স্নেহময় দত্ত
ড.স্নেহময় দত্ত (২০ অক্টোবর ১৮৯৪ ― ১৬ মে ১৯৫৫) ছিলেন খ্যাতনামা বাঙালি পদার্থবিদ। [১]
স্নেহময় দত্ত | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৬ মে ১৯৫৫ | (বয়স ৬০)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা | ঢাকা কলেজ |
মাতৃশিক্ষায়তন | প্রেসিডেন্সি কলেজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | পদার্থবিদ |
দাম্পত্য সঙ্গী | সুধা দত্ত (বসু) |
সন্তান | অজিত দত্ত (পুত্র) অরুণা রায় (দত্ত)(কন্যা) অমল দত্ত (পুত্র) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | পদার্থবিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
উচ্চশিক্ষায়তনিক উপদেষ্টা | অ্যালফ্রেড ফাউলার |
জন্ম ও শিক্ষা জীবন
স্নেহময় দত্তের জন্ম ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দের ২০শে অক্টোবর অবিভক্ত বাংলার অধুনা বাংলাদেশের ঢাকার সাভারে। পিতা রাখালদাস দত্ত ছিলেন স্কুলশিক্ষক। মাতা ছিলেন ধর্মপ্রাণ ও দক্ষ গৃহিণী। কিন্তু তার বাল্যকালেই মাতা প্রয়াত হন। স্নেহময়ের স্কুলের পড়াশোনা ঢাকার কিশোরীলাল জুবিলি স্কুলে। এখানে তার সহপাঠী ছিলেন মেঘনাদ সাহা। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে এন্ট্রান্স পাশের পর ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। এখান থেকে আই.এসসি এবং পদার্থবিদ্যায় অনার্স নিয়ে বি.এসসি পাশ করে ভর্তি হন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে। এখানে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু মেঘনাদ সাহা নিখিলরঞ্জন সেন প্রমুখেরা তার সহপাঠী ছিলেন। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় হয়ে এম.এসসি পাশ করেন।
কর্মজীবন
স্নেহময় এম.এসসি পাশের পর ভাগলপুরের তেজনারায়ণ জুবিলি কলেজে দু-বৎসর এবং পাটনা কলেজে এক বছর অধ্যাপনা করেন। অতিরিক্ত সময়ের গবেষণা করে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার টিএন পালিত রিসার্চ ফেলোশিপ অর্জন করে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে উচ্চ গবেষণার্থে রয়েল কলেজ অফ সায়েন্সে যোগ দেন। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজ অব সায়েন্সের ডিপ্লোমা লাভ করেন এবং ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন। দেশে ফিরে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে যোগ দিয়ে ক্রমে কলেজের পদার্থবিদ বিভাগের প্রধান হন। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হন। এখানে তিনি ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ প্রোগ্রামে কাজ করেছেন। তার রচিত 'ইনভেস্টিগেশন অন দি কম্পোজিশন অফ প্রিন্টিং-মেটাল অ্যালায়েস' নিবন্ধটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি রাজশাহী কলেজ থেকে কলকাতায় ফিরে আসেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে তিনি পাবলিক ইন্সট্রাকশনের ডিরেক্টরের পদ লাভ করেন। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে অবসরের পর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের পদে যোগ দেন।
অলঙ্কৃত পদসমূহ
কর্মজীবনে স্নেহময় দত্ত বহু সম্মান লাভ করেন। তিনি বহু বছর ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস সংস্থার বিভিন্ন পদে আসীন ছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য সাম্মানিক পদসমূহ হল -
- ১৯৩৪ - প্রতিষ্ঠাতা ফেলো - ইন্ডিয়ান ফিজিক্যাল সোসাইটি, কলকাতা
- ১৯৩৫ - প্রতিষ্ঠাতা ফেলো - ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী, নতুন দিল্লি
পারিবারিক জীবন
স্নেহময় দত্ত ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর জ্যেষ্ঠা ভগিনী সুধা বসুকে বিবাহ করেন। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ পুত্র অজিত দত্ত রসায়নবিদ, কনিষ্ঠ পুত্র অমল দত্ত অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করে পরে কলকাতা হাইকোর্টের ব্যারিস্টার হন।[২]
মৃত্যু
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হিসাবে কাজ করার সময়, দত্তের জিহ্বায় আলসার ধরা পড়ে। ডাক্তার এটিকে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হিসাবে নির্ণয় করেন। দত্ত কলকাতা এবং যুক্তরাজ্যে রেডিয়েশন থেরাপির চিকিৎসা গ্রহণ করেন কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। ১৯৫৫ সালের ১৬ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।