কালিরাম মেধি

ভারতীয় লেখক

কালীরাম মেধি (১৮ অক্টোবর ১৮৮০– ২৪ জানুয়ারী ১৯৫৪) ছিলেন আসামের একজন বিশিষ্ট ভাষাবিদ, লেখক এবং প্রাবন্ধিক। তিনি আধুনিক অসমিয়া সাহিত্যের প্রথম দিকে অসমীয়া এবং ইংরেজি উভয় ভাষাতেই সাহিত্য রচনা করেছেন। তিনি ১৯১৯ সালে বড়পেটাতে অনুষ্ঠিত অসম সাহিত্য সভার তৃতীয় সভাপতি ছিলেন।[১][২] ১৯৪৬ সালে তাকে রায় বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করা হয়। সুরেন্দ্র নাথ মেধি (তাঁর ছদ্মনাম সৌরভ কুমার চালিহা দ্বারা অধিক পরিচিত) ছিলেন তাঁর পুত্র। তিনি একজন বহুমুখী অসমীয়া ছোটগল্প লেখক এবং পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক। তিনি পরবর্তীতে আসাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আজীবন সহযোগী অধ্যাপক নিযুক্ত ছিলেন। তাঁর মেয়ে কাদম্বরী মেধি এবং তাঁর স্বামী বিনন্দী চন্দ্র মেধির সন্তান জ্যোতিপ্রসাদ মেধি তাঁর নাতি ছিলেন। তিনি একজন বিশিষ্ট গণিতবিদ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ইন সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজিতে পরিসংখ্যানের ইমেরিটাস অধ্যাপক ছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

কালিরাম মেধি
জন্ম(১৮৮০-১০-১৮)১৮ অক্টোবর ১৮৮০
রামাদিয়া গ্রাম, কামরূপ জেলা, আসাম
মৃত্যু২৪ জানুয়ারি ১৯৫৪(1954-01-24) (বয়স ৭৩)
গুয়াহাটি, আসাম
পেশাপ্রশাসনিক কর্মকর্তা, লেখক, প্রাবন্ধিক
ভাষাআসমীয়া
জাতীয়তাভারতীয়
শিক্ষাপদার্থবিদ্যায় এম.এ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়

জীবনের প্রথমার্ধ

কালিরাম মেধি ১৮৮০ সালের ১৮ই অক্টোবর কামরূপ জেলার হাজোর কাছে রামদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ভূকালী মেধি এবং মাতার নাম সোনতারা মেধি। মেধী বড়পেটার মোক্ষদা দাসকে প্রথমে বিয়ে করেন। এরপরে তিনি দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে পাঁচ সন্তান ছিল। দ্বিতীয় স্ত্রীর অকাল মৃত্যু হয় এবং তিনি নগাঁর পুত্রবধূ স্বর্ণলতা ভূঁইয়াকে বিয়ে করেন। তাঁর ছেলে সুরেন্দ্র নাথ মেধি (১৯৩০-২০১১) সৌরভ কুমার চালিহা ছদ্মনামে একজন বিখ্যাত অসমীয়া লেখক হয়ে ওঠেন এবং ১৯৭৪ সালে অসমিয়া ভাষায় সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

শিক্ষাজীবন

তিনি নিজ গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। তখন বিদ্যালয়টি ছাত্রঘর নামে পরিচিত ছিল। ১৮৯১ সালে তিনি গুয়াহাটির সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৮৯৭ সালে তিনি সংস্কৃতে সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি কলকাতা সিটি কলেজের এফএ ক্লাসে ভর্তি হন। তিনি ১৮৯৯ সালে এই কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে এফএ পাস করেন এবং সেখানেই স্নাতক করেন। ১৯০২ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বর্ণপদক সহ পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মেধী সেই সময়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী তৃতীয় অসমীয়া ব্যক্তি ছিলেন।[৩]

কর্মজীবন

১৯০৪ সালে মেধী গুয়াহাটি সেটেলমেন্ট ক্যাম্পে ভূমি বিচারক হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯০৫ সালে তিনি আসাম প্রশাসনিক পরিষেবাতে যোগদান করেন। গোয়ালপাড়ায় থাকাকালীন তিনি সরকারি কাজের চেয়ে শিল্প, সংস্কৃতি ও সাহিত্যে নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং ১৯৩৫ সালে কমিশনার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন, যদিও পরবর্তী দুই বছরে (১৯৩৬-১৯৩৮) তিনি বিশেষভাবে নিযুক্ত ছিলেন। মেধী ১৯১৮ সালের দ্বিতীয় অধিবেশনের অভ্যর্থনা কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯১৯ সালের ২৬শে ডিসেম্বর বড়পেটাতে অনুষ্ঠিত আসাম সাহিত্য সভার তৃতীয় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।[৪] তিনি আনন্দ চন্দ্র অগ্রবালের সভাপতিত্বে মঙ্গলদাইতে ১৯৩৪ সালের অধিবেশনের প্রধান উদ্যোক্তাও ছিলেন। এছাড়া গবেষণা কমিটি ও জাদুঘর কমিটিতেও তিনি বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন।[৫]

মৃত্যু

তিনি ২৪শে জানুয়ারী ১৯৫৪ সালে গুয়াহাটির পানবাজারে মৃত্যুবরণ করেন।

সাহিত্যকর্ম

অসমীয়া ভাষায়
  1. অসমিয়া ভাসার মুল (অসমিয়া ভাষা) (১৯১৮),
  2. অসমিয়া ব্যাকোরন অরু ভাষাতত্ত্ব (অসমীয়া ব্যাকৌণ ও ভাষাতত্ত্ব) (১৯৩৬),
  3. মহাপুরুষ শঙ্করদেবর বাণী (১৯১৯)
  4. আঙ্কাওয়ালি (পর্ব-১) (অঙ্কালী) (১ম ভাগ) (১৯৫০),[৬]
  5. প্রহ্লাদ চরিত্র (প্রহ্লাদ চরিত্র) (১৯১৩)
  6. অসমীয়া প্ৰাথমিক প্ৰাকৃতিক বিজ্ঞান,
  7. বীজগণিত,
  8. অসমীয়া নাট,
  9. হ্যালির নীড় তারকা,
  10. গর্ব,
  11. লেখার সরঞ্জাম,
  12. তপ,
  13. পৃথিবী,
  14. সূৰ্য ইত্যাদি।
ইংরেজী ভাষায়
  1. দ্যা কালিতাস,
  2. ব্রজাবলী লিটারেচার অফ আসাম,
  3. ফিলসোফিক এস্পেক্টস অফ দ্যা আসামিজ ব্রজাবলী লিটারেচার,
  4. অরিজিন অফ আসামিজ ড্রামা,
  5. স্টাডিজ অফ দ্যা বৈষ্ণব লিটারেচার এন্ড কালচার অফ আসাম,[৭]
  6. আসামিজ গ্রামার এন্ড অরিজিনউফ দ্যা আসামিজ ল্যাঙ্গুয়েজ।[৮]

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী