অথর্ববেদ

চার বেদের মধ্যে একটি

অথর্ববেদ (সংস্কৃত: अथर्ववेद, অথর্বণবেদ শব্দের সমষ্টি) হল হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগ্রন্থ বেদের চতুর্থ ভাগ। ‘অথর্ববেদ’ শব্দটি সংস্কৃত অথর্বণ (দৈনন্দিন জীবনযাত্রার প্রণালী) ও বেদ (জ্ঞান) শব্দদুইটির সমষ্টি।[৩] অথর্ববেদ বৈদিক সাহিত্যের পরবর্তীকালীন সংযোজন।[৪][৫]

অথর্ববেদ
চতুর্বেদ
চতুর্বেদের মাঝে চতুর্থ স্থানে অথর্ববেদ
তথ্য
ধর্মহিন্দুধর্ম
ভাষাবৈদিক সংস্কৃত
যুগআনু. ১২০০–৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তি (যজুর্বেদ, সামবেদ, অথর্ববেদ)[১]
মন্ত্রপ্রায় ৫,৯৭৭টি মন্ত্র[২]
সুক্ত৩০টি সুক্ত
খণ্ড২০টি খণ্ড

অথর্ববেদ বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় রচিত। ২০টি খণ্ডে বিভক্ত এই বেদে ৭৩০টি সূক্ত ও ৫,৯৭৭টি মন্ত্র আছে।[৬] অথর্ববেদের এক-ষষ্ঠাংশ সূক্ত ঋগ্বেদ থেকে সংকলিত। ১৫শ ও ১৬শ কাণ্ড ব্যতীত এই বেদে সূক্তগুলে নানাপ্রকার বৈদিক ছন্দে রচিত।[৬] এই গ্রন্থের দুটি পৃথক শাখা বা সংস্করণ বর্তমানে পাওয়া যায়। এগুলো হল পৈপ্পলাদ শাখা ও শৌনকীয় শাখা।[৭] মনে করা হয় যে, পৈপ্পলাদ শাখার নির্ভরযোগ্য প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলো হারিয়ে গেছে। তবে ১৯৫৭ সালে ওড়িশা থেকে একগুচ্ছ সুসংরক্ষিত তালপাতার পাণ্ডুলিপি আবিষ্কৃত হয়।[৭]

কেনেথ জিস্কের মতে, অথর্ববেদ ধর্মীয় ঔষধ-চিকিৎসাবিদ্যার বিবর্তনের সেই প্রাচীনতম নথিগুলোর অন্যতম যা আজও পাওয়া যায়। তার মতে, অথর্ববেদ 'প্রাচীন ইন্দো-ইউরোপীয় সমাজের লোকচিকিৎসার আদি রূপটি’ প্রকাশ করেছে।[৮]

সম্ভবত সামবেদযজুর্বেদের সমসাময়িক কালে অথবা আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৫৪০০ – ৩২০০ অব্দ নাগাদ অথর্ববেদ রচিত হয়।[৯] সংহিতা অংশটি ছাড়া অথর্ববেদের একটি ব্রাহ্মণ অংশ রয়েছে এবং এই বেদের শেষাংশ উপনিষদ্‌ দর্শনতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করেছে। অথর্ববেদের উপনিষদ্‌ বা শেষাংশ (বেদান্ত) তিনটি প্রধান উপনিষদ্‌ নিয়ে গঠিত। এগুলো হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন শাখাকে প্রভাবিত করেছে। এগুলো নাম হল মুণ্ডক উপনিষদ্‌, মাণ্ডুক্য উপনিষদ্‌প্রশ্ন উপনিষদ্‌[১০][১১]

নাম-ব্যুৎপত্তি ও পরিভাষা

মনিয়ার উইলিয়ামসের মতে, অথর্ববেদের নামকরণ করা হয়েছে পৌরাণিক পুরোহিত অথর্বণের নাম অনুসারে। অথর্বণ প্রথম যাগযজ্ঞ ও সোমরস উৎসর্গ করার প্রথা উদ্ভব করেন এবং ‘রোগ ও বিপর্যয়ের প্রতিকূল পদ্ধতি ও মন্ত্রগুলি’ রচনা করেন।[১২] মনিয়ার উইলিয়ামস উল্লেখ করেছেন যে, অগ্নির একটি অধুনা-অবলুপ্ত নাম ছিল ‘অথর্ব’।[১২] লরি প্যাটনের মতে, ‘অথর্ববেদ’ নামটির অর্থ ‘অথর্বণগণের বেদ’।[৩]

অথর্ববেদের প্রাচীনতম নামটি এই বেদেই (১০। ৭। ২০) উল্লিখিত হয়েছে। এটি হল ‘অথর্বাঙ্গিরসঃ’। দুই জন বৈদিক ঋষি অথর্বণ ও আঙ্গিরসের নামানুসারে এই নামটি এসেছে।[১৩] এই বেদের প্রত্যেকটি শাখার নিজস্ব নাম রয়েছে। যেমন: ‘শৌনকীয় সংহিতা’। এর অর্থ ‘শৌনকের সংকলিত গ্রন্থ’।[১৩] ‘অথর্বণ’ ও ‘আঙ্গিরস’ নাম দু-টি সম্পর্কে মরিস ব্লুমফিল্ড বলেছেন,[১৩] এই নামদুটি ভিন্ন ভিন্ন অর্থের দ্যোতক। প্রথম নামটি মাঙ্গলিক। অন্যদিকে দ্বিতীয় নামটি প্রতিকূল জাদুবিদ্যার অর্থবাচক। কালক্রমে ইতিবাচক মাঙ্গলিক দিকটি অধিকতর সমাদর লাভ করে এবং ‘অথর্ববেদ’ নামটিই প্রচলিত হয়।[১৩] জর্জ ব্রাউনের মতে, পরবর্তী নাম ‘আঙ্গিরস’ অগ্নি ও বৈদিক পুরোহিতদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। সম্ভবত এটির সঙ্গে নিপ্পুরের একটি আরামিক গ্রন্থে প্রাপ্ত প্রোটো-ইন্দো ইউরোপীয় ‘আঙ্গিরোস’-এর কোনো সম্পর্ক রয়েছে।[১৪]

মাইকেল উইটজেল বলেছেন, ‘অথর্বণ’ শব্দের মূল সম্ভবত ‘অথর্বণ’ বা ‘[প্রাচীন] পুরোহিত, জাদুকর’। এর সঙ্গে আবেস্তান ‘আওরাউয়ান’ (āθrauuan) বা ‘পুরোহিত’ ও ট্রোকারিয়ান ‘অথ্র’ বা ‘মহত্তর শক্তি’ কথাদুটির সম্পর্ক আছে।[১৫]

অথর্ববেদ ‘ভার্গবাঙ্গিরসঃ’ ও ‘ব্রহ্মবেদ’ নামেও পরিচিত। ঋষি ভৃগুব্রহ্মের নামে এই দুটি নাম এসেছে।[১৩]

গ্রন্থ

অথর্ববেদ সংহিতার একটি পৃষ্ঠা। এটি গ্রন্থের প্রাচীনতম অংশ।

অথর্ববেদ ২০টি কাণ্ডে বিভক্ত। এই বেদে ৭৩১টি সূক্ত ও ৫,৯৭৭ মন্ত্র আছে।[৬] প্যাট্রিক অলিভেল ও অন্যান্য গবেষকদের মতে, এই গ্রন্থ বৈদিক সমাজের দৈনন্দিন জীবনের বাস্তব বিষয়গুলের সঙ্গে সম্পর্কিত মতবিশ্বাস ও আচার-অনুষ্ঠানের ঐতিহাসিক সংকলন। এটি যজুর্বেদের মতো শুধুমাত্র একটি ধর্মানুষ্ঠানবিধির সংকলন নয়।[১৬][১৭]

শাখা

চরণব্যূহ নামে পরবর্তীকালের একটি সংস্কৃত গ্রন্থ অনুসারে, অথর্ববেদের ৯টি শাখা ছিল। এগুলি হল:[১৮]

  1. পৈপ্পলাদ
  2. স্তৌদ
  3. মৌদ
  4. শৌনকীয়
  5. জাযল
  6. অলদ
  7. ব্রহ্মবাদ
  8. দেবদুর্শ ও
  9. চারণবৈদ্য

এগুলির মধ্যে কেবলমাত্র শৌনকীয় শাখা, এবং অধুনা-আবিষ্কৃত পৈপ্পলাদ শাখার একটি পাণ্ডুলিপিই এখন বর্তমান।[৭] পৈপ্পলাদ সংস্করণটি প্রাচীনতর।[১৯] এই দুইটি শাখা বিন্যাসপ্রণালী এবং বিষয়বৈচিত্র্যের দিক থেকে পৃথক।[১৯] উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, পৈপ্পলাদ শাখার ১০ কাণ্ডটি অদ্বৈতবাদ, ‘ব্রহ্মের একত্ব’, সমগ্র জীবজগৎ ও বিশ্ব’ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে।[২০]

বিন্যাস

মূল অথর্ববেদ সংহিতা ১৮টি ‘কাণ্ড’ বা খণ্ডে বিভক্ত ছিল। শেষ কাণ্ডদুটি পরবর্তীকালে সংযোজিত হয়েছে।[২১] বেদের অপর ভাগগুলি বিষয় বা মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষির নামানুসারে বিন্যস্ত হলেও, অথর্ববেদের ক্ষেত্রে তা হয়নি। এই বেদে বিষয়গুলি সূক্তের দৈর্ঘ্য অনুসারে বিন্যস্ত।[১৭] প্রত্যেকটি কাণ্ডে প্রায় সমসংখ্যক শ্লোকের স্তোত্র সংকলিত হয়েছে। প্রাপ্ত পাণ্ডুলিপিগুলিতে ক্ষুদ্রতম সূক্তের সংকলনটিকে প্রথম কাণ্ড বলা হয়েছে। এরপর অধিকতর বৃহদায়তন সূক্তেট সংকলনগুলো দ্বিতীয়, তৃতীয় ইত্যাদিক্রমে বিন্যস্ত। কোনো কোনো পাণ্ডুলিপি এর বিপরীত ক্রমও দেখা যায়। বেশিরভাগ সূক্তই কাব্যিক এবং বিভিন্ন ছন্দে নিবদ্ধ। তবে গ্রন্থের এক-ষষ্ঠাংশ গদ্যে রচিত।[১৭]

অথর্ববেদের অধিকাংশ সূক্ত এই বেদেরই অন্তর্গত। কেবল এই গ্রন্থের এক-ষষ্ঠাংশ সূক্ত ঋগ্বেদ (মুখ্যত ১০ম মণ্ডল) থেকে গৃহীত।[১৭][২১] ১৯শ কাণ্ডটি অনুরূপ প্রকৃতির একটি পরিশিষ্ট। এটি সম্ভবত নতুন রচনা এবং পরবর্তীকালের সংযোজন।[১৭] অথর্ববেদ সংহিতার ২০শ কাণ্ডের প্রায় সম্পূর্ণতই ঋগ্বেদ থেকে গৃহীত।[২২]

অথর্ববেদের ২০টি কাণ্ডে সংকলিত সূক্তগুলোতে বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। প্রথম ৭টি কাণ্ডে মোটামুটি সব ধরনের চিকিৎসার জন্য জাদুমন্ত্র ও জাদুর কথা। মাইকেল উইটজেল বলেছেন, এগুলি জার্মানিক ও হাইটটাইট জাদুমন্ত্রগুলির অনুরূপ। সম্ভবত এগুলিই গ্রন্থের প্রাচীনতম অংশ।[২৩] ৮ম থেকে ১২শ খণ্ড পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়তত্ত্ব আলোচিত হয়েছে। ১২শ থেকে ১৮শ কাণ্ড পর্যন্ত আলোচিত হয়েছে জীবনের সংস্কারমূলক অনুষ্ঠানগুলো নিয়ে।[২৩]

বৈতান সূত্র ও কৌশিক সূত্রের মতো শ্রৌতসূত্রগুলো অথর্ববেদের শৌনকীয় শাখার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এগুলি অথর্বণ ‘প্রায়শ্চিত্ত’, দুটি ‘প্রতিশাখ্য’ ও একটি ‘পরিশিষ্ট’ সংকলন রূপে সংকলিত হয়েছে।[২৪][২৫] অথর্ববেদের পৈপ্পলাদ শাখার সঙ্গে অগস্ত্য ও পৈঠিনসী সূত্রদুটি সম্পর্কযুক্ত। এগুলি হারিয়ে গিয়েছে, এখনও আবিষ্কৃত হয়নি।[২৬]

বিষয়বস্তু

অথর্ববেদ সংহিতায় যে স্তোত্রগুলি আছে তার অনেকগুলিই জাদুমন্ত্র। বিশেষ কোনো কামনা সিদ্ধির জন্য কোনো ব্যক্তির দ্বারা বা তার হয়ে কোনো জাদুকরের দ্বারা এগুলির উচ্চারণের বিধান দেওয়া হয়েছে।[২১] এই স্তোত্রগুলির অধিকাংশই প্রিয়জনের দীর্ঘায়ু কামনা বা কোনো রোগ থেকে আরোগ্যের উদ্দেশ্যে উচ্চারিত মন্ত্র। এই সব ক্ষেত্রে রোগীকে গাছগাছড়া (পাতা, বীজ, শিকড়) প্রভৃতি বস্তু ও একটি কবচ দেওয়ার বিধান রয়েছে।[২১] কয়েকটি জাদুমন্ত্র সৈনিকদের জন্য। এগুলির উদ্দেশ্য যুদ্ধে শত্রুদের পরাজিত করা। কয়েকটি আবার উৎকণ্ঠিত প্রেমিকের জন্য। এগুলির উদ্দেশ্য প্রেমিকের প্রতিদ্বন্দ্ব্বীকে পরাহত করে অনিচ্ছুক প্রণয়ীকে বশীকরণ। কয়েকটি ক্রীড়া বা বাণিজ্যে সাফল্য, অধিক গবাদিপশু ও শস্যলাভ এবং ঘরের ছোটোখাটো বিপদআপদ থেকে মুক্তিলাভের জন্য।[২১][২৭][২৮] কয়েকটি স্তোত্র জাদুমন্ত্র-সম্পর্কিত নয়। এগুলি প্রার্থনা ও দার্শনিক চিন্তামূলক[২৯]

অথর্ববেদের বিষয়বস্তু অন্য তিন বেদের সম্পূর্ণ বিপরীত। ১৯শ শতাব্দীর ভারততত্ত্ববিদ ওয়েবার এই পার্থক্য সম্পর্কে লিখেছেন,

দুই সংকলনের [ঋগ্বেদ, অথর্ববেদ] চরিত্র অবশ্যই অনেকাংশে ভিন্ন। ঋগ্বেদে একটি স্বতঃস্ফূর্ত প্রাকৃতিক অনুভূতি এবং প্রকৃতির প্রতি গভীর প্রীতির ভাব রয়েছে। অন্যদিকে অথর্ববেদে এর বিপরীতে রয়েছে প্রকৃতির অমঙ্গলকারী সত্ত্বার প্রতি আশঙ্কা ও তার জাদুশক্তির কথা। ঋগ্বেদে আমরা মানুষকে দেখি মুক্ত কর্মোদ্যত ও স্বাধীন রূপে। অথর্ববেদে আমরা দেখি মানুষ অণুশাসন ও কুসংস্কারের শৃঙ্খলে বদ্ধ।

— অ্যালবার্ট ওয়েবার, [৩০]

জন গোন্ডার মতে, অথর্ববেদ সংহিতাকে শুধুমাত্র জাদুমন্ত্র ও জাদুবিদ্যার সংকলন হিসেবে দেখলে ভুল হবে। সংহিতা অংশে এই জাতীয় শ্লোক অবশ্যই আছে। তবে এতে জাদুমন্ত্র ছাড়াও কিছু গার্হস্থ্য্য অনুষ্ঠানের উপযোগী স্তোত্রও আছে। আবার কিছু দিব্যজ্ঞানমূলক চিন্তাভাবনাও দেখা যায়। যেমন, এখানে বলা হয়েছে, ‘সকল বৈদিক দেবতারা এক।’[৩১] সংহিতা ছাড়াও অথর্ববেদে একটি ব্রাহ্মণ ও কয়েকটি প্রভাবশালী উপনিষদ্‌ রয়েছে।[৩২]

সংহিতা

শল্যচিকিৎসা ও ঔষধ-সংক্রান্ত মন্ত্রসমূহ

অথর্ববেদে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত মন্ত্র ও শ্লোক আছে। যেমন, সদ্য-আবিষ্কৃত পৈপ্পলাদ সংস্করণের ৪। ১৫-সংখ্যক শ্লোকে অস্থিভঙ্গ ও ক্ষতে রোহিণী লতা (ফাইকাস ইনফেক্টোরিয়া, ভারতে পাওয়া যায়) কীভাবে বাঁধতে হয় তা উল্লিখিত হয়েছে:[৩৩]

মজ্জার সঙ্গে মজ্জা একত্রে রাখো, গাঁটের সঙ্গে গাঁট একত্রে রাখো, খণ্ডিত মাংস একত্রে রাখো, পেশী একত্রে রাখো এবং অস্থিগুলি কত্রে রাখো।
মজ্জা মজ্জায় যুক্ত হোক, অস্থি অস্থির সঙ্গে বৃদ্ধি পাক।
আমরা পেশীর সঙ্গে পেশী একত্রে রাখবো, চামড়াকে চামড়ার সঙ্গে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে দেবো।

— অথর্ববেদ ৪। ১৫, পৈপ্পলাদ সংস্করণ[৩৩]

জ্বর, পাণ্ডুরোগ ও অন্যান্য রোগের জন্য মন্ত্র

অথর্ববেদের অনেকগুলি স্তোত্র হল কোনো শিশু বা প্রণয়ীর আরোগ্য কামনা ও স্বাস্থ্যোদ্ধার এবং পরিবারের সদস্যদের নিশ্চিন্ত করার জন্য প্রার্থনা ও মন্ত্রের সংকলন। বৈদিক যুগে মানুষ মনে করত অশুভ আত্মা, অপদেবতা ও দানবীয় শক্তির কারণে অসুখবিসুখ হয়। এই সব শক্তি আক্রান্তের দেহে প্রবেশ করে রোগ বাধায়।[৩৪] উদাহরণস্বরূপ, পৈপ্পলাদ সংস্করণের ৫। ২১-সংখ্যক স্তোত্রটিতে আছে,

আমাদের পিতা স্বর্গ, আমাদের মাতা পৃথিবী, মানব-রক্ষাকারী অগ্নি,
তাঁরা দশদিনের জ্বর আমাদের থেকে দূরে অপসারিত করুন।
হে জ্বর, পৃষ্ঠে সোম-ধারণকারী তুষারাবৃত পর্বতসমূহ আমাদের আরোগ্যদাতা বার্তাবহ পবনকে
এখান থেকে তোমাকে মরতগণের কাছে প্রেরণ করুন।
নারীগণ তোমায় চায় না, পুরুষগণও না,
শিশুরাও না, এখানে বৃদ্ধরাও জ্বর-কামনায় কাঁদেন না।
আমাদের বৃদ্ধদের ক্ষতি কোরো না, আমাদের বৃদ্ধাদের ক্ষতি কোরো না,
আমাদের ছেলেদের ক্ষতি কোরো না, আমাদের মেয়েদের ক্ষতি কোরো না।
তুমি একাধারে বলস, কাশি, উদ্রজ নামক বাণ হানো।
হে জ্বর, এগুলি থেকে আমাদের দূরে রাখো।

— অথর্ববেদ ৫। ২১, পৈপ্পলাদ সংস্করণ[৩৫]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

  • Alexander Lubotsky, Atharvaveda-Paippalada, Kanda Five, Harvard College (2002).
  • Thomas Zehnder, Atharvaveda-Paippalada, Buch 2, Idstein (1999).
  • Dipak Bhattacharya, Paippalada-Samhita of the Atharvaveda, Volume 2, The Asiatic Society (2007).

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ