সৌরমণ্ডল

মহাকাশের যে অঞ্চলের উপরে সূর্যের আধিপত্য বিদ্যমান

সৌরমণ্ডল হল সূর্য কর্তৃক তৈরি, সূর্যের পারিপার্শ্বিক বুদবুদের মত একটি মহাজাগতিক অঞ্চল। প্লাজমা পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় সৌরমণ্ডল হলো সূর্য কর্তৃক পারিপার্শ্বিক অন্তনাক্ষত্রিক পদার্থে সৃষ্ট একটি খোল। সৌরমণ্ডলের এই "বুদবুদটি" ক্রমাগত সূর্য কর্তৃক সৃষ্ট প্লাজমা (সৌর বায়ু) দ্বারা "স্ফীত" হয়। সৌরমণ্ডলের বাইরে সৌর প্লাজমা নিজেকে আকাশগঙ্গা ছায়াপথ থেকে প্রবেশ করা আন্তঃনাক্ষত্রিক প্লাজমার কাছে নিজেকে সপে দেয়। সৌরমণ্ডলের ভেতরে ও বাইরে বিকিরণ মাত্রার তফাত থাকে; পৃথকভাবে, সৌরমণ্ডলের অভ্যন্তরভাগে মহাজাগতিক রশ্মি বহির্ভাগের থেকে কম প্রতুল। ফলে, এর অভ্যন্তরীণ গ্রহসমূহ (পৃথিবী সহ) আংশিকভাবে এদের প্রভাব থেকে রক্ষা পায়। বলা হয়, অ্যালেক্সান্ডার জে ডেসলার ইংরেজি "হেলিওস্ফিয়ার" (Heliosphere) শব্দটি উদ্ভাবন করেন, যিনি ১৯৬৭ সালে বৈজ্ঞানিক রচনাবলীতে প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেন।[১] সৌরমণ্ডলের বৈজ্ঞানিক অধ্যায়নকে বলা হয় সৌরমণ্ডল পদার্থবিজ্ঞান (Heliophysics হেলিওফিজিক্স) যার মধ্যে মহাকাশ আবহাওয়া ও মহাকাশ জলবায়ুও অন্তর্ভুক্ত।

ইন্টারস্টেলার বাউন্ডারি এক্সপ্লোরারের প্রাথমিক ফলাফল থেকে সৌরমণ্ডলের চিত্র। চিত্রে আকার চিত্রণ ত্রুটি থাকতে পারে।
শিল্পীর কল্পনায় সৌরমণ্ডল (নাসার চিত্র)

সৌরমণ্ডলের ব্যাসার্ধের প্রথম ১ হাজার কোটি কিলোমিটারে সৌর বায়ু ঘণ্টায় ১০ লক্ষ কিলোমিটারেরও বেশি গতিবেগে গমন করে।[২][৩] যতই এটি আন্তঃনাক্ষত্রিক পদার্থের সাথে অন্তর্হিত হয়, ততোই এর বেগ কমতে থাকে এবং এক সময় থেমে যায়। যেখানে এর আন্তঃনাক্ষত্রিক বেগ কমে যায়, তাকে বলে অন্ত অভিঘাত (Termination Shock টার্মিনেশন শক)। এর পরের অংশটি হলো সৌরখাপ (Heliosheath, হেলিওশিথ) যা বহিস্থ পরিমণ্ডল পর্যন্ত বিস্তৃত। সৌরমণ্ডলের সর্ববহিস্থ স্তরকে বলা হয় সৌর-নিবৃত্তি (Heliopause হেলিওপজ)। যেখানে বিপরীত দিক থেকে আসা আন্তঃনাক্ষত্রিক পদার্থ সৌরমণ্ডলের সাথে সংঘর্ষ করে ধীর হয়ে যায় তাকে বলে ধনু অভিঘাত (Bow shock, বো শক)। সৌরমণ্ডলের সামগ্রিক আকার ধূমকেতুর মত - এক পাশে প্রায় গোলীয় কিন্তু অপর পাশে একটি লম্বা লেজের মত অংশ যুক্ত। লেজের মত অংশটি সৌর লেজ (Heliotail হেলিওটেইল) হিসেবে পরিচিত।

ভয়েজার কর্মসূচি|র দুইটি মহাকাশযান ভয়েজার ১ভয়েজার ২ অন্ত অভিঘাত ও সৌরখাপ অতিক্রম করে সৌরমণ্ডলের বহিস্থ এলাকা অন্বেষণ করেছে। ২০১৩ সালে নাসা ঘোষণা দেয় যে, ২০১২ সালের ২৫শে আগস্ট ভয়েজার ১ সৌরনিবৃত্তির সম্মুখীন হয়েছে।[৪] এসময় মহাকাশযানটি প্রায় ৪০ গুণ বেশি প্লাজমা ঘনত্ব পরিমাপ করে। ২০১৮ সালে নাসা ঘোষণা দেয় যে সেই বছরের ৫ই নভেম্বর মহাকাশযান ভয়েজার ২ সৌরনিবৃত্তি উতরে গিয়েছে।[৫] যেহেতু হেলিওপজ সূর্য ও অবশিষ্ট ছায়াপথ কর্তৃক তৈরী পদার্থের মাঝে সীমানা সূচিত করে, তাই ভয়েজার মহাকাশযান দ্বয়কে, যারা সৌরনিবৃত্তি ছেড়ে গিয়েছে, বলা যায় তারা আন্তনাক্ষত্রিক মহাকাশে পৌছে গিয়েছে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ