ওমব্যাট

ওমব্যাট হল ছোট-পাওয়ালা, পেশীবহুল চতুর্মুখী থলেধরী প্রাণী, যা অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া যা। এরা লেজসহ প্রায় ১ মি (৪০ ইঞ্চি) দৈর্ঘ্যের এবং ২০ থেকে ৩০ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। এর বিদ্যমান তিনটি প্রজাতিই Vombatidae পরিবারের সদস্য। এদের তাসমানিয়াসহ দক্ষিণ ও পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার বনভূমি, পাহাড়িভূমি এবং হিথল্যান্ড এলাকায় পাওয়া যায়। এছাড়া প্রায় ৩০০ হেক্টর (৭৪০ একর) এলাকাজুড়ে বিস্তৃত কুইন্সল্যান্ডের এপিং ফরেস্ট ন্যাশনাল পার্কেও এদের পাওয়া যায়। [১]

ব্যুৎপত্তি

ওমব্যাট (wombat) নামটি এসেছে বর্তমান বিলুপ্তপ্রায় ধ্রুগ ভাষা থেকে, যে ভাষায় আগে আদিবাসী ধ্রুগ লোকেরা কথা বলত এবং এরা মূলত সিডনি এলাকায় বসবাস করত।[২] এউ নামটি ১৭৯৪ সালে প্রথম রেকর্ড করা হয়, যখন জন প্রাইস ও জন উইলসন নিউ সাউথ ওয়েলসের বারগো এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। প্রাইস লিখেছেন, "আমরা বিভিন্ন প্রাণীর বিভিন্ন ধরনের গোবর দেখেছি, যার মধ্যে একটিকে উইলসন "হুম-বাট" বলে ডাকতেন। এটি প্রায় 20 ইঞ্চি উচ্চতার একটি প্রাণী। ছোট পা এবং একটি মোটা দেহের সাথে একটি বড় মাথা, গোলাকার কান, খুব ছোট চোখ, খুবই মোটা, এবং অনেকটা ব্যাজারের মতো চেহারার মত একটি প্রাণী।[৩] ওমব্যাটকে তাদের আকার এবং অভ্যাসের কারণে প্রাথমিক বসতি স্থাপনকারীরা প্রায়শই ব্যাজার বলে ডাকত। এই কারণে তাসমানিয়ার ব্যাজার ক্রিক, ভিক্টোরিয়া এবং ব্যাজার কর্নারের মতো এলাকার নামকরণ করা হয়েছিল ওমব্যাটের নামে। [৪] বানানটি বছরের পর বছর ধরে বহু রূপের মধ্য দিয়ে গেছে, যার মধ্যে রয়েছে "wambat", "whombat", "womat", "wombach" এবং "womback"। সম্ভবত দারুগ ভাষায় উপভাষাগত পার্থক্যের কারণে এমনটি হয়েছে। [২]

বিবর্তন ও শ্রেণীবিন্যাস

যদিও জেনেটিক অধ্যয়ন করে ভোম্বাটিডি পরিবারের বিবর্তন ভালভাবে বোঝা যায় না, তবে ধারণা করা হয় যে, প্রায় ৪০ মিলিয়ন বছর আগে ওমব্যাটগুলি প্রথম দিকে তুলনামূলকভাবে অন্যান্য অস্ট্রেলীয় থলেধরী প্রাণীদের থেকে আলাদা হয়েছিল। কিছু অনুমান মতে ২৫ মিলিয়ন বছর আগে আলাদা হয়। [৫]

বৈশিষ্ট্য

নারওন্টাপু ন্যাশনাল পার্ক, তাসমানিয়ায় একটি ওমবাট

ওমব্যাটরা ইঁদুরের মতো দেখতে তাদের সামনের দাঁত এবং শক্তিশালী নখর দিয়ে খনন কাজ করে। গর্ভাশয়ের একটি স্বতন্ত্র অভিযোজন হল তাদের পশ্চাৎগামী থলি। পশ্চাৎমুখী থলির সুবিধা হল যে, খনন করার সময় গর্ভাশয়ে তার বাচ্চাদের উপর মাটি জড়ো হয় না। যদিও এরা প্রধানত ক্রেপাসকুলার (গোধূলি বেলায় চরে যে) এবং নিশাচর তবে ঠাণ্ডা বা মেঘলায় দিনেও খাওয়ার জন্য বের হয়। এগুলিকে সাধারণত তেমন যায় না। তবে এরা চলে যাওয়ার সময় তাদের উপস্থিতির যথেষ্ট প্রমাণ রেখে যায়।এরা ছোটখাটো বেড়া অনায়াসে টপকে যেতে পারে এবং লম্বা হলে নিচে দিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করে।

ওমব্যাটগুলি সাধারাণত ঘন মল ত্যাগ করে। [৬]

তাসমানিয়ার ক্র্যাডল মাউন্টেনের কাছে পাওয়া ওমব্যাট কিউবিক স্কট

উমব্যাট তৃণভোজী প্রাণী। এর খাদ্যের মধ্যে বেশিরভাগই ঘাস, বীজ, ভেষজ, বাকল এবং শিকড় থাকে। তাদের ছেদযুক্ত দাঁতগুলি কিছুটা ইঁদুরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, যা শক্ত গাছপালা কাটার কাজ দেয়।[৬] ওমব্যাটের পশম একটি বালুকাময় রঙ থেকে বাদামী বা ধূসর থেকে কালো পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়। এদের তিনটি পরিচিত বিদ্যমান প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য প্রায় ১ মিটার এবং ওজন ২০ থেকে ৩৫ কেজি এর মধ্যে হয়।


স্ত্রী গর্ভাশয় প্রায় 20-30 দিনের গর্ভাবস্থার পর একটি বাচ্চার জন্ম দেয়, যা বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে পরিবর্তিত হয়। [৭] [৮] এদের সকল প্রজাতির একটি উন্নত থলি আছে। বাচ্চা প্রায় ছয় থেকে সাত মাস পর্যন্ত সেখানেই থাকে এবং ১৫ মাস পর বাচ্চা ওমব্যাটে দুধ ছাড়ানো হয়। ১৮ মাস বয়সে এরা যৌনভাবে পরিপক্ক হয়। [৯] [১০][১১] একটি ওমব্যাট সাধারণত বন্য অবস্থায় ১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তবে বন্দী অবস্থায় ২০ থেকে ৩০ বছর বেঁচে থাকতে পারে। [১২][১৩] সবচেয়ে দীর্ঘজীবী বন্দী একটি ওমব্যাট ৩৪ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিল।[১৩][১৪][১৫][১৬]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ