ইন্দোনেশিয়ার ভূগোল
ইন্দোনেশিয়া হল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জীয় দেশ। এটি ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত। পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া এবং ওশেনিয়ার সংযোগকারী প্রধান সমুদ্র পথে অবস্থিত হবার ফলে এর অবস্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ। ইন্দোনেশিয়া হল বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জ। [১] ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্কৃতি রূপ পেয়েছে তার ভৌত পরিবেশের সাথে বহু শতাব্দীর জটিল প্রতিক্রিয়ায়, যদিও সেগুলি নির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত নয়।
মহাদেশ | এশিয়া |
---|---|
অঞ্চল | ইন্দোনেশিয়া |
স্থানাঙ্ক | ৫°০০′০০″ দক্ষিণ ১২০°০০′০০″ পূর্ব / ৫.০০০° দক্ষিণ ১২০.০০০° পূর্ব |
আয়তন | ১৪তম |
• মোট | ৮০,৬৩,৬০১ কিমি২ (৩১,১৩,৩৭৪ মা২) |
• স্থলভাগ | ২৩.৬২% |
• জলভাগ | ৭৬.৩৮% |
উপকূলরেখা | ৫৪,৭২০ কিমি (৩৪,০০০ মা) |
সীমানা | মালয়েশিয়া: ২,০১৯ কিমি (১,২৫৫ মা) পাপুয়া নিউগিনি: ৮২৪ কিমি (৫১২ মা) পূর্ব তিমুর: ২৫৩ কিমি (১৫৭ মা) |
সর্বোচ্চ বিন্দু | পুঞ্চাক জায়া (কার্টেনজ পিরামিড) ৪,৮৮৪ মি (১৬,০২৪ ফু) |
সর্বনিম্ন বিন্দু | সমুদ্রপৃষ্ঠ ০ মি (০ ফু) |
দীর্ঘতম নদী | কাপুয়াস নদী ১,১৪৩ কিমি (৭১০ মা) |
বৃহত্তম হ্রদ | টোবা হ্রদ ১,১৩০ কিমি২ (৪৩৬ মা২) |
জলবায়ু | প্রধানত ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য (এএফ), দক্ষিণপূর্ব অংশ প্রধানত ক্রান্তীয় সাভানা (এডবলিউ), জাভা দ্বীপ এবং সুলাওসির কিছু অংশ হল ক্রান্তীয় মৌসুমী (এএম) |
ভূখণ্ড | কালিমান্তান, দক্ষিণ নিউ গিনি, পূর্ব সুমাত্রা এবং উত্তর জাভার বেশিরভাগ অংশ সমভূমি; সুলাওসি, পশ্চিম সুমাত্রা, দক্ষিণ জাভা, লঘুতর সুন্দা দ্বীপপুঞ্জ এবং মালুকু দ্বীপপুঞ্জে রুক্ষ, আগ্নেয় ভূসংস্থান; মধ্য, উত্তর-পশ্চিম নিউ গিনি এবং উত্তর কালিমান্তানে রুক্ষ পর্বতমালা |
প্রাকৃতিক সম্পদ | আবাদযোগ্য জমি, কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস, কাঠ, তামা, সিসা, ফসফেট, ইউরেনিয়াম, বক্সাইট, স্বর্ণ, লোহা, পারদ, নিকেল, রূপা |
প্রাকৃতিক বিপত্তিসমূহ | সুনামি; আগ্নেয়গিরি; কেন্দ্রীয় অংশ বাদে ভূমিকম্পপ্রবণ; ভারতীয় উপকূল বরাবর ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়; জাভাতে ভূমিধস; বন্যা |
পরিবেশগত সমস্যা | অতিমাত্রায় অরণ্যবিনাশ, বায়ু দূষণের ফলে অ্যাসিড বৃষ্টি, নদী দূষণ |
এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক অঞ্চল | ৬১,৫৯,০৩২ কিমি২ (২৩,৭৮,০১৬ মা২) |
সংক্ষিপ্তসার
ইন্দোনেশিয়া একটি দ্বীপপুঞ্জের দেশ যা পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রায় ৫,১২০ কিলোমিটার (৩,১৮১ মা) অঞ্চল জুড়ে এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে ১,৭৬০ কিলোমিটার (১,০৯৪ মা) অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত।[২] সমীক্ষা ও ম্যাপিংয়ের জাতীয় সমন্বয়কারী সংস্থা (বাকোসুর্তনাল) দ্বারা ২০০৭ থেকে ২০১০ সালের ভূ-স্থানীয় জরিপ অনুযায়ী ইন্দোনেশিয়ায় ১৩,৪৬৬ দ্বীপ রয়েছে।[৩] এর আগে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস (ল্যাপান) দ্বারা পরিচালিত জরিপে জানানো হয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার ১৮,৩০৭ দ্বীপ রয়েছে। সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক অনুযায়ী, সেখানে ১৭,৫০৮টি দ্বীপ আছে।[৪] জরিপের মধ্যে এই পার্থক্যের কারণ সম্ভবত আগেকার বিভিন্ন রকম জরিপ পদ্ধতির ফলে সৃষ্ট, তার মধ্যে আছে জলোচ্ছ্বাসের ফলে উৎপন্ন দ্বীপ, ভাঁটার সময় নিম্ন-উচ্চতার বেলে দ্বীপ ও পাথুরে প্রবালদ্বীপগুলির জেগে ওঠা এবং জোয়ারের সময় ডুবে যাওয়া। ইন্দোনেশিয়ার সরকার দ্বারা প্রাপ্ত অনুমান অনুসারে এখানে ৮,৮৪৪টি নাম সহ দ্বীপ রয়েছে, এর মধ্যে ৯২২টিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করা হয়।[৫] এটি পাঁচটি প্রধান দ্বীপ নিয়ে গঠিত: সুমাত্রা, জাভা, বোর্নিও (ইন্দোনেশিয়ায় কালিমান্তান বলা হয়), সুলাওসি এবং নিউ গিনি। এছাড়া আছে দুটি প্রধান দ্বীপ গোষ্ঠী (নুশা টেংগারা এবং মালুকু দ্বীপপুঞ্জ) এবং ষাটটি ছোট দ্বীপ গোষ্ঠী। এখানকার চারটি দ্বীপে অন্য দেশের অংশ রয়েছে, সেগুলি হল: বোর্নিও দ্বীপে মালয়েশিয়া এবং ব্রুনাইয়ের অংশ আছে; কালিমান্তানের উত্তর-পূর্ব উপকূলের নিকটে অবস্থিত সেবাটিক দ্বীপে মালয়েশিয়ার অংশ আছে; তিমুর দ্বীপে পূর্ব তিমুরের অংশ আছে; এবং নিউ গিনিতে পাপুয়া নিউগিনির অংশ আছে।
ইন্দোনেশিয়ার মোট অঞ্চলের পরিমাণ ১৯,০৪,৫৬৯ বর্গকিলোমিটার (৭,৩৫,৩৫৮ মা২), এর মধ্যে আছে ৯৩,০০০ বর্গকিলোমিটার (৩৫,৯০৮ মা২) অভ্যন্তরীণ সমুদ্র (প্রণালী, উপসাগর এবং অন্যান্য জলাশয়)। এইগুলি নিয়ে এটি এখন বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ দেশ।[১] অতিরিক্ত পার্শ্ববর্তী সমুদ্র অঞ্চলগুলি নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার সাধারণভাবে স্বীকৃত অঞ্চল (ভূমি এবং সমুদ্র) প্রায় ৫ মিলিয়ন কিমি২। সরকার ৬১,৫৯,০৩২ কিমি২ (২৩,৭৮,০১৬ মা২) স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল নিশ্চিত করেছে। সব নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার মোট অঞ্চলের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৭.৯ মিলিয়ন কিমি২।[৬][৭]
ইন্দোনেশিয়া একটি আন্তর্মহাদেশীয় অঞ্চল, যেখানে এর এলাকাটি ভৌগোলিকভাবে এশিয়া বা অস্ট্রেলিয়ার অংশ হিসাবে বিবেচিত দ্বীপগুলির সমন্বয়ে গঠিত। প্লাইস্টোসিনের (হিম যুগ) সময়,বৃহত্তর সুন্দা দ্বীপপুঞ্জ এশীয় মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত ছিল এবং নিউ গিনি অস্ট্রেলিয়ার সাথে যুক্ত ছিল।[৮][৯] প্লাইস্টোসিন যুগের শেষে সমুদ্রপৃষ্ঠের উত্থানের ফলে কারিমাতা প্রণালী, জাভা সাগর এবং আরাফুরা সাগর গঠিত হয়েছিল।
আরো দেখুন
- List of Indonesian provinces by highest point
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- Digital Atlas of Indonesian History by Robert Cribb from 17th century and earlier
- (ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায়)"Map of a Part of China, the Philippine Islands, the Isles of Sunda, the Moluccas, the Papuans" features a map of Indonesia from around 1760
- এই নিবন্ধটিতে Library of Congress Country Studies থেকে পাবলিক ডোমেইন কাজসমূহ অন্তর্ভুক্ত যা পাওয়া যাবে এখানে ।
- এই নিবন্ধটিতে সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক থেকে পাবলিক ডোমেইন কাজসমূহ অন্তর্ভুক্ত যা পাওয়া যাবে এখানে ।