মার্টিন কেন্ট

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

মার্টিন ফ্রান্সিস কেন্ট (ইংরেজি: Martin Kent; জন্ম: ২৩ নভেম্বর, ১৯৫৩) কুইন্সল্যান্ডের মসম্যান এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ও সাবেক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮১ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য অস্ট্রেলিয়া দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে মূলতঃ মাঝারিসারির ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন মার্টিন কেন্ট

মার্টিন কেন্ট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
মার্টিন ফ্রান্সিস কেন্ট
জন্ম (1953-11-23) ২৩ নভেম্বর ১৯৫৩ (বয়স ৭০)
মসম্যান, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরন-
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৭৪–১৯৮১কুইন্সল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা
রানের সংখ্যা১৭১৭৮
ব্যাটিং গড়২৮.৫০১৯.৫০
১০০/৫০-/২-/-
সর্বোচ্চ রান৫৪৩৩
বল করেছে--
উইকেট--
বোলিং গড়--
ইনিংসে ৫ উইকেট--
ম্যাচে ১০ উইকেট--
সেরা বোলিং--
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং৬/-৪/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ২৯ নভেম্বর ২০১৮

ঘরোয়া ক্রিকেট

১৯৭৪ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান মার্টিন কেন্ট। ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে অভিষেক ঘটা খেলায় ১৪০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।[১] জিলেট কাপের পরের খেলায় করেন ৭৬ রান।[২] এরপর পুরো মৌসুমে রান খরায় ভোগেন তিনি। তাসত্ত্বেও, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫৮[৩] ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।[৪]

পরের মৌসুমের গ্রীষ্মে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০৩[৫]ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ১০১ রান তুলেন মার্টিন কেন্ট।[৬]

দক্ষিণ আফ্রিকা গমন

গ্রেগ চ্যাপেলের সাথে নিয়মিতভাবে ব্যাটিংয়ে জুটি গড়তেন। আমন্ত্রিত একাদশ ইন্টারন্যাশনাল ওয়ান্ডারার্সের সদস্যরূপে তৎকালীন নিষিদ্ধ ঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকা গমনের প্রস্তাবনা পান। ঐ দলটিতে চ্যাপেল ভ্রাতৃদ্বয় ও ডেনিস লিলি’র ন্যায় বিখ্যাত খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ ছিল। একমাত্র সদস্যরূপে মার্টিন কেন্টেরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না।[৭] ঐ সফরের মাত্র কয়েকদিন পূর্বে তিনি বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন ও তাদের মধুচন্দ্রিমা ঐ সফরে সম্পন্ন হয়।[৮]

কেন্ট বেশ ভালো খেলেন। ৫৫,[৯] ৬৭ ও ৫২[১০] এবং ১৫৫ রানের ইনিংস খেলেন।[১১] ইন্টারন্যাশনাল ওয়ান্ডারার্সের পক্ষে রান সংগ্রহের দিক থেকে শীর্ষস্থানে ছিলেন ও ৫৬ গড়ে ৩৯৮ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন।[১২]

১৯৭৬-৭৭ মৌসুমের শুরুরদিক পর্যন্ত দল নির্বাচকমণ্ডলীর নজরে ছিলেন। সফরকারী পাকিস্তান একাদশের বিপক্ষে ১২২ রান[১৩] ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮২ রানের ইনিংস করা সত্ত্বেও উপেক্ষিত থাকেন তিনি।[১৪] ১৯৭৭ সালে ইংল্যান্ড সফরের অ্যাশেজ সিরিজে অন্তর্ভুক্ত ঘটা ক্রেগ সার্জেন্ট, কিম হিউজডেভিড হুকসের তুলনায় এগিয়ে থাকলেও তাকে রাখা হয়নি।

বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট

১৯৭৭ সালে কেরি প্যাকার শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড়দেরকে নিয়ে গেলে সুযোগ আসে তার। তবে, তিনিও প্রচলতি খেলা বাদ দিয়ে বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটকেই বেছে নেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় ইয়ান চ্যাপেল কেন্টের ব্যাটিং সম্পর্কে সম্যক অবগত ছিলেন। তিনি তাকে ডব্লিউএসসি দলে যোগ দেয়ার প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন।

ডব্লিউএসসি অস্ট্রেলীয় একাদশের সদস্যরূপে নিম্নমূখী রানের খেলায় ৪০,[১৫] ৫৮[১৬] ও ১১০[১৭] রানের ইনিংসগুলো খেলেন। এরফলে, দ্বিতীয় সুপারটেস্টে তাকে রাখা হয়। কিন্তু উভয় ইনিংসেই তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দেন।[১৭] তবে, তৃতীয় সুপারটেস্টে অধিকতর ভালো খেলেন। ৪৩ ও ৪০ রানের ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়াকে জয়লাভে সহায়তা করেন মার্টিন কেন্ট।[১৮] কিন্তু, ৫ম সুপারটেস্টের উভয় ইনিংসে জোড়া শূন্য পান।[১৯]

পরবর্তী গ্রীষ্মে ডব্লিউএসসি ক্যাভেলিয়ার্স একাদশের সদস্যরূপে গমন করেন। বিশ্ব একাদশের বিপক্ষে ১১৪[২০] ও ৫৫ রানের ইনিংস খেলার পূর্ব-পর্যন্ত রান খরায় ভোগেন।[২১] একপর্যায়ে অস্ট্রেলিয়া একাদশে ফিরে কয়েকটি একদিনের খেলায় অংশ নেন। এ পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৬২ রান তুলেছিলেন তিনি।[২২] সর্বশেষ সুপারটেস্টেও তিনি খেলার সুযোগ পান। এবারও উভয় ইনিংসে ব্যর্থ হন।[২৩]

অস্ট্রেলিয়া একাদশের সদস্যরূপে মার্টিন কেন্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন। সুপারটেস্টের খেলাগুলোয় অংশ নেন তিনি। প্রথমটিতে ৯ ও ৩০ রান তোলার পর[২৪] একদিনের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ১০৯ রান তুলেন।[২৫] দ্বিতীয় সুপারটেস্টে ৭৮,[২৬] তৃতীয়টিতে ৭ ও ৪৫,[২৭] ৫১ ও ২৮[২৮] এবং ৪০ ও ০ রান তুলেন।[২৯]

১৯৭৯-৮০ মৌসুমটিতে তেমন সুবিধে করতে পারেননি মার্টিন কেন্ট। কোন প্রথম-শ্রেণীর সেঞ্চুরি করতে না পারলেও ১৯৮০-৮১ মৌসুমে তার খেলা বেশ উপভোগ্য ছিল। ৫৮.৮১ গড়ে ৯৪১ রান তুলেন। তন্মধ্যে, তাসমানিয়ার বিপক্ষে ৭৭[৩০] ১৭১ ও ৬৮[৩১] সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭৮ ও ১০১ এবং সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭৮ ও ১০১ রান তুলেন।[৩২] ম্যাকডোনাল্ডস কাপের চূড়ান্ত খেলায় কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে ৪১ রান তুলে দলকে জয়লাভে সহায়তা করেন ও ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।[৩৩]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিন টেস্ট ও পাঁচটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে মার্টিন কেন্টের। ১৯৭৯-৮০ মৌসুমের গ্রীষ্মের শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার একদিনের দলের পক্ষে খেলার জন্য মনোনীত হন। ১২, ৩৩ ও ৩ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন তিনি।[৩৪]

১৯৮১ সালে ইংল্যান্ড গমনের উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয় মার্টিন কেন্টকে।[৩৫] গ্রেগ চ্যাপেলকে এ সফরের জন্য মনোনীত করা হয়নি। অন্যদিকে কিম হিউজ শুরুতে ভেবেছিলেন যে, তিন নম্বরে ব্যাটিং করার জন্য কেন্টকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হবে।[৩৬] তবে, শুরুরদিকের খেলাগুলোয় ব্যর্থ হলে ট্রেভর চ্যাপেলের দূর্দান্ত ৯১ রানের ইনিংস তার স্থলাভিষিক্ত করতে বাধ্য হয়।[৩৭][৩৮][৩৯][৪০] একপর্যায়ে, চ্যাপেলকে মনোনীত করা হয় ও মার্টিন কেন্টকে দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে অবনমন ঘটানো হয়।[৪১]

খ্যাতনামা তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ড জয় পায় ও কেন্ট দ্বাদশ ব্যক্তি ছিলেন। পূর্বেকার সর্বোচ্চ ২৭ রানকে পাশ কাটিয়ে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ৯২ রান তুলে স্বীয় শক্তিমত্তা প্রদর্শন করেন তিনি।[৪২][৪৩] ফলশ্রুতিতে, চ্যাপেলকে পাশ কাটিয়ে তাকে চতুর্থ টেস্টে খেলানো হয় ও চ্যাপেলকে দ্বাদশ খেলোয়াড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।[৪৪]

এ সফরের দ্বিতীয়ার্ধ্বে কেন্ট অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন। এ পর্যায়ে তিনি ১৭১ রান করেন। তন্মধ্যে, পরিবর্তিত উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে ওভালে অর্ধ-শতক করেছিলেন। ৪র্থ টেস্টে ৪৬ ও ১০,[৪৫] ৫ম টেস্টে ৫২ ও ২[৪৬] এবং ৬ষ্ঠ টেস্টে ৫৪ ও ৭ রান করেন।[৪৭]

অবসর

১৯৮১-৮২ মৌসুমের শুরুতে কুইন্সল্যান্ডের সদস্যরূপে সফরকারী পাকিস্তান একাদশের বিপক্ষে ৯২ রানের ইনিংস খেলার মাধ্যমে বেশ ভালোভাবে শুরু করেন।[৪৮][৪৯] গ্রাহাম ইয়ালপডার্ক ওয়েলহামের পরিবর্তে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলার জন্য তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৫০] তবে, গুরুতরভাবে পিঠের আঘাতের কারণে স্থানচ্যুত হন ও দলের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হন তিনি।[৫১] ঐ মৌসুমে ক্রিকেটের বাইরে অবস্থান করেন।[৫২] এরপর আগস্ট, ১৯৮২ সালে সকল স্তরের ক্রিকেটকে বিদায় জানান মার্টিন কেন্ট।[৫৩]

মূল্যায়ন

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৬৪টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন মার্টিন কেন্ট। ৩৬.০৩ গড়ে ৩৫৬৭ রান তুলেন তিনি। তন্মধ্যে, তাসমানিয়ার বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৭১ রানের ইনিংস ছিল তার। চমৎকারভাবে স্লিপ ফিল্ডার হিসেবে মাঠে অবস্থান করে ৬০ ক্যাচ তালুবন্দী করেছেন।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন