ফতোয়া

ফতোয়া বা ফাতওয়া (আরবি: فتوى‎; বহুবচন ফাতাওয়া আরবি: فتاوى‎) হলো বিধান ও সমাধান, যা কোনো ঘটনা বা অবস্থার প্রেক্ষিতে ইসলামী শরীয়তের দলীলের আলোকে মুফতি বা ইসলামী আইন-বিশেষজ্ঞ প্রদান করে থাকেন।[১] যখন কোন ব্যক্তি সরাসরি কুরআন ও হাদিস কিংবা ফিকহের আলোকে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান বের করতে অপারগ হন তখন তিনি মুফতীর কাছে এই বিষয়ের সমাধান চান। এটিকে ইসলামের পরিভাষায় ইসতিফতা (আরবিকে:اِسْتِفْتَاء) বলে। মুফতি তখন ইসলামী শরিআতের আলোকে সমস্যাটির সমাধান জানিয়ে দেন। এই সমাধান প্রদান করাকে ইসলামের পরিভাষায় ইফতা (আরবীতে:إِفْتَاء ) বলে এবং প্রদত্ত সমাধান বা বিধানটিকে ফতোয়া বলে।[২][৩]

বাংলাদেশে ফতোয়ার পক্ষে উচ্চ আদালতের রায়

২০০১ সালের ১ জানুয়ারি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী ও বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ ফতোয়াকে অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করেন।[৪] রায়ে বলা হয়, একমাত্র আদালতই মুসলিম বা অন্য কোনো আইন অনুযায়ী আইনসংক্রান্ত কোনো প্রশ্নে মতামত দিতে পারেন। কেউ ফতোয়া দিলে তা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য হবে।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছর মুফতি মো. তৈয়ব ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আপিল করেন৷ ১০ বছরের বেশি সময় পর ২০১১সালের পহেলা মার্চ আপিলের শুনানি শুরু হয়৷ শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসাবে টিএইচ খান, রফিক উল হক, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, মাহমুদুল ইসলাম, এম জহির, এবিএম নুরুল ইসলাম, এএফ হাসান আরিফ, তানিয়া আমীর এবং এমআই ফারুকীর বক্তব্য শোনেন আপিল বিভাগ৷ এছাড়া পাঁচ জন আলেমের বক্তব্যও শোনেন আদালত৷

আপিলের রায়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ ফতোয়াকে বৈধতা দিয়েছেন৷ তবে ফতোয়ার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেয়া যাবে না৷ [৫] ফতোয়া বৈধ, তবে তার মাধ্যমে শাস্তি দেয়া যাবেনা

ফতোয়া নিয়ে আপিলের ওপর বৃহস্পতিবার এ রায় দেয় প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৬ বিচারকের বেঞ্চ৷ হাইকোর্টের রায়ে সব ধরনের ফতোয়াকে অবৈধ ঘোষণা করা হলেও আপিল বিভাগের রায়ে তা আংশিক বাতিল করা হল, তবে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কিছু পর্যবেক্ষণ৷ আপিল বিভাগ তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, ধর্মীয় বিষয়ে ফতোয়া দেয়া যেতে পারে, তবে যথাযথ শিক্ষিত ব্যক্তিরা তা দিতে পারবেন৷ আর ফতোয়া গ্রহণের বিষয়টি হতে হবে স্বতস্ফূর্ত৷ এর মাধ্যমে কোনো ধরনের শাস্তি দেয়া যাবে না৷ এমন কোনো ফতোয়া দেয়া যাবে না, যা কারো অধিকার ক্ষুণ্ণ করে৷ রায়কে স্বাগত জানিয়ে সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, শাস্তি নিষিদ্ধ করায় ফতোয়ার মাধ্যমে নারী নির্যাতনের প্রবণতা কমবে৷ তবে জোর করে কারো উপর ফতোয়া চাপিয়ে দেয়া যাবে না বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল৷ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আপিলকারীরাও৷ আপিলকারীদের অন্যতম আইনজীবী ব্যারিষ্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে এ রায়৷ তবে একজনের মত জানাতে গিয়ে অন্যের মত প্রকাশ যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সে কথাও রায়ে বলা হয়েছে৷

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আপিল বিভাগ অবশ্য বলেছেন, যে ঘটনার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের ওই রায় দেয়া হয়েছিলো সে ঘটনায় ওই রায় ঠিক ছিলো৷ তবে সব ধরনের ফতোয়ার বিষয়ে তা খাটে না৷

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ