মার্ক টেলর

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

মার্ক অ্যান্থনি টেলর, এও (ইংরেজি: Mark Taylor; জন্ম: ২৭ অক্টোবর, ১৯৬৪) নিউ সাউথ ওয়লসের লিটনে জন্মগ্রহণকারী সাবেক ও বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। টাবি বা টাবস ডাকনামে পরিচিত মার্ক টেলর অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অধিনায়কেরও দায়িত্ব পালন করেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া দলের একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার ও উত্থানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বৈশ্বিক পরিচিতি পেয়েছেন। তার অধিনায়কত্ব ছিল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ও অত্যন্ত কার্যকরী। কিন্তু তুলনামূলকভাবে একদিনের আন্তর্জাতিকে তিনি তেমন সফলতা লাভ করতে পারেননি।

মার্ক টেলর
২০১৪ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে মার্ক টেলর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
মার্ক অ্যান্থনি টেলর
জন্ম (1964-10-27) ২৭ অক্টোবর ১৯৬৪ (বয়স ৫৯)
লিটন, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামটাবি, টাবস
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি ব্যাটসম্যান
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৪৬)
২৬ জানুয়ারি ১৯৮৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট২ জানুয়ারি ১৯৯৯ বনাম ইংল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১০৭)
২৬ ডিসেম্বর ১৯৮৯ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই২৪ মে ১৯৯৭ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৮৫-১৯৮৯নিউ সাউথ ওয়েলস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টওডিআইএফসিএলএ
ম্যাচ সংখ্যা১০৪১১৩২৫৩১৭৮
রানের সংখ্যা৭৫২৫৩৫১৪১৭৪১৫৫৪৬৩
ব্যাটিং গড়৪৩.৪৯৩২.২৩৪১.৯৬৩১.৫৭
১০০/৫০১৯/৪০১/২৮৪১/৯৭১/৪৭
সর্বোচ্চ রান৩৩৪*১০৫৩৩৪*১০৫
বল করেছে৪২১৫০১৮
উইকেট
বোলিং গড়২৬.০০৩৮.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট--
সেরা বোলিং১/১১১/৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং১৫৭/০৫৬/০৩৫০/০৯৮/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭

খেলোয়াড়ী জীবন

তিনি ১৯৭২ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের ওয়াগা ওয়াগা এলাকায় স্থানান্তরিত হন। এরপর তিনি লেক আলবার্ট ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেন।[১] ১৯৮৫ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট অভিষেক ঘটে তার।

১৯৮৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামতেন। সফল অধিনায়ক অ্যালান বর্ডারের উত্তরসূরী হিসেবে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার দলের অধিনায়কের গুরুদায়িত্ব পালন করেন। টেস্ট ক্রিকেটসহ একদিনের আন্তর্জাতিক দলে অধিনায়কত্ব করলেও ১৯৯৭ সালে ইংল্যান্ডের কাছে ৩-০ ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়া দল পরাভূত হলে তাকে ওডিআইয়ের অধিনায়কত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি ১০৪টি টেস্টে অংশগ্রহণ করেন। ১৯টি শতক ও ৪০টি অর্ধ-শতকে গড়া ৭,৫২৫ রান করেন ৪৩.৪৯ রান গড়ে। ফার্স্ট স্লিপে অবস্থান করে চমকৎকার ফিল্ডারের ভূমিকা পালন করেন। ১৫৭ ক্যাচ লুফে নিয়ে টেস্ট রেকর্ড স্থাপন করেন। পরবর্তীতে রাহুল দ্রাবিড় তা ভেঙ্গে দেন। ক্যাপ্টেন গ্রাম্পি ডাকনামে পরিচিত অ্যালান বর্ডারের কাছ থেকে তিনি সর্বদাই অকুণ্ঠ সমর্থন কুড়িয়েছেন। টেলরের পূর্বসূরী স্টিভ ওয়াহও অস্ট্রেলিয়া দলকে সাজিয়েছেন ও অগণিত রেকর্ড সৃষ্ট করেছেন।

কীর্তিগাঁথা

বর্ডারের আমলে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অগ্রযাত্রার সূচনা ঘটে যা টেলরের অধিনায়কত্বে চলমান থাকে। ১৯৯৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের কাছে পরাজয়ের পর টেলরের দল স্বদেশ ও বিদেশের প্রত্যেকটি টেস্ট দলের বিপক্ষে সিরিজে জয়ী হয়। ব্যতিক্রম ছিল ভারতে সিরিজ জয়। ক্রিকেটের বাইবেলরূপে স্বীকৃত উইজডেন এ বিষয়ে মন্তব্য করে যে,

টেলর এমনভাবে কথা বলতেন যে তিনি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের মানকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে নিয়ে গেছেন যা সকল স্তরের ক্রিকেটারদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। বর্ডার অস্ট্রেলিয়া দলের পরাজয়কে রোধ করছেন কিন্তু টেলর দলকে বিজয়ী দলে রূপান্তর ঘটিয়েছেন।[২]

টেলর দলের উত্যক্ততারোধে সচেষ্ট হন যা বহিঃর্বিশ্বে বেশ সুনামহানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এরফলে অন্য যে-কোন সময়ের অস্ট্রেলীয় দলের তুলনায় বেশ সুনাম অর্জন করে। তিনি সর্বমোট ৫০ টেস্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তন্মধ্যে দলের জয় ২৬, পরাজয় ১৩ ও বাদ-বাকী ১১ টেস্ট ড্র হয়। ডন ব্র্যাডম্যানভিভ রিচার্ডসের দল ছাড়া এ সাফল্য পূর্বেকার পঞ্চাশ বছরের মধ্য ব্যাপক সাফল্যবাহক।[৩][৪]

অবসর

অ্যাশেজ সিরিজের পর ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৯ তারিখে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন টেলর। অস্ট্রেলিয়া ডে উপলক্ষে ১৯৯৯ সালে তিনি বর্ষসেরা অস্ট্রেলীয় হিসেবে ঘোষিত হন।[৫] ২০০০ সালে অস্ট্রেলিয়ান স্পোর্টস পদক এবং ২০০১ সালে শতবার্ষিকী পদকে ভূষিত হন তিনি।[৬][৭] ২ সেপ্টেম্বর, ২০০২ তারিখে মার্ক টেলর, জন ডাইসন, ফিল এমরি, মাইক হুইটনিজিওফ লসনকে নিউ সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন থেকে আজীবন সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একই বছর টেলরকে স্পোর্ট অস্ট্রেলিয়া হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়াও, ২০০৩ সালে তাকে অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া’র কর্মকর্তারূপে গণ্য করা হয়।[৮][৯]

বর্তমানে তিনি নাইন নেটওয়ার্কে ক্রিকেট ধারাভাষ্যকাররূপে কাজ করছেন। প্রধানত অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত একদিনের আন্তর্জাতিক ও টেস্ট খেলাগুলোয় এ দায়িত্বে রয়েছে। এরফলে তিনি তার পরিবারের সাথে আরও অধিক সময় ব্যয় করতে পারছেন। সাইমন ও’ডনেলের সাথে দ্য ক্রিকেট শো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণসহ ফুজিৎসু এয়ার-কন্ডিশনারের মুখপত্র হিসেবে দায়িত্ব নিয়োজিত রয়েছেন মার্ক টেলর।

সিডনি অঞ্চলসহ এনএসডব্লিউ ক্যাথলিক প্রাইমারি স্কুলের মার্ক টেলর শিল্ড ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় টেলর উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন। ৬ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট ক্লাবের অনুশীলনী মাঠ ওয়েইতারা ওভালের নাম পরবির্তন করে মার্ক টেলর ওভাল নামে পরিবর্তন করা হয়। তিনি ঐ ক্লাবের সাবেক প্রধান স্তরের অধিনায়ক ও আজীবন সদস্যরূপে রয়েছেন।[১০]

তথ্যসূত্র

পাদটীকা

বহিঃসংযোগ

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
অ্যালান বর্ডার
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৯৪-১৯৯৯
উত্তরসূরী
স্টিভ ওয়াহ
🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন