প্রতিবাদী মতবাদ (খ্রিস্টধর্ম)

প্রতিবাদী মতবাদ (লাতিন: Protestantes; জার্মান: Protestantismus) হল খ্রিস্টধর্মের দ্বিতীয় বৃহত্তম শাখা যার অনুসারীর সংখ্যা ৮০ কোটি থেকে ১০০ কোটি, যা সমগ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ৩৭%।[১][২][ক] এটি ১৬শ শতাব্দীর সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল[খ] যা এর অনুসারীদের মতে ছিল ক্যাথলিক মণ্ডলীর ত্রুটিসমূহের বিরোধী।[৪] প্রতিবাদী মতাবলম্বীরা রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলীর পোপীয় আধিপত্ত ও ধর্মীয় সংস্কৃতির মতবাদকে প্রত্যাখ্যান করে, তবে ইউক্যারিস্টে যীশুর প্রকৃত উপস্থিতি এবং মণ্ডলীর শাসনব্যবস্থা ও প্রেরিতীয় উত্তরাধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে।[৫] তারা সকল বিশ্বাসীদের যাজকত্ব, শুধু বিশ্বাসের দ্বারা নয় বরং ভালো কাজের দ্বারা ন্যায্যতা (সোলা ফিদে) এবং বিশ্বাস ও নৈতিকতায় কেবল বাইবেলের সর্বোচ্চ কর্তৃত্বের (সোলা স্ক্রিপতুরা) ওপর জোর দেয়।[৬][৭]


প্রতিবাদী মতবাদ
লাতিন: Protestantes
অল সেন্টস গির্জা, ভিটেনবার্গ, জার্মানি
প্রকারভেদপ্রতিবাদী মতবাদ
ধর্মগ্রন্থবাইবেল
ধর্মতত্ত্বপ্রতিবাদী ধর্মতত্ত্ব
সোলা স্ক্রিপতুরাধর্মগ্রন্থ
অঞ্চলআন্তর্জাতিক
প্রবর্তকমার্টিন লুথার
উৎপত্তিষোড়শ শতাব্দী
জার্মানি
সদস্য৮০ কোটি – ১০০ কোটি[১]

খ্রীষ্টানদের মধ্যে যে প্রধান তিনটি ভিন্নমতাবলম্বী গোষ্ঠী রয়েছে, তাদের একটি গোষ্ঠীর বিশ্বাসকে বলা হয় প্রতিবাদী মতবাদ, যা আসলে কোনো বিশেষ বা নির্দিষ্ট বিশ্বাস নয়, বরং বিভিন্ন ছোটো গোষ্ঠী বা ব্যক্তিবর্গের সমষ্টি। অনেক ক্ষেত্রে ক্যাথলিক বা সনাতনপন্থী ছাড়া বাকি খ্রীষ্টানদের প্রতিবাদী মতাবলম্বী বলা হয়। ইউরোপে ১৬শ শতকে সংঘটিত প্রতিবাদী সংস্কার-আন্দোলন থেকে এর গোড়াপত্তন হয়েছিল।

রোমান ক্যাথলিক ও প্রতিবাদী মতাবলম্বীদের মধ্যে পার্থক্য

এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রযেছে। প্রতিবাদী মতাবলম্বীরা মনে করেন ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত পবিত্র বাইবেল হল একটি সম্পূর্ণ বিধান এবং একমাত্র বাইবেলের শিক্ষাই জগতের পাপীগণের মুক্তিলাভ করার জন্য যথেষ্ট। তাঁদের মতে সকল ধর্মীয় বিশ্বাস ও নৈতিকতার চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ হল বাইবেল। প্রতিবাদী মতাবলম্বীদের এই ধারনার উৎস হল ‘Five Scriptura’ বা পাঁচ প্রত্যাদেশ। এই পাঁচ প্রত্যাদেশের একটি হল ‘Sola Scriptura’। এছাড়া পাবিত্র বাইবেলের বিভিন্ন জায়গায়ও একাধিকবার তাঁদের মতবাদের পক্ষে যুক্তি আছে বলে প্রতিবাদী মতাবলম্বীরা মনে করেন। কিন্তু ক্যাথলিকগণ এই ধারণা সঠিক বলে মনে করেননা। তাঁদের মতে পবিত্র বাইবেলের পাশাপাশি রোমান ঐতিহ্যগত অনুশাসনও একজন খ্রিস্টানের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।[১] আর একটি পার্থক্য হল খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রধান হিসেবে পোপের কর্তৃত্ব স্বীকার। ক্যাথলিকগণ মনে করেন পোপ সকল চার্চের প্রধান এবং যিশু খ্রিস্টের বিকল্প Vicar of Christ। তাঁরা মনে করেন পোপের শিক্ষা ও বচন হল অভ্রান্ত এবং খ্রিস্ট বিশ্বাস ও ধর্ম জ্ঞান চর্চায় তিনি কোনো ভুল করতে পারেননা। অন্যদিকে প্রতিবাদী মতাবলম্বীরা মনে করেন যে, কোনো মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নন। আর একমাত্র যিশুই হল সকল চার্চের প্রধান। প্রতিবাদী মতাবলম্বীরা ক্যাথলিকদের মতো পৌরোহিত্য করেননা। যাজকদের বিয়ের প্রথা প্রোপ্রতিবাদী মতাবলম্বীদের মধ্যে দেখা যায়। যাজক হিসেবে তাঁরা সর্বজন বিশ্বাসভাজন কারো ওপর তার দায়িত্ব অর্পণ করেন। ক্যাথলিকরা ঈশ্বর-যিশু ছাড়াও অনেক সাধু-সন্তদের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেন। প্রতিবাদী মতাবলম্বীরা সাধু সন্তদের ওপর বিশ্বাস রাখলেও তাঁদের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেননা। এছাড়া হোলিওয়াটার, সেলিবাচি, যন্ত্রণাভোগ ও নানে শুধুমাত্র ক্যাথলিকরা বিশ্বাস করেন। [২] গট কোশ্চেনস্‌

ইতিহাস

প্রতিবাদী আন্দোলন প্রথম শুরু হয় জার্মানিতে। ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে মার্টিন লুথার প্রণীত গ্রন্থ ‘দ্য নাইন্টি ফাইভ থিসিস’ গ্রন্থে তিনি রোমন যাজকীয় নীতি, তাঁদের প্রচলিত খ্রিস্ট বিশ্বাস নিয়ে অনেক ভিন্ন মতামত প্রকাশ করেন। ষোড়শ শতকে তাঁর অনুসারণকারীরা জার্মান স্ক্যান্ডিনেভিয়ার প্রতিষ্ঠা করে লুথিয়ান চার্চ। হাঙ্গেরি, স্কটল্যান্ড, ফ্রান্স, সুইৎজারল্যান্ড প্রভৃতি দেশেও একই আদলে চার্চের সংস্কার করা হয়। ১৫৫৩ খ্রিস্টাব্দে চার্চ অব ইংল্যান্ড পোপের কর্তৃত্ব থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। [৩] রিফর্মেশন অব চার্চ অব ইংল্যান্ড।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ


উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ