বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর

আধাসামরিক, সেচ্ছাসেবী বাহিনী

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) হচ্ছে সেনা, নৌ ও বিমান শাখার ক্যাডেটদের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় সারির, আধাসামরিক, সেচ্ছাসেবী বাহিনী। এটি সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা, জেসিও, এনসিও, বেসামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত। বিএনসিসি'র মূলমন্ত্র হলো - জ্ঞান ও শৃঙ্খলা[১]

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি)
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এর লোগো
বিএনসিসি মনোগ্রাম
সংক্ষেপেবিএনসিসি
নীতিবাক্যজ্ঞান ও শৃঙ্খলা
গঠিত২৩ মার্চ ১৯৭৯ (23 March 1979)
ধরনআধাসামরিক
স্বেচ্ছাসেবী
সংরক্ষিত সামরিক বাহিনী
প্রতিরক্ষা বাহিনী
উদ্দেশ্যসৎ, যোগ্য, দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তোলা
সদরদপ্তর৩২ ঈশা খান এভিনিউ, সেক্টর#৬, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০
সদস্যপদ
২-৩ বছর (বর্ধিত)
দাপ্তরিক ভাষা
বাংলা,ইংরেজি
মহাপরিচালক
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মিজানুর রহমান,এনডিসি,পিএসসি
পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ)
রইস উদ্দীন ভূঁইয়া শাহীন (উপসচিব)
প্রধান প্রতিষ্ঠান
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
অনুমোদনবাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
বাংলাদেশ নৌবাহিনী
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী
শিক্ষা মন্ত্রণালয়
ওয়েবসাইটbncc.infobncc.portal.gov.bd
প্রাক্তন নাম
ইউটিসি, ইউওটিসি, পিসিসি, জেসিসি, বিসিসি

ইতিহাস

ব্রিটিশ সরকার ১৯২০ সালে ভারতবর্ষের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠন করেন "ইউনিভার্সিটি কোর।" ১৯২৩ সালে ভারতীয় দেশরক্ষা বাহিনী আইন-১৯২৩ অনুসারে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় "ইউনিভার্সিটি ট্রেনিং কোর বা ইউটিসি।" একই সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউটিসি চালু করা হয়। ১৯২৭ সালের নভেম্বর মাসে ক্যাপ্টেন ই. গ্রুম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ জন শিক্ষক ও ১০০ জন ছাত্রকে প্রথম সাহায্যকারী কোরের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করেন। ১৯২৮ সালের জুন মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে একে কোম্পানিতে উন্নীত করা হয়। এটি ইউটিসি'র ১২ টি ইউনিটের মধ্যে একটি ছিল। এর নাম দেয়া হয় "১২ ঢাকা কোম্পানি।"

১৯৪২ সালে একে একটি একক কোম্পানিতে উন্নীত করা হয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড.মাহমুদ হাসানকে অবৈতনিক লে.কর্ণেল পদবী দিয়ে কোম্পানির ভার দেয়া হয়। ১৯৪৩ সালে এর নাম দেয়া হয় "ইউনিভার্সিটি অফিসার্স ট্রেনিং কোর।" ১৯৪৬ সালে শিলং-এ এর প্রথম বার্ষিক অনুশীলন ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৫০ সালে ৬২৫ ক্যাডেট এবং ৪০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে একে একটি ব্যাটালিয়নে উন্নীত করা হয়। পাকিস্তান সরকার ১৯৫৩ সালের ৩০শে জানুয়ারি ইউটিসি'র কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করে। কিন্তু ছাত্রবিক্ষোভের পর ১৯৬৬ সালে পুনরায় এর কার্যক্রম শুরু হয়। একই সালে এর নামকরণ করা হয় "পাকিস্তান ক্যাডেট কোর বা পিসিসি" এবং স্কুল-কলেজের ছাত্রদের জন্য "জুনিয়র ক্যাডেট কোর বা জেসিসি" গঠন করা হয়। ১৯৭১ সালে পিসিসি ও জেসিসি'র ক্যাডেটরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং ২২ জন ক্যাডেট শহীদ হন। স্বাধীনতার পর "পাকিস্তান ক্যাডেট কোর" নামটির স্থলে "বাংলাদেশ ক্যাডেট কোর" নামটি প্রতিস্থাপিত হয়। ৩১ শে মার্চ, ১৯৭৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ক্যাডেট কোরের তিনটি পদাতিক ডিভিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২৩ শে মার্চ, ১৯৭৯ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একটি সরকারি আদেশ বিসিসি, জেসিসি কে সংগঠিত করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর বা বিএনসিসি প্রতিষ্ঠা করেন ।

উদ্দেশ্য

সৎ, দক্ষ, দেশপ্রেমিক, যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করার মহান উদ্দেশ্যে বিএনসিসি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

সাংগঠনিক কাঠামো

এই সংগঠন একটি আধা সামরিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনকল্যাণ মূলক কাজ করে থাকে, যেমনঃ বৃক্ষরোপণ, স্বেচ্ছায় রক্ত দান, এছাড়াও যুদ্ধকালীন সময়ে সামরিক বাহিনীকে সাহায্য করে থাকে।

শাখা

বিএনসিসির রয়েছে ৩টি শাখা। এগুলো হলোঃ

  1. সেনা শাখা
  2. নৌ শাখা
  3. বিমান শাখা

রেজিমেন্ট

সেনা শাখার অধীনে রয়েছে ৫টি রেজিমেন্ট। এগুলো হলো:

  1. রমনা রেজিমেন্ট,ঢাকা[২]
  2. কর্ণফূলি রেজিমেন্ট,চট্টগ্রাম
  3. ময়নামতি রেজিমেন্ট,কুমিল্লা
  4. মহাস্থান রেজিমেন্ট,রাজশাহী
  5. সুন্দরবন রেজিমেন্ট,খুলনা

ফ্লোটিলা

নৌ-শাখার অধীনে রয়েছে ৩টি ফ্লোটিলা; এগুলো হলো:

  1. ঢাকা- ফ্লোটিলা
  2. চট্টগ্রাম- ফ্লোটিলা
  3. খুলনা- ফ্লোটিলা

স্কোয়াড্রন

বিমান শাখার অধীনে রয়েছে ৩টি স্কোয়াড্রন। এগুলো হলো:

  1. ৫৬ স্কোয়াড্রন,ঢাকা
  2. ৫৭ স্কোয়াড্রন,চট্টগ্রাম
  3. ৫৮ স্কোয়াড্রন,যশোর

সুবিধাবলি

বিএনসিসির মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীগণ নিজ নিজ রেজিমেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন সেনানিবাসে সামরিক বাহিনীর পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন। তাঁরা সামরিক বাহিনীগুলোর মতো শারীরিক ও মানসিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হন। সামরিক বাহিনীগুলোতে যোগ দেওয়ার সময় তাদের প্রিলিমিনারি লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়না এবং নির্বাচিত ক্যাডেটরা সরাসরি আইএসএসবি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পছন্দের বাহিনীতে যোগদান করতে পারে। তবে অবশ্যই একটি ক্যাম্প করেছেন এমন ক্যাডেটরাই আইএসএসবির জন্য মনোনীত হন। এছাড়াও প্রতিবছর নির্বাচিত বেশ কিছু সংখ্যক ক্যাডেট বিদেশ ভ্রমনের সুযোগ পান যার সম্পূর্ণ খরচ সরকার বহন করে। তা ছাড়া, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় বিএনসিসি কোটা থেকে অতিরিক্ত পাঁচ নম্বর প্রদান করা হয়ে থাকে।

প্রশিক্ষণ

  1. ড্রিল
  2. অস্ত্র প্রশিক্ষণ
  3. মাঠ নৈপুণ্য এবং শারীরিক প্রশিক্ষণ
  4. সংস্থা
  5. ক্ষুদ্র ও রণকৌশল
  6. সামরিক ইতিহাস
  7. সামরিক বিজ্ঞান
  8. রীতিবিরুদ্ধ যুদ্ধবিগ্রহ
  9. ম্যাপ পড়া
  10. প্রাথমিক চিকিৎসা, স্বাস্থ্যবিধি ও স্যানিটেশন
  11. কমান্ড এবং নেতৃত্ব

পদবী

ক্যাডেট পদবী

  • ক্যাডেট
  • ক্যাডেট ল্যান্স কর্পোরাল
  • ক্যাডেট কর্পোরাল
  • ক্যাডেট সার্জেন্ট
  • ক্যাডেট আন্ডার অফিসার[৩]

ক্যাডেট

ক্যাডেটগণ
ক্যাডেট আন্ডার অফিসারক্যাডেট সার্জেন্টক্যাডেট কর্পোরালক্যাডেট ল্যান্স কর্পোরালক্যাডেট
সেনা শাখা
নৌ শাখা
বিমান শাখা

ক্যাডেট এপুলেট

ক্যাডেট এপুলেট
ক্যাডেট আন্ডার অফিসারসিনিয়র ডিভিশনজুনিয়র ডিভিশন
সেনা শাখা
নৌ শাখা
বিমান শাখা

বিএনসিসি অফিসার

বিএনসিসি অফিসার
শাখা/গ্রেডবিএনসিসিও-৫বিএনসিসিও-৪বিএনসিসিও-৩বিএনসিসিও-২ইউও-০২ইউও-০১

সেনা শাখা

লেফটেন্যান্ট কর্নেল

মেজর

ক্যাপ্টেন

লেফটেন্যান্ট

প্রফেসর আন্ডার অফিসার

টিচার আন্ডার অফিসার

নৌ শাখা
কোন সমতুল্য র‍্যাঙ্ক নেই
লেফটেন্যান্ট

সাব-লেফটেন্যান্ট

প্রফেসর আন্ডার অফিসার

টিচার আন্ডার অফিসার
চিত্র:বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর মনোগ্রাম .svg
বিমান শাখা
কোন সমতুল্য র‍্যাঙ্ক নেই
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট

ফ্লাইং অফিসার

প্রফেসর আন্ডার অফিসার

টিচার আন্ডার অফিসার

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের সামরিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষক]

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন