ভায়োলা ডেভিস

মার্কিন অভিনেত্রী
(Viola Davis থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ভায়োলা ডেভিস (ইংরেজি: Viola Davis, জন্ম: ১১ আগস্ট ১৯৬৫) হলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী ও প্রযোজক। অসংখ্য পুরস্কার বিজয়ী ডেভিস একাডেমি, এমি, গ্র্যামি ও টনি পুরস্কার (ইগট) জয়ী অল্প কয়েকজন ব্যক্তিবর্গের একজন। এছাড়া তিনি একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ অভিনয়শিল্পী যিনি অভিনয়ের ত্রি-মুকুট লাভ করেন,[১][২][৩] এবং তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে ত্রি-মুকুট ও ইগট অর্জন করেন। ২০১২ সালে টাইম ম্যাগাজিনের করা ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান অধিকার করেন।[৪]

ভায়োলা ডেভিস
Viola Davis
২০১৬ সালে ভায়োলা ডেভিস
জন্ম (1965-08-11) ১১ আগস্ট ১৯৬৫ (বয়স ৫৮)
সেন্ট ম্যাথিউস, সাউথ ক্যারোলিনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয়তামার্কিন
মাতৃশিক্ষায়তনরোড আইল্যান্ড কলেজ
পেশাঅভিনেত্রী, প্রযোজক
কর্মজীবন১৯৮৮-বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীজুলিয়াস টেনন (বি. ২০০৩)
সন্তান
আত্মীয়মাইক কোল্টার
পুরস্কারপুরস্কার তালিকা

১৯৯৩ সালে জুলিয়ার্ড স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর তিনি মঞ্চ নাটক দিয়ে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি এভরিবডিস রুবিতে রুবি ম্যাককলাম চরিত্রে অভিনয় করে ওবি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে এবং ২০০০ এর দশকের প্রথম দিকে তিনি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন সিরিজে পার্শ্ব ও ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কেট অ্যান্ড লিওপোল্ড (২০০১) ও ফার ফ্রম দ্য হেভেন (২০০২) এবং ল অ্যান্ড অর্ডার: স্পেশাল ভিকটিমস্‌ ইউনিট। ২০০১ সালে ভায়োলা মৌলিক নাটক কিং হেডলি টু এ অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ মঞ্চ অভিনেত্রী হিসেবে টনি পুরস্কার লাভ করেন। ভায়োলার অভিনয় জীবনের ব্রেকথ্রু আসে ২০০৮ সালে ডাউট চলচ্চিত্র দিয়ে। এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার এবং একাডেমি পুরস্কারে মনোনয়ন লাভ করেন। ২০১০ সালে অগাস্ট উইলসন নির্দেশিত ফেন্সেস নাটকে রোজ ম্যাক্সসন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ মঞ্চ অভিনেত্রী হিসেবে টনি পুরস্কার লাভ করেন।[৫]

২০১১ সালে ভায়োলা দ্য হেল্প চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার এর মনোনয়ন লাভ করেন এবং সেরা অভিনেত্রী বিভাগে স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার অর্জন করেন।[৬] ২০১৬ সালে ফেন্সেস নাটক অবলম্বনে নির্মিত ফেন্সেস চলচ্চিত্রে অ্যামান্ডা ওয়ালার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, বাফটা পুরস্কার, ক্রিটিকস চয়েস চলচ্চিত্র পুরস্কার, স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার এবং একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।[৭][৮] তিনি ডিসি এক্সটেন্ডেড ইউনিভার্সের সুইসাইড স্কোয়াড (২০১৬)-এ অ্যামান্ডা ওয়ালার চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০২০ সালে তিনি জীবনীমূলক মা রেইনিস ব্ল্যাক বটম চলচ্চিত্রে মা রেইনি চরিত্রে অভিনয় করে তার চতুর্থ একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, ফলে তিনি সর্বাধিক অস্কার মনোনীত কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেত্রী। উইন্ডোস (২০১৮) ও দ্য ওম্যান কিং (২০২২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি আরও দুটি বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, ফলে তিনি সর্বাধিক বাফটা মনোনীত কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেত্রী।[৯]

ডেভিস ও তার স্বামী জুলিয়াস টেনন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জুভি প্রডাকশন্সের প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়া ডেভিস মানবাধিকার, নারীর সমান অধিকার ও কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের নিয়ে কথা বলা ও সমর্থনের জন্য পরিচিত।[১০] ২০১৭ সালে হলিউড ওয়াক অব ফেমে তার নামে একটি তারকা খচিত হয় এবং ২০১৯ সালে তিনি লরেল প্যারিসের শুভেচ্ছাদূত নিযুক্ত হন।[১১] ২০২২ সালে প্রকাশিত তার স্মৃতিকথা ফাইন্ডিং মি-এর অডিওবই বর্ণনার জন্য তিনি গ্র্যামি পুরস্কার অর্জন করেন।[১২][১৩]

প্রারম্ভিক জীবন

ডেভিস ১৯৬৫ সালের ১১ই আগস্ট সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের সেন্ট ম্যাথিউসে জন্মগ্রহণ করেন।[১৪] তার মাতা মে অ্যালিস ডেভিস (প্রদত্ত নাম লোগান) এবং পিতা ড্যান ডেভিস।[১৫][১৬][১৭] তিনি সিঙ্গলটন প্লান্টেশনে তার দাদীর খামারে জন্মগ্রহণ করেন।[১৮] তার পিতা অশ্বারোহন প্রশিক্ষক এবং মাতা গৃহপরিচারিকা, ফ্যাক্টরিকর্মী ও গৃহিণী ছিলেন।[১৯][২০][২১] ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। তার চার বোন ও এক ভাই রয়েছে।[২২] তার জন্মের পর তার পিতামাতা ডেভিস ও তার দুই বড় বোনকে নিয়ে রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের সেন্ট্রাল ফলসে চলে যান এবং বাকি ভাইবোনদের দাদা-দাদীর কাছে রেখে যান।[১৭]

উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর ডেভিস রোড আইল্যান্ড কলেজে মঞ্চাভিনয় নিয়ে পড়াশোনা করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ন্যাশনাল স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জে অংশ নিতেন এবং সেখান থেকে তিনি ১৯৮৮ সালে পাশ করেন। এরপর তিনি জুলিয়ার্ড স্কুলে চার বছর পড়াশোনা করেন,[২০][২১] এবং এই স্কুলের নাট্যকলা বিভাগ "গ্রুপ ২২" (১৯৮৯-৯৩) এর সদস্য ছিলেন।[২৩]

কর্মজীবন

প্রারম্ভিক কর্ম ও মঞ্চে আলোচিত সাফল্য (১৯৯২-১৯৯৯)

১৯৯২ সালে ডেভিস পেশাদার মঞ্চনাটকে প্রথম শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন। তিনি ডেলাকোর্ট থিয়েটারে অফ-ব্রডওয়ে মঞ্চে এলিজাবেথ ম্যাকগভার্নের সাথে উইলিয়াম শেকসপিয়ারের রম্যনাটক অ্যাজ ইউ লাইক ইট-এ ডেনিস চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯৬ সালে কিথ ডেভিডের সাথে অগাস্ট উইলসনের সেভেন গিটার নাটকে ভেরা চরিত্রের মধ্য দিয়ে ডেভিসের ব্রডওয়ে মঞ্চে অভিষেক ঘটে। নাটকটি ওয়াল্টার কার থিয়েটারে ৬ই মার্চ প্রথমবারের মত ব্রডওয়েতে মঞ্চস্থ হয়। তিনি তার কাজের জন্য সমাদৃত হন।[২৪][২৫] একই বছর তিনি দ্য সাবস্ট্যান্স অব ফায়ার (১৯৯৬) চলচ্চিত্রে টিমথি হাটনের পাশে একটি দৃশ্যে অভিনয় করে স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড কার্ড পান। এই কাজের জন্য তিনি $৫১৮ মার্কিন ডলার পারিশ্রমিক পান।[২৬] ডেভিস অফ-ব্রডওয়ে মঞ্চে বিভিন্ন নাটকে কাজ করতে থাকেন এবং টেলিভিশন এনওয়াইপিডি ব্লু (১৯৯৬) ও নিউ ইয়র্ক আন্ডারকভার (১৯৯৬)-এর কয়েকটি পর্বে ছোট অংশে অভিনয় করেন। এছাড়া তিনি এইচবিওর টেলিভিশন সামরিক হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র দ্য পেন্টাগন ওয়ার্স (১৯৯৬)-এ কেলসি গ্রামার ও ক্যারি এলভেসের সাথে অভিনয় করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি স্টিভেন সোডারবার্গের অপরাধ হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র আউট অব সাইট (১৯৯৯)-এ ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন।

চলচ্চিত্রে সাফল্য ও মঞ্চে আরও সফলতা (২০০০-২০১০)

২০০১ সালে তিনি ব্রডওয়ে মঞ্চে অগাস্ট উইলসনের আরেকটি নাটক কিং হেডলি টু-এ "গর্ভপাতের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করা ৩৫ বছর বয়সী মা" টনিয়া চরিত্রে অভিনয় করেন। তার অভিনয় সমাদৃত হয় এবং তিনি শ্রেষ্ঠ চরিত্রাভিনেত্রী বিভাগে তার প্রথম টনি পুরস্কারড্রামা ডেস্ক পুরস্কার অর্জন করেন।[২৭] তিনি ২০০৪ সালে অফ-ব্রডওয়ে মঞ্চের লিন নটেজের ইনটিমেট অ্যাপারেল নাটকে অভিনয় করে আরেকটি ড্রামা ডেস্ক পুরস্কার অর্জন করেন।

২০০৯ সালে ৮১তম একাডেমি পুরস্কার অনুষ্ঠানে ডেভিস, সেখানে তিনি ডাউট (২০০৮) চলচ্চিত্রের জন্য তার প্রথম একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

২০০৮ সালে মেরিল স্ট্রিপ, ফিলিপ সিমোর হফম্যানঅ্যামি অ্যাডামসের সাথে জন প্যাট্রিক শ্যানলি রচিত ও ডেভিস ব্রডওয়ে মঞ্চস্থ ডাউট নাটকের চলচ্চিত্ররূপে মিসেস মিলার চরিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রে মাত্র একটি দৃশ্যে তাকে দেখা গেলেও তিনি চলচ্চিত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। শিকাগো সান-টাইমসের চলচ্চিত্র সমালোচক রজার ইবার্ট তার অভিনয়ের প্রশংসা করে লিখেন, "মাত্র ১০ মিনিট ব্যপ্তি হলেও তার অভিনয় ডাউট-এর আবেগ-অনুভূতির প্রধান অংশ ছিল, এবং যদি ভায়োলা ডেভিস একাডেমি পুরস্কারের জন্য মনোনীত না হন তবে তা অন্যায় হবে।" ইবার্ট আরও লিখেন, "তিনি এই প্রজন্মের আগে থেকে প্রসিদ্ধ চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর সাথে মুখোমুখি অভিনয় করেছেন এবং দুইজনের সমানে সমান মোকাবিলা বিপুল প্রভাব সৃষ্টি করে।"[২৮][২৯] তিনি এই কাজের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার, গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারস্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার-সহ একাধিক পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৩০][৩১]

বৈশ্বিক পরিচিত ও সমাদৃতি (২০১১-২০১৬)

২০১৫ সালে স্যান ডিয়েগো কমিক কনে ডেভিস

২০১১ সালে অগাস্ট মাসে ডেভিস ক্যাথরিন স্টকেটের উপন্যাস অবলম্বনে টেট টেইলরের পরিচালিত দ্য হেল্প চলচ্চিত্রে ১৯৬০-এর দশকে মিসিসিপির গৃহপরিচারিকা এইবিলিন ক্লার্ক চরিত্রে অভিনয় করেন। এতে তার সহশিল্পী ছিলেন এমা স্টোন, অক্টাভিয়া স্পেন্সার, ব্রাইস ডালাস হাওয়ার্ড ও জেসিকা চ্যাস্টেইন[৩২] ডেভিস এই চলচ্চিত্রে তার অভিনয় সম্পর্কে বলেন, "আমার মনে হচ্ছিল তার আমার মাকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে, তার আত্মাকেও বয়ে এনেছি। আমি আমার দাদীর আত্মাকেও বয়ে এনেছি, এবং তারা আমার জীবন ও অন্যান্যদের জীবনে তারা যে অবদান রেখেছে তার প্রতি আমি এক ধরনের শ্রদ্ধা জানিয়েছি।"[৩২] এই চরিত্রে অভিনয়ের পর থেকে তিনি গভীর অনুতাপ প্রকাশ করেন, যদিও তিনি যাদের সাথে কাজ করেছেন তাদের এখনও প্রশংসা করেন।[৩৩] তিনি মনে করেননা যে এটি কৃষ্ণাঙ্গ চরিত্রদের জীবন সম্পর্কে সত্যনিষ্ঠ গল্প বা চিত্রায়ন।[৩৪] ডেভিস তার কাজের জন্য প্রশংসিত হন এবং দুটি স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি তার দ্বিতীয় একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন,[৩৫] এবং নাট্যধর্মী চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারশ্রেষ্ঠ প্রধান চরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৩৬][৩৭]

২০১৬ সালে ডেভিস ডেনজেল ওয়াশিংটনের সাথে ফেন্সেস চলচ্চিত্রে রোজ ম্যাক্সসন চরিত্রে অভিনয় করেন। তার অভিনয় সমাদৃত হয় এবং তিনি তার তৃতীয় একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, ফলে তিনি অস্কারের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেত্রী হিসেবে এই সম্মাননা অর্জন করেন।[৩৮] তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার,[৩৯] গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার,[৪০] স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার,[৪১]বাফটা পুরস্কার অর্জন করেন।[৪২]

প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী (২০১৭-বর্তমান)

২০১৮ সালে ডেভিস আফ্রিকান-মার্কিন সম্প্রদায়ের প্রতি পুলিশের নিষ্ঠুরতা নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্য ধারাবাহিক টু-সাইডস-এ অভিনয় করেন। এই ধারাবাহিকটি টিভি ওয়ানে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রচারিত হয়।[৪৩] এছাড়া ডেভিস কেরি ওয়াশিংটনের সাথে বিশেষ দুই ঘণ্টার পর্ব হাউ টু গেট অ্যাওয়ে উইথ মার্ডারস্ক্যান্ডাল ধারাবাহিকের অভিনয় করেন, যার শিরোনাম হাউ টু গেট অ্যাওয়ে উইথ স্ক্যান্ডাল থেকে নেওয়া হয়েছে।[৪৪] এই পর্বে অতিথি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি তার চতুর্থ এমি পুরস্কার এবং প্রথম নাট্যধর্মী ধারাবাহিকে সেরা অতিথি অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়ন লাভ করেন।[৪৫] একই বছর ডেভিস সিনথিয়া আরিভো, এলিজাবেথ ডেবিকি, মিশেল রদ্রিগেজ ও লিয়াম নিসনের সাথে স্টিভ ম্যাকুইনের ডাকাতি থ্রিলারধর্মী উইন্ডোস চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।[৪৬] এটি ১৯৮৩ সালের জনপ্রিয় ব্রিটিশ মিনি ধারাবাহিকের চলচ্চিত্ররূপ। ডেভিস তার অভিনয়ের জন্য সমাদৃত হন। ইন্ডিওয়্যার-এর চলচ্চিত্র সমালোচক এরিক কন লিখেন, "চলচ্চিত্রটি অধিকাংশই ডেভিসের...এই অভিনেত্রী কখনই এতটা প্রভুত্বসূচক ছিলেন না।"[৪৭] এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ প্রধান চরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে তার দ্বিতীয় বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৪৮]

২০২০ সালে ডেভিস গিভিং ভয়েস প্রামাণ্য চলচ্চিত্রে নির্বাহী প্রযোজকের দায়িত্ব পালন করেন এবং এতে অভিনয় করেন।[৪৯][৫০] একই বছর তিনি চ্যাডউইক বোজম্যানের সাথে জর্জ সি. উল্‌ফের ১৯৮২ সালে নাটক অবলম্বনে নির্মিত জীবনীমূলক মা রেইনিস ব্ল্যাক বটম চলচ্চিত্রে নাম চরিত্রে অভিনয় করেন।[৫১] তিনি এই কাজের জন্য সমাদৃত হন,[৫২] এবং তার অভিনয়ের জন্য প্রধান চরিত্রে সেরা অভিনেত্রী বিভাগে স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার অর্জন করেন।[৫৩] পাশাপাশি তিনি তার ষষ্ঠ গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন,[৫৪] এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে তার দ্বিতীয় ও সবমিলিয়ে চতুর্থ একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এই মনোনয়নের ফলে তিনি অস্কারের ইতিহাসে সর্বাধিক অস্কার মনোনীত কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেত্রী হয়ে ওঠেন,[৫৫] এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেত্রী হিসেবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাধিক অস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৫৬]

চলচ্চিত্রের তালিকা

চলচ্চিত্র

চাবি
আসন্ন মুক্তি
বছরচলচ্চিত্রের শিরোনামচরিত্রপরিচালকটীকা
১৯৯৬দ্য সাবস্টেন্স অফ ফায়ারনার্স
১৯৯৮দ্য পেন্টাগন ওয়ার্সসার্জেন্ট ফ্যানিং
২০০০ট্রাফিকসমাজকর্মী
২০০১কেট অ্যান্ড লিওপোল্ডপুলিশ
২০০২ফার ফ্রম দ্য হেভেনসিবিল
অ্যান্টওনি ফিশারইভা মে ফিশারডেনজেল ওয়াশিংটন
সোলারিসডঃ গর্ডন
২০০৫গেট রিচ অর ডাই ট্রায়িন্‌দাদী
২০০৬দ্য আর্কিটেক্টটনিয়া নিলি
২০০৭ডিস্টার্বিয়াডিটেকটিভ পার্কার
২০০৮নাইট ইন রোডেন্থজিন
ডাউটমিসেস মিলার
২০০৯মাদিয়া গোজ টু জেলএলেন ম্যাথিউস
২০১০নাইট অ্যান্ড ডেইসাবেল জর্জ
২০১১দ্য হেল্পএইবিলেন ক্লার্কটেট টেইলর
এক্সট্রিম্‌লি লাউড অ্যান্ড ইনক্রেডিব্‌লি ক্লোজঅ্যাবি ব্যাক
২০১২ওন্ট ব্যাক ডাউননোনা আলবার্টস
২০১৩বিউটিফুল ক্রিয়েচার্সঅ্যামারি ট্রিড্যু
প্রিজনার্সন্যান্সি বির্চ
২০১৪গেট অন আপসুজি ব্রাউন
২০১৫ব্ল্যাকহ্যাটক্যারল বেরেট
লিলা অ্যান্ড ইভলিলা ওয়ালকট
২০১৬সুইসাইড স্কোয়াডঅ্যামান্ডা ওয়ালার
ফেন্সেসরোজ ম্যাক্সসন

পুরস্কার ও সম্মাননা

ভায়োলা ডেভিস একাধিক চলচ্চিত্র, সমালোচক ও সংগঠনের পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি তিনবার একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং একবার এই পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ডাউট (২০০৮) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রীদ্য হেল্প (২০১১) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী এই পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং ফেন্সেস (২০১৬) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী এই পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি চারটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার ও দুটি বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন থেকে একটি করে পুরস্কার অর্জন করেন।

মঞ্চে কাজের জন্য তিনি দুটি টনি পুরস্কার, তিনটি ড্রামা ডেস্ক পুরস্কার, একটি করে ওবিই পুরস্কার ও থিয়েটার ওয়ার্ল্ড পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি প্রথম ও একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেত্রী হিসেবে নাট্যধর্মী ধারাবাহিকে শ্রেষ্ঠ মুখ্য অভিনেত্রী বিভাগে প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার বিজয়ী এবং প্রথম আফ্রো-মার্কিন অভিনেত্রী হিসেবে পাঁচটি স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার বিজয়ী।[৫৭] ডেভিস প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয়ের ত্রি-মুকুট তথা প্রতিযোগিতামূলক অস্কার, এমিটনি পুরস্কার অর্জন করেন[৫৮] এবং মাত্র দুজন অভিনেত্রীর মধ্যে একজন যারা এই বিরল সম্মাননা অর্জন করেছেন, বাকি জন হলে অক্টাভিয়া স্পেন্সার[৫৯] ডেভিসকে তার স্নাতক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রোড আইল্যান্ড কলেজ থেকে ২০০২ সালে চারুকলায় সম্মানসূচক ডক্টরেট প্রদান করে।[৬০]

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন