রৈখিক বীজগণিতে, একটি n-বনাম-n বর্গ ম্যাট্রিক্স কে বিপরীতম্যাট্রিক্স (ইংরেজি: invertible বা non-singular বা non-degenerate) বলা হয়, যদি এমন কোন n-বনাম-n বর্গ ম্যাট্রিক্স থাকে যেন,
হয়;
যেখানে একটি n-বনাম-n অভেদ ম্যাট্রিক্স এবং ব্যবহৃত গুণন প্রক্রিয়াটি সাধারণ ম্যাট্রিক্স গুণন প্রক্রিয়া। যদি ক্ষেত্রটি এমন হয়, তাহলে কে ম্যাট্রিক্স এর দ্বারা অনন্যভাবে নির্ণয় করা যায় এবং তাকে এর বিপরীত ম্যাট্রিক্স বলা হয়, যা দ্বারা নির্দেশ করা হয়।
কোন বর্গ ম্যাট্রিক্স বিপরীতযোগ্য না হলে, তাকে একক (singular) বা বিচ্যুত (degenerate) ম্যাট্রিক্স বলে। কোন বর্গ ম্যাট্রিক্স একক হবে যদি ও কেবল যদি তার নির্ণায়কের মান হয়। একক ম্যাট্রিক্সসমূহকে এই হিসেবে বিরল বলা যায় যে, যথেচ্ছেভাবে একটি বর্গ ম্যাট্রিক্স নির্বাচন করলে, যার উপাদানগুলো অবিচ্ছিন্ন ও সুষমভাবে বণ্টিত, তা প্রায় কখনোই একক হয় না।
বর্গ ম্যাট্রিক্স ব্যাতিরেকে (m-বনাম-n ম্যাট্রিক্স যার জন্য m ≠ n) অন্যান্য ম্যাট্রিক্সের বিপরীত ম্যাট্রিক্স থাকে না। তা স্বত্বেও, কোন কোন ক্ষেত্রে ঐসব ম্যাট্রিক্সের বাম-বিপরীত অথবা ডান-বিপরীত ম্যাট্রিক্স থাকতে পারে। যদি m-বনাম-n হয়, এবং এর ক্রম হয়, তবে এর একটি বাম-বিপরীত ম্যাট্রিক্স আছে: একটি ম্যাট্রিক্স যেন হয়। যদি এর ক্রম হয়, তবে এর একটি ডান-বিপরীত ম্যাট্রিক্স আছে: একটি ম্যাট্রিক্স যেন হয়।
ম্যাট্রিক্স বিপরীতকরণ হচ্ছে ম্যাট্রিক্স নির্ণয়ের প্রক্রিয়া, যা কোন প্রদত্ত বিপরীতযোগ্য ম্যাট্রিক্স এর জন্য, উপরিল্লিখিত সমীকরণটিকে সিদ্ধ করে।
যদিও সচরাচর বাস্তব বা জটিল সংখ্যার ক্ষেত্রেই সংজ্ঞা দেওয়া হয়, তবে সকল সংজ্ঞাই যে কোন চক্রের (rings) ম্যাট্রিক্সের জন্যও দেওয়া যায়। তবে, চক্রটি বিনিময়যোগ্য হলে, বর্গ ম্যাট্রিক্সের বিপরীতযোগ্য হওয়ার শর্ত হচ্ছে এর নির্নায়কটি ঐ চক্রের মধ্যে বিপরীতযোগ্য হতে হবে, যা সাধারণত অশূন্য হওয়ার শর্ত অপেক্ষা কঠিনতর শর্ত। কোন অ-বিনিময়যোগ্য চক্রের ক্ষেত্রে, গতানুগতিক নির্ণায়ক সংজ্ঞায়িত নয়। বাম-বিপরীত বা ডান-বিপরীতের অস্তিত্ব থাকার শর্তাবলি চক্রের জন্য জটিলতর কেননা, ক্রম এর ধারণা কোন চক্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
কোন বিপরীত ম্যাট্রিক্সের সেট এবং ম্যাট্রিক্স গুণনের প্রক্রিয়াটি একত্রে একটি গুচ্ছ (group) গঠন করে, যা মাত্রার একটি সাধারণ রৈখিক গুচ্ছ।
ধরা যাক, কোন ক্ষেত্র-তে, একটি ম্যাট্রিক্স (যেমন- বাস্তব সংখ্যার ক্ষেত্র )। তাহলে নিচের বাক্যগুলো সমতুল্য, অর্থাৎ, কোন প্রদত্ত ম্যাট্রিক্সের ক্ষেত্রে হয় সবগুলো সত্য অথবা সবগুলোই মিথ্যা:
বিপরীতযোগ্য, অর্থাৎ এর একটি বিপরীত ম্যাট্রিক্স আছে, একক নয়, বা অবিচ্যুত (non-degenerate)।
ম্যাট্রিক্সটি অভেদ ম্যাট্রিক্স এর সারি-সমতুল্য (row-equivalent)।
ম্যাট্রিক্সটি অভেদ ম্যাট্রিক্স এর কলাম-সমতুল্য।
এর -সংখ্যক কীলক-অবস্থান (pivot position) আছে।
। সাধারণভাবে, কোন বিনিময়যোগ্য চক্রে একটি বর্গ ম্যাট্রিক্স অ-বিপরীতযোগ্য হবে যদি ও কেবল যদি, তার নির্ণায়ক ঐ চক্রে একটি একক হয়।
এর পূর্ণ ক্রম (rank) থাকে; অর্থাৎ, ক্রম ।
সমীকরণ এর কেবল নগণ্য সমাধান বিদ্যমান।
এর কার্নেল (সমাধান জোট) নগণ্য, অর্থাৎ, এর উপাদান হিসেবে কেবলমাত্র শূন্য ভেক্টর থাকে, । Null।
এর অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেক এর জন্য, এর ঠিক একটি সমাধান আছে।
এর কলামগুলো রৈখিকভাবে স্বাধীন।
এর কলামগুলোর ব্যাপ্তি । Col = ।
এর কলামগুলো এর ভিত্তি গঠন করে।
এর রৈখিক রূপান্তর এর মধ্যে এক-এক ও সার্বিক প্রকৃতির (bijective i.e. one-to-one and onto function)।
এমন একটি ম্যাট্রিক্স আছে যেন ।
বিম্ব ম্যাট্রিক্স বিপরীতযোগ্য (এজন্য এর সারিসমূহ রৈখিকভাবে স্বাধীন, ব্যপ্তি , এবং এর ভিত্তি গঠন করে)।
শূন্য (0) সংখ্যাটি এর কোন আইগেন-মান নয়।
ম্যাট্রিক্স -কে উপাদান ম্যাট্রিক্সের সসীম গুণফল আকারে প্রকাশ করা যায়।
ম্যাট্রিক্স এর একটি বাম-বিপরীত (অর্থাৎ, এমন একটি ম্যাট্রিক্স আছে যেন হয়) অথবা ডান-বিপরীত (অর্থাৎ, এমন একটি ম্যাট্রিক্স আছে যেন হয়) ম্যাট্রিক্স বিদ্যমান, উভয়ই বিদ্যমান থাকলে ।
অন্যান্য বৈশিষ্ট্যাবলি
এছাড়াও, কোন বিপরীত ম্যাট্রিক্স এর জন্য নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্য গুলো সত্য:
;
, অশূন্য স্কেলার এর জন্য;
, যেখানে + দ্বারা মুর-পেনরোজ বিপরীত ম্যাট্রিক্স বোঝানো হয়, এবং একটি ভেক্টর।
;
যে কোন বিপরীত ম্যাট্রিক্স এবং এর জন্য, । আরও সাধারণভাবে, যদি বিপরীত ম্যাট্রিক্স হয়, তাহলে ;
।
কোন ম্যাট্রিক্স এর বিপরীত ম্যাট্রিক্স এর সারিগুলোর সাথে এর কলামসমূহ অর্থোনরমাল (পরস্পর লম্ব একক ভেক্টর)। এটা দেখার জন্য, ধরা যাক, , যেখানে এর সারিগুলোকে হিসেবে লেখা হয় এবং এর কলামগুলোকে (যখন ) হিসেবে লেখা হয়। তাহলে পরিষ্কারভাবেই, এমন যে কোন দুটি উপাদানের ইউক্লিডীয় স্কেলার গুণফল । কোন কোন ক্ষেত্রে যেখানে এর কলামের সাথে অভিলম্ব (অর্থোগোনাল) ভেক্টরের সেট (অর্থোনরমাল ভেক্টর না-ও হতে পারে) জানা থাকে, সেক্ষেত্রে এই ধর্ম কাজে লাগিয়ে কোন বর্গ ম্যাট্রিক্সের বিপরীত ম্যাট্রিক্স গঠন করা যায়, এবং এই প্রাথমিক সেটে পুনরাবৃত্তিমূলক গ্রাম-স্মিট প্রক্রিয়া (Gram-Schmidt process) প্রয়োগ করে বিপরীত ম্যাট্রিক্স এর সারিসমূহ নির্ণয় করা যায়।
কোন ম্যাট্রিক্স যা তার নিজেরই বিপরীত ম্যাট্রিক্স যেন এবং , তাকে বিজড়িত ম্যাট্রিক্স (involutory matrix) বলা হয়।
অ্যাডজুগেট এর সাথে সম্পর্ক
কোন ম্যাট্রিক্স এর অ্যাডজুগেট ব্যবহার করে ঐ ম্যাট্রিক্স এর বিপরীত ম্যাট্রিক্স নিম্নরূপে নির্ণয় করা যায়:
যদি একটি বিপরীতযোগ্য ম্যাট্রিক্স হয়, তাহলে
।
অভেদ ম্যাট্রিক্স এর সাথে সম্পর্ক
ম্যাট্রিক্স গুণনের সংযোজনশীলতা থেকে পাওয়া যায় যে, যদি
বাস্তব সংখ্যাক্ষেত্রে, এর উপসেট হিসেবে বিবেচনা করা যায়, এমন কোন একক ম্যাট্রিক্সের সেট একটি ফাঁকা সেট হবে, অর্থাৎ, এর ল্যাবেগ পরিমাপ শূন্য। এটা সত্য এজন্য যে, একক ম্যাট্রিক্সসমূহ নির্ণায়ক ফাংশনের মূল। এটি একটি অবিচ্ছিন্ন ফাংশন, কেননা এটি ম্যাট্রিক্সের ভুক্তি/ উপাদানে একটি বহুপদী। অতএব, পরিমাপ তত্ত্বের ভাষায় প্রায় সকল ম্যাট্রিক্সই বিপরীতযোগ্য।
এছাড়াও, সকল ম্যাট্রিক্সের টপোলজিক্যাল স্থানে, বিপরীত ম্যাট্রিক্সসমূহ একটি ঘন উন্মুক্ত সেট। অনুরূপভাবে, কোন ম্যাট্রিক্সের স্থানে, একক ম্যাট্রিক্সের সেট আবদ্ধ এবং কোথাও-ই ঘন নয়।
অবশ্য প্রায়োগিক ক্ষেত্রে অ-বিপরীতযোগ্য ম্যাট্রিক্স পাওয়া যেতে পারে। সাংখ্যিক বিশ্লেষণে, যে সকল বিপরীতযোগ্য কিন্তু অ-বিপরীতযোগ্য ম্যাট্রিক্সের নিকটবর্তী, সেগুলোও সমস্যা উদ্রেককারী হতে পারে; এ ধরনের ম্যাট্রিক্সকে মন্দ-শর্তাধীন বলা হয়ে থাকে।
উদাহরণ
নিচের ২x২ ম্যাট্রিক্সটি বিবেচনা করা যাক:
ম্যাট্রিক্স বিপরীতযোগ্য। এটা দেখার জন্য নির্ণায়কটির মান, বের করা যায়, যা অশূন্য।
অ-বিপরীতযোগ্য, বা একক ম্যাট্রিক্সের উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক,
ম্যাট্রিক্স এর নির্নায়ক শূন্য, যা কোন ম্যাট্রিক্সের অ-বিপরীতযোগ্য হওয়ার জন্য আবশ্যক ও পর্যাপ্ত শর্ত।
ম্যাট্রিক্স বিপরীতকরণ পদ্ধতিসমূহ
গাউসীয় অপনয়ন
গাউস-জর্ডান অপনয়ন একটি অ্যালগরিদম, যা ব্যবহার করে কোন ম্যাট্রিক্স বিপরীতযোগ্য কি-না তা বের করা যায় এবং বিপরীত ম্যাট্রিক্স নির্ণয় করা যায়। বিকল্প একটি পন্থা হচ্ছে নিম্ন-ঊর্ধ্ব বিশ্লেষণ (LU decomposition), যার মাধ্যমে ঊর্ধ্ব ও নিম্ন ত্রিভুজাকার ম্যাট্রিক্স তৈরি হয়, যেগুলোর বিপরীতকরণ সহজতর।
নিউটনের পদ্ধতি
গৌণিক বিপরীতক অ্যালগরিদমে ব্যবহৃত নিউটনের পদ্ধতির একটি সাধারণ রূপ ব্যবহার করা সুবিধাজনক হতে পারে, যদি উপযুক্ত সূচনা মান বাছাই করা যায়:
।
সূচনা মান বাছাইয়ের কয়েকটি উপায় পাওয়া যায় ভিক্টর পান এবং জন রিফ এর কৃত কাজে।[২][৩] এমন একটি পন্থার সংক্ষিপ্তসার বাইট সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।[৪]
নিউটনের পদ্ধতি বিশেষভাবে কার্যকরী যখন কোন সম্পর্কযুক্ত ম্যাট্রিক্স গোষ্ঠী পর্যাপ্তভাবে, ওপরের হোমোটপি'র (সমস্থানিক অবিচ্ছিন্ন ফাংশন) জন্য উল্লিখিত অনুক্রমের ন্যায় আচরণ করে: কখনো কখনো নতুন বিপরীত ম্যাট্রিক্স পরিমার্জনের জন্য ভালো সূচনা বিন্দু হতে পারে, পূর্ববর্তী ম্যাট্রিক্সের ইতোমধ্যে নির্ণীত বিপরীত ম্যাট্রিক্সটি, যা বর্তমান ম্যাট্রিক্সের সাথে অনেকটা সাদৃশ্যপূর্ণ, যেমন- ডেনম্যান-বিভার্স পুনরাবৃত্তি পদ্ধতিতে, ম্যাট্রিক্সের বর্গমূল নির্ণয়ে ব্যবহৃত বিপরীত ম্যাট্রিক্সের অনুক্রম-জোড়; এতে প্রতিটি নতুন ম্যাট্রিক্সে এক দফার বেশি পুনরাবৃত্তি করা লাগতে পারে, যদি সেগুলো একটা ম্যাট্রিক্সই যথেষ্ট হবার মত যথেষ্ট সাদৃশ্যপূর্ণ না হয়। গাউস-জর্ডান অ্যালগরিদম, যেখানে কম্পিউটারের ত্রুটিপূর্ণ গণনা-পদ্ধতির কারণে ক্ষুদ্র ত্রুটির উদ্রেক ঘটে, তা পরিমার্জনের জন্যও নিউটনের পদ্ধতি কার্যকরী।
কেইলি-হ্যামিলটন পদ্ধতি
কেইলি-হ্যামিলটন উপপাদ্য, এর বিপরীত ম্যাট্রিক্সকে , এর পদাঙ্ক (traces; মুখ্যকর্ণের উপাদানগুলোর সমষ্টি) ও শক্তির মাধ্যমে প্রকাশ করে।[৫]
যেখানে হচ্ছে এর মাত্রা, হচ্ছে ম্যাট্রিক্স এর পদাঙ্ক যা মুখ্যকর্ণের উপাদানগুলোর সমষ্টি। এর সমষ্টি নেওয়া হয় এবং সকল এর সেটজুড়ে, যা রৈখিক ডায়োফ্যান্টাইন সমীকরণ মেনে চলে।
।
এই সূত্রটি আর্গুমেন্ট বিশিষ্ট, সম্পূর্ণ বেল বহুপদী দ্বারাও লেখা যায়:
।
আইগেন-বিশ্লেষণ
যদি কোন ম্যাট্রিক্স আইগেন-বিশ্লেষণযোগ্য হয়, এবং যদি এর কোন আইগেন-মান শূন্য না হয়, তাহলে একটি বিপরীতযোগ্য ম্যাট্রিক্স ও এর বিপরীত ম্যাট্রিক্সটি হচ্ছে-
যেখানে হচ্ছে বর্গ ম্যাট্রিক্স যার -তম কলাম হচ্ছে এর আইগেন-ভেক্টর , এবং হচ্ছে একটি কর্ণ ম্যাট্রিক্স যার কর্ণ উপাদানগুলি হচ্ছে এর সংশ্লিষ্ট আইগেন-মানসমূহ, অর্থাৎ, । এছাড়াও, যেহেতু একটি কর্ণ ম্যাট্রিক্স, এর বিপরীত ম্যাট্রিক্স নির্ণয় করা বেশ সহজ:
।
চোলেস্কি বিশ্লেষণ
যদি ম্যট্রিক্স ধনাত্মক নির্দিষ্ট হয়, তাহলে এর বিপরীত ম্যাট্রিক্স পাওয়া যায় নিম্নরূপে:
যেখানে হচ্ছে এর নিম্ন-ত্রিভুজাকার চোলেস্কি বিশ্লেষণ, এবং দ্বারা এর অনুবন্ধী বিম্ব (conjugate transpose) ম্যাট্রিক্স নির্দেশ করে।
বিশ্লেষণাত্মক সমাধান
সহগুণক (cofactor) ম্যাট্রিক্সের বিম্ব, যা অ্যাডজুগেট ম্যাট্রিক্স নামে পরিচিত, সেটিও ক্ষুদ্র কোন ম্যাট্রিক্সের বিপরীত ম্যাট্রিক্স নির্ণয়ের কার্যকর উপায় হতে পারে, কিন্তু বৃহৎ কোন ম্যাট্রিক্সের ক্ষেত্রে এই পুনরাবৃত্তিমূলক (recursive) পদ্ধতিটি তেমন কার্যকর নয়। বিপরীত ম্যাট্রিক্স নির্ণয়ের জন্য আমাদেরকে সহগুণকের ম্যাট্রিক্স নির্ণয় করতে হয়:
।
যেন
।
যেখানে হচ্ছে এর নির্ণায়ক, হচ্ছে সহগুণক ম্যাট্রিক্স, এবং দ্বারা ম্যাট্রিক্সের বিম্ব নির্দেশ করা হয়।
২ × ২ ম্যাট্রিক্স বিপরীতকরণ
উপরিল্লিখিত সহগুণক সমীকরণ থেকে ২×২ ম্যাট্রিক্সের জন্য নিম্নোক্ত ফলাফল পাওয়া যায়। এসব ম্যাট্রিক্সের বিপরীতকরণ নিম্নরূপে করা যায়:[৬]
।
এটা সম্ভব হয় একারণে যে, হচ্ছে প্রদত্ত ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়কের বিপরীত রাশি, এবং এই একই কৌশল অন্যান্য ক্রমের ম্যাট্রিক্সের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যায়।
কেইলি-হ্যামিলটন পদ্ধতি থেকে পাওয়া যায়:
।
৩ × ৩ ম্যাট্রিক্স বিপরীতকরণ
গণনার দিক থেকে কার্যকর ৩×৩ ম্যাট্রিক্স বিপরীতকরণের একটি উপায় হচ্ছে-
(যেখানে স্কেলার এর সাথে, ম্যাট্রিক্স এর সংমিশ্রণ অনুচিত)।
যদি নির্ণায়ক অশূন্য হয়, তাহলে ম্যাট্রিক্সটি বিপরীতযোগ্য হয়, যেখানে উপরিল্লিখিত ম্যাট্রিক্সের ডান পাশের মধ্যবর্তী ম্যাট্রিক্সটির উপাদানগুলির মান হবে,
সারুসের নিয়ম প্রয়োগ করে নিম্নোক্তভাবে এর নির্ণায়ক বের করা যায়:
।
কেইলি-হ্যামিলটন বিশ্লেষণ থেকে পাওয়া যায়:
।
সাধারণ ৩×৩ বিপরীত ম্যাট্রিক্সকে ক্রস গুণফল এবং ত্রিমাত্রিক গুণফল দ্বারা অর্থপূর্ণভাবে প্রকাশ করা যায়। যদি কোন ম্যাট্রিক্স (কলাম ভেক্টর দ্বারা গঠিত) বিপরীতযোগ্য হয়, তাহলে এর বিপরীত ম্যট্রিক্সটি হবে:
।
লক্ষ্য রাখতে হবে যে, হচ্ছে , , এবং এর ত্রিমাত্রিক গুণফলের সমান- যা এর সারি বা কলাম দ্বারা গঠিত প্যারালেলেপাইপেড (parallelepiped) এর আয়তন এর সমান:
।
সূত্রটির যথার্থতা যাচাই করা যায় ক্রস ও ত্রিমাত্রিক গুণফলের বৈশিষ্ট্যাবলি থেকে এবং গুচ্ছের (group) জন্য সেগুলো ব্যবহার করলে, বাম ও ডান বিপরীতদ্বয় সর্বদা সমাপতিত হয়। সজ্ঞামূলকভাবে, ক্রস গুণফল হবার কারণে এর প্রতিটি সারিই এর বাকি দুই কলামের সাথে লম্বভাবে থাকে (ফলস্বরূপ, এর কর্ণ-বহির্ভূত পদগুলো শূন্য হয়)।
দ্বারা ভাগ করলে,
এর কর্ণস্থ পদগুলোর মান হয় ১।
উদাহরণস্বরূপ, প্রথম কর্ণ হচ্ছে:
।
৪ × ৪ ম্যাট্রিক্স বিপরীতকরণ
মাত্রা বাড়তে থাকলে, এর বিপরীত ম্যাট্রিক্সের রাশিগুলো জটিল হতে থাকে। n = 4 হলে, কেইলি-হ্যামিলটন পদ্ধতি থেকে এমন একটি রাশি পাওয়া যায় যা ব্যবহারযোগ্য:
।
জোটবদ্ধ বিপরীতকরণ
নিম্নোক্ত বিশ্লেষণাত্মক বিপরীতকরণ সূত্র ব্যবহার করে জোটবদ্ধভাবেও (blockwise) বিপরীত ম্যাট্রিক্স নির্ণয় করা যায়:
যেখানে , এবং হচ্ছে যেকোন আকারের ম্যাট্রিক্স উপজোট ( অবশ্যই বর্গ ম্যাট্রিক্স হতে হবে যেন তার বিপরীতকরণ সম্ভব হয়। এছাড়াও, এবং একক ম্যাটিক্স নয়)।[৭] এই কৌশলটি বিশেষত সুবিধাজনক যদি একটি কর্ণ ম্যাট্রিক্স এবং ( এর শুর পরিপূরক) একটি ক্ষুদ্রাকার ম্যাট্রিক্স হয়, কেননা এই দুটি ম্যাট্রিক্সেরই কেবল বিপরীত নির্ণয় করতে হয়।
এই পদ্ধতিটি বেশ কয়েকবার পুনরুদ্ভাবিত হয় এবং হান্স বোল্টজ (১৯২৩),[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যিনি ভূগাণিতিক ম্যাট্রিক্সের বিপরীতকরণে এটা ব্যবহার করেন আর তাদেউশ বানাশেভিচ (১৯৩৭), যিনি এর সাধারণ রূপ দান ও যথার্থতা প্রমাণ করেন; তাদের জন্যই পদ্ধতিটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
শূন্যতার উপপাদ্য অনুসারে, এর শূন্যতা এর বিপরীত ম্যাট্রিক্সের ডান দিকের নিম্নভাগের উপজোটের শূন্যতার সমান হয়, এবং এর শূন্যতা এর বিপরীত ম্যাট্রিক্সের ডান দিকের ঊর্ধ্বভাগের শূন্যতার সমান হয়।
যে বিপরীতকরণ প্রক্রিয়ায় ওপরের সমীকরণ (1) পাওয়া যায়, সেখানে ম্যাট্রিক্স জোট অপারেশন প্রথমে ও এর ওপর প্রয়োগ করা হয়। তার পরিবর্তে যদি ও এর ওপর প্রথমে প্রযুক্ত হয়, যেখানে এবং একক-নয়,[৮] তাহলে পাওয়া যায়,
সমীকরণ (1) ও (2) কে সমীকৃত করে পাওয়া যায়,
যেখানে সমীকরণ (3) হচ্ছে উডবারি ম্যাট্রিক্স অভেদ, যা দ্বিপদী বিপরীত উপপাদ্যের সমতুল্য।
যেহেতু কোন ম্যাট্রিক্সের জোটবদ্ধ বিপরীতকরণ প্রক্রিয়ায় দুটি অর্ধ-আকৃতির ম্যাট্রিক্সের বিপরীতকরণ ও তাদের মধ্যে ৬টি গুণন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়, সেহেতু এটা দেখানো যায় যে, জোটবদ্ধ বিপরীতকরণে যে বিভাজন ও বিজয় অ্যালগরিদম (divide-and-conquer algorithm) ব্যবহৃত হয়, তার সময়-সংক্রান্ত জটিলতা, অভ্যন্তরীণভাবে ব্যবহৃত ম্যাট্রিক্স গুণন অ্যালগরিদমের মতোই।[৯] অপারেশনের জটিলতা বিশিষ্ট ম্যাট্রিক্স গুণন অ্যালগরিদমের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যেখানে সর্বনিম্ন প্রমাণিত সীমা হচ্ছে ।[১০]
এই সূত্রটি উল্লখেযোগ্যভাবে সরল হয়ে যায় যখন ঊর্ধ্ব-ডান জোট ম্যাট্রিক্স একটি শূন্য ম্যাট্রিক্স হয়। এই সূত্রটি কার্যকর যখন এবং এর বিপরীতকরণ সূত্রদ্বয় তুলনামূলভাবে সরল (অথবা ছদ্ম-বিপরীত যেখানে সকল জোট বর্গ ম্যাট্রিক্স নয়)। এই বিশেষ ক্ষেত্রে, জোট ম্যাট্রিক্স বিপরীতকরণের উপরিল্লিখিত সম্পূর্ণ সাধারণ সূত্রটি দাঁড়ায়,
।
নিউম্যান ধারার মাধ্যমে
যদি ম্যাট্রিক্স এর এমন কোন বৈশিষ্ট্য থাকে যে,
,
তাহলে ম্যাট্রিক্সটি একক-নয় (non-singular) এবং এর বিপরীত ম্যাট্রিক্সটিকে নিউম্যান ধারা দ্বারা প্রকাশ করা যায়:[১১]
।
সমষ্টির পদসংখ্যা কমিয়ে আনলে একটি "কাছাকাছি" বিপরীত ম্যাট্রিক্স পাওয়া যায়, যা একটি প্রাক-শর্তারোপক (pre-conditioner) হিসেবে উপযোগী। নিউম্যান ধারাকে একটি জ্যামিতিক ধারা হিসেবে লিখলে কোন হ্রাসকৃত ধারা নিয়ে এক্সপোনেনসিয়ালভাবে অগ্রসর হওয়া যায়। যেমন- এটি
- কে সিদ্ধ করে।
অতএব, সমষ্টির সংখ্যক পদ নির্ণয়ে কেবলমাত্র সংখ্যক ম্যাট্রিক্স গুণন করা দরকার হয়।
আরও সাধারণভাবে, যদি কোন বিপরীতযোগ্য ম্যাট্রিক্স এর "নিকটবর্তী" হয়, এই অর্থে যে,
সেক্ষেত্রে একক-নয় এবং এর বিপরীত হচ্ছে
।
যদি এমন হয় যে, এর ক্রম (rank) ১ হয়, তাহলে এর সরলীকৃত রূপ দাঁড়ায়,
।
p-adic অনুমান
যদি এমন একটি ম্যাট্রিক্স হয় যার সহগসমূহ পূর্ণ বা মূলদ সংখ্যা, এবং কোন ইচ্ছামাফিক-নির্ভুলতা বিশিষ্ট গণনা-পদ্ধতিতে এর সমাধান খোঁজা হয়, তাহলে কোন p-adic অনুমান পদ্ধতি তার নির্ভুল (exact) সমাধানের দিকে অভিসারী হয়, যেখানে প্রমিত ম্যাট্রিক্স গুণন ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।[১২] এই পদ্ধতিটি p-adic অনুমানের ডিক্সন পদ্ধতির মাধ্যমে -সংখ্যক রৈখিক ব্যবস্থা সমাধানের ওপর নির্ভরশীল এবং ইচ্ছামাফিক-নির্ভুলতা বিশিষ্ট ম্যাট্রিক্স অপারেশনের জন্য বিশেষায়িত সফটওয়্যার, যেমন- আইএমএল এ সহজলভ্য।[১৩]
বিপরীত ম্যাট্রিক্সের অন্তরক
ধরা যাক, কোন বিপরীতযোগ্য ম্যাট্রিক্স একটি পরামিতিক রাশি এর ওপর নির্ভরশীল। তাহলে এর সাপেক্ষে এর বিপরীত ম্যাট্রিক্সের অন্তরক হবে
।
এর বিপরীত ম্যট্রিক্সের অন্তরকের জন্য ওপরের রাশি প্রতিপাদন করতে হলে, বিপরীত ম্যাট্রিক্সের সংজ্ঞা এর ব্যবকলন করা যায় এবং তারপর এর বিপরীত ম্যাট্রিক্সের জন্য সমাধান করা হয়:
।
উভয় পক্ষ হতে বিয়োগ করে এবং ডানপাশে দ্বারা গুণ করলে বিপরীত ম্যাট্রিক্সটির অন্তরকের যথার্থ রাশিটি পাওয়া যায়:
।
অনুরূপভাবে, যদি একটি ক্ষুদ্র সংখ্যা হয় তাহলে,
।
আরও সাধারণভাবে, যদি
তাহলে,
।
কোন ধনাত্মক সংখ্যা হলে,
অতএব,
সাধারণীকৃত বিপরীত ম্যাট্রিক্স
সাধারণীকৃত বিপরীত ম্যাট্রিক্সসমূহ (যেমন- মুর-পেনরোজ বিপরীত ম্যাট্রিক্স), যাদেরকে যেকোন ম্যাট্রিক্সের জন্য সংজ্ঞায়িত করা যায়, তাদের মধ্যে বিপরীত ম্যাট্রিক্সের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
প্রয়োগ
অধিকাংশ বাস্তব প্রয়োগের ক্ষেত্রেই, কোন রৈখিক সমীকরণ জোটের সমাধানের জন্য ম্যাট্রিক্সের বিপরীতকরণ জরুরি নয় ; তবে কোন অনন্য সমাধানের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ম্যাট্রিক্সটি বিপরীতযোগ্য হওয়া আবশ্যক।
বিশ্লেষণ পদ্ধতি যেমন- LU বিশ্লেষণ, বিপরীতকরণের তুলনায় দ্রুততর, এবং বিশেষ শ্রেণিভুক্ত রৈখিক ব্যবস্থাসমূহের জন্য বেশ কিছু দ্রুতগতির অ্যালগরিদম তৈরি হয়েছে।
রিগ্রেশন/ লঘিষ্ঠ বর্গ
অজানা রাশির ভেক্টর নির্ণয়ে যদিও প্রত্যক্ষভাবে কোন বিপরীত ম্যাট্রিক্সের প্রয়োজন হয় না, তবে তাদের নির্ভুলতা যাচাইয়ের সবচেয়ে সহজ উপায় এটাই, যা কোন বিপরীত ম্যাট্রিক্সের কর্ণ থেকে পাওয়া যায় (অজানা রাশির পশ্চাদ্বর্তী-সহভেদাংক (posterior-covariance) ম্যাট্রিক্স)। যাই হোক, অনেক ক্ষেত্রেই কোন বিপরীত ম্যাট্রিক্সের শুধুমাত্র কর্ণ উপাদানগুলো নির্ণয়ের জন্য দ্রুততর অ্যালগিরদম জানা রয়েছে।[১৪]
প্রকৃত-সময় প্রতিরূপ গঠনে বিপরীত ম্যাট্রিক্স
ম্যাট্রিক্স বিপরীকরণ কম্পিউটার গ্রাফিক্সে, বিশেষ করে ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্স ও ত্রিমাত্রিক প্রতিরূপে (সিমুলেশনে) উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। এর উদাহরণের মধ্যে রয়েছে স্ক্রিন-টু-ওয়ার্ল্ড রশ্মি প্রক্ষেপণ, ওয়ার্ল্ড-টু-সাবস্পেস-টু-ওয়ার্ল্ড বস্তু রূপান্তর, এবং ভৌত প্রতিরূপসমূহ।
MIMO তারহীন যোগাযোগে বিপরীত ম্যাট্রিক্স
তারহীন যোগাযোগব্যবস্থায় মাইমো (MIMO: Multiple-Input, Multiple-Output) প্রযুক্তিতে বিপরীত ম্যাট্রিক্স একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি MIMO ব্যবস্থায় N-সংখ্যক প্রেরক ও M-সংখ্যক গ্রাহক অ্যান্টেনা থাকে। একই কম্পাঙ্ক বর্ণালিতে বিদ্যমান অনন্য সংকেতসমূহকে N-প্রেরক অ্যান্টেনার মাধ্যমে পাঠানো হয় এবং M-গ্রাহক অ্যান্টেনার মাধ্যমে গৃহীত হয়। প্রতিটি গ্রাহক অ্যান্টেনায় পৌঁছানো সংকেত হবে, N-সংখ্যক প্রেরিত সংকেতের একটি রৈখিক বিন্যাস, যা একটি প্রেরণ-ম্যাট্রিক্স গঠন করে। গ্রাহক যেন প্রেরিত তথ্যের মর্মোদ্ধার করতে পারে সেজন্য, ম্যাট্রিক্সটি বিপরিতযোগ্য হওয়া বাঞ্ছনীয়।