বেগুনী বক

পাখির প্রজাতি

বেগুনী বক (Ardea purpurea) বক পরিবারের বিস্তৃত প্রজাতির একটি পাখি। এর বৈজ্ঞানিক নাম এসেছে লাতিন আরদেয়া (ardea) "বক" এবং পুরপুরা (purpureus), "বেগুনী বর্ণ" থেকে।[২] আফ্রিকা ছাড়াও, মধ্য এবং দক্ষিণ ইউরোপের পাশাপাশি দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায় এই পাখি দেখতে পাওয়া যায়।

বেগুনী বক
নগরহোল জাতীয় উদ্যান, ভারত
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ:Animalia
পর্ব:Chordata
উপপর্ব:Vertebrata
শ্রেণী:Aves
বর্গ:Pelecaniformes
পরিবার:Ardeidae
গণ:Ardea
প্রজাতি:purpurea
দ্বিপদী নাম
Ardea purpurea
(Linnaeus, 1766)
Range of A. purpurea     Breeding      Resident     Non-breeding
Ardea purpurea

অতি পরিচিত ধূসর বকের মতো অনেকটা দেখতে হলেও বেগুনী বক আকারে কিছুটা ছোট। সাধারণত জলাশয়ের আশেপাশে এই পাখির বসবাস। মাছ, ব্যাঙ ও জলজ পোকা বেগুনী বকের প্রধান শিকার।

বর্ণনা

ছানাসহ প্রাপ্ত বয়স্ক বেগুনী বক

বেগুনি বক আকারে বড়। দৈর্ঘ্যে ৭৮–৯৭ সেমি (৩১–৩৮ ইঞ্চি) থেকে দাড়ানো অবস্থায় উচ্চতা ৭০ থেকে ৯৪ সেমি (২৮ থেকে ৩৭ ইঞ্চি) পর্যন্ত হতে পারে। বিস্তৃত ডানা প্রশস্ততা প্রায় ১২০–১৫২ সেমি (৪৭–৬০ ইঞ্চি)। অবশ্য আকারে তুলনায় এই পাখির ওজন অনেক কম, মাত্র  ০.৫ থেকে ১.৩৫ কেজি (১.১ থেকে ৩.০ পা)। ধূসর বক অপেক্ষা এই বক আকারে কিছুটা ছোট। লালচে-বাদামী গাত্রবর্ণ এবং গাঢ় ধূসর পিঠ দ্বারা পূর্ণবয়স্ক বেগুনি বককে আলাদা করা যায়। এর বাদামী হলুদ ঠোট সোজা ও শক্তিশালী। চোখ হলুদ রঙের। এই বকের পা সামনের দিকে বাদামী এবং পেছনের দিকে হলুদাভ।[৩] বেগুনী বক সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্তই বেশি কর্মময় থাকে। জলাশয়ের আশেপাশে থাকায় মূলতঃ জলজ প্রাণী এই পাখির প্রধান শিকার। মাছ সরীসৃপ ছাড়াও ছোটখাটো স্তন্যপায়ী প্রাণীদের এরা শিকার করে।[৩] প্রজননের সময় দল বেধে থাকতে দেখা গেলেও মাঝে মাঝে এদের সম্পূর্ণ আলাদাভাবে বাসা তৈরি করে থাকতে দেখা যায়। ডিমের রঙ নীলাভ-সবুজ। একসাথে সাধারণত চার/পাঁচটি ডিম দেয়। মাঝে মাঝে অবশ্য ডিমের সংখ্যা ৭/৮ টিও হয়। মা ও বাবা পাখি উভয়েই ২৪ থেকে ২৮ দিন পর্যায়ক্রমে ডিমে তা দেয়। দুই মাসের মধ্যেই ছানারা সম্পূর্ণভাবে স্বাধীনভাবে চলাফেরা শুরু করে। [৩]

ট্যাক্সোনমি

বেগুনি বকের মোট চারটি উপপ্রজাতি রয়েছে:[৪]

  • A. p. purpureaকার্ল লিনিয়াস, ১৭৬৬: উপপ্রজাতি, আফ্রিকা, ইউরোপ, দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়া থেকে পূর্ব এশিয়ার কাজাখস্তান পর্যন্ত বিস্তৃতি।
  • A. p. bourneiদে নরোই, ১৯৬৬: বোর্নের বক। কাবু ভেদি দ্বীপে পাওয়া যায় (কিছু কিছু গবেষক পুরপুরার বলে উল্লেখ করলেও অন্য কিছু গবেষক আরদেয়া বোর্নাই (Ardea bournei ) নামকরণ করেছেন।)।[৫]
  • A. p. madagascariensis – ভ্যান উর্ট, ১৯১০: মাদাগাস্কারে পাওয়া যায়।
  • A. p. manilensis – মেয়েন, ১৮৩৪: এশিয়ার ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে শুরু করে ফিলিপিনের পশ্চিম ও ইন্দোনেশিয়ায় পাওয়া যায়। এশিয়ার উত্তরে রাশিয়ার প্রিমরস্কি ক্রাই পর্যন্ত উপলব্ধ্য। 

বর্তমান অবস্থা

ধারণা করা হয় বর্তমানে প্রায় ২৭০,০০০ থেকে ৫৭০,০০০টি বেগুনী বক টিকে রয়েছে। ধীরে ধীরে অবশ্য এই সংখ্যা কমের দিকে। প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন এই পাখিকে স্বল্প পর্যায়ের ঝুঁকিতে আছে বলে চিহ্নিত করেছে। যেহেতু এখন পর্যন্ত বেগুনি বক আদতেই খুব ঝুকির মুখে আছে কিনা তা পর্যাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। মূলতঃ জলাশয় সংকট বেগুনি বকের সংখ্যা ঝুঁকিতেথাকার প্রধান কারণ।[১] বেগুনি বক আফ্রিকাইউরেশিয়ার মধ্যে হওয়া পাখির প্রজাতি নিয়ে করা চুক্তির মাঝে অন্তর্ভুক্ত।[৬]

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী