হাই নদী (চীন)
হাই নদী (海河, অর্থ: "সাগর নদী"), এছাড়াও পেইহো, পেই হো ("শ্বেত নদী"), অথবা হাই হো নামে পরিচিত, হলো একটি চীনা নদী যা বেইজিং থেকে তিয়ানজিন এবং বোহাই সাগরকে সংযুক্ত করেছে।
হাই নদী হাই হে | |
---|---|
স্থানীয় নাম | 海河 |
অবস্থান | |
Country | চীন |
State | তিয়ানজিন, হেবেই, বেইজিং, হেনান, মধ্য মঙ্গোলিয়া, শানজি, শানডং |
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য | |
উৎস | তাইহাং পর্বতমালা、ইয়ান পর্বতমালা |
মোহনা | বোহাই সাগর |
দৈর্ঘ্য | ১,৩২৯ কিমি (৮২৬ মা) |
অববাহিকার আকার | ৩,১৮,২০০ কিমি২ (১,২২,৯০০ মা২) |
নিষ্কাশন | |
• গড় | ৭১৭ মি৩/সে (২৫,৩০০ ঘনফুট/সে) |
হাই নদী | |||||||
চীনা | 海河 | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
আক্ষরিক অর্থ | সাগর নদী | ||||||
| |||||||
পেইহো | |||||||
চীনা | 白河 | ||||||
আক্ষরিক অর্থ | শ্বেত নদী | ||||||
|
তিয়ানজিনে প্রবহমান হাই নদী মূলত পাঁচটি উপনদী, দক্ষিণ খাল, জিয়া নদী, দাকিং নদী, ইয়ংডিং নদী এবং উত্তর খালের সংমিশ্রণে গঠিত। দক্ষিণ এবং উত্তর খাল মহাখালের (গ্র্যান্ড খাল) অংশ। দক্ষিণ খালটি লিঙ্কিং শহরে ওয়েই নদী এবং উত্তর খাল তোংঝৌ-এ বাই হে নদীর (অথবা চাওবাই নদী) সাথে মিলিত হয়েছে। এছাড়াও উত্তর খাল (বাই হের সাথে একটি চ্যানেল ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে) সমুদ্র থেকে বেইজিং যাওয়ার একমাত্র জলপথ। তাই শুরুর দিকে পশ্চিমারাও হাই হে-কে বাই হে নামে জানত।
হাই নদী তিয়ানজিনে মহাখালের মধ্য দিয়ে হলুদ নদী ও ইয়াংৎজে নদীর সাথে সংযুক্ত। মহাখাল (গ্র্যান্ড খাল) খনন হাই হে অববাহিকার নদীগুলোর প্রকৃতি ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করেছে। পূর্বে ওয়েই, জিয়া ইয়ংডিং এবং বাই নদী পৃথকভাবে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হতো। মহাখাল এই নদীগুলোকে একত্র করে একটিমাত্র প্রবাহপথ অর্থাৎ বর্তমান হাই হে আকারে সমুদ্রে মিশিয়ে দিয়েছে।
দীর্ঘতম উপনদী থেকে পরিমাপ করা হলে হাই নদীর দৈর্ঘ্য হয় ১,৩২৯ কিলোমিটার (৮২৬ মাইল)। তবে নদীটি তিয়ানজিন থেকে এর মোহনায় মাত্র ৭০ কিলোমিটার (৪৩ মাইল) দীর্ঘ। এর অববাহিকার আয়তন প্রায় ৩১৯,০০০ বর্গ কিলোমিটার (১২৩,০০০ বর্গ মাইল)।
ইতিহাস
১৮৫৮ সালের ২০ শে মে, দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধের সময় অ্যাংলো-ফরাসি বাহিনী তৎকালীন পেই-হো নদীর তীরে আক্রমণ করে টাকু দুর্গগুলো দখল করে নেয়।[১]
১৮৬৩ সালের দিকে সমুদ্রগামী জাহাজ তোংঝৌ-এর নৌবাহের সম্মুখভাগ পর্যন্ত পৌঁছতে পারত, কিন্তু অত্যধিক আঁকাবাঁকা হওয়ায় নদীটি বড় জাহাজ চলাচলের জন্য কঠিন ছিল।[২]বক্সিংয়ের বিদ্রোহের সময়, ইম্পেরিয়াল চীনা বাহিনী পশ্চিম আট-জাতি জোটের আক্রমণ ও জাহাজ পাঠানো প্রতিহত করার জন্য, টাকু দুর্গের যুদ্ধের (১৯০০) আগে বাইহে নদীর কাছে ১৫ই জুন 'বৈদ্যুতিক মাইন্স' নামক একটি অস্ত্র স্থাপন করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা এই তথ্য জানিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বিভাগ। অ্যাডজুট্যান্ট-জেনারেল অফিস। সামরিক তথ্য বিভাগ।[৩][৪][৫][৬]
হলুদ নদীর মতো হাই নদীও গুঁড়ো মাটির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে খুবই কর্দমাক্ত। নদীর পানিতে বয়ে আসা পলি তলদেশে জমে মাঝেমধ্যে বন্যার প্লাবন সৃষ্টি করে। নদীটির পাঁচটি প্রধান উপনদীর প্রবাহ সমুদ্রে মেশার মাত্র একটি অগভীর পথ রয়েছে যা বন্যাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। চীনের রাজধানী (এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর) বেইজিং ও তৃতীয় বৃহত্তম শহর তিয়ানজিন উভয়ই হাই হে নদীর অববাহিকায় অবস্থিত, একারণে হাই হে নদীর বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বন্যা নিরসনের জন্য বেশ কয়েকটি জলাশয় তৈরি করা হয়েছে এবং কৃত্রিম চ্যানেল খনন করা হয়েছে যাতে অতিরিক্ত পানি সরাসরি সমুদ্রে চলে যায়। উদাহরণস্বরূপ, চাওবাই নদীটি বর্তমানে চাওবাই জিন নদীর সাথে যুক্ত করা হয়েছে, ফলে এটি আর উত্তর খালের সাথে মিশবে না।
হাই হে অববাহিকায় শিল্প ও নগর উন্নয়নের কারণে জলের প্রবাহের পরিমাণ যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছে। অনেক ছোট শাখা নদী এবং কিছু বড় শাখা প্রশাখা বছরের বেশিরভাগ সময়ই শুকনো থাকে। জলের প্রবাহ হ্রাস পাওয়ায় পানিদূষণ পরিস্থিতি আরও সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় হাই হে অববাহিকায় জলের ঘাটতি দক্ষিণ-উত্তর জল স্থানান্তর প্রকল্প-এর মাধ্যমে নিরসনের আশা করা হচ্ছে।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
- Domagalski, J.L., et al. (2001). Comparative water-quality assessment of the Hai He River basin in the People's Republic of China and three similar basins in the United States [U.S. Geological Survey Professional Paper 1647]. Reston, VA: U.S. Department of the Interior, U.S. Geological Survey.