তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল

দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল

তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল (TAR), বা শিচাং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, সংক্ষেপে তিব্বত বা শিচাং (চীনা: 西藏; ফিনিন: Xīzàng; তিব্বতি: བོད་ওয়াইলি: Bod) হচ্ছে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের একটি আঞ্চলিক পৰ্যায়ের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। তিব্বত অঞ্চলকে প্রতিস্থাপিত করে এই অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়, গণপ্ৰজাতন্ত্ৰী চীনের চীন গণরাজ্য থেকে লাভ করা প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে, কাশাগ থেকে বরখাস্ত করে ১৯৫৯ সালের তিব্বতী আন্দোলনের প্ৰায় ৫ বছর পর এবং ১৯৫১ সালের তিব্বতকে গণপ্ৰজাতন্ত্ৰী চীনে অন্তর্ভুক্তি করার প্ৰায় ১৩ বছর পর।

তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল
Xizang Autonomous Region

Chinese: 西藏自治区
Tibetan: བོད་རང་སྐྱོང་ལྗོངས།
Autonomous region
Name প্রতিলিপি
 • Chinese西藏自治区 (Xīzàng Zìzhìqū)
 • Abbreviation藏 (pinyin: Zàng)
 • Tibetan scriptབོད་རང་སྐྱོང་ལྗོངས།
 • Wylie transliterationbod rang skyong ljongs
 • official transcription (PRC)Poi Ranggyong Jong
Map showing the location of the Tibet Autonomous Region
Map showing the location of the Tibet Autonomous Region
নামকরণের কারণFrom word Tibat of disputed origin.
CapitalLhasa
Largest cityXigazê
Divisions5 prefecture-level cities, 2 prefectures, 6 districts, 68 counties, 692 townships
সরকার
 • SecretaryWu Yingjie
 • ChairmanLosang Jamcan
আয়তন[১]
 • মোট১২,২৮,৪০০ বর্গকিমি (৪,৭৪,৩০০ বর্গমাইল)
এলাকার ক্রম2nd
জনসংখ্যা (December 2014)[২]
 • মোট৩১,৮০,০০০
 • ক্রম32nd
 • জনঘনত্ব২.৫৯/বর্গকিমি (৬.৭/বর্গমাইল)
 • ঘনত্বের ক্রম33rd
Demographics
 • Ethnic composition90% Tibetan
8% Han
0.3% Monpa
0.3% Hui
0.2% others
 • Languages and dialectsTibetan, Mandarin Chinese
আইএসও ৩১৬৬ কোডCN-54
GDP (2014)CNY 92.1 billion
US$ 15 billion (32nd)
 - per capitaCNY 29,279
US$ 4,766 (28th)
HDI (2010)0.569[৩] (medium) (31st)
ওয়েবসাইটwww.Xizang.gov.cn
Tibet
"Tibet" in Chinese as "Xīzàng" (top)
and in Tibetan as "Bod" (bottom)
চীনা নাম
চীনা 西藏
আক্ষরিক অর্থ"Western Tsang"
Tibet Autonomous Region (TAR)
সরলীকৃত চীনা 西藏自治区
ঐতিহ্যবাহী চীনা 西藏自治區
আক্ষরিক অর্থ"Tibet Autonomous Region"
তিব্বতি নাম
তিব্বতি བོད་

চীনের ভেতর একে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই অঞ্চলের বর্তমান সীমারেখা ১৮ শতকে নির্ধারিত করা হয়[৪] এবং যা জাতিগত-সাংস্কৃতিক তিব্বতের অৰ্ধাংশসহ। আয়তনে ১২,০০,০০০ বর্গকিলোমিটার (৪,৬০,০০০ মা) অঞ্চল নিয়ে তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চীনের জিংজিয়াং অঞ্চলের পর দ্বিতীয় সৰ্ববৃহৎ অঞ্চল, এমনকি পার্বত্য এবং দুর্গম পরিবেশের অঞ্চল হওয়ার জন্য চীনের সবচেয়ে কম ঘনবসতিপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল।

ইতিহাস

বৰ্তমান কালের পণ্ডিতরা এখনও এই বিষয়ের ওপর বিতৰ্ক করেন যে চীনা মিং বংশ(১৩৬৮-১৬৪৪) এবং তিব্বতের মধ্যে প্রকৃত সম্পৰ্ক কেমন ছিল, ১৩-১৪ শতকে মংগোলরা তিব্বত দখল করার এবং ইউয়ান প্ৰশাসনিক শাসনের পর চীনা মিং বংশই প্ৰকৃত অৰ্থে তিব্বতের ওপর সাৰ্বভৌম নিয়ন্ত্ৰণ রেখেছিল কিন?[৫][৬][৭] ১৭২০ সাল থেকে তিব্বত চীন এবং কিং বংশের প্ৰশাসনিক শাসনের অধীনে রক্ষিত হয়ে আসছিল, ১৯১২ সাল থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত জিনহাই বিপ্লব এবং চীনা সরকারের জাপানীদের সাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যস্ত থাকার জন্য তিব্বত বিচ্ছিন ছিল। জাতিগত-সাংস্কৃতিক তিব্বতের অন্যান্য অঞ্চলসমূহ (অৰ্থাৎ পূর্ব খাম এবং আমডো) ও ১৮ শতকের মধ্যভাগে চীনা বংশগত শাসনের অধীন ছিল[৮] বৰ্তমানে এই অঞ্চলসমূহ কিংহাই, গানসু, সিচুয়ান এবং য়ুন্নান অঞ্চলের অন্তৰ্গত।

১৯৫০ সালে চীনের গণ মুক্তি সেনা তিব্বতী সেনাবাহিনীক চামডো শহরের নিকট এক যুদ্ধে পরাজিত করে। ১৯৫১ সালে তিব্বতের প্ৰতিনিধিরা চীনা কেন্দ্ৰীয় গণ সরকারের সাথে একটা ১৭ দফা চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার ফলস্বরূপ তিব্বত চীনের সাৰ্বভৌম দখলদারিত্ব লাভ করার সাথে সাথে তিব্বত চীনের অঙ্গ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। চুক্তিপত্রটি কয়েক মাস পর লাছা'তে অনুমোদন করা হয়।[৯][১০] যদিও ১৭ দফা এই চুক্তিপত্রটিতে দালাই লামাকে স্বায়ত্তশাসনের ভার প্ৰদান করা হয়েছিল, ১৯৫৫ সালে সাম্যবাদী কায়দায় "তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্ৰস্তুতি সমিতি" গঠন করা হয় এক সমপৰ্যায়ের শাসন বব্যস্থা চালানোর জন্য। ১৯৫৯ সালে দালাই লামা ভারত পালিয়ে আসেন এবং ১৭ দফা চুক্তিপত্রটি বর্জন করা হয়। ১৯৬৫ সালে এইভাবে তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গঠিত হল, যার মৰ্যাদা অন্যান্য চীনা অঞ্চলের সমান।

ভৌগোলিক পরিবেশ

তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল পৃথিবীর সর্বোচ্ছ স্থান তিব্বতীয় মালভূমিতেতে অবস্থিত। উত্তর তিব্বতীয় ঢালু গড়ে ৪,৫৭২ মিটার (১৫,০০০ ফু) এর ও বেশি। নেপালের সাথে তিব্বত সীমান্তে মাউন্ট এভারেস্ট অবস্থিত।

মাউন্ট এভারেস্ট

সরকার

প্রশাসনিক অঞ্চল

স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটি সাতটি প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত: পাঁচটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং দুইটি প্রশাসনিক অঞ্চল।

এই প্রশাসনিক অঞ্চলনসমূহ মোট ৬৮টি প্রদেশ পর্যায়ের প্রশাসনিক উপবিভাগে এবং পাঁচটি জেলাঃ (লাসা, দইলুংডেগেন, সামযুবযে, কারুব, বায়ি, and নেডং) আছে।

Administrative divisions of Tibet
Division code[১১]English nameTibetanWylie transliteration
Tibetan pinyin
ChinesePinyinArea in km2[১২]Population 2010[১৩]SeatDivisions[১৪]
DistrictsCounties
 540000Tibet
Autonomous Region
བོད་རང་སྐྱོང་ལྗོངས།bod rang skyong ljongs
Poi Ranggyongjong
西藏自治区Xīzàng Zìzhìqū1228400.003,002,166Lhasa668
5540100Lhasaལྷ་ས་གྲོང་ཁྱེར།lha sa grong khyer
Lhasa Chongkyir
拉萨市Lāsà Shì29538.90559,423Chengguan District26
4540200Shigatse / Xigazêགཞིས་ཀ་རྩེ་གྲོང་ཁྱེར།ggzhis ka rtse grong khyer
Xigazê Chongkyir
日喀则市Rìkāzé Shì182066.26703,292Samzhubzê District117
3540300Chamdo / Qamdoཆབ་མདོ་གྲོང་ཁྱེར།chab mdo grong khyer
Qamdo Chongkyir
昌都市Chāngdū Shì108872.30657,505Karub District110
7540400নিইংচিཉིང་ཁྲི་གྲོང་ཁྱེར།nying khri grong khyer
Nyingchi Chongkyir
林芝市Línzhī Shì113964.79195,109বেই জেলা16
6540500Shannanལྷོ་ཁ་གྲོང་ཁྱེར།lho kha grong khyer
Lhoka Chongkyir
山南市Shānnán Shì79287.84328,990Nêdong District111
2542400Nagqu Prefectureནག་ཆུ་ས་ཁུལ།nag chu sa khul
Nagqu Sakü
那曲地区Nàqū Dìqū391816.63462,382Nagqu County11
1542500Ngari Prefectureམངའ་རིས་ས་ཁུལ།mnga' ris sa khul
Ngari Sakü
阿里地区Ālǐ Dìqū296822.6295,465Gar County7
Yamdrok Lake
Namtso Lake

জনসংখ্যা

ধর্ম

তিব্বতের অধিকাংশ মানুষ বৌদ্ধধর্মাবলম্বী। তিব্বতি জনগোষ্ঠী মহাযান মতে তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম চর্চা করে থাকে।

তিব্বতে ধর্ম (২০১২ সাল অনুযায়ী)[১৫]
তিব্বতী বৌদ্ধধর্ম
  
৭৮.৫%
বোন
  
১২.৫%
Chinese religions and others
  
৮.৫৮%
ইসলাম[১৬]
  
০.৪%
Christianity
  
০.০২%
মৈত্রেয় বৌদ্ধমূর্তি তাশিলহুনপো বংশের

শহর এবং গ্রাম

"আরামদায়ক গৃহ ব্যবস্থা"

২০০৬ সালের শুরু থেকেই, পরম্পরাগত এবং যাযাবরের ন্যায় পশু পালনকারী ২৮০০০০ তিব্বতীদের বল প্ৰয়োগ করে গ্রাম এবং শহরে সরিয়ে নেয়া হয়। সেই অঞ্চলসমূহে নতুন নতুন গৃহ নিৰ্মাণের সাথে পূৰ্ব থেকে নির্মিত গৃহসমূহকে পুনরায় নিৰ্মাণ করে মোট ২০ লাখ লোকের বাসযোগ্য করা হয়। কম মানের ঘরে থাকা লোকদের সরকারি মানের সাথে খাপ খাইয়ে নিজ গৃহ পুনৰ্নিৰ্মাণ করতে বলা হয়। যার প্ৰায় খরচ বাসিন্দাদের ব্যাংকের ধারের মাধ্যমে বহন করতে হয়েছিল। কিংহাইতে প্ৰথম শুরু হওয়া জনসংখ্যা স্থানান্তর কর্মসূচীকে "আরামদায়ক গৃহ ব্যবস্থা" বলা হয়েছে যেখানে ৩০০০০০ যাযাবরদের স্থান দেওয়া হয়। এবং এটি "নব সমাজবাদী গ্রাম নিৰ্মাণ" কর্মসূচীর অন্তৰ্গত। তিব্বতী সংস্কৃতির ওপর এর প্ৰভাবকে দেশত্যাগী এবং মানবাধিকার গ্রুপসমূহ উভয়ে সমালোচনা করেছে।[১৭] কেবল কৃষি কাজ জানা স্থানান্তরিত লোকেদের কর্মসংস্থান পেতে অসুবিধায় ভোগে। তাই আয়ের অভাব সরকারি সমৰ্থন কাৰ্যক্ৰমে ক্ষতি পূরণ করেছে।[১৮] ২০১১ সালে ঘোষণা করা হয় যে ২০০০০ কমিউনিস্ট পাৰ্টি ক্যাডারকে নতুন শহরে স্থান দিয়া হবে।[১৭]

অর্থনীতি

পর্যটন তিব্বতীয় অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ

জীবন জীবিকার জন্য তিব্বতীয়রা ঐতিহ্যগতভাবে কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। চীনা অর্থনৈতিক সংস্কার এর প্রভাবে ১৯৮০ সালে,তিব্বতে ট্যাক্সি চালনা এবং হোটেল ব্যবসা সহজলভ্যতা লাভ করে। ২০১১ সালে,তিব্বতরে মোট দেশজ উৎপাদন৬০.৫ বিলিয়ন(US$9.60 billion) ইউয়ান অতিক্রম করে যায়, যা ২০০০ সালের চেয়ে সাত গুন বেশি অর্থাৎ ১১.৭৮ বিলিয়ন(US$1.47 billion) ইউয়ান ছিল। ২১ শতকের প্রথম থেকেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বছরে শতকরা ১০ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।[১৯]

পর্যটন

তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের লাসায় পোতালা প্রসাদ।

বিদেশি পর্যটকরা তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রথম ভ্রমনের সুযোগ পায় ১৯৮০ সালে। তখন প্রধান আকর্ষণ ছিল লাসায় অবস্থিত পোতালা প্রসাদ, এছাড়াও আরো অনেক আকর্ষণীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে- জোখাং মন্দির, নামতসু হ্রদ, এবং তাশিলহুনপ আশ্রম।[২০]

যাতায়াত

বিমানবন্দর

লাসা গঙ্গার বিমানবন্দর

তিব্বতে কয়েকটি বেসামরিক বিমানবন্দর হচ্ছে লাসা গঙ্গার বিমানবন্দর,[২১] কামডো বাগডা বিমানবন্দর, নিয়িংছি বিমানবন্দর, এবং গুন্সা বিমানবন্দর।

গাড়ি প্রদেশের গুন্সা বিমানবন্দর ১লা ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করে, যা চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের চতুর্থ বেসামরিক বিমানবন্দর ।[২২]

জিগেজ এর পীচ বিমানবন্দর ৩০ অক্টোবর ২০১০ সালে সম্পূর্ণ করা হয়।[২৩]

সমুদ্র পৃষ্ট থেকে ৪৪৩৬ মিটার উচ্চতার নাজ্ঞু দাগ্রিং বিমানবন্দর হচ্ছে ২০১৪ সালে পৃথিবীর সবথেকে উঁচু বিমানবন্দর।[২৪]

রেলওয়ে

কিংহাই–তিব্বত রেলওয়ে গোলমুড থেকে লাসা পর্যন্ত ১২ অক্টোবর ২০০৫ সালে সম্পূর্ণ করা হয়। নিয়মিত সেবার জন্য এটি ১লা জুলাই খুলে দেয়া হয়।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

আরও দেখুন

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ