রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার

বৌদ্ধ বিহার

রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার প্রসিদ্ধ বৌদ্ধ বিহার। এই বিহারকে কেন্দ্র করে এক সময় এ অঞ্চলে বৌদ্ধ শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল।[১] মৌর্যবংশের তৃতীয় সম্রাট অশোক এটি স্থাপন করেন। অনেকের কাছে এটি রামকোট বৌদ্ধ বিহার নামেও পরিচিত।[২] রামুতে আরও ৩০টি বৌদ্ধ বিহার থাকলেও এটি বৌদ্ধধর্মালম্বীদের কাছে অধিক গুরত্বপূর্ণ।[৩]

রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার
বিহারের প্রবেশপথ
তথ্য
সম্প্রদায়বৌদ্ধ ধর্ম
প্রতিষ্ঠাকাল২৬৮ খ্রিস্টপূর্ব
প্রতিষ্ঠাতাসম্রাট অশোক
পরিচালকমহাথের কে.শ্রী.জ্যোতিসেন ভিক্ষু
ঠিকানারাজারকুল, রামু, কক্সবাজার
দেশবাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২১°২৪′৭.৮১″ উত্তর ৯২°০৬′৩৭.৫৬″ পূর্ব / ২১.৪০২১৬৯৪° উত্তর ৯২.১১০৪৩৩৩° পূর্ব / 21.4021694; 92.1104333

অবস্থান

রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নে সবুজ অরণ্যে ঘেরা পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত।[৩] বর্তমান বিহারটি একটি ছোট টিলার উপর অবস্থিত।

ইতিহাস

সম্রাট অশোক মহারাজার মূর্তী

২৬১ সালে সংগঠিত কলিঙ্গের যুদ্ধের সময় যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে গৌতম বুদ্ধ মর্মাহত হয়ে মানবতাতর সেবায় আত্মনিয়োগ করতে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮০-৫২৮ শতকে প্রাচীন আরাকানের ধন্যবতী (ধাঁঈয়াওয়াদি) নগরের রাজা মহাচন্দ্র সুরিয়ার আমন্ত্রণে গৌতম বুদ্ধ তার শিষ্যদের নিয়ে তৎকালীন সমতটের চৈতগ্রামের (বর্তমান চট্টগ্রাম) উপর দিয়ে ধন্যবতী নগরে যাওয়ার পথে এই স্থানে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করেছিলেন। তখন তার প্রধান সেবক আনন্দ স্থবিরকে উদ্দেশ্য করে ভবিষ্যত বাণী করে বলেন, “হে আনন্দ! পশ্চিম সমুদ্রের পূর্ব তীরে রম্যবতি (রম্মাওয়াদি) নগরের পর্বত শীর্ষে আমার বক্ষাস্থি স্থাপিত হবে, তখন এর নাম হবে ‘রাং-উ’, এই রাখাইন শব্দের শাব্দিক অর্থ 'বক্ষাস্থি'। ‘রাং’ অর্থ বক্ষ, ‘উ’ অর্থ বক্ষাস্থি। আর 'কূট' মানে 'স্থান'। পরে বিভিন্ন সময় সম্রাট অশোক বুদ্ধের ৪৫ বছর ব্যাপী ৮৪ হাজার ধর্মবানীকে বুদ্ধ জ্ঞানের প্রতীকরূপে বুদ্ধের অস্থি সংযোজিত ৮৪ হাজার চৈত্য স্থাপন করেছিলেন। যার মধ্যে রামকূট বৌদ্ধ বিহার একটি বলে মনে করে হয়।[৩][৪][৫] খ্রিস্টপূর্ব ৩০৮ সালে আরাকান রাজা চন্দ্রজ্যোতি (চেঁদি রাজা) কর্তৃক বুদ্ধের উক্ত বক্ষাস্থি সাদা পাথরের ৬ ফুট উঁচু বুদ্ধবিম্বের মাথায় সংযোজিত করে বুদ্ধবিম্বটি স্থাপন করেন। সময়ের বিবর্তনে রাংকূটের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়। চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙয়ের ভ্রমণলেখায় এই বিহারের উল্লেখ রয়েছে।[৩] ১৬৬৬ সালে মুঘলদের আক্রমণে বিহারটি ধংগপ্রাপ্ত হয়। পরে ১৯৩০ সালে ব্রহ্মদেশীয় ভিক্ষু ও শ্রীলংকান পুরোহিত জগৎচন্দ্র মহাথের শ্রীলঙ্কায় অবস্থানকালে একখানি শিলালিপি উদ্ধার করেন। শিলালিপি থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী অনুসন্ধান ও খননকার্যের ফলে ১৯২৯ সালে জগৎচন্দ্র মহাস্থবির রামকোট বৌদ্ধ বিহারটি আবিষ্কআর এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে এখানে বূহ্যচক্র মেলা, ধর্মসস্কন্ধ পূজা সহ বিভিন্ন উৎসব পালিত হয়।[৩]

জানা যায়, ১৯৬৬ সালের দিকে মন্দিরের সংস্কার করতে গিয়ে প্রজ্ঞাজ্যোতি মহারেথ নামের এক ধর্মসংস্কারক পরবর্তী ২০ বছর এখানে অবস্থান করেন। ১৯৮৮ সালে এক দাকাতের শিকার হয়ে মহারেথ রাংকূট ছাড়েন।

বিরবণ

বিহারটিতে ব্যবহূত ইটের পরিমাপ ছিল ৯ ইঞ্চি (২৩০ মিমি) × ৭ ইঞ্চি (১৮০ মিমি) × ২ ইঞ্চি (৫১ মিমি)। আকারে সম্পূর্ণ বিহারটি ৩৪ ফুট (১০ মি) × ১৯ ফুট (৫.৮ মি) আয়তাকার। বিহারের চূড়ার উচ্চতা ৪০ ফুট (১২ মি)। বিহারে বৃহদাকার অভয়মুদ্রায় খচিত বুদ্ধমূর্তি রয়েছে। পূর্বদিকের পাহাড়ে একটি বৃহদাকার দালানের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে যার চারপাশে বেলেপাথরের ভাস্কর্যের ভগ্নাংশ ছড়িয়ে রয়েছে। যেগুলির মধ্যে বুদ্ধের পদচিহ্ন, হস্ত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।[১]

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

বাংলাপিডিয়ায় রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী