জবাই

ইসলামি শাস্ত্রমতে প্রাণিবধ

ইসলামি আইনে জবাই (অথবা জবাই, আরবি: ذَبِيحَة ধাবিয়াহ আইপিএ: [ðæˈbiːħɐ],'পশু') সব বৈধ হালাল প্রাণীদের জবাইয়ের নির্ধারিত পদ্ধতি। বৈধ প্রাণীদের হত্যা করার পদ্ধতি পরিপূর্ণ হওয়ার বেশ কয়েকটি শর্ত রয়েছে। আল্লাহর নাম বা " আল্লাহর নামে" (বিসমিল্লাহ) প্রতিটি হালাল প্রাণীকে আলাদাভাবে জবাই করার জন্য কসাই বলতে বা নাও বলতে পারে কিন্তু ধারালো ছুরি বা ধারালো অন্য কর্তন যন্ত্র দিয়ে দ্রুত হাতে জবাইয়ের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। আনাড়ি হাতে পশুকে কষ্ট দেওয়া যাবে না।, উভয় পাশের শ্বাসনালি, জুগুলার শিরা এবং ক্যারোটিড ধমনী কাটতে হবে কিন্তু মেরুদণ্ড কর্ড অক্ষত রাখতে হবে। [১]

এই পদ্ধতি কুরআন এবং ইসলামি ঐতিহ্যতে বর্ণিত শর্তাবলি মেনে চলার জন্য ব্যবহৃত হয়।

বধ প্রক্রিয়া

কুরআনহাদিস থেকে প্রাপ্ত ইসলামের ধর্মীয় নির্দেশনা মোতাবেক জবাই কর্ম সম্পাদনা করতে বলা হয়েছে।

কুরআনের প্রাসঙ্গিক আয়াতসমূহ

কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতগুলি ইসলামে খাওয়া জন্যে নিষিদ্ধ জিনিসের উল্লেখ করেছে। তবে, অন্য অনেকগুলি উদ্ধৃতি রক্ত, শূকরের মাংস এবং কেরিয়ান খেতে বারণ করেছে। [২][৩][৪]

"তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন শুধু মৃত জীব, রক্ত, শূকরের মাংস এবং সেসব জীবজন্তু, যা আল্লাহ ব্যতীত অপর কারো নামে উৎসর্গীকৃত হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং ইচ্ছাকৃত অবাধ্যতা ছাড়া ও সীমালঙ্ঘন না করে, তার জন্য কোনো পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু। –আল কুরআন, সুরাহ ২ (আল বাকারা), আয়াত ১৭৩

[৫]

"তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে মৃত জীব, রক্ত, শূকরের মাংস এবং সেসব (প্রাণী) যাদেরকে বধের সময় আল্লাহর নামোল্লেখ করা হয় না, এবং সেসব যা কণ্ঠরোধে মারা হয়, যা প্রচণ্ড আঘাত করে মারা হয়, যা উঁচু স্থান থেকে ফেলে মারা হয়, অথবা যা শিঙের আঘাতে বধ করা হয়—এবং যাকে বন্য জন্তু ভক্ষণ করেছে–যদি না তোমরা বধ করতে সক্ষম হও (এর মৃত্যুর পূর্বে)–এবং যা আন-নুসুবে (পাথরের বেদিতে) বধ করা হয়। (নিষিদ্ধ এও-) ভাগ্য বা সিদ্ধান্ত নির্ণয়ে তীর ব্যবহার করা; (সবই নিষিদ্ধ) যা ফিসকুন (আল্লাহর অবাধ্যতা এবং পাপ)। আজ কাফেররা তোমাদের ধর্ম থেকে সব আশা ছেড়ে দিয়েছে; অতএব তাদেরকে ভয় কোরো না, বরং আমাকে ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের ধর্মকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে ধর্ম হিসেবে পছন্দ করলাম। তবে যে ব্যক্তি তীব্র ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে, কিন্তু তার কোনো পাপের প্রবণতা না থাকে (যেমন–উপরিউক্ত মাংসগুলো খাওয়ার মতো পাপ), তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। –আল কুরআন, সূরাহ ৫ (মায়িদাহ) আয়াত ৩

[৫]

"আজ তোমাদের জন্য সকল আল তায়্যিবাত (হালাল বস্তুসমূহ) বৈধ করা হলো। কিতাবধারীদের (ইহুদি ও ক্রিশ্চান) খাদ্য তোমাদের জন্যে বৈধ এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য বৈধ।–সুরা ৫ (আল-মায়িদাহ), আয়াহ

[৫]

"অতএব যে মাংসের উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় (বধের সময়), তা থেকে ভক্ষণ কর যদি তোমরা তাঁর আয়াতে (প্রমাণ, নিদর্শন, শ্লোক, শিক্ষক, প্রতীক, প্রত্যাদেশ) বিশ্বাসী হও।"–আল কুরআন, সুরা ৬ (আন ʻআম ), আয়াহ ১১৮

[৫]

"বলুন (হে মুহাম্মাদ): যা কিছু বিধান ওহির মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি কোনো হারাম খাদ্য পাই না কোনো ভক্ষণকারীর জন্যে, যা সে ভক্ষণ করে; যদি না তা মৃত জীব হয় অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শূকরের মাংস হয়; যেহেতু তা অবিশুদ্ধ বা অধার্মিক মাংস (প্রাণীর) যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গীকৃত হয়। তবে যে-ই প্রয়োজনের দ্বারা তাড়িত হয়ে পড়ে, কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা করে না এবং সীমালঙ্ঘন করে না; (তার জন্য) নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।"-আল কুরআন, সুরা ৬ ( আন ʻআম ), আয়াহ ১৪৫

[৫]

"তিনি তোমাদের জন্যে কেবল হারাম করেছেন আল-মাইতাহ (মৃত প্রাণীর মাংস), শূকরের মাংস এবং যে প্রাণী উৎসর্গ করা হয়েছে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য। তবে কেউ যদি প্রয়োজনের দ্বারা তাড়িত হয়, কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা না করে, সীমালঙ্ঘন না করে, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।"–আল কুরআন, সুরা ১৬ (আন-নাহল), আয়াহ ১১৫

[৫]

শর্ত

ধাবিহল ইলালের আইন অনুসারে, পশুদের হত্যা করার আগে কিছু পূর্বশর্ত পূরণ করা উচিত:

"যে সকল প্রাণী হত্যার সময় আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি তার মাংস খেয়ো না।" (সূরা আল-আন'আম ৬:১২১)

ইসলামী জবাই

১৯২৬ সালে মিশরের পশু জবাইয়ের দৃশ্য
  • জবাই এর প্রারম্ভে পড়তে হবে, بِسْمِ اللهِ اَللهُ اَكْبَرُ. (বিসমিল্লাহহি আল্লাহু আকবার)।
  • জবাই করার পূর্বে ছুরি ধার করে নিবে। ভোতা ছুরি দ্বারা জবাই করলে প্রানীর অধিক কষ্ট হবে। তাই এতে জবাইকারী গুনাহগার (পাপী) হবে এবং এটা মাকরুহে তাহরীমী হবে।
  • জবাই করার সময় পশুর মাথা যেন একেবারে পৃথক করা না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাথা পৃথক করা মাকরুহে তাহরীমী। তবে এতে পশু খাওয়া হারাম হবে না।
  • পশু জবাই করার পর তৎক্ষণাৎ চামড়া ছাড়ানো মাকরুহে তাহরীমী। বরং প্রানীর প্রাণ বের হয়ে নিশ্চল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ