টোবা হ্রদ

ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় অবস্থিত একটি ক্রেটার হ্রদ

টোবা হ্রদ (ইন্দোনেশীয় ভাষাঃ দানাউ টোবা) একটি মহাআগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ জুড়ে অবস্থিত বৃহৎ প্রাকৃতিক হ্রদ। লেকটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ, ৩০ কিলোমিটার চওড়া ও গভীরতা ৫০৫ মিটার (১,৬৬৬ ফুট) পর্যন্ত হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৯০০ মিটার (২,৯৫৩ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত, এটি ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উত্তর অংশের মাঝখানে অবস্থিত এবং ২.৮৮°N, ৯৮,৫২° E থেকে   ২.৩৫° N ৯৯.১° E পর্যন্ত প্রসারিত। এটি ইন্দোনেশিয়ার বৃহত্তম হ্রদ এবং বিশ্বের বৃহত্তম আগ্নেয় হ্রদ ।

লেক টোবা
অবস্থানউত্তর সুমাত্রা,ইন্দোনেশিয়া
স্থানাঙ্ক২°৪১′০৪″ উত্তর ৯৮°৫২′৩২″ পূর্ব / ২.৬৮৪৫° উত্তর ৯৮.৮৭৫৬° পূর্ব / 2.6845; 98.8756
ধরনআগ্নেয়
প্রাথমিক বহিঃপ্রবাহআসাহান নদী
অববাহিকার দেশসমূহইন্দোনেশিয়া
সর্বাধিক দৈর্ঘ্য১০০ কিমি (৬২ মা)
সর্বাধিক প্রস্থ৩০ কিমি (১৯ মা)
পৃষ্ঠতল অঞ্চল১,১৩০ কিমি (৪৪০ মা)
গড় গভীরতা500 metres
সর্বাধিক গভীরতা৫০৫ মি (১,৬৫৭ ফু)[১]
পানির আয়তন২৪০ কিমি (৫৮ মা)
পৃষ্ঠতলীয় উচ্চতা৯০৫ মি (২,৯৬৯ ফু)
দ্বীপপুঞ্জসামোসির
জনবসতিআমবারিতা, পানগুরুরান
তথ্যসূত্র[১]

টোবা হ্রদ ৬৯,০০০ থেকে ৭৭,০০০ বছর আগে সংঘটিত একটি বিশাল মহাঅগ্নুৎপাতের উৎপত্তিস্থলে অবস্থিত, যার মাত্রা ছিল VEI স্কেলে ৮ এবং এটি ছিল একটি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনকারী ঘটনা। গত ২ কোটি ৫০ লক্ষ বছরের মধ্যে এটাই সবার জানামতে সবচেয়ে বড় আগ্নেয় বিস্ফোরণ। টোবা মহাবিপর্যয় তত্ত্ব অনুসারে, মানব সংখ্যার উপর এই অগ্নুৎপাতের ফলাফল ছিল বৈশ্বিক। সেই দুর্যোগে বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ মারা যায় এবং এই বিপর্যয় মধ্য-পূর্ব আফ্রিকা এবং ভারতীয় উপমহাদেশে মানববসতির পরিমাণ বিরাট আকারে কমিয়ে দিয়ে পপুলেশন বটলনেকের সৃষ্টি করে, যা এখনও বিশ্বের মানবগোষ্ঠির জিনতাত্ত্বিক গঠনে প্রভাব ফেলছে।

এটা মেনে নেয়া হয় যে, টোবার অগ্নুৎপাতের ফলে বিশ্বজুড়ে আগ্নেয় শীতের সৃষ্টি হয়েছিল এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা ৩ থেকে ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস (৫.৪ থেকে ৯.০ ডিগ্রী ফারেনহাইট) এবং উচ্চতর অক্ষরেখায় ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস (২৭ ডিগ্রী ফারেনহাইট) পর্যন্ত নেমে গিয়েছিল। পূর্ব আফ্রিকার মালাউয়ি হ্রদে আরও গবেষণার পর দেখা যায় যে টোবা অগ্নুৎপাতের ফলে অত দুরের হ্রদেও যথেষ্ট পরিমাণ আগ্নেয়ভস্ম জমা হয়েছিল, যদিও পূর্ব আফ্রিকার জলবায়ুর উপর এর তেমন কোন প্রভাব লক্ষ করা যায় নি।

ভূতত্ত্ব

উত্তর সুমাত্রায় অবস্থিত টোবা জ্বালামুখ এলাকাতে চারটি জ্বালামুখ একে অপরের সাথে জড়িয়ে সুমাত্রীয় আগ্নেয় অঞ্চলের সৃষ্টি করেছে। এদের মধ্যে চতুর্থ এবং নতুনতম জ্বালামুখটি হচ্ছে পৃথিবীর কোয়ার্টারনারি যুগের সবচেয়ে বড় জ্বালামুখ (১০০ বাই ৩০ কিমি (৬২ বাই ১৯ মাইল)) এবং এটি অন্য তিনটি জ্বালামুখকে বিভক্ত করে। সাম্প্রতিক ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম বিস্ফোরক আগ্নুৎপাতের সময় আনুমানিক ২,৮০০ ঘন কিমি (৬৭০ ঘন মাইল) ঘন প্রস্তরের সমাপরিমাণ পাইরোক্লাস্টিক উপাদান নিঃসৃত হয়েছিল। এই অগ্নুৎপাতের ফলে নতুন জ্বালামুখে একটি গম্বুজের পুনরুৎপত্তি ঘটে, যা পূর্বের দুটি অর্ধগম্বুজকে যুক্ত করে যারা একটি দ্রাঘিমামুখী চ্যুতি দ্বারা বিচ্ছিন্ন ছিল।

এ হ্রদে কমপক্ষে চারটি কনিক আকার অঞ্চল, চারটি যৌগিক আগ্নেয়গিরি এবং তিনটি খাদ দেখতে পাওয়া যায়। জ্বালামুখের উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত টান্দুকবেনুতা কোনে খুব অল্প পরিমাণ উদ্ভিদ আছে, যা দ্বারা বোঝা যায় যে কোনটি কয়েকশ বছর বয়সী এবং আপেক্ষিকভাবে নতুন। এছাড়া জ্বালামুখের দক্ষিণ ধারে অবস্থিত পুসুবুকিত (পাহাড় কেন্দ্র) আগ্নেয়গিরি, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯৭১ মিটার উপরে অবস্থিত, এখনও সক্রিয় নিঃসরণ ঘটায় এবং এটা একটা ভূতাত্ত্বিক গবেষণাস্থল।

চিত্র ভান্ডার

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ