ফাইব্রোমায়ালজিয়া একটি দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক অসুস্থতা, যার প্রধান উপসর্গ হচ্ছে মাংসপেশী, টেন্ডন এবং অস্থিসন্ধিগুলোতে প্রদাহ হওয়া[৩]। প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী সহস্রাধিক মানুষ এই রোগটিতে আক্রান্ত হয়। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত এবং পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে সংক্রমণের হার প্রায় সাতগুণ বেশি।
ইতিহাস
ফাইব্রোমায়ালজিয়া রোগটিকে উনবিংশ শতাব্দীর দিকে মানসিক রোগ বলে অ্যাখ্যায়িত করা হতো যার এর নাম ছিলো মাসক্যুলার রিউম্যাটিজম। ১৮২০ সালের দিকে স্কটল্যান্ডের একজন চিকিৎসক রোগটির জন্য দায়ী শরীরের বিভিন্ন সংবেদনশীল অংশের বর্ণনা দেন।
১৯০৪ সালে গাওয়ার সর্বপ্রথম ফাইব্রোসাইটিস শব্দটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৬ সালে শব্দটি ফাইব্রোমায়ালজিয়া শব্দে পরিবর্তিত হয়। শব্দটি ল্যাটিন শব্দাংশ ফাইব্রা (তন্তু), গ্রিক শব্দাংশ মায়োস (পেশি) এবং অ্যালগস (ব্যথা) এর সমন্বয়ে গঠিত। ১৯৮৬ সালে গবেষকরা এই রোগে নরএপিনেফ্রিক/সেরোটোজেনিক ড্রাগস ব্যবহার করে সুফল পান।
কারণ
দ্য ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অার্থাইট্রিস অ্যান্ড মাস্কুলোস্কেলেটাল অ্যান্ড স্কিন ডিজিজের মতে, প্রধান কারণ হলো ট্রমাটিক ঘটনা, শারীরিক অাঘাত এবং অন্য কোনো রোগ বা অসুস্থতার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
গবেষকদের মতে, কিছু জিনের মিউটেশনের কারণে এই রোগটি হয়ে থাকে। যদিও কোন কোন জিন এজন্য দায়ী, তা এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হয়, এই জিনগুলো শরীরের সেরাটোনিন, ডোপামিন এবং ক্যাটেচোলামিন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সাথে জড়িত। যদি কারো পরিবারের কোনো রক্ত সম্পর্কীয় অাত্মীয়ের অাগে থেকে রোগটি থেকে থাকে, তাহলে তার ফাইব্রোমায়ালজিয়ায় অাক্রান্ত হওয়ার অাশংকা বেড়ে যায়। এজন্য দায়ী জিনগুলো ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম এবং বিষণ্নতা রোগের সাথে সম্পর্কিত থাকায়, তা রোগ নির্ণয়কে অারো জটিল করে তোলে।