৯০৮ সালে, এটক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল,[২] যা ১৬শ শতাব্দীতে মুঘল সম্রাট আকবর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল[৩] এবং কলিন ক্যাম্পবেল প্রথম ব্যারন ক্লাইডের সম্মানে প্রাথমিকভাবে এর নামকরণ করা হয়েছিল।[৪]
এটক শহর اٹک Campbellpur | |
---|---|
শহর | |
স্থানাঙ্ক: ৩৩°৪৬′০″ উত্তর ৭২°২২′০″ পূর্ব / ৩৩.৭৬৬৬৭° উত্তর ৭২.৩৬৬৬৭° পূর্ব | |
দেশ | পাকিস্তান |
প্রদেশ | পাঞ্জাব |
প্রতিষ্ঠিত | ১৯০৪ |
পৌরসভা | ১৯৭৮ |
সময় অঞ্চল | পাকিস্তান মান সময় (ইউটিসি৫) |
পোস্টাল কোড মেয়াদ | ৪৩৬০০ |
এলাকা কোড | ০৫৭ |
ওয়েবসাইট | www.attockonians.com |
নামকরণ
১৯০৮ সালে কলিন ক্যাম্পবেল প্রথম ব্যারন ক্লাইডের সম্মানে নগরটি প্রাথমিকভাবে ক্যাম্পবেলপুর নামে পরিচিত ছিল।[৪] নামটি ১৯৭৮ সালে এটকে পরিবর্তন করা হয়, যার আক্ষরিক অর্থ "পাহাড়ের পদতল"[৩]
ভূগোল
এটক শহরটি পেশোয়ার থেকে ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল), পাকিস্তান বিমান কমপ্লেক্সের কামরা থেকে ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) এবং রাওয়ালপিন্ডি থেকে ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) দূরে সিন্ধু নদীর পাশে হারো নদীর কাছে অবস্থিত।
ইতিহাস
এটক ঐতিহাসিকভাবে একটি উল্লেখযোগ্য অঞ্চলে অবস্থিত। গান্ধারা সোয়াত উপত্যকা এবং পাকিস্তানের পটুহর প্লেটু অঞ্চলের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানের জালালাবাদ জেলার একটি প্রাচীন রাজ্য ছিল। এটি সিন্ধু নদীর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত, তারশিশীল ও পেশাবর ছিল এই অঞ্চলের প্রধান দুটি শহর। স্থানটি রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক উভয় কারণেই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সিন্ধু এখানে আফগানিস্তানের খাইবার পাসের মাধ্যমে সামরিক ও বাণিজ্য রুট অতিক্রম করে। মহান আলেকজান্ডার, তৈমুর লং ও নাদের শাহ ভারতবর্ষে নিজ নিজ আক্রমণের মাধ্যমে এই স্থান বা সিন্ধুকে অতিক্রম করেছিলেন।[৫]
সম্রাট আকবরের মন্ত্রী খাজা শামসুদ্দীন খাউফির তত্ত্বাবধানে ১৫৮৩ সালে এটক দুর্গটি সম্পূর্ণ হয়।[৬] ভারতীয় মারাঠা সাম্রাজ্য এবং দুরারাণী সাম্রাজ্যের মধ্যে ২৮ এপ্রিল ১৭৫৮ সালে এটক খুরদে এটক যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাঘুনাথ্রো বলাল পেশো ও মহারাজা তুকোজিরাও হোলকার বাহাদুরের অধীনে মারাঠা যুদ্ধে জয়ী হয় এবং এটককে নিজেদের দখল নিয়ে নেয়।[৭] ৮ মে ১৭৫৮ খ্রিষ্টাব্দে পেশাওয়ার যুদ্ধে মারাঠারা দুররাণী বাহিনীকে পরাজিত করে পেশোয়ার শহর দখল করে নেয়। মারাঠা এখন আফগানিস্তান সীমান্তে পৌঁছেছে। কিন্তু এই বিজয়টি স্বল্পকালীন ছিল এবং এরপর পাঞ্জাবের নবাব এটক শহরটিকে দখল করে নেয়, এই পরাজয়ের ফলে আহমদ শাহ দুররাণী হতাশ হয়ে পড়ে এবং আবার নওয়াবের সাথে চুক্তির অধীনে এটি দখল করে নেয়। এর মতে, এটক আফগান ও নবাব দুই অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। মুগল সাম্রাজ্য পতনের পর, শিখ এটক আক্রমণ করে জেলা দখল করে নেয়। শিখরা ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করে এবং স্থানীয় মুসলমানদের সম্মান প্রদর্শন করে। মহারাজা রঞ্জিত সিং-এর (১৭৮০-১৮৩৯) অধীনে শিখ রাজত্ব (১৭০১-১৮৪৯) ১৮১৩ সালে পাঞ্জাবের আফগান রাজ্যের নবাব থেকে এটকের দুর্গ দখল করে নেয়।
প্রতিষ্ঠা
১৯০৮ সালে, ব্রিটিশ কমান্ডার-ইন-চীফ স্যার কলিন ক্যাম্পবেল দ্বারা শহরটির ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছিল, এর জন্যই এই শহরটি নাম ক্যাম্পবেলপুর করা হয়েছিল।[২] প্রাচীন শহরটি ১৬শ শতাব্দীর মাঝামাঝি এটক দুর্গের কাছে স্থাপিত হয়েছিল, যা মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রধান রুটগুলো সুরক্ষিত করেছিল। ১৯১৫ সালে খুরে এটকের প্রথম তেলের খনি খনন করা হয়[৮] এবং এটক তেল কোম্পানি নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।[৯]
আধুনিক
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর, সংখ্যালঘু হিন্দু ও শিখরা ভারতে চলে আসে, অথচ তখনও ভারতের কিছু শরণার্থী এটকে বসবাস করে। পাকিস্তান সরকার ১৯৭৮ সালে ক্যাম্পবেলপুরকে এটক হিসাবে পুনরায় নামকরণ করে।[৩] এই শহর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সৈন্যদের কাছে তাদের উচ্চ প্রতিনিধিত্বের জন্য পরিচিত।[১০]