যুক্তরাজ্য

উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশ

গ্রেট ব্রিটেন ও উত্তর আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্য (ইংরেজি: United Kingdom of Great Britain and Northern Ireland), যা সাধারণত যুক্তরাজ্য (ইংরেজি: United Kingdom, প্রতিবর্ণীকৃত: য়ুনাইটেড্ কিংড্যম্, সংক্ষেপে UK) বা ব্রিটেন (ইংরেজি: Britain, প্রতিবর্ণীকৃত: ব্রিট্যন্) নামে পরিচিত, ইউরোপের মূল ভূখণ্ডের উত্তরপশ্চিম উপকূলের সন্নিকটে অবস্থিত একটি স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্র[১৩] এটি ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলসউত্তর আয়ারল্যান্ড নিয়ে গঠিত।[জ][১৪] গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপ, আয়ারল্যান্ড দ্বীপের উত্তরপূর্বাংশ এবং ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের বেশিরভাগ ছোট দ্বীপ এই দেশের অন্তর্গত।[১৫] উত্তর আয়ারল্যান্ড ও প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ডের মধ্যে এক স্থলসীমা রয়েছে; এছাড়া যুক্তরাজ্য আটলান্টিক মহাসাগর, উত্তর সাগর, ইংলিশ চ্যানেল, কেল্টিক সাগরআইরিশ সাগর দ্বারা আবদ্ধ। যুক্তরাজ্যের মোট আয়তন ২,৪৩,৬১০ বর্গকিলোমিটার (৯৪,০৬০ মা),[১৬][১৭] এবং ২০২২ সালে এর জনসংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৭০ লাখ।

গ্রেট ব্রিটেন ও উত্তর আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্য

United Kingdom of Great Britain and Northern Ireland
যুক্তরাজ্যের জাতীয় পতাকা
পতাকা
জাতীয় সঙ্গীত: "গড সেভ দ্য কিং"[ক]
কুলপ্রতীক:

স্কটল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে (ডান) এবং সর্বত্র (বাম)।
রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
লন্ডন
৫১°৩০′ উত্তর ০°৭′ পশ্চিম / ৫১.৫০০° উত্তর ০.১১৭° পশ্চিম / 51.500; -0.117
সরকারি
ও জাতীয় ভাষা
আঞ্চলিক ও সংখ্যালঘু ভাষা[খ]
নৃগোষ্ঠী
(২০১১)
  • ৮৭.১% শ্বেতাঙ্গ
  • ৭.০% এশীয়
  • ৩.০% কৃষ্ণাঙ্গ
  • ২.০% মিশ্র
  • ০.৯% অন্যান্য
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ
সদস্য দেশ
সরকারএককেন্দ্রিক সংসদীয় সাংবিধানিক রাজতন্ত্র
তৃতীয় চার্লস
ঋষি সুনক
আইন-সভাসংসদ
• উচ্চকক্ষ
হাউস অব লর্ডস
• নিম্নকক্ষ
হাউস অব কমন্স
প্রতিষ্ঠা
• লজ ইন ওয়েলস আইন
১৫৩৫ ও ১৫৪২
• ক্রাউনের ইউনিয়ন
২৪ মার্চ ১৬০৩
• ইউনিয়নের চুক্তি
২২ জুলাই ১৭০৬
• ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের ইউনিয়নের আইনসমূহ
১ মে ১৭০৭
• গ্রেট ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডের ইউনিয়নের আইনসমূহ
১ জানুয়ারি ১৮০১
• আইরিশ মুক্ত রাষ্ট্র সংবিধান আইন
৫ ডিসেম্বর ১৯২২
আয়তন
• মোট
২,৪৩,৬১০ কিমি (৯৪,০৬০ মা)[৪][৫][৬] (৭৮তম)
• পানি (%)
১.৫১ (২০১৫)[৭]
জনসংখ্যা
• ২০২২ আনুমানিক
নিরপেক্ষ হ্রাস ৬,৬৯,৭১,৩৯৫[৮] (২২তম)
• ২০১১ আদমশুমারি
৬,৩১,৮২,১৭৮[৯] (২২তম)
• ঘনত্ব
২৭০.৭/কিমি (৭০১.১/বর্গমাইল) (৫০ তম)
জিডিপি (পিপিপি)২০২৩ আনুমানিক
• মোট
বৃদ্ধি $৩.৮৭২ ট্রিলিয়ন[১০] (৯ম)
• মাথাপিছু
বৃদ্ধি $৫৬,৮৩৬[১০] (৩০তম)
জিডিপি (মনোনীত)২০২৩ আনুমানিক
• মোট
বৃদ্ধি $৩.৩৩২ ট্রিলিয়ন[১০] (৬ষ্ঠ)
• মাথাপিছু
বৃদ্ধি $৪৮,৯১৩[১০] (২৩তম)
জিনি (২০২০)ধনাত্মক হ্রাস ৩৫.৫[১১]
মাধ্যম
মানব উন্নয়ন সূচক (২০২১)বৃদ্ধি ০.৯২৯[১২]
অতি উচ্চ · ১৮তম
মুদ্রাপাউন্ড স্টার্লিং[ঘ] (GBP)
সময় অঞ্চলইউটিসি+০ (গ্রিনিচ মান সময়, পশ্চিম ইউরোপীয় সময়)
• গ্রীষ্মকালীন (ডিএসটি)
ইউটিসি+১ (ব্রিটিশ গ্রীষ্মকালীন সময়, পশ্চিম ইউরোপীয় গ্রীষ্মকালীন সময়)
তারিখ বিন্যাস
গাড়ী চালনার দিকleft[ঙ]
কলিং কোড+৪৪[চ]
ইন্টারনেট টিএলডি.ইউকে[ছ]

কয়েকশো বছর ধরে জমি অধিগ্রহণ এবং বিভিন্ন সদস্য দেশের একত্রীকরণ ও বিচ্ছেদের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য বিবর্তিত হয়েছে। ১৭০৭ সালে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড রাজ্য এক চুক্তির মাধ্যমে গ্রেট ব্রিটেন রাজ্য গঠন করেছিল। ১৮০১ সালে এটি আয়ারল্যান্ড রাজ্যের সাথে একত্রিত হয়ে গ্রেট ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্য গঠন করেছিল। ১৯২২ সালে আয়ারল্যান্ডের বেশিরভাগ অংশ যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে বর্তমান গ্রেট ব্রিটেন ও উত্তর আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্য পরে রইল এবং ১৯২৭ সালে সরকারিভাবে এই নামটি গৃহীত হয়েছিল। নিকটবর্তী আইল অব ম্যানচ্যানেল দ্বীপপুঞ্জ যুক্তরাজ্যের অংশ নয়, কিন্তু যুক্তরাজ্য সরকার এদের প্রতিরক্ষা ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিত্বের জন্য দায়বদ্ধ।[১৮]

যুক্তরাজ্য বিশ্বের প্রথম শিল্পায়িত দেশ। ঊনবিংশ শতাব্দীর বেশিরভাগ সময় ও বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে, বিশেষ করে "পাক্স ব্রিতানিকা"-র সময়পর্বে (১৮১৫–১৯১৪) এটি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দেশ হিসাবে পরিচিত।[১৯][২০] ১৯২০-এর দশকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিশ্বের স্থলভাগ ও জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ জুড়ে বিস্তৃত ছিল, এবং এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য। কিন্তু প্রথমদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাথে জড়িত থাকার জন্য ব্রিটেনের অর্থনৈতিক ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, এবং বিউপনিবেশায়ন নামক এক বৈশ্বিক আলোড়নের জন্য বেশিরভাগ ব্রিটিশ উপনিবেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।[২১][২২][২৩] অনেক প্রাক্তন ব্রিটিশ উপনিবেশের আইনি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ব্রিটিশ প্রভাব চোখে পড়ার মতো, এবং যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতি এখনও বৈশ্বিক স্তরে প্রভাব বিস্তার করছে, বিশেষ করে ভাষা, সাহিত্য, সঙ্গীত ক ক্রীড়া। ইংরেজি ভাষা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ভাষা এবং তৃতীয় সবচেয়ে বেশি প্রচলিত মাতৃভাষা।[২৪]

যুক্তরাজ্য একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রসংসদীয় গণতন্ত্র[ঝ][২৬] যুক্তরাজ্যের রাজধানী ও সবচেয়ে বড় শহর হচ্ছে লন্ডন, যা ইংল্যান্ডেরও রাজধানী। এডিনবরা, কার্ডিফবেলফাস্ট যথাক্রমে স্কটল্যান্ড, ওয়েলসউত্তর আয়ারল্যান্ডের রাজধানী। যুক্তরাজ্যের অন্যান্য প্রধান শহর হচ্ছে বার্মিংহাম, ম্যানচেস্টার, গ্লাসগোলিডস[২৭] যুক্তরাজ্য তিনটি পৃথক আইনি এক্তিয়ার নিয়ে গঠিত: ইংল্যান্ড ও ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ড। এর কারণ হচ্ছে যে যুক্তরাজ্যের সদস্য হওয়ার পরেও এই তিন এলাকা তাদের নিজস্ব আইন ব্যবস্থা বজায় রেখেছে।[২৮] ১৯৯৮ সাল থেকে স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ড তাদের নিজস্ব সরকার ও আইনসভা লাভ করেছে।[২৯]

মনোনীত স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) অনুযায়ী যুক্তরাজ্য বিশ্বের ষষ্ঠ সবচেয়ে বড় অর্থনীতি এবং ক্রয়ক্ষমতা সমতা (পিপিপি) অনুযায়ী বিশ্বের নবম সবচেয়ে বড় অর্থনীতি। এটি এক নিউক্লীয় রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত এবং সামরিক ব্যয়ে সে চতুর্থ স্থান লাভ করেছে[৩০][৩১] ১৯৪৬ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম বৈঠকের সময় থেকে যুক্তরাজ্য এর স্থায়ী সদস্য। এছাড়া এটি কমনওয়েলথ অব নেশনস, কাউন্সিল অব ইউরোপ, জি-৭, ন্যাটো, ফাইভ আইস ইত্যাদি আন্তর্জাতিক সংগঠনের সদস্য। ১৯৭৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য ছিল, কিন্তু পরে সে ইইউ ত্যাগ করেছিল এবং এই ঘটনাটি ব্রেক্সিট হিসাবে পরিচিত।

ব্যুৎপত্তি ও পরিভাষা

৪৩ খ্রিস্টাব্দের সময় "ব্রিটেন" (লাতিন: Britannia, ব্রিতানিআ) বলতে এক রোমান প্রদেশকে বোঝাত এবং বর্তমান ইংল্যান্ডওয়েলস এর অন্তর্গত ছিল। "গ্রেট ব্রিটেন" বলতে সমগ্র দ্বীপকে বোঝাত, যার মধ্যে ফোর্থ নদীর উত্তরের অঞ্চল অন্তর্গত, যা রোমানদের কাছে "কালেদোনিয়া" (লাতিন: Caledonia; বর্তমান স্কটল্যান্ড) নামে পরিচিত। অর্থাৎ, "গ্রেট ব্রিটেন" হচ্ছে "বৃহত্তর" ব্রিটেন।[৩২]

আবার, মধ্যযুগে "ব্রিটেন" বলতে ফ্রান্সের এক ছোট উপদ্বীপকেও বোঝাতে লাগল, যা বর্তমানে ব্রিটানি নামে পরিচিত। এর ফলে ইউরোপের মূল ভূখণ্ডের সন্নিকটে অবস্থিত দ্বীপটিকে বোঝানোর জন্য "গ্রেট ব্রিটেন" এবং ফ্রান্সের উপদ্বীপটিকে বোঝানোর জন্য "লিটল ব্রিটেন" ব্যবহার করা হতো।[৩৩] তবে ১৭০৭ সাল পর্যন্ত "গ্রেট ব্রিটেন" নামটির কোনো সরকারি গুরুত্ব ছিল না।[৩৪]

১৭০৭ সালে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড রাজ্য একত্রিত হয়ে গ্রেট ব্রিটেন রাজ্য গঠন করেছিল।[৩৫] এই রাজ্যকে অনেকসময় "যুক্তরাজ্য" বলে অভিহিত করা হলেও ১৭০৭ থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত এর সরকারি নাম কেবল "গ্রেট ব্রিটেন" ছিল।[৩৬] ১৮০১ সালে ইউনিয়নের আইনসমূহ ১৮০০ গ্রেট ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ড রাজ্যদুটোকে ঐক্যবদ্ধ ক'রে গ্রেট ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্য গঠন করেছিল। আয়ারল্যান্ডের বিভাজন ও ১৯২২ সালে আইরিশ মুক্ত রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার ফলে যুক্তরাজ্যের কাছে আয়ারল্যান্ড দ্বীপের কেবল উত্তর আয়ারল্যান্ড অংশটি পড়ে রইল, এবং ১৯২৭ সালে যুক্তরাজ্যের সরকারি নাম "গ্রেট ব্রিটেন ও উত্তর আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্য" রাখা হয়েছিল।[৩৭]

যুক্তরাজ্য একক সার্বভৌম রাষ্ট্র হলেও ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ড পৃথকভাবে "দেশ" হিসাবে বহুল পরিচিত।[৩৮] যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর ওয়েবসাইট যুক্তরাজ্যকে "দেশের মধ্যে দেশ" (countries within a country) বলে বর্ণনা করেছে।[১৪] উত্তর আয়ারল্যান্ড অনেকসময় "প্রদেশ" (province) হিসাবেও পরিচিত।[৩৯]

"গ্রেট ব্রিটেন" বলতে সাধারণত গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপকে কিংবা ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসের সমষ্টিকে বোঝায়,[৪০] যদিও এটি অনেকসময় সমগ্র যুক্তরাজ্যকে বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।[৪১] এছাড়া যুক্তরাজ্যের বাইরের লোকেরা সমগ্র রাষ্ট্রকে "ইংল্যান্ড" বলেও অভিহিত করেছেন।[৪২]

যুক্তরাজ্য সম্পর্কিত বিষয়াদি বোঝানোর জন্য "ব্রিটিশ" বিশেষণটি ব্যবহার করা হয়, এবং আইনে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব ও জাতীয়তা সম্পর্কিত বিষয়াদি বোঝানোর জন্যও এই বিশেষণটি ব্যবহৃত হয়েছে।[৪৩] যুক্তরাজ্যের ব্যক্তিগণ নিজেদের ব্রিটিশ, ইংরেজ, স্কটিশ, ওয়েলশ, আইরিশ বা উত্তর আইরিশ বলে পরিচয় দেন।[৪৪] আবার, সেখানকার কিছু ব্যক্তির একাধিক জাতীয় পরিচয় থাকতে পারে।[৪৫] তবে যুক্তরাজ্যের কোনো নাগরিকের সরকারি আখ্যা হচ্ছে "ব্রিটিশ নাগরিক"।[৪৬]

ইতিহাস

ইউনিয়নের চুক্তির আগে

উইল্টশায়ারে অবস্থিত স্টোনহেঞ্জ হচ্ছে প্রস্তরখণ্ডের এক বলয় এবং প্রত্যেক খণ্ডের উচ্চতা প্রায় ৪ মি (১৩ ফুট), প্রস্থ প্রায় ২ মি (৭ ফুট) এবং ওজন ২৫ টন (২৫,০০০ কেজি)। ২৪০০–২২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ স্টোনহেঞ্জ স্থাপন করা হয়েছিল।

ব্রিটেনের প্রাগৈতিহাসিক যুগের শেষে সেখানকার জনসংখ্যা মূলত দ্বীপীয় কেল্ট জাতির অন্তর্গত বলে বিশ্বাস করা হয়।[৪৭] ৪৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেনে রোমানদের আক্রমণ শুরু হয়েছিল, যার ফলে দক্ষিণ ব্রিটেন ৪০০ বছর ধরে রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে জার্মানীয় অ্যাংলো-স্যাক্সন বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণের ফলে দ্বীপীয় কেল্ট জাতির ব্রিটনিক শাখা মূলত বর্তমান ওয়েলস, কর্নওয়াল ও হেন অগলেড (উত্তর ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ স্কটল্যান্ডের অংশবিশেষ) পর্যন্ত সীমিত হয়ে গিয়েছিল। অ্যাংলো-স্যাক্সন বসতি স্থাপনের শেষের পর্বে হেন অগলেডেও ব্রিটনিক বসতি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল।[৪৮] দশম শতাব্দীতে অ্যাংলো-স্যাক্সনদের বেশিরভাগ বসতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইংল্যান্ড রাজ্য স্থাপন করেছিল।[৪৯] অন্যদিকে, উত্তরপশ্চিম ব্রিটেনের গ্যালিক ভাষাভাষীরা[৫০] পিক্ট জাতির সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নবম শতাব্দীতে স্কটল্যান্ড রাজ্য স্থাপন করেছিল।[৫১]

১০৬৬ খ্রিস্টাব্দে নর্মান জাতি উত্তর ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ডকে আক্রমণ করেছিল এবং ইংল্যান্ড জয়ের পর তারা ওয়েলসের এক বড় অংশ ও আয়ারল্যান্ডের বেশিরভাগ অংশ অর্জন করেছিল। এছাড়া স্কটল্যান্ডে বসতি স্থাপনের জন্য তাদের আমন্ত্রিত করা হয়েছিল, যার ফলে ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডের প্রত্যেক রাজ্যে উত্তর ফ্রান্সের ধাঁচে সামন্ততন্ত্র ও নর্মান ফরাসি সংস্কৃতি চালু হয়েছিল।[৫২] এই অ্যাংলো-নর্মান শাসকবর্গ স্থানীয় সংস্কৃতিকে অনেকাংশ প্রভাবিত করলেও তাঁরা নিজেরাই ক্রমশ সেই স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গীভূত হয়ে গিয়েছিল।[৫৩]

পরবর্তী ইংরেজ রাজারা ওয়েলসকে সম্পূর্ণভাবে ইংল্যান্ডের অধীনে এনেছিলেন এবং তাঁরা স্কটল্যান্ড দখলের ব্যর্থ চেষ্টা করেছিলেন। আবার, ইংরেজ শাসকেরা উত্তরাধিকারসূত্রে ফ্রান্সের এক বড় অঞ্চল লাভ করেছিলেন এবং তাঁরা ফরাসি মুকুটের দাবিদার ছিলেন। এছাড়া তাঁরা ফ্রান্সের বিভিন্ন যুদ্ধে ভীষণভাবে জড়িত ছিলেন, যেমন একশো বছরের যুদ্ধ। স্কটসের রাজারা সেই সময়ে ফরাসিদের সঙ্গে জোট ক'রে ছিলেন।[৫৪]

১৬০৩ সালে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড রাজ্য একই শাসকের অধীনে এসেছিল, যখন স্কটসের রাজা ষষ্ঠ জেমস উত্তরাধিকারসূত্রে ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের রাজমুকুট লাভ করেছিলেন এবং তিনি তাঁর দরবারকে এডিনবরা থেকে লন্ডনে স্থানান্তর করেছিলেন। তবে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের পৃথক রাজনৈতিক সত্ত্বা এবং তাদের পৃথক রাজনৈতিক, আইনি ও ধার্মিক প্রতিষ্ঠান বজায় ছিল।[৫৫] সপ্তদশ শতাব্দীর মাঝে এই তিন রাজ্য একাধিক সম্পর্কিত যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ছিল (যেমন: ইংরেজ গৃহযুদ্ধ), যার ফলে রাজা প্রথম চার্লসের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল এবং এই তিন রাজ্যে রাজতন্ত্রের সাময়িক অবসান ঘটেছিল। এর জায়গায় ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড জুড়ে এক সাময়িক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।[৫৬]

যদিও পরে রাজতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়েছিল, ১৬৮৮ সালের গৌরবময় বিপ্লব এবং পরবর্তীকালে ইংল্যান্ডে অধিকার বিল, ১৬৮৯ ও স্কটল্যান্ডে অধিকারের দাবি আইন, ১৬৮৯ পাস হওয়ার ফলে এটা নিশ্চিত করা হয়েছিল যে বেশিরভাগ ইউরোপের মতো ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডে চরম রাজতন্ত্র বিরাজ করবে না এবং কোনো স্বঘোষিত ক্যাথলিক যাজক সিংহাসন লাভ করবেন না। এর ফলে সাংবিধানিক রাজতন্ত্রসংসদীয় ব্যবস্থার ভিত্তিতে ব্রিটিশ সংবিধানের বিকাশ হয়েছে।[৫৭] ১৬৬০ সালে রয়্যাল সোসাইটির প্রতিষ্ঠার ফলে বিজ্ঞানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। এই সময়কালীন, বিশেষ করে ইংল্যান্ডে, নৌক্ষমতার বিকাশ এবং আবিষ্কারের অভিযানের আকাঙ্ক্ষার ফলে মূলত উত্তর আমেরিকা মহাদেশে উপনিবেশ অর্জন ও স্থাপন করেছিল।[৫৮]

১৬০৬, ১৬৬৭ ও ১৬৮৯ সালে গ্রেট ব্রিটেনের দুই রাজ্যকে (ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড) ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা ব্যর্থ হলেও ১৭০৫ সালের চেষ্টার ফলে ১৭০৬ সালে দুই রাজ্যের মধ্যে ইউনিয়নের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল।

গ্রেট ব্রিটেন রাজ্য

১ মে ১৭০৭-এ ইউনিয়নের আইন, ১৭০৭-এর ফলে গ্রেট ব্রিটেন রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।[৫৯] অষ্টাদশ শতাব্দীতে রবার্ট ওয়ালপোলের অধীনে ক্যাবিনেট সরকার গড়ে উঠেছিল, যিনি কার্যত ব্রিটেনের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন (১৭২১–১৭৪২)। ধারাবাহিক জ্যাকবাইট অভ্যুত্থান সিংহাসন থেকে প্রোটেস্ট্যান্ট হাউস অব হানোভারকে অপসারণ ক'রে ক্যাথলিক হাউস অব স্টুয়ার্টকে পুনঃস্থাপন করতে চেয়েছিল। ১৭৪৬ সালে কালোডেন যুদ্ধে জ্যাকবাইটদের পরাজিত করা হয়েছিল এবং এরপর স্কটিশ ক্ল্যান প্রধানদের সামন্ততান্ত্রিক স্বাধীনতা হরণ ক'রে স্কটিশ হাইল্যান্ডবাসীদের জোরপূর্বক স্কটল্যান্ডের সাথে অঙ্গীভূত করেছিল। মার্কিন স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলে উত্তর আমেরিকার ১৩টি ব্রিটিশ উপনিবেশ স্বাধীন হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গঠন করেছিল এবং ১৭৮৩ সালে ব্রিটেন এর স্বীকৃতি দিয়েছিল। এরপর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা এশিয়া মহাদেশ, বিশেষ করে ভারতের দিকে বাঁক নিয়েছিল।[৬০]

গ্রেট ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্য

রানি ভিক্টোরিয়া ঊনবিংশ শতাব্দীর সময় যুক্তরাজ্যের রানিভারতের সম্রাজ্ঞী হিসাবে রাজত্ব করেছিলেন।

১৮০০ সালে গ্রেট ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডের সংসদ প্রত্যেক ইউনিয়নের আইন পাস করেছিল, যার ফলে ১ জানুয়ারি ১৮০১-এ এই দুই রাজ্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে গ্রেট ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্য গঠন করেছিল।[৬১]

দুই বিশ্বযুদ্ধ ও আয়ারল্যান্ডের বিভাজন

১৯২১ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সর্বোচ্চ আঞ্চলিক বিস্তৃতি।

ব্রিটেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯১৪–১৯১৮) মিত্রশক্তির সদস্য ছিল এবং ঐ যুদ্ধে মিত্রশক্তি কেন্দ্রীয় শক্তিকে পরাজিত করেছিল। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যইউরোপের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ফরাসি, রুশ ও (১৯১৭ সালের পর) মার্কিন সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি[৬২] ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছিল, বিশেষ করে পশ্চিম রণাঙ্গনে[৬৩] যুদ্ধের পর ব্রিটেন সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নির্বাহী পরিষদের স্থায়ী সদস্যলাভ করেছিল এবং সে বিভিন্ন প্রাক্তন জার্মানউসমানীয় উপনিবেশের কর্তৃত্বপ্রাপ্ত দায়িত্ব লাভ করেছিল। ডেভিড লয়েড জর্জের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য তার শীর্ষে পৌঁছেছিল এবং তখন বিশ্বের স্থলভাগের এক-পঞ্চমাংশ ও জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল।[৬৪]

১৯২০-এর দশকের মাঝে বেশিরভাগ ব্রিটিশ জনসংখ্যা বিবিসির বেতার অনুষ্ঠান শুনত।[৬৫][৬৬] ১৯২৯ সালে পরীক্ষামূলক টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হয়েছিল এবং ১৯৩৬ সালে প্রথম পরিকল্পিত বিবিসি টেলিভিশন সার্ভিস চালু হয়েছিল।[৬৭] আইরিশ জাতীয়তাবাদের উত্থান এবং আইরিশ স্বায়ত্তশাসনের শর্তাবলী নিয়ে আয়ারল্যান্ডের মধ্যে বিবাদের ফলে ১৯২১ সালে দ্বীপটিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল।[৬৮] ১৯২২ সালে অধিরাজ্যের মর্যাদা লাভ করে আইরিশ মুক্ত রাষ্ট্র স্বাধীন হয়েছিল। উত্তর আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যের অংশ হিসাবে রয়ে গেল।[৬৯]

যুদ্ধ-পরবর্তী বিংশ শতাব্দী

কনকর্ড একটি শব্দোত্তর উড়োজাহাজ যা আটলান্টিক মহাসাগরের উপর উড়ানের সময়কাল ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৩.৫ ঘণ্টায় এনেছিল।[৭০]

ইউরোপীয় একত্রীকরণের দশকব্যাপী প্রক্রিয়া চলাকালীন যুক্তরাজ্য পশ্চিম ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিল এবং ১৯৫৪ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৬০ সালে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় মুক্ত বাণিজ্য সংস্থার সাতটি প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের মধ্যে অন্যতম ছিল কিন্তু ১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্য এটি ত্যাগ করে ইউরোপীয় কমিউনিটিজের (ইসি) সদস্য হয়েছিল।[৭১] ১৯৯২ সালে ইসি যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) পরিণত হয়েছিল, তখন যুক্তরাজ্য ইইউ-এর ১২টি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাষ্ট্রের অন্যতম ছিল।

একবিংশ শতাব্দী

২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের ৫১.৯% ভোটদাতা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার পক্ষে ভোটদান করেছিল।[৭২] ২০২০ সালে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করেছিল এবং এই ঘটনাটি ব্রেক্সিট হিসাবে পরিচিত।[৭৩]

৮ সেপ্টেম্বর ২০২২-এ সবচেয়ে দীর্ঘজীবী ও সবচেয়ে বেশিক্ষণ ধরে রাজত্ব করা ব্রিটিশ শাসক রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ৯৬ বছর বয়সে পরলোকগমন করেছিলেন।[৭৪] রানির মৃত্যু পর তাঁর জ্যেষ্ঠ সন্তান তৃতীয় চার্লস ব্রিটিশ সিংহাসন লাভ করেছিলেন।[৭৫]

ভূগোল

যুক্তরাজ্যের একটি উপগ্রহ চিত্র। এখানে স্কটল্যান্ডের শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ অনুপস্থিত।

যুক্তরাজ্যের মোট আয়তন প্রায ২,৪৩,৬১০ বর্গকিলোমিটার (৯৪,০৬০ বর্গমাইল)।[৭৬][৭৭][৭৮] এটি ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত[৭৯] এবং গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপ, আয়ারল্যান্ড দ্বীপের উত্তরপূর্বাংশ বা ছয় ভাগের এক ভাগ ও অন্যান্য আরও ছোট দ্বীপ এর অন্তর্গত। এটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরউত্তর সাগরের মাঝে অবস্থিত এবং এর দক্ষিণ উপকূল ফ্রান্সের উত্তর উপকূল থেকে ৩৫ কিমি (২২ মাইল) দূরে অবস্থিত এবং এই দুটি দেশ ইংলিশ চ্যানেল দ্বারা বিচ্ছিন্ন।[৮০]

১৮৮৪ সালে ইন্টারন্যাশনাল মেরিডিয়ান কনফারেন্স লন্ডনের গ্রিনিচে অবস্থিত রয়্যাল অবজারভেটরিকে মূল মধ্যরেখার মান বিন্দু হিসাবে বেছে নিয়েছিল।[৮১][৮২]

যুক্তরাজ্য ৪৯° ও ৬১° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯° পশ্চিম ও ২° পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। উত্তর আয়ারল্যান্ড ও প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ডের মধ্যে ৩৬০ কিমি (২২৪ মাইল) দীর্ঘ স্থলসীমা রয়েছে।[৮০] গ্রেট ব্রিটেনের তটরেখা ১৭,৮২০ কিমি (১১,০৭৩ মাইল) দীর্ঘ।[৮৩] এটি চ্যানেল টানেলের মাধ্যমে ইউরোপের মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত এবং ৫০ কিমি (৩১ মাইল) দীর্ঘ (পানি বা জলের নিচে ৩৮ কিমি (২৪ মাইল)) এই সুড়ঙ্গ বিশ্বের দীর্ঘতম আন্ডারওয়াটার সুড়ঙ্গ।[৮৪]

জলবায়ু

যুক্তরাজ্যের কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস

যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু বিরাজ করে। সমগ্র বছর জুড়ে এর তাপমাত্রা সাধারণত শীতল এবং বৃষ্টিপাত প্রচুর হয়।[৮০] ঋতুভেদে তাপমাত্রা পরিবর্তিত হয় এবং যুক্তরাজ্যের তাপমাত্রা কখনো ০ °সে (৩২ °ফা)-এর কম কিংবা ৩০ °সে (৮৬ °ফা)-এর বেশি হয়।[৮৫]

রাজনীতি

তৃতীয় চার্লস, ২০২২ সাল থেকে রাজা
লন্ডনের ওয়েস্টমিন্‌স্টার প্রাসাদে যুক্তরাজ্যের সংসদের উভয় কক্ষের কার্যক্রম হয়।

যুক্তরাজ্য ওয়েস্টমিনস্টার পদ্ধতি দ্বারা চালিত একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রসংসদীয় গণতন্ত্র এবং এটি "গণতান্ত্রিক সংসদীয় রাজতন্ত্র" হিসাবেও পরিচিত।[৮৬] এটি একটি কেন্দ্রীভূত এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র,[৮৭][৮৮] যেখানে যুক্তরাজ্যের সংসদ সার্বভৌম।[৮৯] নির্বাচিত হাউস অব কমন্স, মনোনীত হাউস অব লর্ডস ও ব্রিটিশ রাজমুকুট নিয়ে যুক্তরাজ্যের সংসদ গঠিত। সংসদীয় সার্বভৌমত্বের ফলে যুক্তরাজ্যের সংবিধান বিধিবদ্ধ নয় এবং এটি মূলত আলাদা আলাদা লিখিত উৎস নিয়ে গঠিত। এই লিখিত উৎসের মধ্যে সংসদীয় অধিনিয়ম, বিচারপতি দ্বারা তৈরি করা কেস ল, আন্তর্জাতিক চুক্তি ও সাংবিধানিক প্রথা অন্তর্গত।[৯০] অবশ্য সর্বোচ্চ আদালত যুক্তরাজ্যের সংবিধানের নেপথ্যে বিভিন্ন নীতির স্বীকৃতি দিয়েছেন, যেমন সংসদীয় সার্বভৌমত্ব, আইনের শাসন, গণতন্ত্রআন্তর্জাতিক আইন বজায় রাখা।[৯১]

২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, তৃতীয় চার্লস যুক্তরাজ্য ও ১৪টি অন্যান্য স্বাধীন দেশের বর্তমান রাজারাষ্ট্রপ্রধান। এই ১৫টি দেশ কমনওয়েলথ রাজ্য হিসাবে পরিচিত।

প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের সরকারপ্রধান[৯২] ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনক, কনজারভেটিভ পার্টির সংসদ সদস্য ও নেতা।

উপবিভাগীয় সরকারসমূহ

দেশজনসংখ্যামোট আয়তনরাজধানীসংসদফার্স্ট মিনিস্টার
 ইংল্যান্ড৫,৬৪,৮৯,০০০ (২০২১)১,৩০,২৭৯ কিমি (৫০,৩০১ মা)লন্ডননেইনেই
 স্কটল্যান্ড৫৪,৩৬,০০০ (২০২২)৭৭,৯৩৩ কিমি (৩০,০৯০.১ মা)এডিনবরাস্কটিশ সংসদহামজা ইউসাফ
 ওয়েলস৩২,৬৭,৫০১ (২০২২)২০,৭৭৯ কিমি (৮,০২২.৮২ মা)কার্ডিফসেনেডমার্ক ড্রেকফোর্ড
উত্তর আয়ারল্যান্ড১৯,০৩,১০০ (২০২১)১৪,১৩০ কিমি (৫,৪৫৫.৬২ মা)বেলফাস্টউত্তর আয়ারল্যান্ড অ্যাসেম্বলিফাঁকা

বৈদেশিক সম্পর্ক

২০২২ জি-২০ বালি বৈঠকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকার করছেন।

দেশটির সঙ্গে অন্যান্য দেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। এই দেশের পাসপোর্টে ১১৯টি দেশে বিনা ভিসায় ভ্রমণ করা যায়, যা পাসপোর্ট শক্তি সূচকে ৪র্থ স্থানে রয়েছে।[৯৩]

নির্ভরশীল অঞ্চল

যুক্তরাজ্য, ১৪টি ব্রিটিশ ওভারসিজ অঞ্চল[৯৪] ও ব্রিটিশ রাজমুকুটের তিন নির্ভরশীল অঞ্চল[৯৫] মিলে "একক অবিভক্ত রাজ্য" গঠন করে।[৯৬][৯৭] রাজ্যটির সমস্ত অংশ ব্রিটিশ রাজমুকুটের সার্বভৌমত্বের অধীন, কিন্তু এই নির্ভরশীল অঞ্চলগুলো যুক্তরাজ্যের অংশ নয়। যুক্তরাজ্যের এই অবস্থা কমনওয়েলথ রাজ্যের থেকে আলাদা, যেখানে পৃথক পৃথক রাজতন্ত্র থাকলেও রাজশাসক একই।[৯৭]

আক্রোটিরি এবং ডেকিলিয়াআক্রোটিরি এবং ডেকিলিয়াজিব্রাল্টারজিব্রাল্টারচ্যানেল দ্বীপপুঞ্জজার্সিগার্নসিবারমুডাবারমুডাব্রিটিশ ওয়েস্ট ইন্ডিজব্রিটিশ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জদক্ষিণ জর্জিয়া ও দক্ষিণ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জদক্ষিণ জর্জিয়া ও দক্ষিণ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জপিটকের্ন দ্বীপপুঞ্জপিটকের্ন দ্বীপপুঞ্জসেন্ট হেলেনা, অ্যাসেনশন ও ত্রিস্তান দা কুনহাসেন্ট হেলেনা, অ্যাসেনশন ও ত্রিস্তান দা কুনহাআইল অব ম্যানকেইম্যান দ্বীপপুঞ্জকেইম্যান দ্বীপপুঞ্জমন্টসেরাটমন্টসেরাটঅ্যাঙ্গুইলাঅ্যাঙ্গুইলাব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জটার্কস ও কেইকোস দ্বীপপুঞ্জটার্কস ও কেইকোস দ্বীপপুঞ্জব্রিটিশ কুমেরু অঞ্চলআইল অব ম্যান
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন নির্ভরশীল অঞ্চলের অবস্থান: A আইল অব ম্যান; B গার্নসি; C জার্সি; 1 যুক্তরাজ্য; 2 জিব্রাল্টার; 3 আক্রোটিরি এবং ডেকিলিয়া; 4 বারমুডা; 5 টার্কস ও কেইকোস দ্বীপপুঞ্জ; 6 ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ; 7 অ্যাঙ্গুইলা; 8 কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জ; 9 মন্টসেরাট; 10 পিটকের্ন দ্বীপপুঞ্জ; 11 সেন্ট হেলেনা, অ্যাসেনশন ও ত্রিস্তান দা কুনহা; 12 ব্রিটিশ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল; 13 ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ; 14 দক্ষিণ জর্জিয়া ও দক্ষিণ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জ; (15) ব্রিটিশ কুমেরু অঞ্চল

অর্থনীতি

ব্রিটেন একসময় বিশ্বের প্রধান ও অগ্রগামী অর্থনৈতিক শক্তি ছিল। ১৮শ শতকের শেষে ও ১৯শ শতকের শুরুতে ব্রিটেনেই বিশ্বের প্রথম শিল্প বিপ্লব ঘটে। এর সূত্র ধরে এখানে এমন একটি সমাজ সৃষ্টি হয় যাতে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রাধান্য ছিল বেশি।

ব্রিটেনই ছিল বিশ্বের প্রথম নগরায়িত রাষ্ট্র, যেখানে অর্ধেকেরও বেশি নাগরিক শহরে বাস করেন। দ্রুত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের সুবাদে ১৯শ শতকে রাণী ভিক্টোরিয়ার আমলে ব্রিটেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশে পরিণত হয়। শিল্প বিপ্লবের আগে ও পরে বহুকাল যাবত লন্ডন ছিল বিশ্বে পুঁজিবাদের মূল কেন্দ্র। ২.৫. ট্রিলিয়ন জিডিপি নিয়ে যুক্তরাজ্য ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি । লন্ডন এখনও বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলির একটি।

জনপরিসংখ্যান

ভাষা

উত্তর আয়ারল্যান্ডের নিউরিতে দোভাষী (আইরিশইংরেজি) ফলক।

ইংরেজি যুক্তরাজ্যের সরকারি ও সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ভাষা এবং এটি ইংল্যান্ড হতে উদ্ভূত।[৯৮][৯৯] যুক্তরাজ্য তার ব্যক্তি ও বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সংযোগ ও বিশ্বাস স্থাপন করার জন্য বৈশ্বিক স্তরে সক্রিয়ভাবে ইংরেজি ভাষাকে প্রচার করে।[১০০][১০১] এক অনুমান অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের ৯৫% জনসংখ্যা হচ্ছে একভাষিক ইংরেজিভাষী বক্তা[১০২] এবং ৫.৫% সাম্প্রতিক অভিবাসনের মাধ্যমে প্রচলিত ভাষায় কথা বলে।[১০২] যুক্তরাজ্যে প্রচলিত অভিবাসী ভাষার মধ্যে দক্ষিণ এশীয় ভাষার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যার মধ্যে পাঞ্জাবি, উর্দু, বাংলা, সিলেটি, হিন্দিগুজরাটি উল্লেখযোগ্য।[১০৩] ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, পোলীয় ভাষা ইংল্যান্ডে দ্বিতীয় সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ভাষা এবং ৫,৪৬,০০০ জন এই ভাষার বক্তা।[১০৪] ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের প্রতি দশ লাখ মানুষের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ ইংরেজিতে তেমন কথা বলত না।[১০৫]

সংস্কৃতি

আধুনিক যুগের শিল্পকলাতেও ব্রিটেন সবসময়ই গুরুত্ব পেয়েছে। ব্রিটেনের লেখকদের রচিত নাটক, উপন্যাস, গল্প এবং সম্প্রতি চিত্রনাট্য বিশ্বব্যাপী আদৃত। চিত্রশিল্প ও সঙ্গীতের ক্ষেত্রে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলির তুলনায় পিছিয়ে থাকলেও সাহিত্য সৃষ্টিতে ব্রিটিশেরা সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। তবে বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটেনেও গুরুত্বপূর্ণ শিল্পী ও সুরকারের দেখা মেলে, যাদের মধ্যে চিত্রশিল্পী ডেভিড হকনি এবং সুরকার স্যার এডওয়ার্ড এলগারের নাম করা যায়। তাই ব্রিটেনকে বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ সংস্কৃতির দেশ বলা হয়।

ক্রীড়া

২০২৩ সালে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার সিটিম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মধ্যে একটি ফুটবল খেলা। অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল যুক্তরাজ্য হতে উদ্ভূত।

অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল, টেনিস, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, রাগবি ইউনিয়ন, রাগবি লিগ, রাগবি সেভেনস, গল্ফ, বক্সিং, নেটবল, ওয়াটার পোলো, ফিল্ড হকি, ইংলিশ বিলিয়ার্ডস, ডার্ট, রোয়িং, রাউন্ডারস ও ক্রিকেট যুক্তরাজ্য থেকে উদ্ভূত হয়েছে কিংবা যুক্তরাজ্যে অনেকটা উন্নীত হয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর ভিক্টোরীয় যুগে অনেক আধুনিক ক্রীড়ার উদ্ভাবন ও নিয়মবিধি তৈরি করা হয়েছে।[১০৬][১০৭]

২০০৩ সালের একটি পোল অনুযায়ী ফুটবল যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়া।[১০৮] ফিফা ইংল্যান্ডকে ক্লাব ফুটবলের জন্মস্থান হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে, এবং ১৮৬৩ সালে এবিনজার কব মর্লি প্রথম ফুটবলের নিয়মবিধি তৈরি করেছিলেন।[১০৯] প্রত্যেক হোম নেশনের (ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ড) নিজস্ব ফুটবল সংঘ, জাতীয় দল ও লিগ ব্যবস্থা রয়েছে এবং ফিফার পাশাপাশি এরা পৃথকভাবে ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসেসিয়েশন বোর্ডের অধিষ্ঠাতা সদস্য। ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লিগ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দেখা ফুটবল লিগ।[১১০] ৩০ নভেম্বর ১৮৭২-এ ইংল্যান্ডস্কটল্যান্ডের মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলা হয়েছিল।[১১১] আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলসউত্তর আয়ারল্যান্ড সাধারণত আলাদা দেশ হিসাবেই অংশগ্রহণ করে।[১১২]

যুক্তরাজ্য ১৯০৮, ১৯৪৮ ও ২০১২ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমসের আয়োজন করেছিল, এবং লন্ডন এই তিন অলিম্পিক খেলার আয়োজন দেশ ছিল। বার্মিংহাম ২০২২ কমনওয়েলথ গেমস আয়োজন করেছিল, এবং এটি সপ্তমবার যুক্তরাজ্যের কোনো সদস্য দেশ কমনওয়েলথ গেমস আয়োজন করেছিল (ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলস প্রত্যেকে কমপক্ষে একবার কমনওয়েলথ গেমস আয়জন করেছে)।[১১৩]

প্রতীক

লন্ডনের দ্য মল এলাকায় একসারি ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা।

ইউনিয়ন জ্যাক, যা "ইউনিয়ন ফ্ল্যাগ" নামেও পরিচিত, যুক্তরাজ্যের জাতীয় পতাকা।[১১৪] ১৬০৬ সালে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের পতাকা মিলে একে তৈরি করা হয়েছিল এবং পরে ১৮০১ সালে সন্ত প্যাট্রিকের পতাকা এর সাথে মিলিত হয়েছিল। ইংল্যান্ডের পতাকা সন্ত জর্জ ও স্কটল্যান্ডের পতাকা সন্ত আন্দ্রিয়কে প্রকাশ করে।[১১৫] ইউনিয়ন জ্যাকের ওয়েলসকে উপস্থাপন করা হয়নি, কারণ যুক্তরাজ্য গঠনের আগে ওয়েলস ইংল্যান্ডের অংশ ছিল। ওয়েলসকে উপস্থাপন করার জন্য ইউনিয়ন জ্যাকে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনাকে পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।[১১৬] যুক্তরাজ্যের জাতীয় সঙ্গীত "গড সেভ দ্য কিং" এবং রাজশাসক মহিলা হলে গানে ব্যবহৃত "কিং" ও পুংলিঙ্গবাচক সর্বনামগুলোর জায়গায় যথাক্রমে "কুইন" ও স্ত্রীলিঙ্গবাচক সর্বনাম ব্যবহার করা হয়।

পরিবহন

যুক্তরাজ্যের প্রধান বিমানসংস্থা ব্রিটিশ এয়ারওয়েস৷ যুক্তরাজ্যের পরিবহন ব্যবস্থা উন্নতমানের সড়ক, বিমান, রেল ও নৌপথের নেটওয়ার্ক নিয়ে গঠিত। প্রধান সড়ক বা মেইন রোড ব্যবস্থাটি লন্ডন, এডিনবরাবেলফাস্ট শহরগুলিকে কেন্দ্রবিন্দু করে চারদিকে প্রসারিত হয়েছে। প্রধান সড়কগুলির মোট দৈর্ঘ্য ৪৬,৬৩২ কিলোমিটার। এর বাইরেও আছে একটি মোটরওয়ে বা মহাসড়ক নেটওয়ার্ক।

৩,৪৭৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ব্যবস্থাটি বার্মিংহাম, গ্লাসগো, লিডস, লিভারপুল, ম্যানচেস্টারলন্ডন শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এছাড়াও আরও প্রায় ৩,৪২,০০০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা রয়েছে যুক্তরাজ্যে।

যুক্তরাজ্যের জাতীয় রেল নেটওয়ার্কের দৈর্ঘ্য গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপে ১৬,১১৬ রাউট কিলোমিটার এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে ৩০৩ রাউট কিলোমিটার। ব্যবস্থাটি প্রতিদিন ১৮ হাজার যাত্রী এবং ১০০টি মালবাহী ট্রেন পরিবহন করে। লন্ডন, গ্লাসগো, কার্ডিফ, এডিনবরা, বার্মিংহাম এবং আরও বেশ কিছু প্রধান শহরে পৌর রেল নেটওয়ার্ক অত্যন্ত উন্নত।

লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বিশ্বের ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যুক্তরাজ্যে মোট ৪৭১টি বিমানবন্দর আছে। যুক্তরাজ্যের আমদানিকৃত পণ্যের ৯৫% জলপথে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে উত্তর সাগরের উপকূলে অবস্থিত সাফোক কাউন্টির ফিলিক্সস্টোয়ে বন্দর (Felixstowe) ইউরোপের চতুর্থ বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। টেমস নদীর তীরে এসেক্স কাউন্টিতে অবস্থিত টিলবারি বন্দর (Tilbury) এবং দক্ষিণ উপকূলের সাদ্যাম্পটন (Southampton) আরও দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র বন্দর।

আরও দেখুন

টীকা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

সরকারি
সাধারণ তথ্য
পর্যটন
🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ