জ্যাক লন্ডন

মার্কিন লেখক, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী

জন গ্রিফিথ জ্যাক লন্ডন (ইংরেজি: John Griffith "Jack" London; জন্ম: ১২ জানুয়ারি, ১৮৭৬ - মৃত্যু: ২২ নভেম্বর, ১৯১৬)[১][২][৩][৪] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত আমেরিকান লেখক। তাঁর প্রকৃত নাম জন গ্রিফিথ চেনে[৫] কিন্তু সর্বসমক্ষে তিনি জ্যাক লন্ডন হিসেবেই পরিচিত ব্যক্তিত্ব। ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে বসবাস করলেও জীবনের অনেকগুলো দিন হাওয়াইআলাস্কায় অতিবাহিত করেছেন। দ্য কল অব দি ওয়াইল্ড, হোয়াইট ফ্যাঙ, দ্য রোড, দি আয়রন হীল, দ্য সী উল্ফ তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ। তন্মধ্যে, দ্য কল অব দি ওয়াইল্ড বইটি তাঁকে ভীষণ জনপ্রিয়তা এনে দেয়। এতে বাক নামের একটি কুকুরকে আলাস্কায় বরফের উপর দিয়ে গাড়ী চালনার জন্যে আনা হয়। ১৮৯০-এর দশকে কানাডার ক্লনডিকে সোনার খনি আবিষ্কারের সময়কালে এ বইটি প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তিনি কুকুর ও নেকড়ে নিয়ে আরো কয়েকটি বই রচনা করেছেন।

জ্যাক লন্ডন
১৯০৩ সালে জ্যাক লন্ডন
১৯০৩ সালে জ্যাক লন্ডন
জন্মজন গ্রিফিথ চেনে
(১৮৭৬-০১-১২)১২ জানুয়ারি ১৮৭৬
স্যানফ্রান্সিস্কো, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যুনভেম্বর ২২, ১৯১৬(1916-11-22) (বয়স ৪০)
গ্লেন এলেন, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
পেশাঔপন্যাসিক, সাংবাদিক, ছোট গল্পলেখক ও প্রাবন্ধিক
সাহিত্য আন্দোলনবাস্তববাদ ও প্রকৃতিবাদ

স্বাক্ষর

জ্যাক লন্ডন একসময় ভবঘুরে ও গৃহহীন অবস্থায় দিনযাপন করেছেন। এক শহর থেকে অন্য শহরে কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বিনা টিকেটে রেলগাড়ীতে চড়েছেন। এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো তিনি তাঁর দ্য রোড গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। রাজনৈতিক দর্শন হিসেবে একজন সমাজতান্ত্রিক ধ্যান-ধারনার ঘোর সমর্থক ছিলেন তিনি। সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে সরকারের উৎপাটন, নিপীড়নকে দি আয়রন হীল গ্রন্থে চিত্রিত করে তুলে ধরেন। সামুদ্রিক জীবনেও অর্ধাহারে-অনাহারে সময় কাটিয়েছেন। এরজন্যে তিনি ঝিনুক আহরণ করে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে জীবনধারন করেন।

পরিবার

জ্যাক লন্ডনের মাতা ফ্লোরা ওয়েলম্যান ছিলেন পেনসিলভানিয়া খালের নির্মাতা মার্শাল ওয়েলম্যান ও তাঁর প্রথমা স্ত্রী এলিয়ানর গ্যারেট জোন্সের ৫ম ও সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। ম্যাসাচুসেটস বে কলোনীর প্রথমদিককার পুরিটিয়ান অধিবাসী থমাস ওয়েলম্যানের বংশধর ছিলেন মার্শাল ওয়েলম্যান।[৬] ফ্লোরা ওয়েলম্যানের মা মারা গেলে তিনি তার বাবার সাথে ওহাইও ত্যাগ করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলবর্তী এলাকায় স্থানান্তরিত হন। স্যানফ্রান্সিস্কোতে ফ্লোরা সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি আমেরিকার আদিবাসী হিসেবে পরিচিত ইন্ডিয়ানদের আধাত্মিক গুরু হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন।[৭]

জীবনীকার ক্লেরাইস স্টাতজ এবং অন্য অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, জ্যাক লন্ডনের বাবা উইলিয়াম চ্যানে ছিলেন একজন জ্যোতিষী।[৮]

প্রারম্ভিক জীবন

স্যান ফ্রান্সিস্কোর থার্ড ও ব্রেনান স্ট্রীটের কাছাকাছি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন জ্যাক লন্ডন। পরবর্তীতে ১৯০৬ সালে স্যান ফ্রান্সিস্কোর ভয়াবহ ভূমিকম্পে এ বাড়িটি পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। ক্যালিফোর্নিয়া হিস্টোরিক্যাল সোসাইটি ১৯৫৩ সালে একটি স্মারক চিহ্ন স্থাপন করে। পরিবারটি যথাসাধ্য কাজে ফিরে গেলেও লন্ডনের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনেনি। লন্ডন স্ব-শিক্ষিত হয়ে নিজের জীবন গড়েছিলেন।

১৮৮৫ সালে ওইডা রচিত ভিক্টোরীয় যুগের 'সিগনা' উপন্যাসটির সন্ধান পান ও পড়েন। এরফলেই জ্যাক লন্ডন সাহিত্য চর্চায় অগ্রসর হয়ে বিশ্বসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেন।[৯] ১৮৮৬ সালে ওকল্যান্ড গণগ্রন্থাগারে যান। সেখানে ইনা কুলব্রিথ নাম্নী একজন সহানুভূতিশীল গ্রন্থাগারিকের সহযোগিতা পান। তিনিই তাকে পড়াশোনা শিখতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। পরবর্তীকালে ইনা ক্যালিফোর্নিয়ার প্রথম কবি এবং স্যানফ্রান্সিস্কোর সাহিত্য পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন।

রাজনৈতিক দর্শন

এপ্রিল, ১৮৯৬ সালে সোশ্যালিস্ট লেবার পার্টিতে যোগদান করেন জ্যাক লন্ডন। একই বছর ২২ বছর বয়সী লন্ডনের ওকল্যাণ্ডের সিটি হল পার্কে রাতের বেলায় জনসংযোগের বক্তৃতামালাও স্যান ফ্রান্সিস্কো ক্রনিকলে গল্পাকারে প্রকাশিত হয়। এর এক বছর পর রাজনৈতিক আন্দোলনে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯০১ সালে তিনি সোশ্যালিস্ট লেবার পার্টি ত্যাগ করেন। নতুন প্রতিষ্ঠিত সোশ্যালিস্ট পার্টি অব আমেরিকায় যোগ দেন তিনি। ১৯০১ ও ১৯০৫ সালে ওকল্যান্ডের মেয়র পদে নির্বাচন করেন। কিন্তু নির্বাচনী ফলাফল তেমন সুখকর হয়নি।

১৯০৬ সালে সমাজতন্ত্রের বিষয়ে দেশব্যাপী বক্তৃতা-বিবৃতি দেন। সমাজতন্ত্র সম্পর্কে তার এ বক্তৃতামালা সঙ্কলন আকারে দি ওয়্যার অব দ্য ক্লাসেস; রিভল্যুশন, অ্যান্ড আদার এসেজ নামীয় গ্রন্থে প্রকাশ করা হয়। এগুলোতে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে, "কীভাবে আমি সাম্যবাদী হলাম"। তার এ দর্শনে সমাজের নিম্নশ্রেণীর লোকদের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রভাবে প্রভাবান্বিত হয়েছিল। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কাজ করার পক্ষপাতি নন বলে জানান। তিনি লিখেছেন যে এর ফলে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যতাবোধ থেকে তাকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে এবং রাজনৈতিকভাবে তার পুণরুজ্জীবন ঘটেছে। প্রায়শঃই তিনি তার "ইউরস ফর দ্য রিভ্যুলুশন" পত্রাবলীর দিকে অঙ্গুলী নির্দেশ করেছেন।[১০]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন