খিলক্ষেত থানা
খিলক্ষেত (বা খিলখেত) বাংলাদেশের ঢাকা জেলার একটি থানা। এটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।[২]
খিলক্ষেত | |
---|---|
থানা | |
বাংলাদেশে খিলক্ষেতের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৪৯′৪১″ উত্তর ৯০°২৫′১১″ পূর্ব / ২৩.৮২৮০৬° উত্তর ৯০.৪১৯৭২° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ঢাকা |
জেলা | ঢাকা |
আয়তন[১] | |
• মোট | ১৫.৮৮ বর্গকিমি (৬.১৩ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ১,৩০,০৫৩ |
• জনঘনত্ব | ৮,২০০/বর্গকিমি (২১,০০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬:০০) |
পোস্ট কোড | ১২২৯ |
ভৌগোলিক অবস্থান
খিলক্ষেত থানার আয়তন প্রায় ১৫.৮৮ বর্গকিলোমিটার (৬.১৩ মা২)।[১] এর উত্তরে উত্তরখান ও দক্ষিণখান থানা, দক্ষিণে বাড্ডা থানা, পশ্চিমে ক্যান্টনমেন্ট থানা, উত্তর-পশ্চিমে বিমানবন্দর থানা ও পূর্বে তুরাগ নদী অবস্থিত।[২]
ইতিহাস
২০০৫ সালের ২৭ জুন বাড্ডা থানার দক্ষিণের কিছু অংশ নিয়ে খিলক্ষেত থানা গঠিত হয়।[২]
জনসংখ্যা
বছর | জনসংখ্যা | ±% |
---|---|---|
১৯৮১ | - | — |
১৯৯১ | - | — |
২০০১ | ৬৭,০০০ | — |
২০১১ | ১,৩০,০৫৩ | +৯৪.১% |
খিলক্ষেত থানা ২০০৫ সালে গঠিত হয়। এর আগে এই এলাকাটি বাড্ডা থানার অন্তর্ভুক্ত ছিল। উৎস: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো[১] |
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, খিলক্ষেত থানার মোট ৩১,১৪১টি খানায় প্রায় ১,৩০,০৫৩ জন মানুষ বসবাস করেন। ১০০% মানুষ শহুরে বাসিন্দা। মোট জনসংখ্যার ৮.৬% পাঁচ বছর বা তার কম বয়সী। সাত বছর বা তার ঊর্ধ্বে শিক্ষার হার ৭৩.৮%, যেখানে জাতীয় শিক্ষার হার ৫১.৮%।[১][৩]
প্রশাসন
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ড, দক্ষিণখান ও ডুমনি ইউনিয়নের অংশবিশেষ নিয়ে খিলক্ষেত থানা গঠিত।[২] খিলক্ষেত থানায় মোট ১১টি মহল্লা রয়েছে।
অর্থনীতি
খিলক্ষেত থানার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি (১৫.১০%)। মোট জনগোষ্ঠীর ৬৩.৯৩% নিজস্ব ভূমির মালিক এবং প্রায় ৩৬.০৭% জনগোষ্ঠী নিজস্ব ভূমিহীন। প্রধান কৃষি ফসল হলো মরিচ ও শাকসবজি। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসল হলো ধান। উৎপাদিত ফলের মধ্যে রয়েছে আম, কাঁঠাল, জাম, পেঁপে ও কলা।
এছাড়াও অর্থনীতির অন্যান্য উৎস অকৃষি শ্রমিক ২.১৪%, শিল্প ১.৩৮%, ব্যবসা ২৯.১০%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৫.২১%, নির্মাণ ৩.৫৯%, ধর্মীয় সেবা ০.০৯%, চাকরি ৩০.৩৮%, ভাড়া ও বৈদেশিক মুদ্রা ২.৩৩% এবং অন্যান্য ১০.৬৮%।
শিল্পখাতে এই থানায় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে গার্মেন্টস শিল্প প্রধান। এছাড়াও গ্যাস কোম্পানি ও আইসক্রিম প্রস্তুতকারক কারখানা গড়ে উঠেছে। খিলক্ষেত থানার প্রধান রপ্তানি পণ্য হলো তৈরি পোশাক। এ থানার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৯৩.৫০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।[২] উৎপাদিত পণ্যের জন্য রাজউক ও ব্যক্তি উদ্যোগে এখানে ট্রেড সেন্টার ও বাজার গড়ে উঠেছে।
শিক্ষাব্যবস্থা
খিলক্ষেত থানার শিক্ষার গড় হার ৫৮.৩২%। পুরুষদের মধ্যে শিক্ষার হার ৬৩.৩২% এবং নারীদের শিক্ষার হার ৫২.৫২%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, আমিরজান কলেজ, আমিরজান উচ্চ বিদ্যালয়,কুর্মিটোলা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, ডুমনি উচ্চ বিদ্যালয়, বরুয়া আলাউদ্দিন দেওয়ান উচ্চ বিদ্যালয়, ডুমনি নুরপাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, তলনা রুহুল আমিন খান উচ্চ বিদ্যালয়,পাতিরা দারুল হাদীস মডেল মাদ্রাসা, জান-ই আলম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়, মানারাত মডেল হাই স্কুল, পাতিরা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডুমনি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুর্মিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তলনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খিলক্ষেত বটতলা ইসলামিয়া মাদ্রাসা, পাতিরা হাফেজিয়া মাদ্রাসা ইত্যাদি।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান
খিলক্ষেত থানার সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ক্লাব, সিনেমা হল, খেলার মাঠ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
রাজধানী ঢাকার অভ্যন্তরে হওয়ায় সড়কপথে যাতায়াত সুবিধাজনক। মোট সড়কপথের পরিমাণ ৩৬.০৪ কিমি। বর্তমানে বাস ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করলেও একসময় পালকি ও গরুর গাড়ি জনপ্রিয় ছিল।[২]
ধর্মীয় উপাসনালয়
খিলক্ষেতে ৬৬টি মসজিদ ও ৩টি মন্দির রয়েছে।[২] এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডুমনি নামাপাড়া জামে মসজিদ, ডুমনিবাজার জামে মসজিদ, বরুয়া শাহ জামে মসজিদ, উত্তর জামে মসজিদ (বড় মসজিদ), ডুমনি কালী মন্দির, রাধাকৃষ্ণ মন্দির ইত্যাদি।