নথি আদান-প্রদান
নথি আদানপ্রদান হল বিতরণের অনুশীলন অথবা ডিজিটাল মিডিয়াতে প্রবেশ প্রদানের ব্যবস্থা করা, যেমন কম্পিউটার প্রোগ্রাম, মাল্টিমিডিয়া (অডিও, ছবি এবং ভিডিও), ডকুমেন্টস অথবা ই-বই। ফাইল আদান প্রদান বিভিন্নভাবে সংরক্ষণ করা হতে পারে। সঞ্চয় (storage), প্রেরণ (transmission) এবং ছড়ানোর সাধারণ উপায় হল ম্যানুয়াল শেয়ারিং ব্যবহার যেমন রিমুভেবল মিডিয়া, কেন্দ্রীভূত কম্পিউটারের সার্ভার, ওয়েব ভিত্তিক হাইপারলিংকড ডকুমেন্টস এবং বিতরণকৃত পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্কিং।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/6/63/Shareaza_2.5.2.0_Screenshot_English.jpg/220px-Shareaza_2.5.2.0_Screenshot_English.jpg)
ধরণ
পিয়ার-টু-পিয়ার আদানপ্রদান
পিয়ার-টু-পিয়ার ফাইল আদান প্রদান পিয়ার-টু-পিয়ার(P2P) অ্যাপ্লিকেশন আর্কিটেকচারের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। কম্পিউটারগুলোতে অন্যান্য ব্যবহারকারীদের আদান প্রদানকৃত ফাইলসমূহ ডিরেক্টরি সার্ভারে তালিকাভূক্ত করা হয়ে থাকে। পিটুপি প্রযুক্তি ন্যাপস্টার, স্পোটিফাই এবং ইনফিনিটের মতো জনপ্রিয় সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছিল। সবচেয়ে জনপ্রিয় পিটুপি শেয়ারিং এর প্রোটোকল হল বিটটরেন্ট।
ফাইল সিংক এবং আদানপ্রদানকারী সেবা
ক্লাউড-বেসড ফাইল সিংক্রনাইজিং এবং শেয়ারিং সেবা প্রত্যেক ব্যবহারকারীদের নেটওয়ার্ক ডিভাইসের উৎসর্গকৃত শেয়ারিং ডিরেক্টরি থেকে ফাইল হালনাগাদ করার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় ফাইল স্থানান্তর ব্যবস্থাকে বাস্তবায়ন করে। এই ফোল্ডারে রাখা ফাইলগুলোও সাধারণত ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে প্রবেশ করা সম্ভব, এবং অন্যান্য ব্যবহারকারীরা ফাইল দেখা অথবা সহযোগিতার জন্য খুব সহজেই তা আদান প্রদান করতে পারবে। এই ধরনের সেবা ড্রপবক্স এবং গুগল ড্রাইভের মতো কাস্টমার-ওরিয়েন্টেড ফাইল হোস্টিং সেবার ফলে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
আরসিংক (rsync) হল আরও ঐতিহ্যগত প্রোগ্রাম যেটি ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং ফাইলসমূহ সরাসরি যন্ত্র থেকে যন্ত্র (machine-to-machine) ব্যবস্থার মাধ্যমে সিংক্রোনাইজ করত।
ডাটা সিংক্রোনাইজেশন সাধারণভাবে, ফাইল আদান প্রদান করার জন্য অন্যান্য পন্থাও ব্যবহার করতে পারে, যেমন বিতরণকৃত ফাইল সিস্টেম, ভার্সন কন্ট্রোল অথবা মিরর ব্যবস্থা।
ইতিহাস
ফাইল প্রখম বিনিময় করা হয় অপসারণযোগ্য মিডিয়াতে (removable media)। কম্পিউটারগুলো দূরবর্তী কোন ফাইলসমূহতে প্রবেশ করতে পেরেছিল ফাইল সিস্টেম মাউন্টিং, বুলেটিন বোর্ড সিস্টেম (১৯৭৮), ইউজনেট (১৯৭৯), এবং এফটিপি সার্ভারগুলোর (১৯৮৫) মাধ্যমে। ইন্টারনেট রিলেই চ্যাট (১৯৮৮) এবং হটলাইন (১৯৯৭) ব্যবস্থা ব্যবহারকারীদের চ্যাট এবং ফাইল বিনিময়ের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে যোগাযোগ করার সুযোগ করে দেয়। এমপিথ্রি এনকোডিং যেটি ১৯৯১ সালে আদর্শায়িত করা হয় এবং যেটির ফলে অডিও ফাইলগুলোর আকার যথেষ্ট কমে গিয়েছিল তা ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে এর ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়। ১৯৯৮ সালে এমপিথ্রি ডটকম এবং অডিওগ্যালাক্সি চালু হওয়ার পর ডিজিটাল মিলিনিয়াম কপিরাইট আইন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় এবং প্রথম এমপিথ্রি প্লেয়ার ডিভাইস চালু করা হয়[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]।
১৯৯৯ সালের জুন মাসে ন্যাপস্টার অগঠিত কেন্দ্রীভূত পিয়ার-টু-পিয়ার সিস্টেম হিসেবে প্রকাশিত হয়[১], যেটিতে তালিকাভূক্তকরণ এবং পিয়ার খোঁজার জন্য একটি কেন্দ্রীয় সার্ভারের প্রয়োজন হয়। সাধারণত এটিকে প্রথম পিয়ার-টু-পিয়ার ফাইল শেয়ারিং সিস্টেম বলে অবহিত করা হয়।
২০০০ সালে জিনিউটেলা, ইডংকি২০০০ এবং ফ্রিনেট চালু করা হয় যখন এমপিথ্রি ডটকম এবং ন্যাপস্টার মামলার সম্মুখিন হয়। জিনিউটেলা প্রথম বিকেন্দ্রিত ফাইল শেয়ারিং নেটওয়ার্ক হিসেবে মার্চে চালু করা হয়। জিনিউটেলা নেটওয়ার্কে সকল যোগাযোগ স্থাপনকারী সফটওয়্যারকে সমান বলে বিবেচনা করা হয়, এবং সেইজন্য নেটওয়ার্কটির কোন কেন্দ্রবিন্দুজনিত ব্যর্থতা ছিল না। জুলাই মাসে ফ্রিনেট প্রথম নামহীন নেটওয়ার্ক হিসেবে জনসম্মুখে আসে। সেপ্টেম্বর মাসে ইডংকি২০০০ এর ক্লায়েন্ট এবং সার্ভার সফটওয়্যার প্রকাশ করা হয়[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]।
২০০১ সালে ম্যাকের জন্য কাজা(Kazaa) এবং পয়জন চালু করা হয়। এটির ফাস্টট্র্যাক প্রোটোকল নেটওয়ার্ক বিতরণকৃত ছিল, এটি জিনিউটেলার চেয়েও রুটিং দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য আরও ট্রাফিক সুপারনোড নিয়োগ দিতো। নেটওয়ার্কটি প্রাইভেট এবং সুরক্ষিত ছিল এবং কাজার দল মরফিয়াসের মতো অন্যান্য সেবাদাতা সংস্থাকে ফাস্টট্র্যাক নেটওয়ার্কের বাইরে রাখতে প্রচুর চেষ্টা করেছিল[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]।
২০০১ সালের জু্লাইয়ে বিভিন্ন রেকর্ডিং কোম্পানি ন্যাপস্টারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল এবং এএন্ডএম রেকর্ড প্রতিষ্ঠানের নিকট হেরে গিয়েছিল[২]। ন্যাপস্টারের ক্ষেত্রে এই রায় দেয়া হয় যে একটি অনলাইন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মিলিনিয়াম কপিরাইট আইনের নিরাপদ আশ্রয় ব্যবস্থার “ক্ষণস্থায়ী নেটওয়ার্ক প্রেরণ(transitory network transmission)” ব্যবহার করতে পারবে না যদি তাদের সার্ভার দ্বারা নেটওয়ার্কটি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকে[৩]।
আদালতে হেরে যাওয়ার পরপরই ন্যাপস্টারকে আদালতের নির্দেশে পালনের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। এর ফলে ব্যবহারকারীরা অন্যান্য পিটুপি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে থাকে এবং ফাইল আদান প্রদান আগের মতোই বৃদ্ধি পেতে থাকে[৪]। অডিওগ্যালাক্সি সেটেলাইট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা জনপ্রিয়ভাবে বাড়তে থাকে এবং লাইমওয়্যার ক্লায়েন্ট এবং বিটটরেন্ট প্রোটোকলও চালু করা হয়। ম্যালওয়্যারযুক্ত এবং নেদারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইনি লড়াই সত্ত্বেও ২০০৪ সালে অধঃপতনের আগ পর্যন্ত, কাজাই ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় ফাইল আদান প্রদানের প্রোগ্রাম। ২০০২ সালে টোকিও জেলা আদালত ফাইল দুর্বৃত্তদের ঠেকাতে এবং আমেরিকার রেকর্ডিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের মামলার ফলে অডিওগ্যালাক্সি কার্যকরীভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/2/27/Pro_piracy_demonstration.jpg/220px-Pro_piracy_demonstration.jpg)
২০০২ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত অনেক বিটটরেন্ট সেবা প্রতিষ্ঠিত হয় যার মধ্যে রয়েছে সুপারনোভা.অর্গ, আইএসওহান্ট, টরেন্টস্পাই এবং দ্য পাইরেট বের মত সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। ২০০২ সালে রেকর্ডিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা কাজা ব্যবহারকারীদের উপর মামলা দায়ের করে। এইধরনের মামলার ফলে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের স্কুলগুলোর প্রশাসনিক নিয়মে ফাইল শেয়ারিং আইন যুক্ত করে(যদিও কিছু শিক্ষার্থী স্কুলের সময়ের পরে তা আর মেনে চলত না)। ২০০৫ সালে ইডংকি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ইমুল(eMule) ইডংকি নেটওয়ার্কে প্রভাবশালী সেবাদাতা হয়ে উঠে। ২০০৬ সালে পুলিশ ইডংকির রেজারব্যাক২ সার্ভার এবং ক্ষণস্থায়ীভাবে দ্য পাইরেট বের সার্ভার বন্ধ করার জন্য অভিযান চালায়[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]।
২০০৯ সালে ট্র্যাকারদের প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতাদের দোষী করে প্রকাশিত রায়ের মাধ্যমে পাইরেট বে-এর বিচারকাজ শেষ হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ফলে দ্বিতীয় বার রায় প্রকাশ করা হয় ২০১০ সালের নভেম্বরে। ২০১০ সালের অক্টোবরে আরিস্টা রেকর্ডিং এর সাথে মামলায় হেরে যাওয়ার ফলে আদালতের নির্দেশে লাইমওয়্যার-এর সেবাকার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়, যদিওবা ফ্রোস্টওয়্যার(Frostwire) এবং জিটিকে-জিনিউটেলার(gtk-gnutella) মতো ওপেন সোর্স ক্লায়েন্টের জন্য জিনিউটেলা নেটওয়ার্ক সক্রিয় থাকে। এছাড়াও এমএলডংকি(MLDonkey) এবং শেয়ারজার(Shareaza) মতো বহু প্রোটোকলধর্মী ফাইল শেয়ারিং সফটওয়্যার অন্যান্য সকল বড় ফাইল শেয়ারিং প্রোটোকলগুলো গ্রহণ করে, ফলে ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ধরনের ফাইল শেয়ারিং প্রোগ্রামগুলো ইন্সটল এবং কনফিগার করার প্রয়োজন পড়ে না।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
২০১২ সালের ১৯শে জানুয়ারি ইউনাইটেড স্ট্রেটস ডিপার্টমেন্ট অব জাসটিজ মেগাআপলোডের(২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত) জনপ্রিয় ডোমেইনটি বন্ধ করে দেয়। ফাইল আদান প্রদানের ওয়েবসাইটটির তথ্যমতে এতে প্রতিদিন ৫০,০০০,০০০ জন মানুষ ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করত[৫]। কিম ডটকম নিউজিল্যান্ডে গ্রেফতার হন এবং বহিঃ সমর্পনের অপেক্ষায় আছেন[৬]। মামলার ফলে ঘটিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় ফাইল আদান প্রদানের ওয়েবসাইটের সম্পূর্ণ পরাজয় কেউই ভালো ভাবে মেনে নিতে পারেনি, এর প্রতিবাদে অ্যাননিমাসের মতো হ্যাকারদের দল বিভিন্ন ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়[৫]। পরের দিনে অন্যান্য ফাইল শেয়ারিং সাইট তাদের সেবা বন্ধ করে দেয়; ২২শে জানুয়ারি ফাইলসনিক তাদের জনসাধারণের ডাউলোড সেবা অবরুদ্ধ করে দেয় এবং ২৩শে জানুয়ারি ফাইলসার্ভের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]।
ফাইল আদানপ্রদান সম্পর্কে জনসাধানণের মতামত
২০০৪ সালের প্রাক্কলনে (estimate) অনলাইন ফাইল শেয়ারিং এ প্রায় ৭০ মিলিয়ন মানুষ অংশগ্রহণ করে[৭] । ২০০৯ সালের সিবিএ নিউজ জরিপ অনুসারে ৫৮% আমেরিকানরা যারা ফাইল শেয়ারিং ব্যবস্থাকে অনুসরণ করে তারা “যদি একজন ব্যক্তি মিউজিক সিডির মালিক হন এবং সীমিত সংখ্যক বন্ধু এবং পরিচিতদের সাথে তা আদান প্রদান করে” এ বক্তব্যটিকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন; এতে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়ষ্কদের অংশগ্রহণ ৭০% এর মতো ছাড়িয়ে যায়[৮]।
ক্যারাওয়ে তার ফাইল আদান প্রদান সংস্কৃতির জরিপে([৯] ২০১২) বলেন যে, ৭৪.৪% অংশগ্রহণকারী মনে করেন বিতরণের উন্নতি এবং উন্নয়ণের জন্য সঙ্গীতশিল্পিদের ফাইল আদান প্রদান ব্যবস্থাকে মেনে নেয়া উচিত।
অর্থনৈতিক প্রভাব
দ্যা ক্রনিকল অব হাইয়ার এডুকেশনের লেখক ডেভিড গ্লেনের মতে,“ অর্থনৈতিক গবেষণায় সংখ্যাগুরু সিদ্ধান্ত হল এই যে ফাইল শেয়ারিং বিক্রয় ব্যবস্থাকে আঘাত করে” [১০]। প্রফেসর পিটার টিসমাক তার সাহিত্য পর্যালোচনায় ২২টি স্বাধীন গবেষণায় মিউজিক ফাইল শেয়ারিং এর প্রভাব খুঁজে পান। ২২টি গবেষণার ১৪টিতেই পাওয়া যায়, অননুমোদিত ডাউনলোড রেকর্ডকৃত গানের বিক্রিতে খারাপ অথবা আরও খারাপ প্রভাব বিস্তার করে। তিনটি গবেষণায় কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পাওয়া যায়নি এবং বাকি ৫টিতে ভাল প্রভাব পাওয়া গেছে[১১][১২][১৩]।
২০০৪ সালে ফেলিক্স ওবারহোলজার-গি এবং কোলমেন স্ট্রাম্পফ এই দুই অর্থনীতিবিদদের গবেষণায় এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে বিক্রিতে মিউজিক ফাইল শেয়ারিং এর প্রভাব “শূন্য থেকে পরিসংখ্যাকিয়ভাবে পৃথক করা যায় না” [১৪][১৫]। এই গবেষণাটি অন্যান্য অর্থনীতিবিদদের দ্বারা বিতর্কিত হয়েছিল, বিশেষ করে স্ট্যান লিবইটজ যিনি বলেন ওবারহোলজার-গি এবং কোলমেন স্ট্রাম্পফ সঙ্গীত শিল্পের ব্যাপারে বিভিন্ন অনুমানের উপর ভিত্তি করে মন্তব্য করেছেন “যেটি কোন মতেই ঠিক নয়”[১৪][১৬][১৭]। ২০১০ সালের জুন মাসে বিলবোর্ড এই প্রতিবেদন দেয় যে ওবারহোলজার-গি এবং কোলমেন স্ট্রাম্পফ তাদের মতামত পরিবর্তন করেছেন, এখন তা পরিবর্তন করে “শেয়ারিং এর জন্য বিক্রিতে এর সাম্প্রতিক অধঃপতন ২০% এর বেশি নয়” বলে মন্তব্য করেন[১৮]। যাইহোক, নেলসন সাউন্ডস্ক্যান সিস্টেম প্রমাণ করে সহ-সম্পাদক অবৈধ ডাউনলোডিং যাতে লোকজনদের ফাইলটি আসল হওয়ার জন্য ভয়ভীতি না দেখায় সেদিকে লক্ষ্য রাখে। “বিভিন্ন সৃষ্টিশীল শিল্পপ্রতিষ্ঠানে সম্পাদককে সৃষ্টিশীল থাকার প্রেরণার যোগানোর জন্য আর্থিক উদ্দীপক কম ভূমিকা পালন করে থাকে। নতুন কাজের জন্য তথ্য সরবরাহ সংগতিপূর্ণ থাকে এই যুক্তির উপর যে ফাইল শেয়ারিং সম্পাদক এবং প্রকাশককে নিরুৎসাহিত করে না। ফাইল শেয়ারিং এর আবির্ভাব থেকেই মিউজিক, বই এবং চলচ্চিত্রের উৎপাদন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে”[১৯]। গ্লেন বিলবোর্ডের লোকজন নিম্নাবস্থিত তথ্যকে বিতর্কিত বলে উল্লেখ করে বলেন, “সাউন্ডস্ক্যানের নতুন প্রকাশের সংখ্যার জন্য যে কোন প্রদত্ত বছর নতুন বাণিজ্যিক শিরোনামকে প্রতিনিধিত্ব করে, প্রয়োজনীয় নতুন সৃষ্টিশীল কাজকে নয়”[২০]। আমেরিকার রেকর্ডিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন অনুরূপভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বলে, নতুন প্রকাশ এবং নতুন সৃষ্টিশীল কাজ দুটোই আলাদা জিনিস। এই কথা দ্বারা বুঝায় পুনঃপ্রকাশ, নতুন সংকলিত পুরোনো গান, এবং নতুন অ্যালবামের জন্য শুধুমাত্র ডিজিটাল তালিকা। সাউন্ডস্ক্যানও অটলভাবে তাদের খুচরো বিক্রেতার(বিশেষকরে অ-ঐতিহ্যগত খুচরো বিক্রেতা) সংখ্যা বাড়িয়েছে তাদের বিগতবছরগুলোর নমুনার মাধ্যমে, যারা বাজারে আনা নতুন প্রকাশের সংখ্যাকে উত্তমভাবে ধরে রেখেছে। ওবারহোলজার-গি এবং কোলমেন স্ট্রাম্পফ যা পেয়েছিলেন তা হল নতুন প্রকাশিত অ্যালবামের অনুসরণ করার উত্তম ক্ষমতা, অধিক উদ্দীপক দ্বারা তাদের তৈরি করার জন্য নয়[২১]।
২০০৬ সালে বিরগিট অ্যানডারসন এবং মারিওন ফ্রেন্জ কর্তৃক তৈরিকৃত গবেষণায়(ইন্ডাস্ট্রি কানাডা কর্তৃক প্রকাশিত) “কানাডায় পিটুপি ফাইল শেয়ারিং এবং সিডি ক্রয়ের মধ্যে সরাসরি কোন সম্পর্ক খুঁজে পাননি” [২২]। এই জরিপের ফলাফলটি শিক্ষাবিদ এবং পরবর্তী পুনর্মূল্যায়নকারীদের দ্বারা একইভাবে সমালোচিত হয়েছিল যেখানে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির ডক্টর জর্জ আর. বার্কারের তথ্যটি বিপরীত উপসংহার পেয়েছিল[২৩]। মোট ৭৫% পিটুপি ডাউনলোডকারীরা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল যে যদি পিটুপি সেবা পাওনা না যায় তাহলে তারা হয়তোবা তা শুধু ক্রয় ওয়েবসাইট(৯%), শুধু সিডি(১৭%) অখবা সিডি এবং ক্রয় ওয়েবসাইট(৪৫%) থেকে সংগ্রহ করবে। শুধু ২৫% লোক বলে তারা মিউজিকটি ক্রয় করতো না যদি না তা পিটুপি তে বিনামূল্যে না থাকত। বার্কার আরও বলেন এটি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেন “পিটুপি নেটওয়ার্ক প্রাপ্যতা মিউজিক ডাউনলোডকারীদের চাহিদা ৭৫% হ্রাস করছে যেটি অ্যান্ডারসন এবং ফ্রেন্জের প্রকাশিত বক্তব্য থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত” [২৪]।
বাজারে আধিপত্য
ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের একটি সংবাদপত্র প্রতিবেদনে পাওয়া যায় যে, ফাইল শেয়ারিং মিউজিক তালিকায় কম রেংক এর অ্যালবামের সাথে উদ্বর্তনের(survival) সুযোগ কমিয়ে দেয় এবং মিউজিক তালিকার রেংকে শীর্ষ ছিল তাদের প্রকাশ বাড়িয়ে দেয়, জনপ্রিয় এবং পরিচিত শিল্পীদের প্রায়শই মিউজিক তালিকার শীর্ষে থাকার সুযোগ করে দেয়। এটি নতুন এবং কম পরিচিত শিল্পীদের জন্য খারাপ প্রভাব ফেলে অন্যদিকে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় শিল্পী এবং সেলিব্রিটিদের কাজকে প্রচার করতে সাহায্য করে[২৫]।
আরও সাম্প্রতিক গবেষণা যেটি বিটটরেন্ট সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে মুক্তির পূর্বেই প্রকাশিত মিউজিক অ্যালবামের ফাইল আদান প্রদান নিয়ে পরীক্ষা করা হয় তাতে “প্রতিষ্ঠিত এবং জনপ্রিয় শিল্পী কিন্তু নতুন এবং ক্ষুদ্র শিল্পী নয়” তাদের ক্ষেত্রে ভাল প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। নর্থ ক্যালিফোর্নিয়া স্ট্রেট ইউনিভার্সিটির রবার্ট জি.হ্যামমন্ডের মতে একটি অ্যালবাম যেটি প্রকাশের এক মাস আগেই ফাঁস করা হয় তার বিক্রিতে বিনয়ী বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। “বিক্রিতে এই বৃদ্ধি অ্যালবামের বিক্রিতে প্রভাব ফেলতে পারে তা অন্যান্য কারণের তুলনায় কম পাওয়া যায়”।
"ফাইল শেয়ারিং প্রবক্তারা সাধারণত তর্ক করেন যে, ফাইল শেয়ারিং গানের ফাঁকা ঘর লেভেলিং-এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত/জনপ্রিয় শিল্পীদের তুলনায় নতুন/ক্ষুদ্র শিল্পীদের জন্য গানের গণতান্ত্রিক খরচ ব্যবস্থার প্রচলন করে, ব্যাপকতর শ্রোতাদের দ্বারা শিল্পীদের তাদের কাজ কঠিন করার মাধ্যমে। আমার ফলাফল সুপারিশ করে যে এর বিপরীতও হতে পারে, যেটি ফাইল শেয়ারিং আচরণের প্রমাণের সাথে সংগতিপূর্ণ।"[২৬]
বিলবোর্ড সতর্ক করে যে, এই গবেষণা শুধুমাত্র পূর্বে প্রকাশের সময়কালকে নিয়ে করা হয়েছে এবং অবিরত ফাইল শেয়ারিংকে নিয়ে নয় যা একটি প্রকাশ তারিখকে অনুসরণ করে। “পাইরেসি বিক্রি করতে সাহায্য করে এই বিশ্বাসের সমস্যা হল এটি কোথায় বৈধ এবং অবৈধের মধ্যে রেখা টানবে তা নির্ধারণ করে। গবেষণায় অন্তর্নিহিত সত্য হল অ্যালবাম বিক্রিতে ভাল প্রভাব ফেলার জন্য প্রি-রিলিজ ফাইল শেয়ারিং এর জন্য ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েরই প্রয়োজন। আইটিউন্স, আমাজন এবং বেস্ট বাই প্রতিষ্ঠান ছাড়া ফাইল শেয়ার ক্রয়কারীর বদলে শুধুমাত্র ফাইল শেয়ারই হবে। যদি তুমি “ফাইল শেয়ারিং বৈধ হতে হবে” কথাটি বহন করে তর্কের মাধ্যমে এর যুক্তিসম্মত উপসংহার প্রদান কর, তাহলে আজকের খুচরো ব্যবসায়িরা আগামী দিনের ফাইল শেয়ারিং সেবাদাতা হবে যেটি নিজ নিজ ক্লাউড স্টোরেজ সেবাদানকারীদের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করবে[২৭]।
প্রাপ্যতা
অনেকেই মনে করেন ফাইল আদান প্রদান চিত্তবিনোদন বিষয়বস্তুর মালিকদের ইন্টারনেটে এটিকে আরও ব্যাপকভাবে পাওয়ার জন্য বৈধ পারিশ্রমিক অথবা বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে বাধ্য করেছে। ২০১১ সালে স্যান্ডভাইন তাদের প্রতিবেদনে দেখায় যে নেটফ্লিক্সের ইন্টারনেট ট্রাফিক বিটটরেন্টের ইন্টারনেট ট্রাফিককে অতিক্রম করে ফেলেছে[২৮]।
কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়
ফাইল আদান প্রদান ব্যবস্থা কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়কে আরও বাড়িয়ে তুলেছে এবং তা বিভিন্ন মামলার সূত্রপাত করেছে। কিছু মামলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ আদালত পর্যন্তও এগিয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ এমজিএম এবং গ্রোকস্টারের ব্যাপারে উচ্চ আদালত এই রায় দেয় যে, পিটুপি নেটওয়ার্কের সৃষ্টিকারি ব্যক্তি এই সংক্রান্ত মামলায় দায়ী হতে পারে যদি তাদের সফটওয়্যার কপিরাইট লঙ্ঘনজনিত কাজের জন্য তৈরি করার প্রমাণ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে সকল ফাইল আদান প্রদানই অবৈধ নয়। পাবলিক ডোমেইনের আওতাভূক্ত বিষয়বস্তু স্বাধীনভাবে আদান প্রদান করা যাবে। এমনকি কপিরাইট দ্বারা সংরক্ষিত কাজও নির্দিষ্ট পরিস্থিতি সাপেক্ষে আদান প্রদান করা যেতে পারে। উদাহারণস্বরূপ কিছু শিল্পী, প্রকাশক এবং রেকর্ড ল্যাবেল কিছু নির্দিষ্ট কাজের জন্য অফুরন্ত বিতরণের লাইসেন্স পেতে পারে যা কখনো কিছু শর্তসাপেক্ষে এবং মুক্ত বিষয়বস্তু এবং ফাইল আদান প্রদানকে তারা প্রচারমূলক বিষয় হিসেবে সমর্থন করে থাকে।
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
- Levine, Robert. Free Ride: How the Internet Is Destroying the Culture Business and How the Culture Business Can Fight Back, Bodley Head, February 2011.
- Ghosemajumder, Shuman. Advanced Peer-Based Technology Business Models. MIT Sloan School of Management, 2002
- Silverthorne, Sean. Music Downloads: Pirates- or Customers? ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ জুন ২০০৬ তারিখে. Harvard Business School Working Knowledge, 2004.
- Ralf Steinmetz, Klaus Wehrle (Eds). Peer-to-Peer Systems and Applications. আইএসবিএন ৩-৫৪০-২৯১৯২-X, Lecture Notes in Computer Science, Volume 3485, September 2005
- Stephanos Androutsellis-Theotokis and Diomidis Spinellis. A survey of peer-to-peer content distribution technologies. ACM Computing Surveys, 36(4):335–371, December 2004. ডিওআই:10.1145/1041680.1041681.
- Stefan Saroiu, P. Krishna Gummadi, and Steven D. Gribble. A Measurement Study of Peer-to-Peer File Sharing Systems. Technical Report # UW-CSE-01-06-02. Department of Computer Science & Engineering. University of Washington. Seattle, WA, USA.
- Selected Papers — A collection of academic papers.