জাগ্গী বাসুদেব

ভারতীয় আধ্যাত্মিক গুরু ও লেখক

সদগুরু জাগ্গী‌ বাসুদেব (জন্ম ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫৭)[১][ক] একজন ভারতীয় যোগী, অতীন্দ্রিযবাদী[৪] এবং একজন লেখক। তিনি ঈশা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এটি একটি অলাভজনক সংস্থা যা সারা বিশ্বে যোগ প্রোগ্রাম করে।[৫] এছাড়া এটি সামাজিক প্রচার,[৬] শিক্ষা[৭] এবং পরিবেশগত উদ্যোগে জড়িত।[৮][৯] তার বই "স্বাস্থ্য",[১০] "ধর্ম, আধ্যাত্মিকতা এবং বিশ্বাস",[১১] এবং "পরামর্শ, কীভাবে-কী এবং বিবিধ" ইত্যাদি একাধিক বিভাগে নিউইয়র্ক টাইমস শ্রেষ্ঠ বিক্রেতা তালিকাতে ছিল।[১২] তিনি জাতিসংঘের সদর দপ্তর, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম, অস্ট্রেলিয়ান লিডারশিপ রিট্রিট, ভারতীয় অর্থনৈতিক সামিট এবং টেড এ একজন প্রধান স্পিকার হয়েছেন। তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, হোয়ার্টন ইউনিভার্সিটি, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও বক্তৃতা করেছেন।[১৩][১৪] তিনি গুগলেও স্পিকার ছিলেন।[১৫] আধ্যাত্মিকতার ক্ষেত্রে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৭ সালে ভারত সরকার পদ্মবিভূষণ বেসামরিক পুরস্কার প্রদান করে।[১৬][১৭]

সদগুরু জাগ্গী বাসুদেব
জন্ম (1957-09-03) ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫৭ (বয়স ৬৬)
জাতীয়তাভারতীয়
প্রতিষ্ঠানঈশা ফাউন্ডেশন
উল্লেখযোগ্য কর্ম
অভ্যন্তরীণ প্রকৌশল , ধ্যানলিঙ্গ, নদীগুলির জন্য সমাবেশ, লিঙ্গ ভৈরবী, আদিযোগী: যোগব্যায়ামের সূত্র, নিগূঢ় অধ্যাত্মভাবনায়
দাম্পত্য সঙ্গীবিজয় কুমারী (বিজ্জী‌) (বি. ১৯৮৪)[১]
সন্তান
সম্মাননাপদ্মবিভূষণ, ইন্দিরা গান্ধী পরিবেশ পুরস্কার
ওয়েবসাইটisha.sadhguru.org
১৩ এপ্রিল, ২০১৭ তারিখে নয়াদিল্লীর রাষ্ট্রপতি ভবনে সাধুগুরু জগ্গি‌ বাসুদেবকে পদ্মবিভূষণ দিচ্ছেন প্রণব মুখার্জি

প্রথম জীবন

স্ত্রী বিজয়া কুমারীর সঙ্গে জাগ্গী বাসুদেব

৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫৭ সালে ভারতের কর্ণাটকের মহীশূরে এব তেলুগু ভাষাভাষী পরিবারে তার জন্ম।[১৮] দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে, মোট চার সন্তানের মঝে তিনি ছিলেন সবচেয়ে ছোট। তার বাবা ভারতীয় রেলওয়ের একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ। যার জন্য তার পরিবারকে ঘন ঘন জায়গা বদলাতে হতো। ১০ বছর বয়সে তিনি মল্লাদিহাল্লি শ্রী রাঘবেন্দ্র স্বামীজিগের সাথে যোগাযোগ করেন। তাঁর কাছ থেকে তিনি সাধারণ যোগের একটি আনুষঙ্গিক অংশ শিখিয়েছিলেন, যা তিনি নিয়মিতভাবে পালন করেছিলেন।[১৯] তিনি বলেন যে "একদিনের বিরতি ব্যতিরেকে, এই সহজ যোগব্যায়াম আমাকে শেখানো হয়েছিল এবং যার ফলে পরবর্তীতে গভীর অভিজ্ঞতা লাভ করেছি।"[২০]:৩৯

১৯৭৩ সালে ডেমনোসট্রেশন স্কুল অ্যান্ড মহাজন প্রাক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, মহীশূর -এ পড়েন। এরপর তিনি স্নাতক মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[২১] কলেজের বছরগুলোতে তিনি ভ্রমণ এবং মোটরসাইকেলে আগ্রহী ছিলেন।[২২]

তার পিতামাতার ইচ্ছাকে অস্বীকার করে, তিনি স্নাতকোত্তর কোর্স করতে অস্বীকার করেন এবং পরিবর্তে ব্যবসায় নামেন।

আধ্যাত্মিক জীবন

১৯৮২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর,[২৩] তিনি চামুণ্ডী পাহাড়ে উঠেন এবং একটি শিলাতে বসেছিলেন, যেখানে তিনি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন। তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা নিম্নরূপ:

আমার জীবনের সেই মুহুর্ত পর্যন্ত আমি সবসময় নিজের কথা,অন্যের কথা ও অন্য কিছুর ব্যাপারে ভাবতাম । কিন্তু তখন প্রথমবারের মতো আমি জানতাম না যে কোনটা আমি আর কোনটা নই। হঠাৎ আমি সব জায়গায় নিজেকে অনুভব করলাম। যে শিলায় আমি বসে ছিলাম,যে বাতাসে আমি শ্বাস নিচ্ছিলাম, আমার চারপাশে বায়ুমণ্ডল সবকিছুতেই আমি ছড়িয়ে পড়েছিলাম । যা হয়ত কৌতুক বা পাগলামির মত শোনাচ্ছে। আমার মনে হয় এটি দশ থেকে পনের মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী ছিল, কিন্তু যখন আমার স্বাভাবিক চেতনা ফিরে আসে তখন প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা আমি সেখানে বসে ছিলাম। সম্পূর্ণ সচেতন ছিলাম, চোখ খোলা ছিল। কিন্তু কিছু সময় পর সব ঠিক হয়ে গেল। [২৪]:০৪:০৪

এই অভিজ্ঞতার ছয় সপ্তাহ পরে, তিনি তার বন্ধুর কাছে তার ব্যবসা ছেড়ে চলে যান এবং তার রহস্যময় অভিজ্ঞতার অন্তর্দৃষ্টি অর্জনের প্রচেষ্টায় ব্যাপকভাবে ভ্রমণ করেন। প্রায় এক বছর ধ্যান ও ভ্রমণের পর তিনি যোগব্যায়ামে তার অভ্যন্তরীণ অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।[২৩]

১৯৮৩ সালে তিনি মহীশূরে সাতজন অংশগ্রহণকারী নিয়ে প্রথম যোগব্যায়াম ক্লাস পরিচালনা করেন। সময়ের সাথে সাথে তিনি কর্ণাটকহায়দ্রাবাদ জুড়ে মোটরসাইকেলে চড়ে যোগব্যায়াম ক্লাস পরিচালনা শুরু করেন। তিনি তার পোল্ট্রি খামারের উৎপাদন বন্ধ করেন ও ক্লাসের জন্য পেমেন্ট নিতে অস্বীকার করেন। তার স্বাভাবিক অনুশীলন ক্লাসের শেষ দিন অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সাহায্য স্থানীয় এক দাতব্য সংস্থায় দান করতেন।[২৩]

ঈশা ফাউন্ডেশন

ঈশা যোগ কেন্দ্রের ধ্য়া‌নলিঙ্গ
একটি পি এইচ জি নার্সারিতে পরিবহনের জন্য রোপণ করা হচ্ছে।

জাগ্গী বাসুদেবের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, ঈশা ফাউন্ডেশন হচ্ছে একটি অধ্যত্ম, অলাভজনক মানবসেবা সংস্থা যা মানুষের শারীরিক, মানসিক এবং অভ্যন্তরীণ সুস্থতার জন্য নিবেদিত। এটি বিশ্বব্যাপী এক কোটিরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক দ্বারা পরিচালিত হয়। ১৯৯৩ সালে কোয়েম্বাটুরের কাছে ঈশা যোগ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটি যোগের মাধ্যমে স্ব-সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কয়েকটি অনুষ্ঠান পরিচালনা করে। এই প্রতিষ্ঠানটি জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে একত্রে কাজ করে।[২৫]

গ্রীনহ্যান্ডস প্রজেক্ট (ইংরেজি: Project GreenHands) হল ঈশা ফাউন্ডেশনের একটি পরিবেশগত উদ্যোগ। প্রকল্পের উল্লিখিত লক্ষ্য হল, তামিলনাড়ু জুড়ে প্রায় ১৬ কোটি গাছ লাগানো। গ্রীনহ্যান্ডস প্রকল্পের অধীনে তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির ১৮০০ টিরও বেশি সম্প্রদায়ের ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এখনও পর্যন্ত ৮২ লক্ষ চারা রোপণ করেছেন। এই সংস্থাটি ১৭ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে তামিলনাড়ুর ২৭টি জেলায় একযোগে ৮.৫২ লক্ষ চারা রোপণ করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড তৈরি করে। এটি পরিবেশ সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ২০০৮ সালের ইন্দিরা গান্ধী পরিবেশ পুরস্কারে ভূষিত হয়। তিনি ২০১৭ সালে আধ্যাত্মিকতার জন্য পদ্মবিভূষণেও ভূষিত হন। তিনি নদী সংরক্ষণের জন্য র‌্যালি ফর রিভারস প্রচারণা চালিয়েছিলেন।[২৬] 'Save Soil' বা ’মাটি বাঁচাও’ শিরোনামে তিনি একটি একক মোটর সাইকেল যাত্রা শুরু করেন। ২০২২ সালের ২১ মার্চ তারিখে লন্ডন থেকে এই যাত্রা শুরু হয়ে তিনটি মহাদেশের ৩০,০০০ কিলোমিটার পেরিয়ে ২১ জুন ভারতে পৌঁছান। এই যাত্রা পৃথিবীর প্রায় ৩৫০ কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। প্রায় একশত দেশ ও সংস্থা সদগুরুর সঙ্গে মাটি সুরক্ষার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

যোগ প্রোগ্রাম এবং অন্যান্য

বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ, মুম্বাইয়ে অভ্যন্তরীণ প্রকৌশল প্রোগ্রাম পরিচালনাকারী সদগুরু জাগ্গী বাসুদেব।

১৯৯৬ সালে আশ্রম প্রতিষ্ঠার পর ভারতীয় হকি দলের জন্য তিনি কোর্সসহ ঈশা যোগ কেন্দ্রে নিয়মিত যোগব্যায়াম প্রোগ্রাম পরিচালনা শুরু করেন।[২৭][২৮] ১৯৯৭ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্লাস পরিচালনা শুরু করেন।[২৯][৩০] ২০০১ সালে তিনি তামিলনাড়ু কারাগারে জীবনকালের বন্দীদের জন্য যোগচর্চা ক্লাস পরিচালনা শুরু করেন।[৩১] ২০১১ সাল থেকে তিনি একবারে ১০,০০০ এবং ১৫,০০০ জন অংশগ্রহণকারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বৃহৎ পরিসরে অংশগ্রহণের অনুষ্ঠান পরিচালনা শুরু করেন।

প্রোগ্রাম ঈশা যোগের অধীনে দেওয়া হয়। ঈশা শব্দটির অর্থ "নিরাকার অমরাত্মা "।[৩২] ঈশা যোগের প্রধান প্রোগ্রাম 'ইনার ইঞ্জিনিয়ারিং', যা কিছু সহজ যোগ অনুশীলন এবং সম্ভাবি মহামুদ্রার সাথে পরিচিত করে।[৩৩] তিনি কর্পোরেট নেতৃত্বের জন্য যোগ ক্লাস পরিচালনা করেন যা তিনি "অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি" বলে পরিচিত করিয়ে দেন। যা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, এটি আজকের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সমবেদনা এবং অন্তর্নিহিততার একটি সূত্র।[৩৪][৩৫]

তিনি নিয়মিত তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকমহাসৎসঙ্গ পরিচালনা করেন। এখানে তিনি বক্তৃতা দেন, ধ্যান শিক্ষা দেন এবং দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন। এই অনুষ্ঠানগুলো গাছ-রোপণ কার্যক্রমকে উত্সাহিত করার জন্য প্ল্যাটফর্ম হিসাবেও ব্যবহার করা হয়।[৩৬] তিনি কৈলাশহিমালয় পর্বতমালার বার্ষিক যাত্রাগুলোতে আধ্যাত্মিক পদপ্রার্থীদেরও গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে কৈলাশ যাত্রা ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে ৫১৪ জন তীর্থযাত্রীসহ, যা কৈলাশ ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে বড় দলগুলোর মধ্যে রয়েছে।[৩৭][৩৮]

তিনি ঈশা সেন্টারে প্রতি বছর মহাশিবরাত্রি উদযাপন করেন। ২০১৩ সালে এই উদযাপনে ৮০০,০০০ মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে অনুমান করা হয়েছে।[৩৯][৪০][৪১] সে রাতে সঙ্গীত, নৃত্য, এবং নির্দেশিত ধ্যান এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০১৩ সালে কর্ণাটক এর গায়ক অরুণা সাইরাম, নর্তকী অনিতা রত্নম এবং ব্যান্ড দ্য রাঘু দীক্ষিত প্রজেক্ট এতে অংশগ্রহণ করেন।[৪১]

২০০৫ সালের মার্চে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি, ম্যাকমিনভিলিতে ঈশা ইনস্টিটিউট অফ ইননার-সায়েন্সেস (তৃতীয়) নির্মাণ শুরু হয়। যা ৬ মাস পরে সম্পন্ন হয়। সদগুরু একে পশ্চিম গোলার্ধে আধ্যাত্মিকতা বৃদ্ধির কেন্দ্র হিসাবে স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেন। এখানে ২০০৮ সালের ৭ নভেম্বর তিনি ৩২,০০০ বর্গফুটের ফ্রি-স্ট্যান্ডিং মেডিটেশন হল ‘মহিমা হল’ তৈরি করেন। ‘মহিমা হল’ পশ্চিম গোলার্ধের বৃহত্তম ধ্যান হল।[৪২] ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারী তিনি লিঙ্গ ভৈরবী যা ঈশা যোগ কেন্দ্রে ঐশ্বরিক নারীর দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে তাকে প্রতিষ্ঠা করেন।[২০]

ধ্য়া‌নলিঙ্গ

১৯৯৪ সালে নতুন প্রতিষ্ঠিত ঈশা যোগ কেন্দ্রের প্রাঙ্গনে প্রথম অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সদগুরু। ধ্যানলিঙ্গ হল যোগব্যায়াম এবং ধ্যানের স্থান। যা তার গুরুর নির্ধারিত মিশন ছিল।[২৩] এর দায়িত্ব তিনি সদগুরুকে দেন। ১৯৯৮ সালে লিঙ্গ পাথর তৈরির আদেশ দেওয়া হয়েছিল এবং আশ্রমে পৌঁছেছিল। তিন বছরের কাজের পর ২০০১ সালের ২৩ জুন ধ্যানলিঙ্গ সম্পন্ন হয়।[৪৩] সেই বছরের ২৩ নভেম্বর জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়।[৪৪]

এটি একটি ধ্যানের স্থান যা কোন বিশেষ বিশ্বাস বা বিশ্বাস ব্যবস্থার কথা বলে না।[৪৫] ৭৬ ফুট গম্বুজ, ইস্পাত বা কংক্রিট ছাড়া ইট এবং স্থিতিশীল কাদা মর্টার ব্যবহার করে নির্মিত[৪৬] পবিত্র ভাস্কর্য এর আচ্ছাদন। লিঙ্গ এর উচ্চতা ১৩ ফুট , ৯ ইঞ্চি এবং এটি কালো গ্রানাইট দিয়ে গঠিত। সামনে প্রবেশদ্বারে অবস্থিত সর্ব ধর্ম স্ত‌ম্ভ। যা এককত্বের প্রতীক এবং এতে হিন্দু, ইসলাম, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, তাও, জরাথুস্ট্র , ইহুদী, বৌদ্ধ এবং শিন্টো ধর্মের প্রতীকগুলো সর্বজনীনভাবে স্বাগত জানানোর সাথে এককতার প্রতীক হিসাবে কাজ করে।[৪৭]

২০১৩ সালের ২৩ জুন তিনি ঈশা কেন্দ্রের "ধর্মের সার্বজনীনতার উপর আন্তঃধর্মীয় আলোচনা" শিরোনামের একটি বহু ধর্মীয় অধিবেশন পরিচালনা করেন। এতে বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এবং ধ্যানলিঙ্গের ১৪ তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য ও সবাই মিলিত হন।[৪৮]

আদিযোগী মূর্তি

তিনি ঈশা যোগকেন্দ্রস্থলে অবস্থিত আদিযোগীর ১১২ ফুট মূর্তির ডিজাইন করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মহাশিবরাত্রিতে এর উদ্বোধন করেন।[৪৯] আদিযোগী মূর্তিটি প্রথম যোগী বা আদিযোগীর। প্রথম গুরু বা আদি গুরু হিসেবে শিবকে চিত্রিত করা হয়। যিনি মানবতাকে যোগব্যায়াম দিয়েছেন। মূর্তিটি ভারতীয় স্টীল কর্তৃপক্ষ সরবরাহকৃত ২০,০০০ পৃথক লোহার প্লেট ব্যবহার করে ঈশা ফাউন্ডেশন নির্মাণ করে।[৫০] এর ওজন প্রায় ৫০০ টন (৪৯০ টন দীর্ঘ; ৫৫০ টন শর্ট )। মূর্তিটি গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে "বৃহত্তমতম বাস্ট ভাস্কর্য" হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।[৫১] "যোগেশ্ব‌র লিঙ্গ" নামক একটি পবিত্র শিবলিঙ্গ আদিযোগী শিব মূর্তির সামনে স্থাপিত করা হয়েছে।[৫২]

বিশ্বব্যাপী এবং অর্থনৈতিক ফোরামে অংশগ্রহণ

২০০০ সালে জাতিসংঘ মিলেনিয়াম ওয়ার্ল্ড পিস সামিটে তিনি বক্তব্য রাখেন।[৫৩] ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামেও তিনি বক্তব্য রাখেন।[৫][৫৪] এছাড়া অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়, গুগল, টেড কনফারেন্স, জাতিসংঘ-সহ পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় বহু প্রতিষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছেন।

২০১২ সালে পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তার অবদানের জন্য এবং পরিবেশগত সমস্যাগুলোতে জনসাধারণের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার জন্য তিনি শততম শক্তিশালী ভারতীয়দের তালিকায় স্থান পাওয়ার জন্য ভোট পেয়েছিলেন।[৫৫] ২০০৬ সালের ডকুমেন্টারি ফিল্ম এক: দ্য মুভিতে তিনি ছিলেন। তিনি "ইন কনভারসেশন উইত মিস্টি‌ক" একের সাথে এক কথোপকথনে অংশ নেন।[৫৬]

২০১২ সালে তিনি ঈশা ইনসাইট প্রোগ্রামটি শুরু করেছিলেন। যা ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়গুলোকে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। প্রোগ্রাম পরিচালনা করা হয়েছিল রাম চরণ , কেভি কামাথ, গ্রান্ধী মল্লিকার্জুন রাও শঙ্কর আন্নাস্বামী, ভ্যালায়ান সুব্বিয়া দ্বারা এবং প্রমোদ চৌধুরী ও এতে সক্রিয় ছিল।[৫৭] ফোর্বস ম্যাগাজিনের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে প্রোগ্রাম তৈরির পিছনে প্রেরণা সম্পর্কে তিনি বলেন, "অর্থনৈতিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং ভারত ও বাইরের নেতাদের সাথে কথা বলার সময় আমি লক্ষ্য করেছি যে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সমস্যাটি অন্তর্দৃষ্টির অভাব যে তারা কি করছে বা তারা কি করতে পারে? যা আমাদের অন্তর্দৃষ্টি নামক এই প্রোগ্রামটি তৈরি করতে উৎসাহ দিয়েছে।"[৫৮]

২০১৭ সালে তিনি জার্মানির বোনের গ্লোবাল ল্যান্ডস্কেপস ফোরামে[৫৯] বক্তৃতা করেন। যেখানে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির প্রধান[৬০] এরিক সোলহেম তার সাক্ষাৎকার নেন।

প্রকাশনা

তার লেখা অনেক বই আছে।যেমন -ইনার ইঞ্জিনিয়ারিং : এ যোগীস গাইড টু জয়[৬১] তার লেখা হিন্দি, তামিল, তেলুগু, এবং কন্নড় সহ অন্যান্য অনেক ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

আরো দেখুন

নোট

তথ্যসূত্র

গ্রন্থ

  • Midnights with the Mystic: A Little Guide to Freedom and Bliss  Midnights with the Mystic: A Little Guide to Freedom and Bliss 
  • Gurus of Modern Yoga  Gurus of Modern Yoga 

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন