প্রাচ্য দর্শন

পূর্ব এশিয়া থেকে উদ্ভূত দর্শন

প্রাচ্য দর্শনে (ইংরেজি: Eastern philosophy) দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার চৈনিক দর্শন, ভারতীয় দর্শন, জাপানি দর্শন ও কোরিয় দর্শন অন্তর্ভুক্ত। কখনো-সখনো ইরানি বা পারসিক দর্শনকেও প্রাচ্য দর্শন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও ব্যাবিলনীয় দর্শন, ইহুদি দর্শন ও ইসলামি দর্শনকে পাশ্চাত্য দর্শন বিবেচনা করা হয়, প্রাচ্য দর্শনকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার সময় কখনো-কখনো এগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শ্রেণিবিভাগ

প্রাচ্য দর্শন চৈনিক দর্শন, ভারতীয় দর্শন, ইরানি দর্শন, জাপানি দর্শন, কোরিয় দর্শন, আরব দর্শন ও ইহুদি দর্শনের মতো বিভিন্ন এশীয় দর্শনকে অন্তর্ভুক্ত করে। এই বিভাজন শুধু ভৌগোলিক নয়, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ঐতিহ্যের মধ্যে বিদ্যমান সাধারণ হারমেনেউটিক ও ধারণাগত তফাৎ থেকে আগত শাখাও।

পরমেশ্বর এবং মানবদেবতা

ইব্রাহিমিয় ধর্মগুলোর মধ্য দিয়ে এর উৎপত্তি হওয়ার কারণে কিছু পাশ্চাত্য দর্শন একেশ্বরবাদী কাঠামোয় বিকশিত ঈশ্বরের প্রকৃতি ও জগতের সাথে এর সম্পর্ক বিষয়ে প্রশ্নমালা তৈরি করেছে। এটি পাশ্চাত্য দর্শনসমূহের বিশেষ করে প্রটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টানত্বের ঈশ্বর ও জগতের স্বরূপ সম্পর্কিত একটা বিশেষ একেশ্বরবাদী মতবাদের কাঠামোর মধ্যদিয়ে বিকশিত ধর্মনিরপেক্ষ ও ধর্মীয় দর্শনের মধ্যে একটি দ্বিবিভাগ রচনা করেছে।

প্রাচ্য ধর্মগুলো বিশ্বের একক স্রষ্টা ও নিয়ন্তা হিসেবে একক ঈশ্বরের স্বরূপ সম্পর্কিত সমস্যা সংবলিত নয়। প্রাচ্য দর্শনে ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ প্রবণতার মধ্যকার এই ব্যবধান খুব কম পরিমানে স্পষ্ট। এবং একই দার্শনিক সম্প্রদায় প্রায় সময় ধর্মীয় এ দার্শনিক উভয় উপাদান ধারণ করে। এভাবে, কিছু লোক উপাসনালয়ে না গিয়ে বৌদ্ধবাদের তথাকথিত অধিবিদ্যক ধারণা গ্রহণ করেছে। কিছু লোক ধর্মতাত্ত্বিক খোঁচাখুঁচির মধ্যে না গিয়ে ধর্মীয়ভাবে তাওবাদী দেবতার উপাসনা করেছে।

তুলনামূলক ধর্ম

ঈশ্বর (দেবতা) ও জগতের সম্পর্ক বিষয়ে প্রায় পাশ্চাত্য দর্শন থেকে প্রাচ্য দর্শনকে পৃথক করতে দেখা যায়। পাশ্চাত্যের কিছু চিন্তা-সম্প্রদায় ছিলেন সর্বপ্রাণবাদী বা সর্বেশ্বরবাদী (যেমন ধ্রুপদী গ্রিক ঐতিহ্য), যারা পরবর্তীতে স্বর্গীয়তাকে অধিক অতীন্দ্রিয় বলে ঘোষণাকারী ইব্রাহিমিয় ধর্মগুলোর একেশ্বরবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। ধ্রুপদী গ্রিক দর্শনের মতো প্রাচ্যের অনেক চিন্তা-সম্প্রদায় দেবতার (ঈশ্বরের) মতো প্রেরণাদায়ক এজেন্সিগুলোর তোয়াক্কা না করে জাগতিক নমুনা (universal patterns) ব্যবহার করে প্রাকৃতিক জগত (natural world) ব্যাখ্যায় অধিক আগ্রহ দেখিয়েছে। সিনক্রেটিজম প্রথাগত ধর্মচর্চা অথবা নতুন ধর্মান্দোলনের (traditional religious practice বা new religious movements) বিরোধিতা না করে একে অপরের সাথে পারষ্পরিকভাবে সংগতিপূর্ণ আই, আইন ইয়াং, ওউ জিং ও রেঁ-এর (Yi, Yin yang, Wu xing ও Ren) মতো বিভিন্ন চিন্তা-সম্প্রদায়কে সমর্থন জানায়।

প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য দর্শনের সংশ্লেষণ

পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য দার্শনিক ঐতিহ্যকে মিশ্রিত করার অনেক আধুনিক প্রচেষ্টা লক্ষ্যণীয়।

আর্থার শোপেনহাওয়ার (Arthur Schopenhauer) একটি দর্শনের বিকাশ ঘটিয়েছেন যা মূলত পাশ্চাত্য চিন্তার সাথে হিন্দুবাদের (Hinduism) একধরনের সংশ্লেষণ। তিনি বয়ান করেন যে, পাশ্চাত্যদের যা রয়েছে সেগুলোতে উপনিষদের (হিন্দুদের প্রাথমিক ধর্মগ্রন্থ) ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। অধিকন্তু, শোপেনহাওয়ার খুব সমস্যাযুক্ত প্রাথমিক অনবাদ (এবং কখনো-কখনো দ্বিতীয় অনুবাদ) নিয়ে কাজ করেছিলেন। অনেকে অনুমান করেছেন যে, প্রাচ্যের যেসব দর্শন তাকে আগ্রহান্বিত করেছিল, সেগুলো তিনি প্রকৃতভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে পারেননি।

প্রাচ্য চিন্তার সাথে পাশ্চাত্য দর্শনকে অঙ্গীভূত করার সাম্প্রতিক প্রচেষ্টাসমূহ হুসার্লের (Husserl) অবভাসবিদ্যাকে (phenomenology) যেন বৌদ্ধবাদের (Zen Buddhism) সাথে সংযুক্তকারী কিয়োটো দার্শনিক সম্প্রদায়কে (Kyoto School of philosophers) অন্তর্ভুক্ত করে। সোরেন কেয়ার্কেগার্দ (Søren Kierkegaard), নিতসে (Nietzsche) ও হাইদেগারের (Heidegger) কাজকে বিংশ শতাব্দির জাপানি দার্শনিক ওয়াটসুজি টেটসুরো (Watsuji Tetsurô) প্রাচ্য দর্শনের সাথে সংযুক্ত করা প্রচেষ্টা চালান। কেউ কেউ দাবি করেছেন যে, হাইদেগারের দর্শনে সুনির্দিষ্ট প্রাচ্য উপাদানও রয়েছে। মোটাদাগে হাইদেগারের দর্শনে এটি পরিষ্কার নয়। হাইদেগার তার চৈনিক ছাত্র পল সাইও-এর (Paul Hsaio) সাথে কাজ চলাকালে তাও তে চিংকে (Tao Te Ching) জার্মান ভাষায় অনুবাদের চেষ্টায় সময় অতিবাহিত করেছেন। এটাও দাবি করা হয় যে, হাইদেগারের পরবর্তী দর্শন, বিশেষ করে সত্তার বিশুদ্ধতার (sacredness of Being) বেশিরভাগই তাওবাদী ধারণার (Taoist ideas) সুনির্দিষ্ট সমরূপতা বহন করে। হাইদেগার ও কিয়োটো সম্প্রদায়ের কাজের মধ্যে একটা পরিষ্কার ঐক্য দৃষ্ট হয়, এবং চূড়ান্তভাবে এটা পড়া যেতে পারে যে, পাশ্চাত্য সভ্যতায় সংকট চলাকালে হাইদেগারের দর্শন প্রাচ্যমুখী হওয়ার (turn eastwards) একটা প্রচেষ্টা স্বরূপ। যা হোক, এটা একটি ব্যাখ্যা।

বিংশ শতাব্দির হিন্দুগুরু শ্রী অরবিন্দ (Sri Aurobindo) জার্মান ভাববাদ দ্বারা প্রভাবিত এবং তার অত্যাবশ্যক যোগকে (integral yoga) প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য চিন্তার একটা সংশ্লেষণ হিসেবে দেখা হয়। সচেতনতার ইতিহাস (the history of consciousness) বিষয়ে জার্মান অবভাসবিদ জ্যঁ গেবসারের (Jean Gebser) লেখাকে একটি নতুন পার্থিব সচেতনতা হিসেবে সামনে আনা হয়, যা এই শূন্যস্থানে সেতু নির্মাণ করে। এই দুই লেখকের অনসারীরা ‘অত্যবশ্যক চিন্তা’ পদের (Integral thought) অধীনে প্রায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায়।

সুইস মনোবিজ্ঞানী কার্ল জাং (Carl Jung) গভীরভাবে আই চিং (I Ching, পরিবর্তন গ্রন্থ) দ্বারা প্রভাবিত। বইটি শ্যাং পরিবার (ব্রোঞ্জ যুগ, ১৭০০ খ্রি.পূ. – ১০৫০ খ্রি.পূ.) হতে প্রাপ্ত একটি প্রাচীন চৈনিক টেক্সট, যা আইন ও ইয়াং-এর পদ্ধতি (system of Yin and Yang) হিসেবে ব্যবহার করা হয়, যাকে ভবিষ্যদ্বাণীর উদ্দেশ্যে ষড়মুখী তারকায় স্থান দেওয়া হয়। কার্ল জাং-এর সমকালিনতার (synchronicity) ধারণা কার্যকারণের (causality) প্রাচ্যদেশীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি আবর্তিত হয়, যেটা তিনি আই চিং-এর রিচার্ড উইলহেমের (Richard Wilhelm) অনুবাদের ভূমিকায় বয়ানও করেছেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে, জগৎ সম্পর্কে এই চৈনিক দৃষ্টিভঙ্গি কেবল বিজ্ঞান বলতে পাশ্চাত্যরা যা জানে তার উপর নয়, পরিবর্তনের উপরও ভিত্তিশীল।

পূর্ব এশিয়ার দর্শন

কনফুসীয়বাদ

কনফুসীয়বাদ কনফুসিয়াসের (孔子) শিক্ষাদানকে ঘিরে বিকশিত এবং এটি এক সেট চৈনিক ধ্রুপদী টেক্সটের উপর ভিত্তিশীল।

নয়া-কনফুসীয়বাদ

নব্য-কনফুসীয়বাদ কনফুসীয়বাদের পরবর্তী ক্রমবিকাশ। এটি সং পরিবার (Song Dynasty) থেকে ক্রমবিকশিত হতে শুরু করেছে এবং বিগত মিং পরিবারে (Ming Dynasty) নিকটে এসে পরিপূর্ণতা পায়। এর মূল ট্যাং পরিবারের (Tang Dynasty) শুরুর দিকে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। চীন, জাপান, কোরিয়া ও ভিয়েতনাম সহ প্রাচ্য এশিয়ার দেশসমূহের উপর এর বিশাল প্রভাব রয়েছে। ঝু জিকে (Zhu Xi) সঙের (Song) মহাশিক্ষক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে নব্য-কনফুসীয়বাদ ও ওয়াং ইয়াংমিং হচ্ছে মিং পরিবারের অন্যতম শিক্ষক। কিন্তু ঝু সম্প্রদায় ও ওয়াং সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ রয়েছে।

তাওবাদ

শিনতো

আইনিবাদ

মাওবাদ

ভারতীয় দর্শনসমূহ

হিন্দু দর্শন

বৌদ্ধ দর্শন

শিখ দর্শন

  • সিমরান ও সেবা- এগুলো শিখবাদের ভিত্তি। নাম সিমরানের (Naam Simran - প্রভুর নামে অনধ্যান) দৈনিক চর্চা করা এবং প্রয়োজনবোধে গুর্দওয়ারা (শিখদের উপাসনালয়), সম্প্রদায়-কেন্দ্র, প্রবীন ব্যক্তিদের গৃহ, সেবাকেন্দ্রে সেবায় (Sewa - নিঃস্বার্থ সেবা) নিযুক্ত হওয়া প্রত্যেক শিখের দায়িত্ব। এই উদ্দেশ্যে ‘এক ওঙ্কার সতানম’ (প্রকৃতি হতে এক খোদা অবিচ্ছিন্ন এবং এর নাম সত্য) ও ওয়াহিগুরু (প্রভুর নামে অনুধ্যানিক চর্চা) মন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
  • শিখবাদের তিন স্তম্ভ – গুরু নানক শিখবাদের গুরুত্বপূর্ণ এই তিন স্তম্ভ প্রণালীবদ্ধ করেন।
    • নাম জপনা – একজন শিখকে খোদার নামে আবৃত্তি ও স্তবগান করে অনধ্যান ও নিতনেমের (Nitnem, দৈনিক প্রার্থনা রুটিন) দৈনিক চর্চায় নিমগ্ন হতে হবে।
    • কিরাত করনি – সৎভাবে বেঁচে থাকতে এবং খোদার দান ও আশীর্বাদ গ্রহণ করার সময় শারীরিক ও মানসিক প্রচেষ্টা দ্বারা অর্জন করতেই এই স্তম্ভ। গৃহমালিক হিসেবে একজন িখকে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পূর্ণরূপে নির্বাহ করে বাঁচতে হবে।
    • ভন্ড চাকনা –সম্প্রদায় ও সম্প্রদায়ের বাইরে দাসভন্ড দিয়ে ও দান (charity) চর্চার মাধ্যমে সম্পদ বণ্টন করতে শিখদের বলা হয়েছে। “বণ্টন কর এবং একত্রে ভোগ কর”।
  • পঞ্চচোর হত্যা কর – শিখগুরুরা বলে, আমাদের মন ও আত্মা কাম (Lust), ক্রোধ (Rage), লোভ (Greed), মোহ (Attachment) ও অহংকার (Ego)- এই পঞ্চদুষ্ট দ্বারা ধ্রুবভাবে আকৃষ্ট। স্থায়ীভাবে এই পঞ্চ কলঙ্ককে ধ্বংস ও পরাজিত করা একজন শিখের দরকার।
  • ইতিবাচক মানবীয় গুণ – গুরুরা শিখদের আত্মাকে খোদার ঘনিষ্ঠ এবং পাপমুক্ত করার উপযোগী ইতিবাচক মানবীয় গুণের বিকাশ ঘটাতে শিক্ষা দেন। গুণগুলো হলো সৎ (Truth), দয়া (Compassion), সন্তোখ (Contentment), নিমরাতা (Humility) এবং পেয়ার (Love)।

জৈনবাদ

জৈনবাদ ব্যাপকভাবে অধিবিদ্যা, বাস্তবতা, বিশ্বতত্ত্ব, তত্ত্ববিদ্যা, জ্ঞানতত্ত্ব ও স্বর্গীয়তা নিয়ে আলোচনা করে। এটি মূলত প্রাচীন ভারতের একটি নাস্তিক্যবাদী ধর্ম (transtheistic religion)।[১] এটি প্রাচীন কাল পর্যন্ত বৈদিক রীতিনীতির সাথে বর্তমান থাকা প্রাচীন শ্রমণ রীতিনীতি চালু করেছে।[২][৩]

চার্বাক

চার্বাক লোকায়ত নামেও পরিচিত। ভারতীয় প্রাচীন চিন্তার একটি জড়বাদী ও নাস্তিক সম্প্রদায়ের নামই চার্বাক। এটি বৌদ্ধিক চিন্তার উপর প্রতিষ্ঠিত একটি নীতি-ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছে। হাজারেরও অধিক বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা এই সম্প্রদায়ের প্রত্যক্ষ প্রভাবে একবিংশ শতাব্দির প্রথম দশকে বাংলাদেশি দার্শনিক সবুজ তাপস প্রবর্তনা করেন দৃষ্টান্তবাদী সম্প্রদায়।[৪] বলা যেতে পারে, চার্বাক তথা লোকায়তিকরা বর্তমানে ‘না আস্তিক, না নাস্তিক’ দৃষ্টান্তবাদী মেজাজ নিয়ে চিন্তাজগতে সক্রিয় রয়েছে।

পারসীক দর্শন

জরস্থ্রীয়বাদ

ইরানে ব্যূৎপন্ন জরস্থ্রীয়বাদ একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম। ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ স্বর্গীয় সত্তা বিশিষ্ট একটি অতিরিক্ত অনুক্রমসহ এর রয়েছে একটি দ্বৈতবাদী প্রকৃতি (আহুরা মাযদা ও আংরা মাইনয়ূ - Ahura Mazda ও Angra Mainyu)। এই অনুক্রমকে আমিশা স্পেন্তা (Amesha Spentas) বলা হয়।[৫][৬][৭]

ম্যানিকাঈবাদ

মাযদাকবাদ

মাযদাকের ধর্মীয় ও দার্শনিক শিক্ষাদানকে মাযদাকবাদ নামে অভিহিত করা হয়। মাযদাকই এর প্রতিষ্ঠাতা। এই মতবাদ জরস্থ্রীয়বাদের[৮][৯] সংস্কৃত ও পরিশুদ্ধ রূপ হিসেবে বিবেচিত। এতে ম্যানিকাঈবাদের[৮] লক্ষণীয় প্রভাবও রয়েছে।

যুর্ভানবাদ

নান্দনিক যুর্ভানবাদ

জড়বাদী যুর্ভানবাদ

অদৃষ্টবাদী যুর্ভানবাদ

ইবনেসিনাবাদ

পারসিক বহুবিদ্যাবিশারদ ইবনে সিনা অনেক বিষয়ে প্রায় ৪৫০টি বই রচনা করেন। সেগুলোর মধ্যে ‘The Book of Healing’ দার্শনিক বইটি এখনো টিকে আছে।

পারসীক আলোকায়নবাদ

অতীন্দ্রিয় দর্শন

অতীন্দ্রিয় দর্শন, সদর শিরাজি কর্তৃক বিকশিত, ইসলামি দর্শনের দুটো প্রধান পালনীয় আদেশের অন্যতম। এটি এখনও সজীব এবং সক্রিয় রয়েছে।

বাহাই দর্শন

বাহাই দর্শনের ধারণা বাহাই বিশ্বাস ‘বাহাউল্লাহ’র প্রতিষ্ঠাতার বড় ছেলে আবদুল বাহার Divine Philosophy[১০] –এ বিশ্লেষিত হয়েছে।[১১]

হিব্রু ও ডায়াসপোরা ইহুদি দর্শন

ব্যাবিলনীয় দর্শন

আরও তথ্যের জন্য: ব্যাবিলনীয় সাহিত্য: দর্শন

শব্দের জনপ্রিয় দিক থেকে ব্যাবিলনীয় দর্শনের উৎপত্তি প্রাথমিক মেসোপটেমিয়ার প্রজ্ঞার প্রতি ইঙ্গিত করে, যা জীবনের সুনিশ্চিত দর্শনগুলো, বিশেষ করে নীতিবিদ্যাকে dialectic, dialogs, epic poetry, folklore, hymns, lyrics, prose ও proverbs আকারে অঙ্গীভূত করে। এটি বিকশিত হয়েছে ব্যাবিলনীয়দের যুক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি দ্বারা, অভিজ্ঞতাভিত্তিক পর্যবেক্ষণের ব্যতিরেকে।[১২]

ইসলামী দর্শন

ইসলামের উত্থান এবং প্রাচীন গ্রিক মতবাদ, বিশেষ করে অ্যারিস্টটলের প্রভাবে প্রাচ্যে বিভিন্ন ধরনের দার্শনিক মতবাদ ও ভাবধারার উদ্ভব ঘটেছে। এদের মধ্যে সূফিবাদ গূঢ় বা গূপ্ত দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করে, মুতাজিলা (গ্রীক দর্শন দ্বারা আংশিক প্রভাবিত) যুক্তিবাদকে পুণঃপ্রতিষ্ঠিত করে, যেখানে আশ'আরী মতবাদ আবার ঈশ্বর, ন্যায়বিচার, ভাগ্য এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের যৌক্তিক ব্যাখ্যাকে সংষ্কার করে।

পাশ্চাত্যের একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রভাবশালী মুসলিম দার্শনিক হলেন ইবনে রুশদ বা এভেরুস(Averroes), যিনি এভেরুজম বা রুশদবাদের প্রতিষ্ঠাতা[১৩]; এর পরে আছেন আল জাহিজ, যিনি বিবর্তনবাদের প্রাকৃতিক নির্বাচনের একজন অগ্রদূত; ইবনে আল হাইসাম বা আলহাজেন(Alhazen), ইন্দ্রিয়বাদ এবং বিজ্ঞানের দর্শনের একজন পথিকৃৎ এবং এরিস্টোটলীয় প্রাকৃতিক দর্শন এবং স্থানিক মতবাদের একজন সমালোচক; আল বিরুনী, এরিস্টোটলীয় প্রাকৃতিক দর্শনের সমালোচক; ইবনে সিনা, এরিস্টোটলীয় যুক্তির সমালোচক; ফখরুদ্দিন আলরাযী, আনুমানিক যুক্তির পথিকৃৎ এবং ইবনে খালদুন, যাকে ঐতিহাসিক এবং সমাজতাত্ত্বিক দর্শনের জনক মনে করা হয়।

সুফি দর্শন

সুফিবাদ ইসলামের মরমী দর্শনের একটি সম্প্রদায়, যা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য-অর্জনে আধ্যাত্মিক সত্যের উপর ভিত্তিশীল। এই পরম সত্য অর্জনে সুফিবাদ লাতাইফ-ই-সিত্তা (ছয় গুণ-বৈশিষ্ট্য – নফস, কলব, সির, রুহ, কাফি ও আখফা) চিহ্নিত করেছে। সুফিরা রক্ষণশীল ধর্মীয় চর্চা থেকে দূরে গিয়ে মুরাকাবা (meditation), জিকর (recitation), চিলাকাশি (asceticism) ও সামা (esoteric music ও dance) সম্পাদন করেন।

আরও দেখুন

  • ব্যাবিলনীয় সাহিত্য: দর্শন
  • ভারতীয় দর্শন
  • চৈনিক দর্শন
  • পারসীক দর্শন
  • ইহুদি দর্শন
  • ইসলামী দর্শন
    • প্রাথমিক ইসলামী দর্শন
    • আধুনিক ইসলামী দর্শন
  • জাপানি দর্শন
  • কোরীয় দর্শন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ