আইভিন্ড জনসন

সুয়েডীয় লেখক

আইভিন্ড জনসন (২৯ জুলাই ১৯০০-২৫ আগস্ট ১৯৭৬) একজন সুইডিশ ঔপন্যাসিক এবং ছোট গল্প লেখক ছিলেন। আধুনিক সুইডিশ সাহিত্যের সবচেয়ে যুগান্তকারী ঔপন্যাসিক হিসাবে বিবেচনা করা হয় তাকে।[১] তিনি ১৯৫৭ সালে সুইডিশ একাডেমির সদস্য হন এবং ১৯৭৪ সালে সাহিত্যে হ্যারি মার্টিনসনের সাথে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান এই উদ্ধৃতিসহ: একটি বর্ণনামূলক শিল্পের জন্য, ভূমি ও যুগে দূরদর্শী, স্বাধীনতার সেবায়[২]

আইভিন্ড জনসন
আইভিন্ড জনসন
আইভিন্ড জনসন
জন্মওলোফ এডভিন ভার্ণার জনসন
(১৯০০-০৭-২৯)২৯ জুলাই ১৯০০
বোডেন, সুইডেন
মৃত্যু২৫ আগস্ট ১৯৭৬(1976-08-25) (বয়স ৭৬)
স্টকহোম, সুইডেন
সময়কাল১৯২৪-১৯৭৬
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারসাহিত্যে নোবেল পুরস্কার
১৯৭৪ (হ্যারি মার্টিনসন-এর সাথে যৌথভাবে)
সন্তান
ওয়েবসাইট
www.eyvindjohnson.se

জীবনী

জনসন, ওলোফ এডভিন ভার্নার জনসন নামে নরবোটেনের বোডেন শহরের কাছে ওভারলুলিয়া প্যারিশের স্বার্তবজর্নসবাইন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। যে ছোট বাড়িটিতে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সেটি সংরক্ষণ করা হয়েছে ও একটি স্মারক ফলক দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।

জনসন তেরো বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে চলে যান এবং বিভিন্ন ধরণের পেশায় নিয়োজিত হন; যার মধ্যে রয়েছে লগ ড্রাইভিং, করাত কলের কাজ এবং সিনেমার টিকিট-বিক্রেতা ও প্রজেকশনিস্ট। ১৯১৯ সালে তিনি তার শহর ছেড়ে স্টকহোমে চলে আসেন যেখানে তিনি ব্র্যান্ডের মতো নৈরাজ্যবাদী পত্রিকায় নিবন্ধ প্রকাশ করতে শুরু করেন। স্টকহোমে তিনি অন্যান্য তরুণ সর্বহারা লেখকদের সাথে বন্ধুত্ব করেন এবং Vår nutid পত্রিকা শুরু করেন। তিনি ১৯২০-এর দশকে জার্মানিতে ভ্রমণ করেন এবং ১৯২৭ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে ফ্রান্সের প্যারিসের কাছে সেন্ট-লিউ-লা-ফোরেটে তাঁর স্ত্রী অ্যাসে ক্রিস্টোফারসেনের (১৯০০-১৯৩৮) সাথে বসবাস করতেন। এই সময়ে তিনি তার প্রথম বই প্রকাশ করেন। প্রথম De fyra främlingarna, ছোট গল্পের সংকলন, ১৯২৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। মার্সেল প্রুস্ট, আন্দ্রে গাইড এবং জেমস জয়েসের মতো লেখকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জনসন ধীরে ধীরে প্রচলিত উপন্যাস থেকে দূরে সরে যান এবং সুইডেনের আধুনিকতাবাদী সাহিত্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি হয়ে ওঠেন। জনসনের প্রথম দিকের উপন্যাসগুলি ব্যাপকভাবে পঠিত হয়নি; তবে তার ১৯২৯ সালের উপন্যাস কমেন্টার টিল এট স্টজার্নফল ("কমেন্ট অন এ ফলিং স্টার"), পুঁজিবাদী সমাজের উপর কটাক্ষ করে লেখা ছিলো; যেটি সমালোচনামূলক সফলতা পেয়েছিলো। [৩]

লেখক হিসেবে জনসনের প্রথম বড় সাফল্য ছিল ১৯৩৪ থেকে ১৯৩৭ সালের মধ্যে প্রকাশিত চারটি আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস, যা একসাথে প্রকাশিত হয় রোমানেন ওম ওলোফ ("দ্যা নোভেল অ্যাবাউট ওলোফ"), সুইডেনের উত্তরাঞ্চলে বেড়ে ওঠা এক যুবকের সম্পর্কে। উপন্যাসগুলিতে জনসন রূপকথার গল্প এবং অভ্যন্তরীণ নাটকাদি এবং দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের মতো সাধারণ আধুনিকতাবাদী বৈশিষ্ট্যগুলির সাথে বাস্তবতাকে মিশ্রিত করেছেন। রোমানেন ওম ওলোফ সুইডিশ সাহিত্যে একটি ক্লাসিক হয়ে ওঠে এবং পরবর্তীতে হিয়ার ইজ ইওর লাইফ হিসাবে চিত্রায়িত হয়।[৩]

১৯৩০-এর দশকে ক্রমবর্ধমান সর্বগ্রাসীবাদের দ্বারা ক্রমবর্ধমানভাবে বিচলিত হয়ে, জনসন ফ্যাসিবাদ এবং নাৎসিবাদের প্রখর বিরুদ্ধ ছিলেন।[৩] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি হ্যান্ডসলাগ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন এবং ক্রিলন প্রকাশ করেন, একটি উপন্যাসের ট্রিলজি যা যুদ্ধের সময়কার ঘটনাগুলির সাথে রূপক হিসেবে কাজ করে। উপন্যাসগুলিতে জনসন নাৎসি নিপীড়নের নিন্দা করেছেন এবং যুদ্ধের সময় বিতর্কিত সুইডিশ নিরপেক্ষতা নীতির সমালোচনা করেছেন।[৩] ক্রিলনকে জনসনের অন্যতম সেরা কাজ বলে মনে করা হয়।[৪][৫]একই সময়ে তিনি জাতীয়তাবাদী সমিতি সামফুন্ডেট নর্ডেন্স ফ্রিহেটের সদস্য ছিলেন এবং এর ম্যাগাজিন নর্ডেন্স ফ্রিহেটের অবদানকারীদের মধ্যে একজন ছিলেন।[৬]

১৯৪৬ সালে তিনি ট্রোজান যুদ্ধের পরে ইথাকাতে ফিরে আসার সময় ওডিসিয়াসের গল্পের উপর ভিত্তি করে তার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস রিটার্ন টু ইথাকা (Strändernas svall) প্রকাশ করেন। জনসন ১৯৪০ সালে অনুবাদক সিলা জনসনকে বিয়ে করেন। তিনি তার পরিবারের সাথে সুইজারল্যান্ডে ১৯৪৭-১৯৪৯ এবং তারপর এক বছর ইংল্যান্ডে বসবাস করেন। ইতালি এবং ফ্রান্স ভ্রমণ তাকে বেশ কিছু জনপ্রিয় ঐতিহাসিক উপন্যাস লিখতে অনুপ্রাণিত করেছিল। সবচেয়ে বেশি পরিচিত ড্রিমস অফ রোজেস অ্যান্ড ফায়ার (Drömmar om rosor och eld, ১৯৪৯) কার্ডিনাল রিচেলিয়াস ১৭ শতকের ফ্রান্সে স্থাপিত এবং Molnen över Metapontion ("দ্যা ক্লাউডস অ্যাভোব মেটাপনসন", ১৯৫৭) যেগুলি সাধারণত তার পরবর্তী উপন্যাসগুলিকে পরিবর্তন করে সামনে-পেছনে বিভিন্ন সময় স্তরের মধ্যে। ১৯৫৭ সালে তিনি সুইডিশ একাডেমির সদস্য নির্বাচিত হন।

জনসন ১৯৬২ সালে এবং ১৯৬৩ সালে সাহিত্যে নোবেলের জন্য নোবেল বিজয়ী জিওরগোস সেফেরিসকে দু’বার মনোনীত করেছিলেন,[৭] যেটি সেফারিস জিতেছিলেন।

আন্তর্জাতিকভাবে জনসনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে রিটার্ন টু ইথাকা এবং দ্য ডেজ অফ হিজ গ্রেস (হান্স ন্যাডস টিড, ১৯৬০) যা অনেকগুলো ভাষায় অনূদিত হয়েছে। পরবর্তী উপন্যাসের জন্য জনসন ১৯৬২ সালে নর্ডিক কাউন্সিল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন।[৮]

কাজ

উপন্যাস

  • টিমানস ওচ রাটফার্ডিঘেটেন (১৯২৫)
  • স্ট্যাড আই মার্কার (১৯২৭)
  • স্ট্যাড আই লিজুস (১৯২৮)
  • মিন্নাস (1928)
  • কমেন্টার টিল এট স্টজার্নফল(১৯২৯)
  • অ্যাভস্কড টিল হ্যামলেট (১৯৩০)
  • ববিনাক (১৯৩২)
  • রেগেন আই গ্রিনজেন (১৯৩৩)
  • রোমানেন ওম ওলোফ (১৯৩৪-১৯৩৭, ১৯৪৫ সালে একত্রে প্রকাশিত)
    • নু ভার ডেট ১৯১৪ (১৯৩৪)
    • হার হার ডু ডিট লিভ! (১৯৩৫)
    • সে ডিগ ইন্তে ওম! (১৯৩৬)
    • স্লাটসপেল আই আংডোমেন (১৯৩৭)
  • নাটোভনিং (১৯৩৮)
  • সোলডাটেনস আটারকোমস্ট (১৯৪০)
  • ক্রিলন (১৯৪১-১৯৪৩, ১৯৪৮ সালে একত্রে প্রকাশিত)
    • গ্রুপ ক্রিলন (১৯৪১)
    • ক্রিলোন্স রেসা (১৯৪২)
    • ক্রিলন স্জালভ (১৯৪৩)
  • রিটার্ণ টু ইথাকা (সুইডীয়: Strändernas svall, ১৯৪৬)
  • ড্রিমস অফ রোজেস অ্যান্ড ফায়ার(Drömmar om rosor och eld, ১৯৪৯)
  • লাগ আনডান সোলেন (১৯৫১)
  • রোমান্টিস্ক বেরেটেলস (১৯৫৩)
  • টাইডেনস গ্যাং (১৯৫৫)
  • মলনেন ওভার মেটাপনসন (১৯৫৭)
  • দ্যা ডেস অফ হিজ গ্রেস (সুইডীয়: Hans nådes tid, ১৯৬০)
  • লিভসডাগেন ল্যাং (১৯৬৪)
  • ফাভেল এনসাম (১৯৬৮)
  • নাগ্রা স্টেগ মট টিস্টনাডেন (১৯৭৩)
  • হাড় ক্লার্ক ভার মাস্টারে (মিনাস-এর মূল সংস্করণ, উপন্যাস, ১৯৯৮)

ছোটগল্প সংকলন

  • ডি ফাইরা ফ্র্যামলিংগারনা (১৯২৪)
  • ন্যাটেন আর হার (১৯৩২)
  • আন এন গাং, কাপ্তেন! (১৯৩৪)
  • ডেন ট্রাইঘা ভার্লডেন (১৯৪০)
  • জু লিভ (১৯৪৪)
  • প্যান মট স্পার্টা (১৯৪৬)
  • ওলিব্রিয়াস ওচ গেসটালটার্ণা(১৯৮৬)

নাটক

নন-ফিকশন

  • ডাগবোক ফ্রান শোয়েজ (১৯৪৯)
  • ভিনটেরেসা ই নরবোটেন (১৯৫৫)
  • ভাগার ওভার মেটাপোন্টো-এন রেসেডাগবক (১৯৫৯)
  • স্পার ফরবি কোলোনোস-এন বেরেটটেলছে (১৯৬১)
  • স্টান্ডার, ভাগোর-আনটেকনিনজার, বেরাটটেলসার (১৯৬৫)
  • রেসা ই হোস্টেন ১৯২১ (১৯৭৩)

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Dobloug Prize winnersটেমপ্লেট:The Nordic Council's Literature Prize

টেমপ্লেট:Swedish Nobel Laureates

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ