বালিয়াটি প্রাসাদ

১৯ শতকে নির্মিত প্রাসাদ
(বালিয়াটি জমিদার বাড়ি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

বালিয়াটি প্রাসাদ বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত মানিকগঞ্জ জেলার সদর থেকে আনুমানিক আট কিলোমিটার পশ্চিমে এবং ঢাকা জেলা সদর থেকে পয়ত্রিশ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের ১৯ শতকে নির্মিত অন্যতম প্রাসাদ। একে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বা বালিয়াটি প্রাসাদ বলেও ডাকা হয়।[১]

বালিয়াটি প্রাসাদ
বালিয়াটি প্রাসাদ
মানচিত্র
স্থানাঙ্ক২৩°৫৯′৪০″ উত্তর ৯০°২′৩৩″ পূর্ব / ২৩.৯৯৪৪৪° উত্তর ৯০.০৪২৫০° পূর্ব / 23.99444; 90.04250
অবস্থানমানিকগঞ্জ, ঢাকা বিভাগ, বাংলাদেশ
সম্পূর্ণতা তারিখ১৯ শতক

মোট সাতটি স্থাপনা নিয়ে এই জমিদার বাড়িটি অবস্থিত। এই বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বা প্রাসাদটির সবগুলো ভবন একসাথে স্থাপিত হয় নি। এই প্রাসাদের অন্তর্গত বিভিন্ন ভবন জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে স্থাপিত হয়েছিল। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্লকটি যাদুঘর। এই প্রাসাদটি বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ কর্তৃক সংরক্ষিত ও পরিচালিত।

ইতিহাস

বালিয়াটি প্রাসাদ।

“গোবিন্দ রাম সাহা” বালিয়াটি জমিদার পরিবারের গোড়াপত্তন করেন। ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি লবণের বণিক ছিলেন। জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকারের মধ্যে “কিশোরীলাল রায় চৌধুরী, রায়বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী তৎকালীন শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ঢাকার জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কিশোরিলাল রায় চৌধুরীর পিতা এবং যার নামানুসারে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়।

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত, এই প্রাসাদ চত্বরটি প্রায় ১৬,৫৫৪ বর্গমিটার জমির উপর ছড়িয়ে থাকা ৭টি দক্ষিণমুখী দালানের সমাবেশ। এই দালানগুলো খ্রিষ্টীয় মধ্য ঊনবিংশ শতক থেকে বিংশ শতকের প্রথমভাগের বিভিন্ন সময়ে জমিদার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। সামনের চারটি প্রসাদ ব্যবহৃত হত ব্যবসায়িক কাজে। এই প্রসাদের পেছনের প্রাসাদকে বলা হয় অন্দর মহল যেখানে বসবাস করত তারা।

স্থাপত্য

বালিয়াটি প্রাসাদ।

বালিয়াটি প্রাসাদ বাংলাদেশের ১৯ শতকে নির্মিত রেনেসা যুগে নির্মিত স্থাপত্যকৌশলের সাহায্যে নির্মিত অন্যতম নিদর্শন। এই বিশাল প্রাসাদটি ২০ একরের চেয়ে বেশি স্থান জুড়ে অবস্থিত। আসলে এই প্রাসাদটি একই রকম দেখতে কিন্তু পাচটি স্বতন্ত্র ব্লকের সমন্বয়ে গঠিত যার সর্ব পূর্বদিকের একটি ব্লক ব্যতীত বাকি চারটি ব্লক এখনো বিদ্যমান। বর্তমানে চারটি ব্লক আছে যার মধ্যে মাঝের দুইটি ব্লক, যার একটি দ্বীতল বিশিষ্ট এবং আরেকটি টানা বারান্দা বিশিষ্ট যা তিনতল বিশিষ্ট।

এই প্রাসাদের চারটি ব্লকের পিছন অংশে চারটি আলাদা আভ্যন্তরিণ ভবন বা অন্দর্মহল আছে। উত্তরদিকে কিছুদূরে অবস্থিত পরিত্যক্ত ভবনটি হল বহির্মহল যা কাঠের কারুকার্য সম্পন্ন। এই ভবনে প্রাসাদের চাকর বাকর, গাড়ি রাখার গ্যারেজ, ঘোড়াশাল ছিল বলে ধারণা করা হয়। এই বিশাল প্রাসাদটির চারপাশ সুউচ্চ দেয়াল দ্বারা পরিবেষ্টিত। এই প্রাসাদের তিনটি প্রবেশপথ আছে। যার প্রত্যেকটিতে অর্ধবৃত্তাকার খিলান আকৃতির সিংহ খোদাই করা তৌরণ বিদ্যমান।

মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলায় অবস্থিত বালিয়াটি জমিদার বাড়ি উনিশ শতকে বাংলাদেশে নির্মিত প্রাসাদ সমূহের মধ্যে অন্যতম। এ জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জনৈক গোবিন্দ রাম সাহা। যিনি একজন মহাজন ও ব্যবসায়ী ছিলেন। জমিদার বাড়িটিতে অনেকগুলো স্থাপনা রয়েছে যেগুলো পাচঁটি পৃথক ভাগে বিভক্ত। সর্বমোট আটটি সুবিশাল দ্বিতল ও ত্রিতল স্থাপনা রয়েছে। স্থাপনাগুলো ঘিরে রয়েছে প্রাচীর। প্রাসাদটির দক্ষিণ দিকে প্রবেশদ্বার হিসেবে চারটি সিংহদুয়ার রয়েছে এবং উত্তরে বিশাল আকৃতির পুকুর রয়েছে। দক্ষিণ দিকে অর্থাৎ সম্মুখভাগের ইমারতগুলোতে কোরিনথিয় স্তম্ভের সারি রয়েছে। এছাড়াও স্থাপনাগুলোতে দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য লক্ষ করা যায়। জমিদার বাড়ির ভেতরে রং মহল নামে খ্যাত ভবনে বর্তমানে জাদুঘর স্থাপন করা হয়েছে।

স্থিরচিত্র

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন