বাণিজ্য যুদ্ধ
বাণিজ্য যুদ্ধ হল এক ধরনের অর্থনৈতিক সংঘাত যা চরম সংরক্ষণবাদ নীতির ফলে এক দেশ প্রতিপক্ষ দেশের শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিশোধ হিসেবে ঐ দেশের আমদানীকৃত পণ্যে নতুন করে শুল্ক আরোপ,বিদ্যমান শুল্ক বৃদ্ধি বা অন্য কোনভাবে বাণিজ্য বাধার সৃষ্টি করে।[১] বর্ধমান সুরক্ষার ফলে উভয় দেশের উৎপাদিত পণ্য অনেকটা নিজেদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা অনুযায়ী তৈরি হয়।বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বাণিজ্য যুদ্ধ দুই দেশের ভোক্তা ও ব্যবসায়িকদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং তা অর্থনীতির অন্য ক্ষেত্রেও ছড়িয়ে পরতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কে সীমিত করতে সরকারের সংরক্ষণবাদ নীতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল বাণিজ্য যুদ্ধ।সরকার সাধারণত অভ্যন্তরীণ ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্পকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রতিযোগিতা থেকে সুরক্ষা দিতে সংরক্ষণবাদ নীতি গ্রহণ করে থাকে।[২]
বাণিজ্য যুদ্ধ পরিপূর্ণ যুদ্ধে ও রূপ নিতে পারে,যার দৃষ্টান্ত ইতিহাসে আছে।প্রথম এংলো-ডাচ যুদ্ধ বাণিজ্য সংঘাত থেকে শুরু হয়েছিল।ইংরেজদের ডাচ বণিক জাহাজে আক্রমনের মাধ্যমে এ যুদ্ধ শুরু হয় যা পরবর্তীতে বড় যুদ্ধে পরিণত হয়।দ্বিতীয় এংলো-ডাচ যুদ্ধ হয়েছিল সমুদ্র এবং বাণিজ্য পথের আধিপত্য নিয়ে,যেখানে ইউরোপিয়ানদের প্রবল বাণিজ্যিক দ্বন্দের সময়কালে ইংরেজরা চেয়েছিল বাণিজ্যক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী ডাচদের আধিপত্য শেষ করে দিতে।
প্রথম আফিম যুদ্ধ শুরু হয় চিং সরকার তাদের নৌ-বন্দর অবরুদ্ধ করে ব্রিটিশ বণিকদের বন্দী করলে,যার ফলে ব্রিটিশ নৌবাহিনী দ্রুত প্রেরণ করা হয় এবং চীনা নৌবাহিনীর সাথে কৌলনের যুদ্ধ হয়।প্রথম আফিম যুদ্ধের পরেই হংকং এ ব্রিটিশ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।বাণিজ্যকে কেন্দ্র করেই দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
বর্তমান সময়ে বিশ্ব অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ।