কাটজেব (কামারবন্দ, কেয়াবাঁধ, কামারবন্দ) ছিল একটি পোশাকের কোমরবন্দ যা শরীরকে ঘিরে রাখে, যার শেষপ্রান্ত কোমরের চারদিকে ঘুরে এসে সামনের দিকে ঝুলন্ত থাকে। এটি ছিল একধরনের উত্তরীয় যাকে পটকাও বলা হয়।[১][২]
কাটজেব একটি সমাস। সংস্কৃত শব্দ কটি মানে কোমর, আর ফারসিতে জেব মানে শোভা। মুঘলরা এটি জামার (কোট) উপরে পরত। কাটজেব হল তৃতীয় মুঘল সম্রাট আকবরের একটি কোমরবন্ধ, যিনি খুব ফ্যাশন সচেতন ছিলেন এবং অনেক সমসাময়িক পোশাকের নতুন নাম দিয়েছিলেন। আবুল ফজল ইবনে মুবারক আইন-ই-আকবরীতে এগুলো বর্ণনা করেছেন।[৩][৪][৫][৬][৭][৮]
কাটজেব ছিল একটি ছোট আয়তাকার কাপড়ের টুকরো কিন্তু এটি পোশাকের একটি অপরিহার্য পোশাক ছিল যার মধ্যে একটি জামা (কোট), শাল, পাগড়ি, তানজেব (ট্রাউজারও) অন্তর্ভুক্ত ছিল। কাটজেব পরিহিত অবস্থায় তরবারি বা ছুরি দিয়ে সম্রাটদের অনেক মুঘল চিত্রকর্ম রয়েছে।[৯][১০]
আকবরের রাজত্বের সময় কাটজেব দুইধরনের ছিল। একটি দীর্ঘ এবং অন্যটি সংক্ষিপ্ত, এই দুটি দৈর্ঘ্যের কাটজেব ছিল। শ্রমিক, দাস এবং দরবারীদের প্রায়শই খাটো কাটজেব পরতেন। সম্রাট আকবর ও নামীদামী ব্যক্তিবর্গ লম্বা কাটজেব পরতেন, অনেকসময় দুই রকমের কাটজেব একসাথেও পরতেন।সাধারণত একটি একক কাটজেবই যথেষ্ট, এবং এগুলি বিভিন্ন উপায়ে পরা হত।[১১]
কাটজেব সাধারণ কাপড়ের বেল্টের মতো বস্ত্র যা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে যেমন ফিতাযুক্ত, সুতা দিয়ে নকশা করা, কারুকার্যখচিত, কাপড়ের উপর রং করা বা মুদ্রিত। কাতজেব কোমরের চারদিকে পরা হতো। এতে অনেকসময় ছুরি বা তরবারি বহন করে হতো। বিভিন্ন ধরনের ও বিভিন্ন গুণমানসম্পন্ন কাটজেব পাওয়া যেত।