গ্রানওয়াল্ডের যুদ্ধ (চিত্রকর্ম)
গ্রানওয়াল্ডের যুদ্ধের চিত্রকর্ম, জান মাতেজকোর আঁকা একটি যুদ্ধের চিত্রকর্ম। যা গ্রানওয়াল্ডের যুদ্ধ ও পোল্যান্ডের স্বজাতীয়দের উপর জয় ও ১৪১০ সালের টিউটন জাতির উপর লিথুনিয়ার গ্র্যান্ড ডিউকের জমিদারি প্রকাশ করে। ক্যানভাসটি ১৮৭৮ সালের এবং এটি পোল্যান্ড ও লিথুনিয়ার বীরত্বপূর্ণ উপস্থাপনার গুলোর একটি। [১] এটি ওয়ারসাও এর জাতীয় যাদুঘরে প্রদর্শিত হয়।
গ্রানওয়াল্ডের যুদ্ধ | |
---|---|
শিল্পী | জান মাতেজকো |
বছর | ১৮৭৮ |
উপাদান | ক্যানভাসে তেল |
আয়তন | ৪২৬ সেমি × ৯৮৭ সেমি (১৬৮ ইঞ্চি × ৩৮৯ ইঞ্চি) |
অবস্থান | জাতীয় জাদুঘর, ওয়ার্সা |
ছবির মুল কেন্দ্র হল টিউটন জাতির প্রধান সর্দারের মৃত্যু,উলরিখ ফন জুনজিনজেন,লিথুয়ানিয়ান ডিউকের অন্য কেন্দ্রীয় চরিত্র,লাল পোশাকে উন্নীত তলোয়ার।জটিলতার জন্য ছবি টি প্রশংসা ও সমালোচনা দুটিই পেয়েছে। এটি মাতেজকোর পরিচয়যোগ্য কাজ। এটি পোলিশ চেতনার খ্যাতি।
ইতিহাস
১৮৭৪ সাল থেকে মাতেজকো ছবির জন্য উপকরণ সংগ্রহ শুরু করে। ১৮৭৫ সালের মাঝে ছবি আঁকা শুরু এবং ১৮৭৮ সালে শেষ করেন। [২] শীঘ্রই তিনি ক্রোকাও কাউন্সিল থেকে এক সরকারি অনুষ্ঠানে সম্মানিত হন সব চেয়ে সম্মানিত পলিস চিত্র শিল্পী হিসাবে। [৩] ছবিটি ওই বছর ডাওইড রসেনব্লুম নামক এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি হয়।ছবিটি নানা আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয়, ১৯০২ সালে চিত্রকর্ম টি রসেনব্লুমের কাছ থেকে "সোসাইটি ফর এঙ্করেজমেন্ট অফ ফাইন আর্টস" কিনে নেয়।
জার্মান নাৎসি বাহিনীর পোল্যান্ড দখলের সময় অন্যান্য চিত্রকর্মের মত এই চিত্রকর্ম টিও গোপন রাখা হয়েছিল। প্রুশিয়ান শ্রদ্ধার্ঘ্য দের সাথে মিলে নাৎসি বাহিনী একটি "মোস্ট ওয়ান্টেড" তালিকা তৈরি করে, যার ২টি ছবির ১টি হল এটি। এই ছবির জন্য গয়েব্বেল ১০ মিলিয়ন টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে, অনেক পোলিশ গুপ্তচরকে মেরে ফেলা হয়েছিলো যখন তারা এর অবস্থান জার্মান নাৎসি বাহিনীর কাছে ফাঁস করতে রাজি হয় নি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পুনরুদ্ধার করা হয়, ১৯৪৯ সাল থেকে এই তৈল চিত্র টি অয়ারশাওয়ের জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে গ্রানওয়াল্ডের যুদ্ধ লিথুয়ানিয়ায় দাদন দেয়া হয়, এটা স্পষ্টভাবে একটি ভ্য়্তুতাসের কাছে ইতিবাচক অভ্যর্থনা পায়, ২০০০ সালে তাকে ওই দেশে জাতীয় নায়ক হিসেবে গণ্য করা হয়, ২০১০ সালে চিত্রটির সংস্করণের প্রয়োজন হয়, চিত্রকলার খারাপ অবস্থার কারণে উয়াওাল দুর্গে যুদ্ধের ৬০০তম বার্ষিকীর প্রদর্শনীতে দেখানো হয়নি, [৪] পেন্টিং সংস্কার করা হয়। ২০১২ তে সংস্কার কাজ শেষ হয়, সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার পর আবার জাতিও যাদুঘরে প্রদর্শিত হয়। [৫]
চিত্রায়ন
গ্রানওয়াল্ড যুদ্ধের চিত্র টি মাতেজকোর আঁকা যা পোল্যান্ডের ইতিহাস থেকে চিত্রিত,সাধারণ ভাবে গ্র্যান্ড ডিউকের জমিদারি ও জর্মান নাইটদের বিরুদ্ধে পূর্ব ইউরোপীয় আধিপত্য সংগ্রাম।ছবির মুল কেন্দ্রে লিথুয়ানিয়ান ডিউক ভ্য়্তুতাস, লাল পোশাকে উন্নীত তলোয়ার,চিত্রে ভ্য়্তুতাস কে তার চাচাত ভাইয়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দেখা যায়, পোলিশ রাজা জগালিয়া(দ্বিতীয় পরিকল্পনায় দৃশ্যমান)।জিমার ও স্কেল অনুযায়ী,মাতেজকো জগালিয়ার চেয়ে ভ্য়্তুতাস কে কেন্দ্রীভূত করে পোল্যান্ডের প্রতি লিথুয়ানিয়ার গুরুত্বারোপ করেন এবং পোলিশ-লিথুয়ানিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে সহযোগিতার মূল্য তুলে ধরেন। অনেকে মনে করেন চিত্রকার হয়তবা জান দুগসের রচনা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল,যে জগালিয়ার চেয়ে ভ্য়্তুতাস কে বেশি গুরুত্ব আরোপ করে। যখন লিথুয়ানিয়া দাবি করে, যে ভ্য়্তুতাস যুদ্ধে সেনাপতিত্ব করে প্রধান ভূমিকা পালন করে।
তাৎপর্য
চিত্রকর্ম টিকে যুদ্ধের দৃশ্যের মাষ্টারপিস বলা হয় এবং সাধারণ যেকোনো রক্তাক্ত যুদ্ধের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটি খুব জটিল ছবি,যা চিত্রের চেয়েও বেশি বর্ণনা করে,একজন ফ্রাঞ্চে সমালোচক ১৮৭৯ সালে প্যারিসে চিত্রটি দেখে মন্তব্য করেন যে,এর নিজ গুণেই এটি একটি যাদুঘর।মহত্ত্ব উপলব্ধি করার জন্য আট দিন প্রয়োজন। একই সাথে তিনি বলেন এটি যুদ্ধের অবাস্তব চিত্র।অন্য সমালোচকরা এও বলেন চিত্র টি বিশৃঙ্খল। চিত্র টি মাতেজকোর পক্ষ থেকে অটো ভন বিসমার্কের জন্য সতর্কতা বার্তা হিসাবে দেখা হয়। বিসমার্কের জার্মান নীতির লক্ষ্য ছিল পোলিশ সংস্কৃতি,তাকে মনে করিয়ে টিউটন দের উপর পোলিশ বিজয়।চিত্রের লক্ষ্য ছিল পলিশদের প্রফুল্লতা বাড়ানো যখন পোল্যান্ড বিভক্ত হয় এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আর অস্তিত্ব ছিল না। ছবি টি মাতেজকোর আঁকা সবচেয়ে স্বীকৃত কাজ এবং পোল্যান্ডে সেরা পরিচিত চিত্রাংকন।গ্রানওয়াল্ডের যুদ্ধের ভাবমূর্তি প্রকাশ করে,পোলিশ চেতনার সহিষ্ণু খ্যাতি।