২০১৮ দাঁড়িভীট বিদ্যালয়ে বাংলা শিক্ষক নিয়োগ আন্দোলন
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাঁড়িভীট বিদ্যালয়ে বাংলা ভাষার শিক্ষকের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ছাত্রদের দাবি বাংলার শিক্ষক না থাকা সত্ত্বেও বাংলা ভাষার জন্য শিক্ষক নিয়োগ না করে উর্দুভাষায় শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়।[৩][৪] বাঙালি জাতির উপর এহেন অন্যায়ের প্রতিবাদে মাতৃভাষাপ্রেমী বিদ্যালয়ের বাঙালি ছাত্রছাত্রী, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী, গ্রামের অন্যান্য তরুণ-তরুণী ও অভিভাবকমণ্ডলী সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করেন।[৫] ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পুলিশ আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে ও গুলি চালায়।[৫] এতে আন্দোলনকারী রাজেশ সরকারের[১] ও তাপস বর্মণের[৬] মৃত্যু হয়।[২][৭][৮][৯] এছাড়া দশম শ্রেণির ছাত্র বিপ্লব সরকার গুলিবিদ্ধ হয়। তার পায়ে গুলি লাগে।[১০]
বাংলা ভাষার শিক্ষকের দাবিতে আন্দোলন | ||||
---|---|---|---|---|
তারিখ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | - অক্টোবর ২০১৮|||
অবস্থান | ||||
কারণ | বিদ্যালয়ে উর্দু[১][২] মাধ্যমের কোনও ছাত্র, ছাত্রীই না থাকা সত্বেও উর্দু শিক্ষক নিয়োগ | |||
লক্ষ্যসমূহ | বিদ্যালয়ে বাংলা ভাষার শিক্ষকের দাবি | |||
প্রক্রিয়াসমূহ |
| |||
ফলাফল | পুলিশ আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে ও গুলি চালায় | |||
নাগরিক সংঘাতের দলসমূহ | ||||
| ||||
পুলিশি হামলা | ||||
|
সূত্রপাত
ইসলামপুর ব্লকের দ্বারিভিটা উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলা বিষয়ের শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও বাংলা বিষয়ে শিক্ষক নিযুক্ত না করে একজন উর্দু বিষয়ের শিক্ষক এবং একজন সংস্কৃতের শিক্ষক নিয়োগ করা হয়।[৩] এরপর পড়ুয়ারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিদ্যালয়ে উর্দু মাধ্যমের কোনও ছাত্র, ছাত্রীই না থাকা সত্বেও উর্দু শিক্ষক নিয়োগ করার প্রতিবাদে তারা আন্দোলনে নামেন।[২]
আন্দোলন
উর্দু শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে ও বাংলা শিক্ষকের দাবিতে পড়ুয়ারা বিদ্যালয় সংলগ্ন রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।[২] বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদের আশ্বাস প্রাথমিক ভাবে উর্দু শিক্ষক বিদ্যালয়ে আনা হবে না বললেও উর্দু শিক্ষকরা কাজে যোগ দিতে গেলে ছাত্রছাত্রীরাও নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে বিদ্যালয়ে উর্দু শিক্ষকদের যোগ দেয় নি৷ পরে পুলিশ আসলে এই নিয়েই এই শিক্ষাঙ্গন রণক্ষেত্রের রূপ নেয়৷[১] এই ঘটনার প্রতিবাদের পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক সমাজ কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিল করে।[১১] এছাড়াও প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডাকা হয়।[১২][১৩]
আন্দোলন পরবর্তী ঘটনাবলী
- বিতর্কিত উর্দু শিক্ষক মহম্মদ সানাউল্লাহ জেরার জন্য আটক হন৷ দাঁড়িভিট হাইস্কুলে কাজে যোগ দিতে গিয়ে দু’বার আন্দোলন রত ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন হয় তিনি৷[১৪]
- শিক্ষা পর্ষদ দাঁড়িভিট হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষ অভিজিত্ কুণ্ডুকে শিক্ষক নিয়োগে গাফিলতির জন্য ডেকে পাঠায়।[১৫]
- মৃতের পরিবার দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবিতে রাজেশ ও তাপসের মৃতদেহ দাহ না করে নিকটবর্তী গলঞ্চা নদীর ধারে মাটি চাপা দিয়ে রাখে। তারা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।[১৫][১৬]