প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি
প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি একটি ছাত্র বৃত্তি যা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদান করতেন। প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ নামে বোম্বাই-এর এক পারসি কোটিপতি ১৮৬৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এই বৃত্তি প্রবর্তন করেন। ১৮৬৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্লডিয়াস এরস্কিন তার সমাবর্তন ভাষণে দেশে শিক্ষার অগ্রগতির জন্য সহৃদয় বিত্তবানদের প্রতি সাহায্য করার আবেদন জানান। বৃত্তির জন্য তহবিল প্রদান, শিক্ষাভবন নির্মাণ ইত্যাদির উদ্দেশ্যে অর্থ প্রদান করা যেতে পারে বলে ক্লডিয়াস এরস্কিন তার ভাষণে উল্লেখ করেন। উপাচার্যের আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ দুলক্ষ টাকা দান করেন। এ দানই ছিল প্রসিদ্ধ ‘প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ স্টুডেন্টশিপ’ (পি.আর.এস)-এর মূল অংশ। প্রতিযোগিতামূলক ও মর্যাদার দিক থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষারত মেধাবী ছাত্রদের জন্য এটিই সর্বাপেক্ষা কাঙ্ক্ষিত বৃত্তি।শর্তাবলিতে উল্লেখ করা হয় যে, এ দানের সমুদয় অর্থ সরকারি সনদপত্রে বিনিয়োগকৃত থাকবে। দাতার নামে পাঁচটি ছাত্রবৃত্তি প্রবর্তনের কথা বলা হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি প্রতিটি বৃত্তির আর্থিক মূল্য হবে ২০০০.০০ টাকা। বিশেষ পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে এই বৃত্তি প্রদান করা হবে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ ডিগ্রীধারীরাই শুধু এই বৃত্তির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তিধারীদের অনেকেই পরবর্তীকালে জাতীয় জীবনে খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। এঁদের মধ্যে ছিলেন স্যার আশুতোষ মুখার্জী(ইনি প্রথম এই বৃত্তি পেয়ে ছিলেন) (১৮৬৮),[১] রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী (১৮৮৮),[১] যদুনাথ সরকার (১৮৯৭),[১] রমেশচন্দ্র মজুমদার (১৯১২),[১] সুরেন্দ্রনাথ সেন (১৯১৭),[১] মেঘনাদ সাহা (১৯১৯),[১] মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা(১৯??),[২] স্নেহময় দত্ত (১৯২১)[৩] অমূল্যধন মুখোপাধ্যায় (১৯৩০)[৪]দীনেশচন্দ্র সেন (১৯৩৬),[১] শ্রীমতী বিভা সেনগুপ্ত (১৯৩৭),[১] অসীমা মুখোপাধ্যায় (১৯৪২),[১] ব্রজেন্দ্রকিশোর বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯৪৭)[১] প্রমুখ ।