জন এডরিচ
জন হিউ এডরিচ, এমবিই (ইংরেজি: John Edrich; জন্ম: ২১ জুন, ১৯৩৭ - মৃত্যু: ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০) নরফোকের ব্লোফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও কোচ ছিলেন। ১৯৬৩ থেকে ১৯৭৬ সময়কালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষে খেলেন। এ সময়ে জন এডরিচ বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিগণিত হন।[১]
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | জন হিউ এডরিচ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ব্লোফিল্ড, নরফোক, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য | ২১ জুন ১৯৩৭|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ স্কটল্যান্ড | (বয়স ৮৩)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক, প্রশাসক, কোচ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | এরিক এডরিচ (কাকাতো ভাই), বিল এডরিচ (কাকাতো ভাই), জিওফ এডরিচ (কাকাতো ভাই), ব্রায়ান এডরিচ (কাকাতো ভাই) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪১৫) | ৬ জুন ১৯৬৩ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৮ জুলাই ১৯৭৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৪) | ৫ জানুয়ারি ১৯৭১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ৯ মার্চ ১৯৭৫ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৪ | নরফোক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৮ - ১৯৭৮ | সারে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৭৯ | নরফোক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১১ মে ২০১৫ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন।
প্রারম্ভিক জীবন
এক ক্রিকেট পরিবার থেকে উত্থান ঘটেছে এডরিচের। তার চার কাকাতো ভাই - এরিক এডরিচ, বিল এডরিচ, জিওফ এডরিচ এবং ব্রায়ান এডরিচ প্রত্যেকেই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেন। আট থেকে সতেরো বছর বয়স পর্যন্ত ব্রাকনডেল প্রাইভেট স্কুলে অধ্যয়ন করেন। ঐ সময়েই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্রিকেট খেলায় অংশ নিতেন তিনি। সাবেক ক্রিকেটার সিএসআর বসওয়েল তাকে প্রশিক্ষণ দেন।
১৯৫৬ থেকে ১৯৭৮ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সরকারী চাকুরীতে থাকা অবস্থায় ১৯৫৬ ও ১৯৫৭ সালে কম্বাইন্ড সার্ভিসেস দলের পক্ষে চারটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেন। ১৯৫৮ মৌসুমে সারে দলের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার অভিষেক ঘটে। পরের বছর ৫২.৯১ গড়ে ১,৭৯৯ রান সংগ্রহ করেন। পরবর্তী চার বছর মিকি স্টুয়ার্টের সাথে কার্যকরী উদ্বোধনী জুটি গড়েন।
খেলোয়াড়ী জীবন
কাউন্টি ক্রিকেটে সফলতার কারণে স্টুয়ার্ট ও এডরিচ ইংল্যান্ড দলের পক্ষে টেস্ট খেলার জন্য মনোনীত হন। কিন্তু কাউন্টিতে সফলকাম হলেও তৎকালীন সময়ে ক্রিকেট বিশ্বে প্রভাববিস্তারকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মোটেই সফলতা পাননি। ওয়েস হল, গারফিল্ড সোবার্স ও চার্লি গ্রিফিথের ন্যায় বিশ্বমানের বোলারদের মোকাবেলা করে তিনি ছয় ইনিংসে মাত্র ১০৮ রান তুলেছিলেন। এরফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে থাকেন। কিন্তু ১৯৬৪ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া জিওফ্রে বয়কট আঘাত পেলে দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। লর্ডসে অনুষ্ঠিত খেলায় তিনি ১২০ রান করেন। তবে বৃষ্টির কারণে খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়।[২] তা স্বত্ত্বেও ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য মনোনীত হননি তিনি।
নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি, ১৯৬৫
খেলোয়াড়দের আঘাতের কারণে জুলাই, ১৯৬৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টে পুনরায় তার অন্তর্ভুক্তি ঘটে। হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে অপরাজিত ৩১০* রানের ইনিংস খেলেন।[১] ৮ ঘণ্টারও অধিক সময়ে ৫২ চার ও ৫ ছক্কা সহযোগে এ রান তোলেন।[৩] কিন্তু, ইংরেজ অধিনায়ক এম. জে. কে. স্মিথ দলের ইনিংস ঘোষণা করলে গ্যারি সোবার্সের তৎকালীন অপরাজিত ৩৬৫* রানের বিশ্বরেকর্ড ভঙ্গের সম্ভাবনা স্তিমিত হয়ে যায়। খেলায় ইংল্যান্ড ইনিংস ও ১৮৭ রানের ব্যবধানে জয়লাভ করে।[৪]
কিন্তু, এক সপ্তাহ পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে পিটার পোলকের শর্ট-পিচের একটি বল তার মাথায় লাগলে গুরুতর আহত হন। ফলে অপরাজিত ৭* রান থাকা অবস্থায় রিটায়ার্ড হার্ট হতে বাধ্য হন।[৫]
কাট, কভার ড্রাইভে বল ফেলে রান সংগ্রহের কারণে তিনি পরিচিত হয়ে আছেন। পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, তিনি তার সময়কালে সেরা খেলোয়াড় ছিলেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি ৭৭ টেস্টে অংশ নেন। তন্মধ্যে ১৯৬৫ সালে একটি ত্রি-শতকও হাঁকান এডরিচ। তার ত্রি-শতকটি ইংল্যান্ডের পক্ষে পঞ্চম সর্বোচ্চ সংগ্রহ।[৬]
এবি ডি ভিলিয়ার্স | ১২ |
ভিভ রিচার্ডস | ১১ |
গৌতম গম্ভীর | ১১ |
বীরেন্দ্র শেওয়াগ | ১১ |
মমিনুল হক | ১১ |
জন এডরিচ | ১১ |
শচীন তেন্ডুলকর | ১০ |
উৎস: ক্রিকইনফো যোগ্যতা: খেলোয়াড়ী জীবনে ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ অর্ধ-শতক। |
একদিনের আন্তর্জাতিকের ঊষালগ্নে অর্থাৎ প্রথম ওডিআইয়ে তিনি সর্বোচ্চ রান তোলেন এডরিচ।[৭] তৃতীয় টেস্টে বৃষ্টি বাঁধা হয়ে দাড়ানোর কারণে আম্পায়ারদ্বয় অনির্ধারিত খেলা পরিচালনা করেন যা একদিনের আন্তর্জাতিকের প্রথম খেলা হিসেবে স্বীকৃত। ৮ বলের সমন্বয়ে গড়া ৪০ ওভারের খেলায় এডরিচ সর্বোচ্চ ৮২ রান তোলেন। এরফলে তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।
অবসর
অবসর পরবর্তীকালে ১৯৮১ সালে ইংল্যান্ডের টেস্ট দল নির্বাচক মনোনীত হন। ১৯৯৫ সালে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পালন করেন।[৮] ২০০৬-০৭ মৌসুমে সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। অ্যাবরদিনশায়ারে বসবাস করতেন।[৯]
২৩ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে ৮৩ বছর বয়সে উত্তর স্কটল্যান্ডে নিজ বাসগৃহে জন এডরিচ পরলোকগমন করেন।[১০][১১]
সম্মাননা
১৯৬৫ সালে গড়া তার ত্রি-শতক লাভের কারণে উইজডেন কর্তৃপক্ষ তাকে বর্ষসেরা ক্রিকেটারদের অন্যতম হিসেবে মনোনীত করে।[১২] ১৯৭৭ সালে ক্রিকেটে অসাধারণ অবদান রাখার প্রেক্ষিতে এমবিই পদবীতে ভূষিত হন এডরিচ।
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে জন এডরিচ (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে জন এডরিচ (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
পূর্বসূরী মাইক ডেনিস | ইংল্যান্ডের ওডিআই অধিনায়ক ১৯৭৪-৭৫ | উত্তরসূরী অ্যালান নট |