অষ্টাবক্র

ভারতীয় লেখক

অষ্টাবক্র (সংস্কৃত: अष्टावक्रः, আইএএসটি: Aṣṭāvakraḥ) হল হিন্দুধর্মের একজন বৈদিক ঋষি। তার নামের আক্ষরিক অর্থ হল "আটটি বিকৃতি", যে আটটি শারীরিক বিকৃতির নিয়ে তিনি জন্মগ্রহন করেছিলেন। বৈদিক ঋষি অরুণী তার মাতামহ, তার বাবা-মা দুজনেই অরুনীর দর্শনের ছাত্র ছিলেন। অষ্টাবক্র হিন্দু ইতিহাস মহাকাব্য ও পুরাণের বিখ্যাত চরিত্র হয়েছিলেন।[৩]

অষ্টাবক্র
অষ্টাবক্র শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু হিন্দু ধর্মগ্রন্থে তাঁকে একজন ঋষি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। উপরে, ১৯ শতকে আঁকা অষ্টাবক্রের একটি চিত্রকর্ম।
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম
বিদেহ, বর্তমানে জনকপুর, নেপাল
ধর্মহিন্দুধর্ম
দাম্পত্য সঙ্গীসুপ্রভা
পিতামাতা
  • কাহোদ (পিতা)
  • সুজাতা (মাতা)
ধর্মীয় জীবন
গুরুযাজ্ঞবল্ক্য[১][টীকা ১]

অষ্টাবক্র হলেন অষ্টাবক্র গীতার লেখক, যা হিন্দু ঐতিহ্যে অষ্টাবক্র সংহিতা নামেও পরিচিত। পাঠ্যটি ব্রহ্মআত্মার উপর একটি গ্রন্থ।[৪]

জন্ম

উদ্দালক-কন্যা সুজাতা ও উদ্দালক-শিষ্য কহোড়ের পুত্র। অষ্টাবক্র মাতৃগর্ভেই বেদজ্ঞান লাভ করেছিলেন। একদিন বেদপাঠরত কহোড়কে তিনি মাতৃগর্ভ থেকেই বলেন যে, কহোড়ের বেদপাঠ ঠিক হচ্ছে না। মহর্ষি কহোড় তাতে ক্রুদ্ধ হয়ে গর্ভস্থ পুত্রকে শাপ দিলেন যে, তার দেহ অষ্টস্থানে বক্র হবে। অষ্টাবক্র তখনও ভূমিষ্ঠ হন নি ওঁর পিতা অর্থোপার্জনের আশায় জনক রাজার কাছে যান। সেখানে বন্দী নামে এক পণ্ডিত থাকতেন,যাঁর সঙ্গে তর্কে পরাস্ত হলে রাজ আজ্ঞায় পরাজিতদের জলে ডুবিয়ে দেওয়া হত। কহোড় তর্কে বন্দীর কাছে পরাস্ত হওয়ায় তারও সেই গতি হল। অষ্টাবক্র শিশু অবস্থায় জানতেন না যে, তার পিতার মৃত্যু হয়েছে - তিনি উদ্দালককেই পিতা বলে জানতেন।

পিতাকে উদ্ধার

বালক বয়সে তিনি যখন মাতা সুজাতার কাছে পিতার মৃত্যুর কারণ জানতে পারলেন,তখন তিনি মাতুল শ্বেতকেতুকে নিয়ে জনক রাজার কাছে গেলেন। সেখানে বন্দীকে তর্কে পরাস্ত করে তিনি বললেন যে, বন্দী যেরকম পরাজিত ব্রাহ্মণদের জলে ডুবিয়েছিলেন,এবার সেই ভাবে বন্দীকে জলে ডোবানো হোক। বন্দী তখন নিজেকে বরুণের পুত্র বলে পরিচয় দিয়ে বললেন যে, তিনি ব্রাহ্মণদের জলের মধ্যে পিতা বরুণের যজ্ঞ দেখতে পাঠিয়েছিলেন। তারা এখন সবাই ফিরে আসবেন। তবে উনি অষ্টাবক্রের সম্মানে জলের মধ্যে অন্তর্ধান করে পিতার সঙ্গে মিলিত হবেন। কহোড় ও অন্যান্য ব্রাহ্মণরা ফিরে এলে বন্দী সমুদ্রে প্রবেশ করলেন। কহোড় পুত্র গর্বে পরম প্রীত হয়ে অষ্টাবক্রকে একটি নদীতে প্রবেশ করতে বললেন। সেই নদী থেকে উঠতেই অষ্টাবক্রের দেহ আর বক্র রইলো না।[৫] উক্ত স্থানে তিনি শিবের উপাসনা করেন এবং ওই শিব মূর্তির নাম হয় বক্রনাথ ও স্থানের নাম হয় বক্রেশ্বর

বিবাহ

বদান্য ঋষির কন্যাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে অষ্টাবক্র তাকে বিবাহ করতে চাইলে, বদান্য অষ্টাবক্রকে বললেন যে, উত্তর দিকে যাত্রা করে কুবের-ভবন অতিক্রম করে এক রমণীয় বনে পৌঁছে - সেখানে এক তপস্বিনীর সঙ্গে দেখা করে ফিরে এলে তারপর উনি ওঁর কন্যাকে দান করবেন। অষ্টাবক্র বহু পথ অতিক্রম করে সেই বনে পৌঁছে এক দিব্য আশ্রমের কাঞ্চনময় ভবনে প্রবেশ করলেন। সেই ভবনে কয়েকটি সুন্দরী নারীর সঙ্গে এক বৃদ্ধা রমণী ছিলেন। সেইখানে থাকাকালীন সেই বৃদ্ধা অষ্টাবক্রের শয্যায় এসে ওঁর সঙ্গে মিলিত হবার চেষ্টা করতেন। অষ্টাবক্রকে লোভ দেখাতেন যে, ওঁর কামনা পূর্ণ করলে ওঁর রমণীয় আশ্রম সমেত সব ধন অষ্টাবক্রের হবে। অষ্টাবক্রের কাছে প্রত্যাখ্যাত হবার পর এক রাত্রে তিনি পরম রূপবতী কন্যায় রূপান্তরিত হয়ে অষ্টাবক্রকে প্রলোভিত করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু অষ্টাবক্র প্রলোভিত হলেন না। তখন সেই বৃদ্ধা নিজেকে উত্তরদিকের অধিষ্ঠাত্রী দেবী বলে পরিচয় দিয়ে বললেন যে, তিনি বদান্যের অনুরোধে অষ্টাবক্রকে পরীক্ষা করছিলেন। আরও বললেন যে, অষ্টাবক্র যেন মনে রাখেন যে, স্ত্রী জাতি চপলা এবং স্থবিরা এবং স্ত্রীরও কামজ্বর হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অষ্টাবক্র ফিরে এসে বদান্য-কন্যা সুপ্রভাকে বিবাহ করেন।

অষ্টাবক্র গীতা

রাজর্ষি জনক অষ্টাবক্র মুনির কাছে জ্ঞান, মুক্তি ও বৈরাগ্য লাভের উপায় জানতে চেয়েছিলেন। তার জিজ্ঞাসার উত্তরে অষ্টবক্র মুনি যা বলেছেন তা পরবর্তীতে অষ্টাবক্র গীতা নামে বিশটি অধ্যায়ে সংকলিত হয়েছে। এতে অদ্বৈতবাদ ও সমদর্শন বিষয়ে গভীর আলোচনা করা হয়েছে।

টীকা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী