খ্রিষ্টানগণ ভারতের জন্য কি করিতে পারেন?

খ্রিষ্টানগণ ভারতের জন্য কি করিতে পারেন? (মূল ইংরেজিতে: রিলিজিয়ন নট দ্য ক্রাইং নিড অফ ইন্ডিয়া) হল বিশ্বধর্ম মহাসভায় স্বামী বিবেকানন্দের দেওয়া একটি বক্তৃতা।[১] বক্তৃতাটি ১৮৯৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দেওয়া হয়। এই বক্তৃতায় বিবেকানন্দ গরিব ভারতীয়দের দারিদ্র দূরীকরণে খ্রিস্টানদের অনীহার কথা প্রকাশ করে তাদের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, ভারতবাসীদের ধর্মশিক্ষার প্রয়োজন নেই। কারণ, প্রাচ্যে ধর্মের অভাব নেই। কিন্তু তাদের দুর্ভিক্ষ ও অন্যান্য সময়ে খাদ্যের অভাব ঘটে। সেই অভাব না মেটানোর জন্য তিনি খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারকদের সমালোচনা করেন।[২][৩]

খ্রিষ্টানগণ ভারতের জন্য কি করিতে পারেন?
Religion not the Crying need of India
১৮৯৩ সালে শিকাগোয় স্বামী বিবেকানন্দ
তারিখ২০, সেপ্টেম্বর, ১৮৯৩
অবস্থানশিকাগো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ওয়েবসাইটhttp://www.parliamentofreligions.org/

প্রেক্ষাপট

১৮৯৩ সালে বিশ্বধর্ম মহাসভায় (শিকাগো, ১১-২৭ সেপ্টেম্বর) স্বামী বিবেকানন্দ ভারতহিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। এই অনুষ্ঠানটি ছিল প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের ধর্মগুলির প্রথম সম্মিলিত সভা। ১১ সেপ্টেম্বরের উদ্বোধনী ভাষণটি ছিল সাধারণ ভাষণ। তাতে কোনো ধর্মের স্বপক্ষে বা বিপক্ষে কিছু বলা হয়নি। এরপর ১৫, ১৮ ও ২০ সেপ্টেম্বর বিবেকানন্দ বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।[৪]

২০ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৩

১৯ সেপ্টেম্বর বিবেকানন্দ তাঁর ভাষণে খ্রিস্টানদের কিছু সমালোচনা করেছিলেন।[৫] পরদিন তিনি একটি তাৎক্ষণিক বক্তৃতা দিতে শুরু করেন। চীনে কর্মরত ধর্মপ্রচারক অধ্যাপক আইজ্যাক টি. হেডল্যান্ড[৬][৭] রিলিজিয়ন ইন পিকিং নামে একটি রচনা পড়ে শুনিয়েছিলেন। এই রচনার প্রত্যুত্তরে বিবেকানন্দ বলেন যে, চীনের দারিদ্র একটি প্রধান সমস্যা। তাই সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের ধর্মান্তরিত করার বদলে সেখানে দারিদ্র দূরীকরণে মনোযোগ দেওয়াই ধর্মপ্রচারকদের প্রধান কর্তব্য।[৮] এই ভাষণেই বিবেকানন্দ বলেছিলেন, "ধর্ম ভারতের প্রধান প্রয়োজন নয়।" বিবেকানন্দ খ্রিস্টধর্মকে প্রত্যক্ষভাবে আক্রমণ করেননি। শুধু ভারতে ধর্মপ্রচারকদের কার্যপ্রণালীকে করেছিলেন।[৫] ভাষণটি ছিল মহাসভায় তাঁর চতুর্থ ভাষণ।[৯] এই দিন বিবেকানন্দের ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল না। হেডল্যান্ডের ভাষণের পর মহাসভার অধ্যক্ষ ড. মমেরি বলেন যে, পরবর্তী বক্তা অনুপস্থিত। উপস্থিত শ্রোতারা বিবেকানন্দে উপস্থিত দেখে তাঁকেই ভাষণ দিতে অনুরোধ করেন। বিবেকানন্দ রাজি হন এবং ভাষণ দেন।[১০]

তাঁর বক্তব্যের প্রধান উপজীব্য ছিল এই যে খ্রিস্টানরা ভারতীয়দের দারিদ্রের প্রতি উদাসীন। তিনি বলেন, ধর্মপ্রচারকদের ভাষণ বা আরো গির্জাঘরে ভারতের কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ প্রাচ্যে অনেক ধর্মমত প্রচলিত। ভারতে হাজার হাজার মানুষ অনাহারে মারা যায়, কিন্তু ধর্মপ্রচারকরা তাদের প্রতি উদাসীন। বিবেকানন্দ বলেন ক্ষুধার্ত মানুষদের ধর্মপ্রচারকরা "হিদেন" বলেন। তাদের খাদ্যের প্রয়োজন যা খ্রিস্টানরা তাদের দেয় না।[৫][১০]

ক্ষুধার্ত ভারতীয়দের সাহায্য না করার জন্য বিবেকানন্দ খ্রিস্টানদের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, খাদ্যই ভারতবাসীর সবার আগে প্রয়োজন, ধর্ম নয়।[২][৩]

গুরুত্ব

এই বক্তৃতাটিকে স্বামী বিবেকানন্দের একটি উল্লেখযোগ্য বক্তৃতা মনে করা হয়।[৯] ২১ সেপ্টেম্বর শিকাগো ইন্টার ওশেন-এ এই বক্তৃতার উপর একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।[১০] দ্য কর্ম অফ ব্রাউন ফোক বইয়ের লেখক বিজয় প্রসাদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দারা ধর্মকেই ভারতীয় উপমহাদেশে একমাত্র রপ্তানিযোগ্য সামগ্রী মনে করেন দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে বিবেকানন্দ এই ভাষণ দিয়েছিলেন।[১১]

তথ্যসূত্র

পাদটীকা

গ্রন্থপঞ্জি

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন