ইয়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চল
ইয়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চল (山梨県? য়ামানাশি কেন্) হল জাপানের মূল দ্বীপ হোনশুর চুউবু অঞ্চলের অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।[১] এর রাজধানী কোওফু নগর।[২] এর দক্ষিণে শিযুওকা প্রশাসনিক অঞ্চলের সীমানায় জাপানের উচ্চতম ও বিখ্যাত পর্বতশৃঙ্গ ফুজিসান অবস্থান করছে।
ইয়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চল 山梨県 | |
---|---|
প্রশাসনিক অঞ্চল | |
জাপানি প্রতিলিপি | |
• জাপানি | 山梨県 |
• রোমাজি | Yamanashi-ken |
দেশ | জাপান |
অঞ্চল | চুউবু |
দ্বীপ | হোনশু |
রাজধানী | কোওফু |
আয়তন | |
• মোট | ৪,৪৬৫.৩৮ বর্গকিমি (১,৭২৪.০৯ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | ৩২ তম |
জনসংখ্যা (১লা জানুয়ারি, ২০১৪) | |
• মোট | ৮,৪৫,০২২ |
• ক্রম | ৪১ অম |
• জনঘনত্ব | ১৮৯/বর্গকিমি (৪৯০/বর্গমাইল) |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | JP-19 |
জেলা | ৫ |
পৌরসভা | ২৭ |
ফুল | ফুজিযাকুরা (ফুজি চেরি) |
গাছ | কায়েদে (জাপানি ম্যাপ্ল) |
পাখি | উগুইসু (বুশ ওয়ার্বলার) |
ওয়েবসাইট | www |
ইতিহাস
জাপানের অন্যান্য অঞ্চলের মত ইয়ামানাশির প্রাগৈতিহাসও শুরু হয়েছিল জোমোন যুগের শিকার, জোগাড় ও মাছ ধরার মাধ্যমে। এর পর য়ায়োই যুগে কৃষিকার্য আরম্ভ হয় এবং ক্রমে গ্রাম ও বৃহত্তর জনপদ গড়ে ওঠে। নাকামিচি শহরের সোনে পাহাড়ে অবস্থিত কোফুন সমাধিগুলি ৪র্থ শতাব্দীর নির্মাণ বলে ধারণা করা হয়। হেইয়ান যুগে এই অঞ্চলে কাই প্রদেশ গঠন করা হয়।[৩]
সেন্গোকু যুগে স্থানীয় সামন্তপ্রভু তাকেদা শিংগেন দাইমিয়োর মর্যাদা অর্জন করেন, এবং কোওফু নগরে ৎসুযুজি প্রাসাদ ও য়োওগাই দুর্গ নির্মাণ করেন। ১৭২৪ খ্রিঃ অঞ্চলটি তোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের প্রত্যক্ষ ক্ষমতায় আসে। এদো যুগের শেষ দিকে আঞ্চলিক সামরিক সরকারের অস্থিরতার ফলে মেইজি পুনর্গঠনের পথ সুগম হয়।
১৮৬৯ খ্রিঃ কাই প্রদেশের নতুন নামকরণ হয় কোওফু প্রশাসনিক অঞ্চল। এর দুই বছর পর অর্থাৎ ১৮৭১ খ্রিঃ এর ২০শে নভেম্বর তার পুনর্নামকরণ হয় ইয়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চল। ১৮৭২ খ্রিঃ থেকে এই দিনটি এখানে নাগরিক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
১৯০৩ খ্রিঃ সাত বছর ধরে নির্মাণকাজ চলার পর সাসাগো গিরিপথে প্রায় তিন মাইল লম্বা একটি সুড়ঙ্গ সমেত চুউও রেলপথ টোকিও থেকে কোওফু নগরে পৌঁছয়। স্থানীয় শিল্প ও সংস্কৃতিতে এই উন্নত পরিবহন ব্যবস্থার সুফল ছিল ব্যাপক।[৪]
১৯৪৫ এর ৬ই জুলাই কোওফু নগর ব্যাপক বোমাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[৫] ১৯৫১ খ্রিঃ থেকে অর্থনৈতিক সংস্কার দ্রুতলয়ে আরম্ভ হয়।
ভূগোল
ইয়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চল স্থলবেষ্টিত। এর চারদিকে অবস্থিত অন্যান্য প্রশাসনিক অঞ্চলগুলি হল টোকিও, কানাগাওয়া, সাইতামা, শিযুওকা ও নাগানো। কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত কোওফু অববাহিকা চারদিকে উঁচু পর্বত ও পাহাড় দিয়ে ঘেরা; এখানেই প্রশাসনিক অঞ্চলটির কৃষিকাজ সীমিত।[৬] শিযুওকার সাহে দক্ষিণ সীমানায় রয়েছে ফুজি পর্বত ও ফুজি পঞ্চহ্রদ। দক্ষিণ থেকে আগত আর্দ্র বায়ুর পথে ফুজি পর্বত বাধা হয়ে দাঁড়ায় বলে তার অনুবাত ঢালে অবস্থিত ইয়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চলে বৃষ্টিপাত পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের চেয়ে কম, বছরে গড়ে ৮১৮ মিমি।
২০১২ এর এপ্রিলের হিসেব অনুযায়ী ইয়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চলের ২৭ শতাংশ এলাকা সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এর মধ্যে আছে চিচিবু তামা কাই, ফুজি-হাকোনে-ইযু এবং মিনামি আল্পস জাতীয় উদ্যান, ইয়াৎসুগাতাকে-চুউশিন কোওগেন উপ-জাতীয় উদ্যান এবং মিনামি আল্পস কোমা ও শিবিরেকো প্রশাসনিক আঞ্চলিক উদ্যান।[৭]
অর্থনীতি
কোওফু নগরের চারদিকে ইয়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চলে একটি সমৃদ্ধ শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে বিশেষত গয়না শিল্প ও রোবোটিক্স উল্লেখের দাবি রাখে। দক্ষিণে অবস্থিত ওশিনো নগরে পৃথিবীতে কারখানায় ব্যবহারযোগ্য রোবটের বৃহত্তম নির্মাতা ফানুক কোম্পানির সদর দপ্তর অবস্থিত।[৮]
এখানে প্রচুর বাণিজ্যিক ফলের বাগান ও আঙুর ক্ষেতও বর্তমান। এছাড়া জাপানে ব্যবহৃত মিনারেল ওয়াটারের ৪০% ইয়ামানাশির মিনামি আল্পস, ফুজি পর্বত ও মিৎসুতোওগে এলাকায় প্রস্তুত হয়।
তথ্যসূত্র
ওপেনস্ট্রিটম্যাপে ইয়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চল সম্পর্কিত ভৌগোলিক উপাত্ত