মিকি স্টুয়ার্ট

ইংরেজ ক্রিকেটার

মাইকেল জেমস স্টুয়ার্ট, ওবিই (ইংরেজি: Micky Stewart; জন্ম: ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৩২) দক্ষিণ লন্ডনের হার্নহিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার, কোচ ও প্রশাসক। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

মিকি স্টুয়ার্ট
২০১৯ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে মিকি স্টুয়ার্ট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
মাইকেল জেমস স্টুয়ার্ট
জন্ম (1932-09-16) ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৩২ (বয়স ৯১)
হার্ন হিল, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান, কোচ, প্রশাসক
সম্পর্কএজে স্টুয়ার্ট (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪১২)
২১ জুন ১৯৬২ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট২৬ জানুয়ারি ১৯৬৪ বনাম ভারত
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৫৪-১৯৭২সারে
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টএফসিএলএ
ম্যাচ সংখ্যা৫৩০৭৫
রানের সংখ্যা৩৮৫২৬,৪৯১১,১৭২
ব্যাটিং গড়৩৫.০০৩২.৯০১৬.৭৪
১০০/৫০–/২৪৯/১৩২১/৩
সর্বোচ্চ রান৮৭২২৭*১০১
বল করেছে১৩৬
উইকেট
বোলিং গড়৯৯.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট-
সেরা বোলিং১/৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং৬/–৬৩৫/–২৪/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৪ জুলাই ২০১৬

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সারে দলের পক্ষে খেলেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন মিকি স্টুয়ার্ট

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

১৯৫৪ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর ঘরোয়া ক্রিকেটে সারে ক্লাবের পক্ষে সুদীর্ঘ আঠারোো আঠারো বছর কাটিয়েছেন। ঊনপঞ্চাশটি সেঞ্চুরিসহ ছাব্বিশ সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর রান রান তুলেছেন। তন্মধ্যে অভিষেকেই পাকিস্তানের বিপক্ষে দূর্দান্ত শতক করেন। ১৯৫৭ সালে নিজস্ব শক্তিশালী ফিল্ডিংয়ে তৎকালীন ক্যাচের বিশ্বরেকর্ড গড়েন।

১৯৫৯ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত জন এডরিচের সঙ্গে সারে দলের সফলতম উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন। এরপর অবশ্য ব্যাটিং অর্ডারের নিচের সারিতে তিন নম্বরে চলে যান। এছাড়াও, এ জুটি কয়েকবার ইংল্যান্ডের পক্ষে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। স্টুয়ার্ট ১৯৬৩ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত সারে দলের অধিনায়কত্ব করেন। তন্মধ্যে, তার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার সুযোগ পায়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে এম. জে. কে. স্মিথের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো তিনি তার বিদেশ সফরের অংশ হিসেবে ভারতে সহঃ অধিনায়ক হিসেবে খেলতে যান। কিন্তু আমাশয়ে আক্রান্ত হবার কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ বাঁধাগ্রস্ত হয়ে দাঁড়ায় ও খেলোয়াড়ী জীবনের অকাল সমাপ্তি ঘটে। ঐ সফরে শুধুমাত্র একটি ইনিংস খেলার পর দেশের উদ্দেশ্যে ফিরে যেতে বাধ্য হন।[১] ১৯৬২ থেকে ১৯৬৪ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে তিনি সবেমাত্র আটটি টেস্টে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়ে দুইটি অর্ধ-শতক করার সুযোগ পেয়েছিলেন। ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান স্টুয়ার্ট টেস্টে ৩৫.০০ ব্যাটিং গড়ে রান সংগ্রহ করেছেন। তন্মধ্যে, সর্বোচ্চ সংগ্রহ করেন ৮৭।

মূল্যায়ন

ক্রিজের কাছাকাছি এলাকায় অসাধারণ ক্যাচ নেয়ার অধিকারী ছিলেন তিনি, বিশেষ করে শর্ট লেগ এলাকায়। ১৯৫৭ সালে তিনি ৭৭ ক্যাচ নেন যা ওয়াল্টার হ্যামন্ডের গড়া রেকর্ডের চেয়ে মাত্র একটি কম ছিল। ঐ বছরে নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে এক ইনিংসে সাত ক্যাচ নেন। অংশতঃ ফিল্ডিংয়ে অসম্ভব দক্ষতার কারণে ১৯৫৮ সালের উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে মনোনীত হন। ১৯৯৮ সালে ক্রিকেটে অনন্য সাধারণ সেবা প্রদান করায় ওবিই পদবীতে ভূষিত হন তিনি।

ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যান মন্তব্য করেন যে, "একজন একনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক এবং প্রতিপক্ষের শক্ত বিরোধী হিসেবে তিনি টেস্টে স্বাক্ষর রাখেন। এছাড়াও, ইংল্যান্ডের প্রথম পূর্ণাঙ্গকালীন ম্যানেজার হিসাবেও টেস্ট ক্রিকেটের সাথে সমানে চিহ্ন রেখেছেন"।[১]

অবসর নেয়ার পর তিনি ক্লাবের ম্যানেজার হন এবং পরবর্তীতে ১৯৯২ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের পক্ষেও এ দায়িত্বে ছিলেন। তারপর ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ইসিবি'র সাথে কাজ করেন।[১]

কোচিং

১৯৭৯ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত সারে এবং ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত ইংল্যান্ড দলের ক্রিকেট পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, ১৯৯২ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত ইসিবির কোচিং ডাইরেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন।[১] দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফে এক প্রতিবেদনে স্টিভ জেমস লিখেছিলেন, "ইংল্যান্ডের প্রথম ম্যানেজার স্টুয়ার্ট শুধুমাত্র শারীরিক সুস্থতা এবং পরিকল্পনা থেকেই এগিয়ে ছিলেন না, বরং তিনি তাঁর সময় থেকেও এগিয়ে ছিলেন। স্টুয়ার্টের সময়কালের শেষদিকে তৎকালীন ইংরেজ অধিনায়ক গ্রাহাম গুচের উদ্ধৃতি দিয়ে জেমস আরও লিখেছেন, "আমরা এরূপ ভিত্তি স্থাপন করেছি যা আপনি এখন ইংল্যান্ডের অবস্থান দেখতে পারছেন। শারীরিক সুস্থতা, পর্যবেক্ষণ, পুষ্টি - এগুলোর সংমিশ্রণে দলের মানদণ্ড গড়ে উঠেছে।""[২]

বিতর্ক

ইংল্যান্ড দলের সাথে নিউজিল্যান্ডে শীতকালীন সফরে স্টুয়ার্ট বিতর্কিতভাবে এক টিভি ক্যামেরাম্যানের সাথে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় একটি স্ট্রেচারের উপর আহত ডেভিড লরেন্সের দৃশ্যধারণ করা হচ্ছিল। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের উইকেট-রক্ষক জ্যাক রাসেল এতে যোগ দেন।[৩]

ব্যক্তিগত জীবন

ইংল্যান্ডের সাবেক উইকেট-রক্ষক অ্যালেক স্টুয়ার্টের পিতা তিনি। অ্যালেক স্টুয়ার্ট ইংল্যান্ডের পক্ষে শতাধিক বেশি টেস্ট খেলেছিলেন। ১৯৮৮ সালে লর্ডসে নিজ পুত্র অ্যালেক স্টুয়ার্টের টেস্ট সেঞ্চুরি দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেন।

স্টুয়ার্ট ফুটবলার হিসেবেও খেলেছেন। শৌখিন দল করিন্থিয়ান-ক্যাজুয়ালস, চার্লটন অ্যাথলেটিক ও উইম্বলডনের পক্ষে রাইট উইঙ্গার হিসেবে খেলেন। ১৯৫৬ সালে ইংল্যান্ড শৌখিন দলের সদস্যরূপে ফ্রান্সের বিপক্ষে অংশ নেন। তিনি আশা করেছিলেন যে, ঐ বছরের নভেম্বরে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত অলিম্পিক গেমসে দেশের পক্ষে খেলতে পারবেন। কিন্তু, অলিম্পিক কমিটি রায় দেয় যে, পেশাদার ক্রিকেটার ছিলেন বিধায় তিনি খেলার অযোগ্য। ফলশ্রুতিতে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে করিন্থিয়ান-ক্যাজুয়ালস ত্যাগ করে বোল্টন চার্লটন অ্যাথলেটিকে যোগদান করেন তিনি।

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন