লরেন্স হার্ভি

লরেন্স হার্ভি (ইংরেজি: Laurence Harvey; জন্ম: লারুশ্‌কা মিসচা স্কিকনে,[১] ১ অক্টোবর ১৯২৮[ক] - ২৫ নভেম্বর ১৯৭৩) ছিলেন একজন লিথুয়ানীয় ব্রিটিশ অভিনেতা। পঁচিশ বছরের কর্মজীবনে হার্ভি যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মঞ্চ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনে অভিনয় করেছেন। তিনি রুম অ্যাট দ্য টপ (১৯৫৯) ছবিতে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারশ্রেষ্ঠ ব্রিটিশ অভিনেতা বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং দ্য ওয়ান্ডারফুল ওয়ার্ল্ড অব দ্য ব্রাদার্স গ্রিম (১৯৬২) ছবিতে ভিলহেল্ম গ্রিম চরিত্রে অভিনয় করে সেরা নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এছাড়া তিনি দি অ্যালামো (১৯৬০)-এ উইলিয়াম ব্যারেট ট্র্যাভিস এবং দ্য মাঞ্চুরিয়ান ক্যান্ডিডেট (১৯৬২)-এ রেমন্ড শ চরিত্রে অভিনয় করে সফলতা অর্জন করেন।[২]

লরেন্স হার্ভি
Laurence Harvey
১৯৭৩ সালে হার্ভি
জন্ম
লারুশ্‌কা মিসচা স্কিকনে

(১৯২৮-১০-০১)১ অক্টোবর ১৯২৮
জোনিসকিস, লিথুয়ানিয়া
মৃত্যু২৫ নভেম্বর ১৯৭৩(1973-11-25) (বয়স ৪৫)
হ্যামস্টিড, লন্ডন, ইংল্যান্ড
সমাধিসান্তা বারবারা সমাধি, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
অন্যান্য নামজভি মশেহ স্কিকনে
পেশাঅভিনেতা
কর্মজীবন১৯৪৮-১৯৭৩
দাম্পত্য সঙ্গীমার্গারেট লেইটন
(বি. ১৯৫৭; বিচ্ছেদ. ১৯৬১)

জোন পেরি
(বি. ১৯৬৮; বিচ্ছেদ. ১৯৭২)

পলেন স্টোন
(বি. ১৯৭২; মৃ. ১৯৭৩)
সন্তান

প্রারম্ভিক জীবন

হার্ভি ১৯২৮ সালের ১লা অক্টোবর লিথুয়ানিয়ার ইয়োনিস্কিসে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম লারুশ্‌কা মিসচা স্কিকনে। তার হিব্রু নাম হল স্‌ভি মোশেহ। তিনি বেন স্কিকনে ও এলা জোৎনিচকাইতার তিন পুত্রের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। তার পিতামাতা দুজনেই লিথুয়ানীয় ইহুদি।[৩][৪] তার যখন পাঁচ বছর বয়স, তখন তার পরিবার রিভা সেগালের পরিবার ও তার দুই পুত্র লুইস ও চার্লস সেগালের সাথে এসএস আডলফ ভোরমান জাহাজে করে দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। সেখানে তিনি হ্যারি স্কিকনে নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি জোহানেসবার্গে বেড়ে ওঠেন এবং কৈশোরে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন দক্ষিণ আফ্রিকান সেনাবাহিনীর বিনোদন ইউনিটে কর্তব্যরত ছিলেন।[৫] ১৯৬০ সালের ১লা মে প্রচারিত হোয়াট্‌স মাই লাইন টিভি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন যে তিনি ১৯৩৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন এবং ১৯৪৬ সালে যুক্তরাজ্যে আগমন করেন।[৬]

কর্মজীবন

লন্ডনে আসার পর হার্ভি রয়্যাল একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টে ভর্তি হন,[৭] কিন্তু তিন মাস পর তিনি এই প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন,[৮] এবং মঞ্চনাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন।

দ্য মাঞ্চুরিয়ান ক্যান্ডিডেট (১৯৬২) চলচ্চিত্রের দৃশ্যধারণ কালে হার্ভি (বামে) ও ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা

হার্ভি জ্যাক ক্লেটনের রুম অ্যাট দ্য টপ (১৯৫৯) চলচ্চিত্রে জো ল্যামটন চরিত্রে অভিনয় করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রথম খ্যাতি অর্জন করেন। এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারশ্রেষ্ঠ ব্রিটিশ অভিনেতা বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৯] ছবিটিতে সিমন সিনিয়রে ও হিদার সিয়ার্স যথাক্রমে তার বিবাহিত প্রেমিকা ও বাস্তবিক স্ত্রী চরিত্রে অভিনয় করেন। এটি ১৯৫৯ সালের ব্রিটিশ বক্স অফিসের তৃতীয় জনপ্রিয়তম চলচ্চিত্র এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও চলচ্চিত্রটি ব্যবসা সফল হয়। হার্ভি একই বছর সঙ্গীতধর্মী এক্সপ্রেসো বঙ্গো (১৯৫৯) চলচ্চিত্রে কাজ করেন, এটি ক্লিফ রিচার্ডের আত্মপ্রকাশের জন্য সবচেয়ে বেশি স্মরণীয়। এই কাজের জন্য তিনি টানা দ্বিতীয়বারের মত শ্রেষ্ঠ ব্রিটিশ অভিনেতা বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৯]

১৯৬২ সালে তিনি ইন ওয়াক অন দ্য ওয়াইল্ড সাইড চলচ্চিত্রে বারবারা স্ট্যানউইক, জেন ফন্ডা ও ক্যাপুসিনের সাথে অভিনয় করেন। ফন্ডা তার সাথে কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে ইতিবাচক ছিলেন না, তিনি বলেন, "অভিনেতা ও অভিনেত্রী অনেক রয়েছে এবং লরেন্স হার্ভিরাও রয়েছে। তাদের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা নিজে নিজেই অভিনয়ের মত।"[১০] দ্য ওয়ান্ডারফুল ওয়ার্ল্ড অব দ্য ব্রাদার্স গ্রিম (১৯৬২) চলচ্চিত্রে ভিলহেল্ম গ্রিম চরিত্রে তার অভিনয়ের জন্য তিনি সেরা নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে সফল হয়।[১১]

হার্ভি স্নায়ুযুদ্ধ রোমহর্ষক দ্য মাঞ্চুরিয়ান ক্যান্ডিডেট (১৯৬২) চলচ্চিত্রে রেমন্ড শ চরিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্র সমালোচক ডেভিড শিপম্যান লিখেন, "হার্ভির চরিত্রটি তাকে জোম্বির মত অভিনয় করতে বাধ্য করে এবং কয়েকটি সমালোচনায় এটিকে তার প্রথম দৃঢ় প্রত্যয়ী অভিনয় বলে উল্লেখ করে।"[৮] চলচ্চিত্রটি ব্যবসা সফল হয় এবং এটি হার্ভি অভিনীত সবচেয়ে স্মরণীয় চলচ্চিত্র। তার অভিনীত আ গার্ল নেমড টামিকো (১৯৬২) ও দ্য রানিং ম্যান (১৯৬৩) ছবি দুটি কম সফলতা লাভ করে। ১৯৬৩ সালে তিনি দ্য সেরেমনি চলচ্চিত্র দিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং এতে অভিনয়ও করেন।[১২]

মৃত্যু

হার্ভি প্রচুর ধূমপান ও মদ্যপান করতেন। তিনি পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৩ সালের ২৫শে নভেম্বর লন্ডনের হ্যামস্টিডে মৃত্যুবরণ করেন।[১৩] সে সময়ে তার কন্যা ডমিনোর বয়স ছিল চার বছর, তিনি ২০০৫ সালে ৩৫ বছর বয়সে অতিরিক্ত ব্যথানাশক ঔষধ সেবন করে মারা যান। তাদের দুজনকেই ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা বারবারার সান্তা বারবারা সেমেটারিতে সমাহিত করা হয়েছে।[১৪][১৫]

পুরস্কার ও মনোনয়ন

বছরপুরস্কারবিভাগচলচ্চিত্রফলাফলসূত্র
১৯৫৬থিয়েটার ওয়ার্ল্ড পুরস্কারবিজয়ী[১৬]
১৯৫৯একাডেমি পুরস্কারশ্রেষ্ঠ অভিনেতারুম অ্যাট দ্য টপমনোনীত[১৭]
১৯৫৯বাফটা পুরস্কারশ্রেষ্ঠ ব্রিটিশ অভিনেতারুম অ্যাট দ্য টপমনোনীত[১৮]
১৯৬০বাফটা পুরস্কারশ্রেষ্ঠ ব্রিটিশ অভিনেতাএক্সপ্রেসো বঙ্গোমনোনীত[১৯]
১৯৬৩গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারসেরা নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেতাদ্য ওয়ান্ডারফুল ওয়ার্ল্ড অব দ্য ব্রাদার্স গ্রিমমনোনীত[২০]

টীকা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ


🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন