আবেস্তা

পবিত্র সাহিত্যের জ়রথুষ্ট্রীয় সংকলন

আবেস্তা (Avestan) বা জেন্দ আবেস্তা হল জরাথুস্ট্রবাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। এটি আবেস্তা ভাষায় রচিত।[১] আবেস্তাকে ফারসি ও ইংরেজি সহ অন্যান্য ভাষায়ও অনুবাদ করা হয়েছে। এর প্রাচীনতম অংশ হল গাঁথাসমূহ, যেগুলো স্বয়ং জরাথ্রুস্ট্র দ্বারা রচিত ধর্মীয় স্তবজ্ঞান। জরাথুস্ট্রবাদে আরও দুটি ধর্মীয় গ্রন্থ রয়েছে যার নাম দেওয়া হয়েছে দেনকার্দ এবং আরদাভিরাফ নমক। আবেস্তা বা জেন্দ আবেস্তা নামটি দ্বারা ধর্মীয় ভাষা এবং ধর্মীয় গ্রন্থ উভয়কেই বোঝায়। জারথুস্ট্র ধর্মের বিশাল সাহিত্য (পারস্য/ইরানে আরব মুসলিমদের বিজয়ের আগে মূল ধর্ম) যে ভাষার আশ্রয় নিয়ে তৈরি হয়েছিল, তাকে 'আবেস্তা' বা 'আভস্তাই ভাষা' বলা হয়। উক্ত সাহিত্যে নবী জরাথুস্ট্র বা তাঁর সমসাময়িক অনুসারীদের ভাষার নাম কি ছিল বা কথ্য ভাষা কি ছিল তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় নি। তবে ঐতিহ্য অনুসারে প্রমাণিত হয় যে সেই ভাষা ও সাহিত্যের নামটিও ছিল "অবিস্তক"। অনুমান করা হয় যে "বিদ" (জানা) এই শব্দের মূলধাতু, যার অর্থ 'জ্ঞান' বা 'প্রজ্ঞা'।

আবেস্তা
ইগনাসিও কর্তৃক আবেস্তার ফরাসি অনুবাদ, বার্লিন, ১৮৫৮
তথ্য
ধর্মজরাথুস্ট্রবাদ
রচয়িতাজরাথুস্ট্র
ভাষাআবেস্তা ভাষা

আবেস্তা সাহিত্য দীর্ঘকাল ধরে রচিত হয়েছিল। প্রথমদিকে এই সাহিত্য মৌখিক আকারে ছিল (অলিপিবদ্ধ) তবে পরে তা লিপিবদ্ধ হয়। সময়ের প্রবাহে এই বিশাল সাহিত্যের একটি বৃহৎ অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে, তবে এখনও এর অনেক অংশ সুরক্ষিত আছে। আবেস্তা তার বর্তমান আকারে বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত সামগ্রীর সংকলন। এই সংকলিত উপাদানের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন সময়ে রচিত হয় এবং এগুলির প্রকৃতিও একে অপরের থেকে অনেক আলাদা। তদুপরি, কেবলমাত্র আভস্তাই ভাষার সামগ্রীটিকে 'আবেস্তা' হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এটিতে ধর্মীয় বিষয়বস্তু ছাড়াও সাধারণ (অ-ধর্মীয়) সামগ্রী রয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি আবেস্তার সামগ্রিক সামগ্রিকে আলাদাভাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন। জিন কেলেনস আবেস্তাকে ইয়াসনা, ইয়াশ্ত, ভিসপেরাদ (ইয়াজাতা),[২][৩] ভেন্দিদাাদ, সিরোজা, নিয়াশ, আফরিংগান, বিবিধ (খন্ধ), গাহ এবং খোরদেহ আবেস্তা[২] নামক বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করেছেন।

হিন্দুধর্মের ঋগ্বেদের সঙ্গে আবেস্তার শক্তিশালী ভাষাগত মিল রয়েছে।

ঋগ্বেদের সঙ্গে সমজাতীয় পরিভাষা

ঋগ্বেদের পাণ্ডুলিপি পাতা (১.১.১-৯)
ইয়াস্না ২৮.১ (বদলেইয়ান এমএস জে২)

নীচে ঋগ্বেদ এবং আবেস্তার তুলনামূলক ভাষাগত বিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত সমজাতীয় পদগুলির একটি তালিকা দেওয়া হল। উভয় সংগ্রহই প্রোটো-ইন্দো-ইরানীদের থেকে পৃথক হয়ে (আনুমানিক দ্বিতীয় সহস্রাব্দ খ্রিস্টপূর্ব) তাদের নিজ নিজ ভারতীয় ও ইরানি শাখায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরের প্রস্তাবিত সময় থেকে নেওয়া।[৪][৫][৬]

বৈদিক সংস্কৃতআবেস্তাসাধারণ অর্থ
অপঅবন"জল," অপস "জলাদি"[৬]
অপাং নপাত, অপাম নপাতঅপাম নপাত"জলের সন্তান"[৬]
আর্যমনআইর্যমন"আর্যত্ব" (সাহি:** "আর্য সম্প্রদায়ের সদস্য")[৬]
ঋতআশা/আর্ত"সক্রিয় সত্য", থেকে "আদেশ" ও "ন্যায়নিষ্ঠতা" পর্যন্ত[৫][৬]
অথর্বনআত্রাউয়ান, আতাউরুন অতর"পুরোহিত"[৫]
অহিঅঝি, (অজি)"ড্রাগন, সাপ", "নাগ"[৬]
দাইবা, দেবদাএব, (দাএউয়া)একটি স্বর্গত শ্রেণী
মনুমনু"মানুষ"[৬]
মিত্রমিথ্র, মিত্র"শপথ, অঙ্গীকার"[৫][৬]
অসুরঅহুরআরেকটি আত্মার শ্রেণী[৫][৬]
অসুর মেধা (असुर मेधा)অহুর মাজদা"জ্ঞানের প্রভু"[৭]
সর্বতৎহাউরুউয়াতাত"অক্ষত", "পরিপূর্ণতা"[৮][৯][১০]
সরস্বতী (আরদ্রাবী শুরা অনাহিতা, आर्द्रावी शूरा अनाहिता)হরক্সবইতি (অরদুউই সুরা অনহিতা)একটি বিতর্কিত (সাধারণত পৌরাণিক হিসেবে বিবেচিত) নদী, একটি নদী দেবী[১১][১২]
সৌম্য, সোমহোমএকটি দেবতুল্য গাছ[৫][৬]
সূর্য, স্বরহবর, ক্সবরসূর্য, পাশাপাশি গ্রিক হেলিওস, লাতিন সোল, ইংরেজি. সান-এর সমজাতীয়[৮]
তপতিতপইতিসম্ভাব্য আগুন/সৌরদেবী; দেখুন তবিতি (একটি সম্ভাব্য হেলেনাইজড সিথিয়ান নাম)। লাতিন তেপিও এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি পরিভাষার সমজাতীয়। [৮]
ভ্রত্র-/ব্রত্রগ্ন/ব্রিত্রবনবেরেথ্র, বেরেত্র (তুলনা. বেরেথ্রগ্ন, বেরেথ্রয়ন)"বাঁধা"[৫][৬]
যমযিমসৌরদেবতা বিবসবান্ত,বিউউয়াহুউয়ান্তের পুত্র[৬]
ইয়জন, যজ্ঞইয়স্ন, বস্তু: ইয়জত"উপাসনা, উৎসর্গ, অর্ঘ্য"[৫][৬]
গন্ধর্বগন্দরেও"স্বর্গীয় সত্ত্বা"[৬]
নসত্যনঘইথ্য"যমজ বৈদিক দেবতা যারা ঊষা, চিকিৎসা আর জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কিত"[৬]
অমরত্বঅমেরেতত"অমরত্ব"[৬]
পোসাঅপাওশা"'খরার দৈত্য'"[৬]
আশ্মানআসমান"'আকাশ, সর্বোচ্চ স্বর্গ'"[৮]
অঙ্গিরা মন্যুঅংরা মইন্যু"'ধ্বংসাত্মক/দুষ্ট আত্মা, আত্মা, রাগ, প্রবৃত্তি, আবেগ, ক্রোধ, ঐশী জ্ঞানের শিক্ষক'"[৬]
মন্যুমনিয়ু"'রাগ, ক্রোধ'"[৬]
সর্বহর্ব"'রুদ্র, বৈদিক বাতাসের দেবতা, শিব'"[৮]
মধুমদু"'মধু'"[৬]
ভুতবুইতি"'প্রেত'"[৬]
মন্ত্রমন্থ্র"'পবিত্র জাদুবাক্য'"[৬]
অরমতিঅরমইতি"'পুণ্য'"
অমৃতঅমেশা"'অমরত্বের নির্যাস'"[৬]
অমৃত স্পন্দ (अमृत स्पन्द)অমেশা স্পেন্তা"'অমরত্বের পবিত্র নির্যাস'"
সুমতিহুমাতা"'শুভ চিন্তা'"[৬][৮]
সুক্তহুক্ত"'শুভ বাক্য'"[৬]
নরাসংসনইরিয়সঙ্ঘ"'প্রশংসিতমানব'"[৬]
বায়ুবাইইউ"'বাতাস'"[৬]
বজ্রবয্র"'বিদ্যুৎচমক'"[৬]
ঊষাউশাহ"'ভোর'"[৬]
অহুতিঅজুইতি"'অঞ্জলি'"[৬]
পুরমধিপুরেন্দি[৬]
ভগবগ"'"প্রভু, পৃষ্ঠপোষক, সম্পদ, সমৃদ্ধি, ভাগ্যের ভাগীদার / ভাগ্যবান'"[৬]
উসিজউসিজ"'"পুরোহিত'"[৬]
ত্রিত্বথ্রিত"'"তৃতীয়'"[৬]
মাসমাহ"'"চাঁদ, মাস'"[৬]
বিবস্বন্তবিবনহবন্ত"'" জ্বলে ওঠা, প্রভাতী'"[৬]
দ্রুহদ্রুজ"'"দুরাত্মা'"[৬]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ