ক্রিসমাস দ্বীপের যুদ্ধ

ক্রিসমাস দ্বীপের যুদ্ধটি একটি ছোট যুদ্ধ ছিল যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ৩১শে মার্চ ১৯৪২ তারিখে শুরু হয়েছিল। ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সৈন্যদের দ্বারা তাদের ব্রিটিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা হয়। বিদ্রোহের সুযোগ নিয়ে জাপানি ইম্পেরিয়াল সেনাবাহিনীর সৈন্যরা কোন ভূমি-ভিত্তিক প্রতিরোধ ছাড়াই ক্রিসমাস দ্বীপ দখল করতে সক্ষম হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সাবমেরিন সিউলফ অবতরণের সময় জাপানি ইম্পেরিয়াল নেভি ক্রুজার ‘নাকা’ কে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ করেছিল।

ক্রিসমাস দ্বীপের যুদ্ধ
মূল যুদ্ধ: ভারত মহাসাগর থিয়েটার এবং প্যাসিফিক থিয়েটার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

ক্রিসমাস দ্বীপ
তারিখ৩১ মার্চ - ১ এপ্রিল ১৯৪২
অবস্থান
ক্রিসমাস দ্বীপ
ফলাফলজাপানের জয়
অধিকৃত
এলাকার
পরিবর্তন
ক্রিসমাস দ্বীপ জাপানি বাহিনীর দখলে
বিবাদমান পক্ষ
জাপানের সাম্রাজ্য জাপান সাম্রাজ্য
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
অজ্ঞাতজাপানের সাম্রাজ্য শোজি নিশিমুরা
শক্তি
ভূমি:
৩২ পদাতিক
সমুদ্র:
সাবমেরিন
ভূমি:
৮৫০ পদাতিক
সমুদ্র:
৩ হালকা ক্রুজার
ডেস্ট্রয়ার
১ তেলবাহী
২ সৈন্য পরিবহন
বিমান:
অজানা বিমান
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
২৭ বন্দী১টি হালকা ক্রুজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়
১৯৪২ সালের ১০ই মার্চ একটি বিদ্রোহে একজন ব্রিটিশ অফিসার এবং চারজন ব্রিটিশ তালিকাভুক্ত সৈন্য নিহত হয়।

পটভূমি

ক্রিসমাস দ্বীপের মানচিত্র ফ্লাইং ফিশ কোভের অবস্থান দেখাচ্ছে, 'দ্য সেটেলমেন্ট'.

সেই সময়ে, ক্রিসমাস দ্বীপটি জাভা থেকে ১৮৫ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত স্ট্রেইট সেটেলমেন্টের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে ব্রিটিশদের দখলে ছিল। দ্বীপটি দুটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিলঃ এটি পূর্ব ভারত মহাসাগরের জন্য একটি নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ ঘাঁটি ছিল এবং এটি ফসফেটেরএকটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসও ছিল। এই ফসফেট জাপানি শিল্পের জন্য খুব প্রয়োজনীয় একটি উপাদান ছিল। ১৯০০ সাল থেকে, দ্বীপটিতে ফসফেটের জন্য খনন কাজ করা হচ্ছিল। যুদ্ধের সময় সেখানে একটি বিশাল শ্রমিকবাহিনী কাজ ছিল, যাদের মধ্যে ১,০০০ চীনা এবং মালয় শ্রমিকরা ব্রিটিশ অফিসারদের একটি ছোট দলের তত্ত্বাবধানে কাজ করছিল। এছাড়াও, দ্বীপে প্রায় ১০০ জন মহিলা এবং ২০০ শিশু ছিল।জাভা দখলের পর, জাপানি ইম্পেরিয়াল জেনারেল হেডকোয়ার্টার ১৪ই মার্চ ১৯৪২ তারিখে "অপারেশন এক্স" (ক্রিসমাস দ্বীপের আক্রমণ এবং দখল) আদেশ জারি করে। রিয়ার অ্যাডমিরাল শোজি নিশিমুরাকে দ্বিতীয় সাউদার্ন এক্সপিডিশনারী ফ্লিটের অকুপেশন ফোর্সের কমান্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তার ফ্ল্যাগশিপ হিসেবে লাইট ক্রুজার ‘নাকা’ ছিল। বহরে আরও ছিল লাইট ক্রুজার নাগারা এবং নাটোরি, এবং ডেস্ট্রয়ার জাহাজ মিনেগুমো, নাটসুগুমো, আমাতসুকাজে, হাটসুকাজে, সাতসুকি, মিনাজুকি, ফুমিজুকি এবং নাগাতসুকি, তেলবাহী জাহাজ ছিল আকেবোনো মারু এবং কিমিশিমা মারু এবং কুমাগাওয়া মারু[১]। এই আক্রমণ শক্তি পরাহত করার জন্য ছিল একটি ৬ ইঞ্চির (১৫০মিমি) এর বন্দুক যা ১৯০০-সালে নির্মিত হয়েছিল এবং সেটি ১৯৪০ সালে ক্রিসমাস দ্বীপে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। ব্রিটিশ গ্যারিসন যা হংকং এবং সিঙ্গাপুর রয়্যাল আর্টিলারির একটি বিচ্ছিন্ন দল ছিল যেখানে ৩২ জন সৈন্য ছিল, তাদের নেতৃত্বে ছিলেন একজন ব্রিটিশ অফিসার যার নাম ক্যাপ্টেন এলডব্লিউটি উইলিয়ামস। উইলিয়ামসের বাহিনীতে একজন ভারতীয় অফিসার ছিলেন, সুবাদার মুজাফফর খান; এছাড়াও ২৭ জন পাঞ্জাবি ভারতীয় বন্দুকধারী ও নন-কমিশন্ড অফিসার (এনসিও); এবং চারজন ব্রিটিশ তালিকাভুক্ত সৈন্যও ছিল[২]। পাঞ্জাবি সৈন্যদের একটি দল, দৃশ্যত ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের মুক্তির বিষয়ে জাপানি প্রচারে বিশ্বাস করে এবং সম্ভবত স্থানীয় শিখ পুলিশ অফিসারদের কিছু বা সকলের মৃদু সমর্থনে এই বিদ্রোহ করে। ১১ই মার্চ তারা উইলিয়ামস এবং চার ব্রিটিশ তালিকাভুক্ত সৈন্যকে গুলি করে হত্যা করে; বাকী তিনজন হলেন, সার্জেন্ট জাইলস, ক্রস, গানার্স থারগুড এবং টেট। তাদেরকে হত্যা করার পর তাদের মৃতদেহ সমুদ্রে ফেলে দেয়া হয়। তারপরে তারা জেলা অফিসার এবং দ্বীপের আরও কয়েকজন ইউরোপীয় বাসিন্দাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার জন্য আটকে রাখে যা পরবর্তীতে জাপানি দখলদারিত্বের দ্বারা ব্যর্থ হয়েছিল[১][৩]

যুদ্ধ

জাপানি সৈন্যরা ক্রিসমাস দ্বীপের ৬ ইঞ্চি বন্দুকের অবস্থান দখল করে।

১৯৪২ সালের ৩১শে মার্চ ভোরবেলা এক ডজন জাপানি বোমারু বিমান দ্বীপটিতে হামলা চালায় এবং রেডিও স্টেশন ধ্বংস করে। ৮৫০ জনের বাহিনী তীরে অবতরণ করার আগে সাদা পতাকা তুলে বিদ্রোহীরা তাদের আত্মসমর্পণের অভিপ্রায়ের ইঙ্গিত দেয়[১] The Japanese expeditionary corps was able to disembark at Flying Fish Cove without opposition.[৪][৫]। জাপানী বাহিনী কোন বিরোধিতা ছাড়াই ফ্লাইং ফিশ কোভে নামতে সক্ষম হয়েছিল। একই দিন সকালে ০৯:৪৯ মিনিটে, মার্কিন নৌবাহিনীর সাবমেরিন ইউএসএস সিউলফ নাকাতে চারটি টর্পেডো নিক্ষেপ করে; সবগুলো টর্পেডোই নাকাতে আঘাত করতে ব্যর্থ হয়। সীউলফ পরের দিন সকালে ০৬:৫০ এ আবার আক্রমণ করে, এবার নাটোরিতে তিনটি টর্পেডো নিক্ষেপ করা হয়, আবারও সেগুলো আঘাত হানতে ব্যর্থ হয়। সেইদিন সন্ধ্যায়, তার শেষ দুটি টর্পেডো নিয়ে[৬], ১,০০০ মিটার থেকে, সিউলফ নাকার স্টারবোর্ডের পাশে, তার ১ নম্বর বয়লারের কাছে , আঘাত করতে সক্ষম হয়েছিল[৭]। আঘাতটি এতটাই গুরুতর ছিল যে নাকাকে নাটোরি দ্বারা সিঙ্গাপুরে ফিরিয়ে আনতে হয়েছিল এবং অবশেষে মেরামতের এক বছরের জন্য জাপানে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। আঘাতের পরে, অন্যান্য জাপানি জাহাজগুলি মার্কিন সাবমেরিনটিকে নয় ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চার্জ করেছিল কিন্তু সাবমেরিনটি সকল আঘাত এড়িয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়[৮]। নাটোরি ক্রিসমাস দ্বীপে ফিরে আসে এবং ৩রা এপ্রিল ১৯৪২-এ ইন্দোনেশিয়ার ব্যানটেন বে-তে ২০ জনের গ্যারিসন ডিটাচমেন্ট বাদ দিয়ে দখলদার বাহিনীর অন্যান্য সকল উপাদান প্রত্যাহার করে নেয়। জাপানিরা ফসফেট শিলা নিয়ে যেতে সমর্থ হয় যা পরিবহন জাহাজে লোড করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

যুদ্ধের পরিণাম

দখলের পর, জাপানি গ্যারিসন বাহিনী চীনা এবং মালয়দের কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছিল, যদিও অনেকে এই দ্বীপ থেকে বাঁচতে কাছকাছি অন্য স্থানে পালিয়ে গিয়েছিল। বিদ্রোহী ভারতীয় সৈনিকরাও শ্রমিকে পরিণত হয়েছিল এবং তারা স্টোরেজ বিন পরিষ্কার করার কাজে নিযুক্ত ছিল[৪] Production was only very limited after the occupation and after the 17 November 1942 sinking of the Nissei Maru by the submarine USS Searaven[৯]। দখলের পরে ফসফেট উৎপাদন খুবই সীমিত হয়ে যায় এবং ১৭ই নভেম্বর ১৯৪২ সালে সাবমেরিন ইউএসএস সিরাভেন দ্বারা ঘাটে আনলোড করার সময় জাপানি জাহাজ নিসেই মারু ডুবে যাওয়ার পর, ফসফেট উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৪৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ইউরোপীয় বন্দিদের সহ দ্বীপের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষকে জাভাতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। যুদ্ধের পর, ১৯৪৫ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ক্রিসমাস দ্বীপটি যুক্তরাজ্যের দ্বারা পুনরায় দখল করা হয়।

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন