কাকমাচি
কাকমাচি বা তিতবেগুন [১] (দ্বিপদ নাম:Solanum nigrum) হচ্ছে সোলানাম গণের একটি গুল্ম। এটি কাঁটাযুক্ত ছোট উদ্ভিদ।[২] এটির আদি নিবাস ইউরেশিয়ায়। তবে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকায়ও এর প্রচলন করা হয়েছে। এর পাকা ফল এবং আহার্য পাতা রান্না করে খাওয়া হয় কোনো কোনো স্থানীয় এলাকায়। এছাড়া গাছের বিভিন্ন অংশ ঔষধি গুণের জন্য ব্যবহার করা হয়।
কাকমাচি Solanum nigrum | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Asterids |
বর্গ: | Solanales |
পরিবার: | Solanaceae |
গণ: | Solanum |
প্রজাতি: | S. nigrum |
দ্বিপদী নাম | |
Solanum nigrum L. | |
Subspecies | |
S. nigrum subsp. nigrum |
বিবরণ
তিতবেগুন কাঁটাযুক্ত ছোট উদ্ভিদ। এর পাতা হালকা সবুজ। গাছ ১-২ মিটার উঁচু হয়। শহুরে জলাশয় ভরাট করা ইট-বালিময় স্থানেও এদের বেশ সহজে গজিয়ে উঠতে দেখা যায়। এর ফুল হালকা বেগুনি ও হালকা গোলাপী হয়। ফল গোলাকৃতির নরম। [৩] কাঁচা ফল সবুজ এবং পাকা ফল প্রথমে লাল এবং পরে কালচে হয়ে ওঠে।
ব্যবহার
কাকমাচির পাতা পাঁচ মিশালি শাকের সাথে খাওয়া যায়। এদের ফলগুলিও খাওয়া যায় অনায়াসে। পাতা ও মূল নানান ঔষধি ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। এ থেকে বের করা রাসায়নিক নির্যাস আমাশয়, পাকস্থলীর জটিলতায়, এবং জ্বর নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।[৪] এই উদ্ভিদের রস আলসার এবং চর্মরোগে ব্যবহৃত হয়। এর ফল বলবর্ধক, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে, ক্ষুধা উদ্রেকে সহায়ক হিসেবে, এবং হাঁপানি, প্রচণ্ড তৃষ্ণার প্রতিকারে ব্যবহৃত হয় ইত্যাদিতে।[৫] উত্তর ভারতে এর পাতা এবং ফল সিদ্ধ করা নির্যাস যকৃতের অসুস্থতা, জন্ডিস উপশমে ব্যবহার করা হয়। আসামে এর মূলের রস হাঁপানি এবং হুপিং কাশির প্রতিকারে ব্যবহার করা হয়। [৬]
বাংলাদেশে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষাবাদের জন্য এই গাছকে ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। যেহেতু এটি একটি জংলি প্রজাতির গাছ তাই এর টিকে থাকার ক্ষমতা বেশ ভালো। এ কারণে টমেটোর চারা এর কাণ্ডের উপরাংশ ফেলে দিয়ে প্রতিস্থাপন করে অধিক ফলনের লক্ষ্যে একে ব্যবহার করা হয়। [৭]
চাষাবাদ
একাধিক মহাদেশে, বিশেষত, আফ্রিকা এবং উত্তর আমেরিকায় এই তিতবেগুন চাষ করা হয়।
আগাছা
তিত বেগুন গাছ ফসলের সাথে জন্মালে এটি মারাত্মক ক্ষতিকারক আগাছা হিসেবে চিহ্নিত হয়।[৮][৯] এটিকে ৬১টি দেশে এবং ৩৭টি ফসলের জন্য আগাছা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তুলার মতো ফসলের ক্ষেত্রে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে আগাছানাশক ব্যাপকভাবে ব্যবহার করতে হয়।