নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র
১৬৮৭ সালে স্যার আইজাক নিউটন মহাবিশ্বের যে কোন দুটি বস্তুর মধ্যকার আকর্ষণ বলকে একটি সূত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা করতে সমর্থিত হয়েছেন। একে সার্বজনীন অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।[১][২][৩] এটি নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র নামে পরিচিত। আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্বের আবিষ্কারের পর মহাকর্ষ সূত্রকে আর সার্বজনীন বলা চলেনা, তবে মহাকর্ষীয় ধ্রুবকের সার্বিকতা কোনোভাবেই ক্ষুণ্ণ হয় নি।
সূত্র
সূত্রটি হলো:
"এই মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে এবং এই আকর্ষণ বলের মান বস্তু কণাদ্বয়ের ভরের গুণ ফলের সমানুপাতিক এবং এদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক এবং এই বল বস্তুদ্বয়ের কেন্দ্র সংযোজক সরলরেখা বরাবর ক্রিয়া করে।"
ব্যাখ্যা
মনে করি, এবং ভরের ২টি বস্তু পরস্পর দূরত্বে অবস্থান করছে। নিউটনের সূত্র অনুযায়ী ২টি বস্তু এ পরস্পরকে আকর্ষণ করছে। বস্তুটি বস্তুটিকে বল দ্বারা এবং বস্তুটি বস্তুটিকে বল দ্বারা আকর্ষণ করছে। অর্থাৎ, । মনে করি, । তাহলে, নিউটনের সূত্র অনুযায়ী,
বা,
এখানে হচ্ছে মহাকর্ষীয় ধ্রুবক। মহকর্ষীয় ধ্রুবককে বিশ্বজনীন বা সর্বজনীন ধ্রুবক ও বলা হয়ে থাকে। কারণ এই মহাবিশ্বের যেকোন স্থানে এর মান নির্দিষ্ট থাকে এবং স্থান ও সময়ের পরিবর্তনে এর মানের কোন পরিবর্তন ঘটে না। এর মান হচ্ছে,
CGS ইউনিটে, এর মান হলো,
- ।
হেনরি ক্যাভেন্ডিশ প্রথম এর মান নির্ধারণ করার জন্য একটি পরীক্ষা করেন, যদিও তিনি এর মান গণনা করেননি। এভাবেই নিউটনের মহাকর্ষীয় তত্ত্ব প্রথম ল্যাবরেটরি পরীক্ষীত হয়। মহাকর্ষ সূত্রানুসারে আমরা দেখতে পাই, নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থিত দুটি বস্তুর ভরের গুণফল দ্বিগুন হলে বল দ্বিগুন হবে, ভরের গুণফল তিনগুণ হলে বল তিনগুণ হবে। আর নির্দিষ্ট ভরের দুটি বস্তুর দূরত্ব দ্বিগুন করলে বল এক-চতুর্থাংশ হবে, দূরত্ব তিনগুণ করলে বল নয় ভাগের এক ভাগ হবে দূরত্ব চারগুণ করলে বল হবে ষোল ভাগের এক ভাগ।
মহাকর্ষীয় ধ্রুবক
একক ভরের দুইটি বস্তু একক দুরত্ব থেকে যে বলে পরস্পরকে আকর্ষণ করে,তাকে মহাকর্ষীয় ধ্রুবক বলে। মহাকর্ষীয় ধ্রুবককে দ্বারা প্রকাশ করা হয়। -এর আদর্শ মান ৬.৬৭৩ × ১০−১১ N m2 kg−2। এর প্রকৃত মান ৬.৬৭২৫৯ × ১০−১১ N m2 kg−2।