লেমুর

লেমুর হল মাদাগাস্কারের প্রাইমেট গোত্রভুক্ত কিছু প্রাণীর সমষ্টিগত নাম। ল্যাটিন শব্দ lemurs থেকে লেমুর শব্দটির উৎপত্তি যার অর্থ ভূতের মত। রাতের আধারে লেমুরের মুখে আলো ফেললে অনেকটা ভূতের মত দেখায় তাই এর নামকরণ এভাবে করা হয়েছে। প্রাকৃতিক ভাবে লেমুর সাধারনত আফ্রিকার মাদাগাস্কারেই দেখতে পাওয়া যায়। এই প্রজাতিটি খুব সম্ভবত সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে মাদাগাস্কারে আবির্বূত হয়েছিল। তখন থেকেই এই প্রজাতিটি মাদাগাস্কারের আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। প্রায় ২০০০ বছর আগে মাদাগাস্কারে মানুষের আবির্ভাব ঘটার আগে একটি পূর্নবয়স্ক পুরুষ গরিলা আকৃতির লেমুর বসবাস করত। এখন মাদাগাস্কারেই প্রায় ১০০ প্রজাতীর লেমুর দেখতে পাওয়া যায়। অনেকে ধারণা করেন যে লেমুর বানর বা মানুষের পূর্বপূরুষ থেকে বিবর্তীত হয়ে এসেছে তবে তা একেবারে সত্য নয়। এরা মূলত মাদাগাস্কারেই উৎপন্ন ও বিকশিত হয়েছে।

লেমুর
Three medium-sized, prosimian primates with long striped tails, long snout, and a raccoon-like face (Ring-tailed lemurs) sit huddled together in the grass
লেমুর
সিআইটিইএস অ্যাপেন্ডিক্স I (CITES)[১]
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ:Animalia
পর্ব:কর্ডাটা
শ্রেণী:Mammalia
বর্গ:Primates
উপবর্গ:Strepsirrhini
অধোবর্গ:Lemuriformes (See text)
মহাপরিবার:Lemuroidea
Gray 1821
পরিবার

†Archaeolemuridae
Cheirogaleidae
Daubentoniidae
Indriidae
Lemuridae
Lepilemuridae
†Megaladapidae
†Palaeopropithecidae

বৈচিত্র্য
লেমুরের প্রায় ১০০ প্রজাতী রয়েছে
The large island of Madagascar, slightly off the southeast coast of Africa, highlighted in green
সব প্রজাতীর লেমুরের প্রাপ্তিস্থান

আচরণ

লেমুরের বিভিন্ন প্রজাতীর মধ্যে আচরণের অনেক পার্থক্য দেখা যায়। বড় আকারের লেমুররা সচরাচর দিনের বেলা ঘুরাফেরা করলেও ছোট আকারের গুলো নিশাচর হয়। এদের মধ্যে সামাজিক ব্যবস্থা, কার্যকলাপ, শিকার থেকে সুরক্ষিত থাকার কৌশল, প্রজনন এবং বুদ্ধিমত্তার পার্থক্যও দেখা যায়। দলবদ্ধ ভাবে থাকার পরও খাদ্য সংগ্রহের জন্য এরা একা বিচরণ করে এবং খাদ্যগ্রহণ শেষে পুররায় দলে ফিরে আসে।


খাদ্য

লেমুররা ফলভোজী প্রাণী হলেও এদের খাদ্য তালিকায় কীট পতঙ্গোও থাকে।

সচরাচর লেমুররা অনেক ধরনের খাদ্য গ্রহণ করে।[২] তবে ছোট আকারের লেমুররা পতঙ্গ এবং ফল ফলাদি খেয়ে থাকে অপরদিকে বড় আকারের লেমুররা গাছপালা ও লতাপাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে।[৩] তাদের প্রিয় খাদ্যের তালিকায় থাকুক আর নাই থাকুক ক্ষুধার্ত লেমুররা হজমযোগ্য প্রায় সবকিছুই খেতে পারে।[৪] রিং টেইল্ড লেমুররা(গোলাকৃতি লেজের) তৃণভোজীও হয়ে থাকে তাই এদেরকে খাদ্যের প্রাপ্যতা সাপেক্ষে সর্বোভূক বলা চলে।[৩][৫]

ধারণা করা হয় যে ছোট আকৃতির লেমুররা শুধুমাত্র তৃণ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করে তাদের শক্তির পর্যাপ্ত যোগান সংগ্রহ করতে পারে না, তাই কীট-পতঙ্গের মত উচ্চ ক্যালরী বিশিষ্ট ও আমিষ জাতীয় খাদ্য তাদের খাদ্য তালিকায় রাখে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে যে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট আকৃতির এই স্তন্যপায়ীরা কীট পতঙ্গের চেয়ে ফল ফলাদিই বেশি খেয়ে থাকে।[৪][৩]

সামাজিক ব্যবস্থা

লেমুররা সামাজিক প্রাণী এবং এরা দলগত ভাবে বসবাস করে। একটি দলে সর্বোচ্চ ১৫ টি লেমুর থাকতে পারে।[৬] সলবদ্ধ ভাবে থাকার পরেও এদের সামাজিক অবস্থানটা অনেকটা স্বতন্ত্র। এরা জোড়ায় বা একাধিক পুরুষ বিশিষ্ট পরিবারেও থাকতে পারে।[৭] নিশাচর লেমুররা সচরাচর স্বতন্ত্র ভাবে ঘোরাফেরা করলেও সচরাচর দিনের বেলা এরা দলের সাথে যোগ দেয়। ঋতু, স্থান ও লিঙ্গ ভেদে এদের সামাজিকতায় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।[৮][৩]

যোগাযোগ

লেমুররা সাধারনত দৃষ্টিগোচর শারিরীক শংকেত, ঘ্রাণ এবং বিভিন্ন প্রকার শব্দ উৎপন্ন করার মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে।[৯] রিং টেইল্ড লেমুররা গন্ধ শোঁকার মাধ্যমে এবং বিভিন্ন প্রকার শব্দ উৎপাদনের মাধ্যমেই যোগাযোগ বজায় রাখে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে শারিরীক সংকেত এরা খুব একটা ব্যবহার করে না। এই প্রজাতীর লেমুরকে হাই তুলে অপর লেমুরকে হুমকি দিতে দেখা গেছে। যোগাযোগ করতে এরা অনেকসময় মুখায়ববেরও পরিবর্তন করে।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

সম্পর্কিত বই

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ