এইচ. ডি. জি. লেভেসন গাওয়ার

ইংরেজ ক্রিকেটার
(H. D. G. Leveson-Gower থেকে পুনর্নির্দেশিত)

স্যার হেনরি ডাডলি গ্রেসহাম লেভেসন গাওয়ার (ইংরেজি: H. D. G. Leveson Gower; /ˈlsən ˈɡɔːr/ LOO-sən GOR; জন্ম: ৮ মে, ১৮৭৩ - মৃত্যু: ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৪) সারের টিটসি প্লেস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়াও দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন ‘শ্রিম্প’ ডাকনামে পরিচিত এইচ. ডি. জি. লেভেসন গাওয়ার। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে অক্সফোর্ড ও সারে ক্রিকেট দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে লেগ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন।

স্যার এইচ. ডি. জি. লেভেসন গাওয়ার
১৮৯০-এর দশকের শেষার্ধ্বে সংগৃহীত স্থিরচিত্রে লেভেসন গাওয়ার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
হেনরি ডাডলি গ্রেসহাম লেভেসন গাওয়ার
জন্ম(১৮৭৩-০৫-০৮)৮ মে ১৮৭৩
টিটসি প্লেস, সারে, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৪(1954-02-01) (বয়স ৮০)
কেনসিংটন, লন্ডন, ইংল্যান্ড
ডাকনামশ্রিম্প
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি লেগ ব্রেক
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, অধিনায়ক
সম্পর্কফ্রেডরিক লেভেসন-গাওয়ার (ভ্রাতা), এভলিন মার্মাডিউক গ্রেসহাম লেভেসন-গাওয়ার (ভ্রাতা), রিচার্ড বর্গনিস (ভ্রাতৃষ্পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৬৬)
১ জানুয়ারি ১৯১০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৩ মার্চ ১৯১০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯৫-১৯২০সারে
১৮৯৩-১৮৯৬অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টএফসি
ম্যাচ সংখ্যা২৭৭
রানের সংখ্যা৯৫৭,৬৩৮
ব্যাটিং গড়২৩.৭৫২৩.৭২
১০০/৫০০/০৪/৪২
সর্বোচ্চ রান৩১১৫৫
বল করেছে২,২৬১
উইকেট৪৬
বোলিং গড়২৯.৯৫
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং৬/৪৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং১/–১০৩/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৪ মার্চ ২০১৮

বিখ্যাত লেভেসন-গাওয়ার পরিবারে জন্ম তার। বিদ্যালয় জীবনে ‘শ্রিম্প’ ডাকনামে আখ্যায়িত হন যা তার পরবর্তী জীবনে রয়ে যায়। তবে, তার সংক্ষিপ্ত নামের চেয়ে অন্য নামে পরিচিতি ঘটানোর বিষয়টি খুব কম সূত্রেই ঘটেছে। অবসর পরবর্তীকালে ইংল্যান্ডের দল নির্বাচকমণ্ডলীর দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও ক্রিকেটিং নাইট উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন লেভেসন গাওয়ার।

প্রারম্ভিক জীবন

সারের অক্সটেডের কাছাকাছি টিটসি প্লেসে লেভেসন গাওয়ারের জন্ম। জেপি, ডিএল, এফএসএ গ্রানভিল উইলিয়াম গ্রেসহাম লেভেসন-গাওয়ার ও সম্মানীয়া এলজেসেন্টজে সোফিয়া লেভেসন গাওয়ার দম্পত্তির দ্বাদশ পুত্র সন্তানের মধ্যে তার অবস্থান ছিল সপ্তম। তার কাকারাসহ ভাই ফ্রেডরিক লেভেসন-গাওয়ার ও এভলিন মার্মাডিউক গ্রেসহাম লেভেসন-গাওয়ার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

উইনচেস্টার কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ১৮৯০ সাল থেকে পরবর্তী তিন বছর বিদ্যালয়ের প্রথম একাদশে খেলেছেন। ১৮৯২ সালে বিদ্যালয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে দশ বছরের মধ্যে এটন কলেজের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো জয় পায় তার দল। খেলায় তিনি ৯৯ রানসহ ৮/৩৩ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। বিদ্যালয় দলটিতে পরবর্তীকালে কেন্টের পক্ষে অংশগ্রহণকারী জ্যাক ম্যাসন খেলেছিলেন।

এরপর অক্সফোর্ডের মাগদালেন কলেজে ভর্তি হন। অক্সফোর্ডের পক্ষে চার বছর ক্রিকেট খেলেন। ১৮৯৩ সালে ব্লু লাভ করেন। ১৮৯৫ সালে কেমব্রিজের বিপক্ষে ৭৩ রান তোলাসহ ৭/৮৪ পান। ১৮৯৬ সালে অক্সফোর্ড দলের অধিনায়কত্ব করেন। তবে, তিনি কোন ডিগ্রি লাভ করেননি।

বিদ্যালয় জীবনে ‘শ্রিম্প’ ডাকনামে আখ্যায়িত হন লেভেসন গাওয়ার। খুব সম্ভবতঃ তার খাঁটো আকৃতির শারীরিক কাঠামোর কারণে এ নামকরণ হয়েছে। তবে, কিছু ক্রিকেট তথ্যাবলীতে তার সংক্ষিপ্ত নামের চেয়ে অন্য কিছুকে এর জন্য দায়ী করা হয়। ১৮৯৭ সালে প্লাম ওয়ার্নারের নেতৃত্বাধীন দল আমেরিকা সফরে যায়।[১] ঐ দলে তিনি অন্যতম সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। ফিলাডেলফিয়ার সাংবাদিক রাল্ফ ডি. পেইন তাকে ঘিরে রসাত্মবোধক কবিতার মাধ্যমে তার ডাকনামের কথা তুলে ধরেন।[২]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

১৮৯৫ সালে শৌখিন খেলোয়াড় হিসেবে সারে দলের পক্ষে খেলতে শুরু করেন লেভেসন গাওয়ার। ১৯২০ সালে সারে দলের পক্ষে সর্বশেষ খেলায় অংশ নেন। তবে, ১৯৩১ সাল পর্যন্ত মাঝে-মধ্যেই প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিতেন তিনি। সর্বমোট ২৭৭টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে চার সেঞ্চুরি সহযোগে ২৩.৭২ গড়ে ৭,৬৩৮ রান তুলেন। এছাড়াও, ২৯.৯৫ গড়ে ৪৬ উইকেট তুলে নেন। তন্মধ্যে, তিনবার পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। ১৮৯৯ সালে অক্সফোর্ডের বিপক্ষে সাসেক্সের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ১৫৫ রান করেছিলেন। অসাধারণ ফিল্ডার হিসেবেও তার সুনাম ছিল। সর্বমোট ১০৩টি ক্যাচ তালুবন্দী করেন তিনি।

১৯০৮ থেকে ১৯১০ সময়কালে সারে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ পান লেভেসন গাওয়ার ও কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের পয়েন্ট তালিকায় দলকে যথাক্রমে ৩য়, ৫ম ও ২য় স্থানে নিয়ে যান। ১৯২৬ থেকে ১৯২৮ সাল পর্যন্ত সারের কোষাধ্যক্ষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এছাড়াও, ১৯২৯ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত সারে ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

১৮৯০-এর দশকের শেষার্ধ্বে সংগৃহীত স্থিরচিত্রে লেভেসন গাওয়ার

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

১৮৯৫-৯৭ মৌসুমে লর্ড হকের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন। এরপর ১৮৯৭ সালে পেলহাম ওয়ার্নারের নেতৃত্বে উত্তর আমেরিকা সফরে যান। ১৯০৫-০৬ মৌসুমে এমসিসি দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। তবে, কোন টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ হয়নি তার। ১৯০৯-১০ মৌসুমে পুনরায় দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। তিন টেস্টের সিরিজের প্রত্যেকটিতেই অংশগ্রহণ করেন। সবগুলোতেই দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তন্মধ্যে, একটিতে জয় পায় তার দল ও বাদ-বাকী দুই টেস্টে পরাজিত হয়। সিরিজের অন্য দুই টেস্টে ফ্রেডরিক ফেন অধিনায়কত্ব করেছিলেন। ১ জানুয়ারি, ১৯১০ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লেভেসন গাওয়ারের টেস্ট অভিষেক হয়েছিল।

বেশ কয়েকবার জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে খেলেছিলেন লেভেসন গাওয়ার। দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর প্রত্যেক ইংরেজ মৌসুম শেষে অনুষ্ঠিত স্কারবোরা উৎসবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।[৩] সফরকারী টেস্ট দলগুলো সাংবার্ষিক এইচ. ডি. জি. লেভেসন-গাওয়ার একাদশের বিপক্ষে অংশ নিতো। ১৯৫০ সালে স্কারবোরা বোরা’র ফ্রিম্যান মনোনীত হন।

ব্যক্তিগত জীবন

১৯০৯ সালে ইংল্যান্ডের টেস্ট দল নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেন লেভেসন গাওয়ার। ১৯২৪ সালসহ ১৯২৭ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতিত্ব করেন।[৪] ১৯২৫ সালে ‘ক্রিকেট পার্সোনালিটিজ’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশ করেন তিনি। এতে জ্যাক হবস, পার্সি ফেন্ডারফ্রাঙ্ক ওলি’র ন্যায় জনপ্রিয় ক্রিকেট তারকাদের ব্যক্তিগত জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রয়েল আর্মি সার্ভিস কোরের মেজরের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁকে এ পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছিল।

ক্রিকেটের বাইরে লেভেসন গাওয়ার স্টকব্রোকার ছিলেন। ১৯৫৩ সালে ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নাইট উপাধিতে ভূষিত হন। একই বছর ‘অফ এন্ড অন দ্য ফিল্ড’ গ্রন্থ প্রকাশ করেন।

১৯০৮ সালে এনিড হ্যামন্ড-চেম্বার্স নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন তিনি। এ দম্পত্তির কোন সন্তানাদি জন্মগ্রহণ করেনি। ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৪ তারিখে ৮১ বছর বয়সে লন্ডনের কেনসিংটন এলাকায় তার দেহাবসান ঘটে। এ সময় তিনি তার স্ত্রীকে রেখে যান।

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
আর্চি ম্যাকলারেন
ইংরেজ ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯০৯-১০
উত্তরসূরী
জনি ডগলাস
🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন