ইসুরু উদানা

শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার

ইসুরু উদানা তিলকারত্না (সিংহলি: ඉසුරු උදාන; জন্ম: ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৮) বালাঙ্গোদায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা শ্রীলঙ্কান পেশাদার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য তিনি। শ্রীলঙ্কার পক্ষে সীমিত ওভারের খেলায় অংশ নিচ্ছেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে তামিল ইউনিয়ন ও ওয়েয়াম্বা এবং বাংলাদেশী ক্রিকেটে রাজশাহী কিংসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলছেন। বামহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিং করে থাকেন ইসুরু উদানা

ইসুরু উদানা
ඉසුරු උදාන
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ইসুরু উদানা তিলকারত্না
জন্ম (1988-02-17) ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮ (বয়স ৩৬)
বালাঙ্গোদা, শ্রীলঙ্কা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাপেস বোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৫২)
২৪ জুলাই ২০১২ বনাম ভারত
শেষ ওডিআই১৬ মার্চ ২০১৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ওডিআই শার্ট নং১৭
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ২৯)
৮ জুন ২০০৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টি২০আই২৪ মার্চ ২০১৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৮তামিল ইউনিয়ন
২০০৯ওয়েয়াম্বা
২০১৯রাজশাহী কিংস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাওডিআইটি২০আইএফসিএলএ
ম্যাচ সংখ্যা২১৭৬৮১
রানের সংখ্যা১১০১৭৩২,১১০৮৪৩
ব্যাটিং গড়৫৫.০০২৮.৮৩২৫.৪২২১.০৭
১০০/৫০০/১০/১২/১০০/১
সর্বোচ্চ রান৭৮৮৪*১০৯*৫৫
বল করেছে১৭৪৪২০৮,৪৭১৩,২৬৩
উইকেট১৭১৭৫১০২
বোলিং গড়৯৩.০০৩৫.৫৩২৯.৪৩২৮.১৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট---
সেরা বোলিং২/৫০৩/১৩৭/৫৮৪/২৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং০/–২/–৪৫/–৩৫/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৪ মার্চ, ২০১৯

শৈশবকাল

ডিএস সেনানায়াকে কলেজের সাবেক ছাত্র তিনি। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুরদিকে নন্দেস্ক্রিপ্টস ক্লাবে যোগ দেন। এরপূর্বেই অবশ্য শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-২০ দলের পক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হয়েছিলেন। এরপর অনূর্ধ্ব-২৩ দলের সদস্যরূপে প্রথম বিভাগ যুব প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন।

প্রতিভাবান বামহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে বৈচিত্র্যপূর্ণ পেস বোলিং করে সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে উপনীত হন। ফলশ্রুতিতে খুব দ্রুত শ্রীলঙ্কার টি২০ দলে তাকে ঠাঁই দেয়া হয়। সীম বোলিংয়ের পাশাপাশি ধীরগতিসম্পন্ন বোলিং করে ব্যাটসম্যানদেরকে বোকা বানাতে উস্তাদ তিনি। এরফলে, শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটেও বেশ সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন।

ঘরোয়া ক্রিকেট

আগস্ট ও সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কা এ দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ঐ সফরেই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ও লিস্ট এ ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। এরপর ২০০৮-০৯ মৌসুমে উভয় স্তরের ক্রিকেটে তামিল ইউনিয়নের পক্ষে খেলতে শুরু করেন। এরপর ওয়েয়াম্বার পক্ষে শ্রীলঙ্কান আন্তঃপ্রাদেশিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ও টুয়েন্টি২০ খেলায় অংশ নেন। তন্মধ্যে, টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় বাসনাহিরা সাউথের বিপক্ষে ৪/৩১ নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। ঐ খেলায় শীর্ষ পাঁচজন খেলোয়াড়ের চারজনকে তিনি আউট করেছিলেন।[১] ২০০৮-০৯ মৌসুমের আন্তঃপ্রাদেশিক টি২০ প্রতিযোগিতায় শীর্ষস্থানীয় উইকট শিকারীতে পরিণত হয়েছিলেন। এরফলে প্রথমবারের মতো ওয়েয়াম্বা দলকে শিরোপা জয়ে সহায়তা করেন ও প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স টুয়েন্টি২০ লীগে দলকে নিয়ে যান। এছাড়াও, প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার লাভ করেন ইসুরু উদানা।[২]

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১০ তারিখে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ টি২০ প্রতিযোগিতায় ওয়েয়াম্বার প্রতিনিধিত্ব করেন। দুইটি বৈধ ডেলিভারিতে হ্যাট্রিক সম্পন্ন করেন। দ্বিতীয় উইকেট লাভে ম্যাথু সিনক্লেয়ারকে ওয়াইড বলে স্ট্যাম্পিং করে এ বিরল কীর্তি স্থাপন করেন ইসুরু উদানা।[৩][৪] এছাড়াও, প্রথম বোলার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ টি২০ আসরের ইতিহাসে প্রথম হ্যাট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন।

আগস্ট, ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লীগে ওয়েয়াম্বা ইউনাইটেডের পক্ষে নিয়মিতভাবে উইকেট লাভের পাশাপাশি অল-রাউন্ড ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। সেমি-ফাইনালে ইউভা নেক্সটের বিপক্ষে ৪২ রান তুলেন। এক পর্যায়ে দলীয় সংগ্রহ ২৭/৭ থাকা অবস্থায় দলকে টেনে ১৫১/৮ নিয়ে যান ও অসম্ভব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষমতা দেখান।[৫] ঐ খেলায় আজহার মাহমুদের সাথে ৮ম উইকেটে ১২০ রান তুলে নতুন রেকর্ড গড়েন।[৬][৭]

এপ্রিল, ২০১৮ সালে সুপার প্রভিন্সিয়াল ওয়ান ডে টুর্নামেন্টে ক্যান্ডি দলের সদস্য হন[৮] ক্যান্ডির পক্ষে ঐ প্রতিযোগিতায় শীর্ষ উইকেট শিকারীতে পরিণত হন। ছয় খেলায় তিনি দশটি উইকেট পেয়েছিলেন।[৯] ৩ জুন, ২০১৮ তারিখে গ্লোবাল টি২০ কানাডা প্রতিযোগিতায় মন্ট্রিল টাইগার্সের খেলার জন্য মনোনীত হন।[১০][১১] আগস্ট, ২০১৮ সালে এসএলসি টি২০ লীগে ডাম্বুলা একাদশের সদস্য হন।[১২] অক্টোবর, ২০১৮ সালে আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লীগে আট খেলায় সতেরো উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকট সংগ্রাহক হন।[১৩] পরের মাসে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে রাজশাহী কিংসের সদস্যরূপে খসড়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন।[১৪] মার্চ, ২০১৯ সালে সুপার প্রভিন্সিয়াল ওয়ান ডে টুর্নামেন্টে ডাম্বুলার সদস্য হন।[১৫]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০০৯ সালের আইসিসি বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতায় শ্রীলঙ্কার পক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন।[১৬] দলকে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় নিয়ে যেতে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ৮ জুন, ২০০৯ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে অভিষেক হয় তার। ঐ প্রতিযোগিতায় শ্রীলঙ্কার পক্ষে সাত খেলার পাঁচটিতে অংশগ্রহণ ছিল তার। তন্মধ্যে, চূড়ান্ত খেলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে তার দল পরাজিত হয়েছিল।[১৭] তবে, ২০১০ সালের বিশ্ব টি২০ খেলায় তার অংশগ্রহণের সুযোগ হয়নি। এরপর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায়শঃই জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর উপেক্ষার পাত্রে পরিণত হয়েছেন।

ঘরোয়া ক্রিকেটে যথেষ্ট সফলতা পেলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঐ ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেননি। ফলে, ২০০৯ সালে নিজ দেশে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার পর দলের বাইরে অবস্থান করতে হয়। তবে, স্বদেশে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার জন্যে ২০১২ সালে অশান্ত ডিমেলের নেতৃত্বে দল নির্বাচকমণ্ডলী পুনরায় তাকে শ্রীলঙ্কা দলে যোগদানের আমন্ত্রণ জানায়। এর পরপরই ভারত দলের বিপক্ষে ওডিআই খেলার সুযোগ পান। তবে, বল হাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ঐ সিরিজে কেবলমাত্র গৌতম গম্ভীরকে সরাসরি রান আউটের মাধ্যমে বিদায় করাই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

বেশ কয়েকবছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গন থেকে দূরে থাকার পর ২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ড গমনের সুযোগ পান। দ্বিতীয় টি২০আইয়ে প্রথম কয়েক বলেই অত্যন্ত সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছিলেন। ইউদানার বলে মার্টিন গাপটিলের সহজ ক্যাচ থিসারা পেরেরা তালুবন্দী করতে পারেননি। এরপর নিউজিল্যান্ডীয় ব্যাটসম্যানদের হাতে ধবলধোলাইয়ের শিকার হন তিনি। তিন ওভারে ৩৪ রান খরচ করতে হয় তাকে। খেলার ১০ম ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে নিউজিল্যান্ড দল ৯ উইকেটের সহজ জয় পায়। মে, ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট কর্তৃক ২০১৮-১৯ মৌসুমকে ঘিরে ৩৩জন ক্রিকেটারকে জাতীয় পর্যায়ে চুক্তিবদ্ধ করা হয়। এতে তিনিও যুক্ত হন।[১৮][১৯]

দক্ষিণ আফ্রিকা গমন

মার্চ, ২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ১৩ মার্চ, ২০১৯ তারিখে সিরিজের চতুর্থ ওডিআইয়ে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। কাসুন রজিতার সাথে ১০ম উইকেটে শ্রীলঙ্কার পক্ষে ওডিআইয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন। নিজে করেন ৫৮ রান।[২০] এরফলে তার দল ১৮৯ রান তুলতে সমর্থ হয়। ২২ মার্চ, ২০১৯ তারিখে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে অংশ নেন। ঐ খেলায় আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৮৪ রান তুলে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েন।[২১]

এপ্রিল, ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট কর্তৃক ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য শ্রীলঙ্কা দলের ১৫-সদস্যের তালিকা ঘোষণা করা হয়। এতে তিনিও দলের অন্যতম সদস্যরূপ অন্তর্ভুক্ত হন।[২২][২৩]

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন