লাদাখি ভাষা
লাদাখি ভাষা (তিব্বতি: ལ་དྭགས་སྐད་, ওয়াইলি: La-dwags skat), বা বোধি ভাষা ভারতের লাদাখ অঞ্চলে ব্যবহৃত একটি তিব্বতি ভাষা।জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের লেহ জেলার এটি প্রধান ভাষা এবং এটিকে পার্শ্ববর্তী কার্গিল জেলায় পুরিগি বা বালতি বলা হয়। তিব্বতি ভাষা পরিবারের অন্তর্গত হলেও একই ভাষা পরিবারের তিব্বতি ভাষার সাথে এটি পরস্পর-অবোধগম্য।
লাদাখি | |
---|---|
ལ་དྭགས་སྐད། লাদাক্স স্কাত | |
দেশোদ্ভব | ভারত, নেপাল, চিন, পাকিস্তান |
অঞ্চল | লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের (লেহ এবং কার্গিল জেলা), বালতিস্তান |
মাতৃভাষী | ১,৩০,০০০ (২০০০–২০০১)[১] |
চীনা-তিব্বতি
| |
তিব্বতি লিপি | |
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-৩ | দুইয়ের মধ্যে এক:lbj – Ladakhizau – Zangskari |
গ্লোটোলগ | lada1244 (Ladakhi)[২]zang1248 (Zangskari)[৩] |
ভারতে প্রায় ২,০০,০০০ লাদাখি বক্তা আছেন এবং চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে সম্ভবত ১২,০০০ বক্তা বসবাস করেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশ চাংথাং অঞ্চলে থাকেন। সম্প্রদায়ের ভাষার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব এবং বিভিন্ন বয়েসের মধ্যে এই ভাষার সক্রিয় ব্যবহার সত্ত্বেও লাদাখি মাতৃভাষীদের সংখ্যা ২০০১ সালে ১,০০,০০০ থেকে ২০১১ সালে ১৪,০০০-তে হ্রাস পেয়েছে।[৪]
বর্গীকরণ
নিকোলাস তুরনার্দ্রে লাদাখি, বালতি এবং পুরিগিকে পারস্পরিক বোধগম্যতার বিচারে ভিন্ন ভাষা বলে মনে করেন।[৫] একটি গোষ্ঠীর হিসেবে জাংস্কারির সঙ্গে এই ভাষাগুলোকে লাদাখি–বালতি বা পশ্চিম পুরকালীন তিব্বতি ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত হিসেবে গণ্য করা হয়।
উপভাষা
লাদাখির উপভাষাগুলো হলো: লেহ'র লেহস্কাত; লেহ'র উত্তরপশ্চিম অঞ্চলে ব্যবহৃত শামস্কাত; সিন্ধু উপত্যকায় ব্যবহৃত সুরমাত্রিক উপভাষা স্তোত্স্কাত; লেহ'র উত্তরে ব্যবহৃত নুবরা; কার্গিলে ব্যবহৃত পুরিগি বা বালতি। উচ্চ লাদাখে এবং জংস্কারে ব্যবহৃত প্রকারগুলোর মধ্যে লাদাখি এবং মধ্য তিব্বতি ভাষাসমূহের পশ্চিমি উপভাষাগুলোর বৈশিষ্ট্যতা দেখতে পাওয়া যায়।
জাংস্কারি লাদাখির একটি উপভাষা এবং এর চারটি প্রকার আছে, স্তোদ, ঝুনগ, শাম এবং লুঙ্গনা। এটি তিব্বতি লিপিতে লেখা হয়।
লিপি
অন্যান্য তিব্বতি ভাষাগুলোর থেকে লাদাখির উচ্চারণ ধ্রুপদী তিব্বতির কাছাকাছি বলে লাদাখি সাধারণত তিব্বতি লিপিতে লেখা হয়। লাদাখিরা শব্দের এমন বহু প্রত্যয়ের উচ্চারণ করে থাকেন যেগুলো আম্দো, খাম্স এবং মধ্য তিব্বতির মতো অন্য তিব্বতি ভাষাগুলোতে শব্দহীন থাকে। এই প্রবণতা লেহ'র পশ্চিমে এবং নিয়ন্ত্রণ রেখার পাকিস্তানি দিকে বালতিস্তানে আরও বেশি সুস্পষ্ট। উদাহরণস্বরুপ, একজন লাদাখি 'কুঠার' উচ্চারণ করবেন স্তা হিসাবে কিন্তু একজন তিব্বতি সেটাকেই উচ্চারণ করবেন তা [tá] হিসাবে। একজন তিব্বতি འབྲས་ 'চাল' উচ্চারণ করবেন [ɳʈɛ́ʔ] হিসাবে, একজন লাদাখি করবেন [ɖas] হিসাবে, এবং একজন কার্গিন নিবাসী করবেন [bras] হিসাবে।
কথ্য লাদাখি তিব্বতি লিপিতে লেখা হবে না তা লেখার জন্য ধ্রুপদী তিব্বতিকে লাদাখিকরণ করে তা ব্যবহার করা হবে এই নিয়ে লাদাখে বিতর্ক আছে।[৬] মুসলিম ধর্মাবলম্বী লাদাখিরা লাদাখি বলেন কিন্তু তিব্বতি লিপি ব্যবহার করেন না। আবার একদিকে যেমন অধিকাংশ বৌদ্ধ লাদাখিরা তিব্বতি লিপি পড়তে পারেন কিন্তু ধ্রুপদী তিব্বতি বুঝতে পারেন না, অন্যদিকে কিছু লাদাখি বৌদ্ধধর্ম পণ্ডিত আছেন যাঁরা মনে করেন যে লাদাখি শুধুমাত্র ধ্রুপদী তিব্বতির মতো করেই লেখা উচিত। কথ্য লাদাখিতে স্বল্প পরিমাণে বই বা পত্রিকা ছাপানো হয়েছে।
লাদাখি ভাষাকে যে রোমানিকরণ করা হয় যে পদ্ধতিতে তার নাম হলো ওয়াইলি প্রতিবর্ণীকরণ এবং এর বর্ধিত সংস্করণ। এই পদ্ধতিতে তিব্বতী উচ্চারণের বদলে তিব্বতী লিপিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- এ. এইচ. ফ্রান্ক ১৯০১ আ স্কেচ অফ লাদাখি গ্রামার ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জুলাই ২০১৩ তারিখে জার্নাল অফ দ্য রয়াল এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গল ৭০.১