মুসা কালা জেলা
মুসা কালা জেলা আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশ এর উত্তরের জেলা। পৃথিবীর বৃহত্তম পপি (আফিম গাছ) উৎপাদন ভূমি[৩]। মূল কার্যকেন্দ্র মুসা কালা গ্রামসহ এই জেলার অন্তর্গত আরও ১৯টি বিশাল গ্রাম ও ২০০ ছোটছোট বসতি রয়েছে যার প্রায় সবই মুসা কালা নদীর তীরে। মুসা কালা মুলতঃ অবহেলিত শুষ্ক(মরু বালুময়) জীর্ন মলিন ও স্বল্প জনবসতির জেলা হয়েও তালিবান বিদ্রোহীদের প্রবল প্রতিরোধ ও সংহিসতার জন্যে সারাবিশ্বের সংবাদ মাধ্যমে স্থান করে নিয়েছে। ২০০৬ সালের বিদ্রোহীদের সাথে যুদ্ধে ব্রিটিশদে ব্যপক হতাহত হওয়া এর মধ্যে অন্যতম। জেলার সমগ্র এলাকা হেলমান্দ এন্ড আরঘানদাব ভ্যালী অথরিটি সেচ আওতায়।[৪]
মুসা কালা موسی قلعه | |
---|---|
জেলা | |
আফগানিস্তানের সাথে স্থান চিহিৃতকরন[১] | |
স্থানাঙ্ক: ৩২°২৮′১২″ উত্তর ৬৪°৪৪′২৪″ পূর্ব / ৩২.৪৭০০০° উত্তর ৬৪.৭৪০০০° পূর্ব | |
দেশ | আফগানিস্তান |
প্রদেশ | হেলমান্দ প্রদেশ |
প্রবৃত্তি | তালিবান |
জনসংখ্যা (২০১২)[২] | |
• মোট | ৫৭,৫০০ |
অবস্থান ও আয়তন
হেলমান্দ প্রদেশ এর উত্তরাঞ্চলের জেলা মুসা কালা, হেলকান্দ প্রদেশ এর রাজধানী লস্কর গা হতে ১৬৫ কিলোমিটার (১০২ মাইল) উত্তরে অবস্থিত। এর পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে গেছে মুসা কালা নদী।
জনসংখ্যা
জেলার মোট জনসংখ্যা ৫৭,৫০০ (২০১২ সালের সুমারি অনুসারে) এবং ৯৭% জাতিগতভাবে পশতুন[২]।
উত্তপ্ত মুসা কালা ও ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ
২০০৬ সলোর মধ্যভাগে ন্যাটো এর নেতৃত্বাধীন ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাসিসট্যান্স ফোর্স তাদের জনবল বৃদ্ধি করে এবং এই সময়ে মুসা কালা সহ বাকি হেলমান্দ ব্রিটিশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে দেয়া হয়। ২০০৬ এর গ্রীষ্মকাল, মুসা কালা ছিল ব্রিটিশ সৈন্যদল পাথফাইন্ডার প্লাটুন ও তালিবান বিদ্রোহীসেনা এর মধ্যে এর প্রচন্ড যুদ্ধের যুদ্ধমঞ্চ। ব্রিটিশ সেনাদল স্থানীয় প্রশাসন কার্যালয়ে তাদের দুর্গ গড়ে তুলে এবং মর্হুমুহু আক্রমণ ছিল নিয়মিত ঘটনা। ব্রিটিশ বাহিনীকে পরবর্তীতে সাহায্যের জন্যে ডেনিশ পদাতিক বাহিনী সাহায্যে এগিয়ে আসে, উন্নত সামরিক সজ্জা (রকেট এবং মর্টার) ও প্রশিক্ষিত সৈন্যদলে বিপক্ষে তালিবান বিদ্রোহীরা এক মাসের বেশি প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম হয় না।অতঃপর ডেনিস পদাতিক বাহিনী পুনরায় ঘাঁটির দায়িত্ব ব্রিটিশ সেনাদলের হাতে তুলে দেয়।
স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সহিংসতা হ্রাসের নিশ্চয়তার জন্যে ব্রিটিশ বাহিনী দীর্ঘ ৩৫ দিন সম্পূর্ণ এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখে অতঃপর ১৭ অক্টোবর ২০০৬, ব্রিটিশ বাহিনী গ্রামের দায়িত্ব স্থানীয় বয়জোষ্ঠ্য পরিষদের হাতে হস্তান্তর করে আপস চুক্তির মাধ্যমে ফিরে যায়।
তালিবান বিদ্রোহীদের সংহিসতা ও ন্যাটো কর্তৃক কঠোর পদক্ষেপ
ফেব্রুয়ারি ০২ ২০০৭, কয়েকশত তালিবান বিদ্রোহী পুনরায় দখল করে নেয়।[৫]আক্রমণের কারণ হিসাবে চিহিৃত করে স্থানীয় বয়জোষ্ঠ্যদের সাথে করা রিচার্ড এর সেনা প্রত্যাবর্তনের চুক্তি ভঙ্গ (যার বিরোধী ছিল তালিবান বিদ্রোহীরা শুরু থেকেই) ইউরোসিয়ানেট রিপোর্ট অনুসারে, ন্যাটো এর বিদায়ী কমান্ডর ব্রিটিশ জেনারেল ডেভিড জে রিচার্ডস (সমঝোতায় বিশেষজ্ঞ হিসাবে পরিচিত) যে চুক্তি করেছিলেন স্থানীয় বয়জোষ্ট্যদের অংশগ্রহণে পরবর্তী ন্যাটো কমান্ডার ইউএস জেনারেল ড্যান ম্যাকনেইল বিরোধিতা করেন এবং সমঝোতার পরিবর্তে আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেন। ফলস্রুতিতে, বিমান হামলায় তালিবান কমান্ডর হিসাবে পরিচিত মোল্লা আবদুল গফুর নিহত হয়।
আফগান সেনা কর্তৃক সফল অভিযান
২০১৫, ২৬ অগাষ্ট তালিবান বিদ্রোহী সেনারা আফগান বাহিনীর কাছ থেকে জেলা সদরের দখল নিয়ে নেয়।[৬]২৯শে অগাষ্ট (শনিবার) গভীর রাতের অভিযানে মুসা কালাকে পূনরোদ্ধার করে আফগান সেনারা। দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রালয়ের মাধ্যমে জানা যায়, শনিবার রাতের উদ্ধার অভিযানে আনুমানিক ২২০ জন তালিবান বিদ্রোহী নিহত হয়। অপর এক বর্ণনায় মুসা কালার বয়জোষ্ট্য এক নেতা হাজী মুয়াল্লেম বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ইউএস এর বিমান আক্রমণের সহায়তা নিয়ে জেলা সদর ও পুলিশ সদর দপ্তর বিদ্রোহীমুক্ত ও প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করে।পরিস্থিতি বর্ণনায় হেলমান্দ এর গর্ভনর মির্জা খান রাহিমি বলেন, মুসা কালা এ্রর পুলিশ প্রধানসহ ৩৩ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য গত চারদিনে আহত ও নিহত হয়েছে। [৭][৮]